নিজকর্ম ফলে, ব্যাখ্যা কর মজালে রাক্ষসকূলে, মজিলা আপনি

নিজকর্ম ফলে, ব্যাখ্যা কর মজালে রাক্ষসকূলে, মজিলা আপনি 

নিজকর্ম ফলে, ব্যাখ্যা কর মজালে রাক্ষসকূলে, মজিলা আপনি
 নিজকর্ম ফলে, ব্যাখ্যা কর মজালে রাক্ষসকূলে, মজিলা আপনি 

উত্তর মেঘনাদবধ কাব্যে রামের পিতা দশরথের নির্দেশে রাম-সীতা বনবাস জীবন- যাপন করে, সাথে আসে ভ্রাতৃভক্ত লক্ষ্মণ । লক্ষ্মণকে রাবণভগ্নি প্রেমের প্রস্তাব দেয় । 

লক্ষ্মণ সূর্পণখার নাক ছেদন করে তাকে অপমান করে। পৌরুষদীপ্ত লঙ্কারাজ রাবণ বোনের অপমানের প্রতিশোধ নিতে ছল করে রামপত্নী সীতাকে হরণ করে লঙ্কায় নিয়ে আসে। 

রথে আসতে সীতা অলঙ্কার খুলে পথে পথে ছড়িয়ে রাখে। সেই চিহ্ন ধরে রামের বিশাল বাহিনী লঙ্কায় এবেশ করে এক যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। যুদ্ধে রাবণ পুত্র বীরবাহুসহ লঙ্কার লাখ লাখ বীর সন্তান অকাতরে প্রাণ দেয়।

রাবণ লঙ্কার এই শোচনীয় দুরবস্থার জন্য আপন ভাগ্যকে দোষারোপ করে। কিন্তু রাবণ মহীয়সী চিত্রাঙ্গদা যে বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী নারী, সে স্বামীর কাছে আপন পুত্রের মৃত্যুর কৈফিয়ত চায়। 

এবং সে স্পষ্ট বলে যে, অযোধ্যা থেকে রাম-লক্ষ্মণ লঙ্কা দখলের জন্য আসে নি। রাবণ রামের স্ত্রী সীতাকে ধরে এনেছে বলেই রাবণরাজের এবং লঙ্কার আজ এ অবস্থা । 

নইলে রাঘবদের কোন শক্তি ছিল না অযোধ্যা থেকে লঙ্কায় প্রবেশ করা। রাবণের কর্মের ফলে আজ তাদের স্পর্ধা ও শক্তি বেড়ে গেছে। 

রাবণের নিজ কর্মদোষে রাক্ষসকুল যেমন বিধ্বস্ত, তেমনি স্বর্ণলঙ্কাও বিধ্বস্ত হল। চিত্রাঙ্গদার এ উক্তির মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন- মানুষের পরিণতি বা ভাগ্যের নিয়ামক মানুষ নিজেই, মানুষ তার পরিণতি নির্মাণ করে কর্মের মাধ্যমেই। রাবণের পৌরুষ ইগো ও কর্মফল হিসেবে তার ভবিষ্যৎ জীবন নির্মিত হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ