চর্যার পদকর্তা হিসেবে কাহ্নপা এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

চর্যার পদকর্তা হিসেবে কাহ্নপা-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

চর্যার পদকর্তা হিসেবে কাহ্নপা-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ।
চর্যার পদকর্তা হিসেবে কাহ্নপা-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ।

 

উত্তর: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগের (৬৫০-১২০০) একমাত্র নিদর্শন চর্যাপদ। চর্যাপদে ২৩ জন কবির সাড়ে ৪৬টি পদ রয়েছে, তার মধ্যে কাহ্নপার লেখা পদ তেরটি (৭, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৮, ১৯, ২৪, ৩৬, ৪০, ৪২, ৪৫)। চর্যাপদে তাঁর সর্বাধিক সংখ্যক পদ রয়েছে।

এজন্য কাহপাকে সিদ্ধাচার্যদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়। তেঙ্গুরে (তিব্বতে রক্ষিত বিশ্বকোষের এক অংশ, যাতে পদকর্তাদের পরিচয় দেওয়া আছে) পনের স্থানে লুইপাকে ভারতবাসী বলা হয়েছে। কেবল এক জায়গায় লেখা তিনি ব্রাহ্মণ, উড়িয়া হতে আগত। তিনি ছিলেন বৌদ্ধধর্মের সহজিয়া মতের অনুসারী।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বলেছেন, কাহ্নপার জন্মস্থান উড়িষ্যা, তিনি থাকতেন পাহাড়পুর সোমপুর বিহারে। কাহ্নপা নাথুসিদ্ধা জলান্ধরী পার শিষ্য। রাহুল সাংকৃত্যায়ন বলেছেন, কাহ্নপার জন্মস্থান কর্ণাট। সুনীতিকুমার বলেছেন যে, কাহ্নপা দেবপালের রাজত্বকালে সোমপুর পাহাড়ে বাস করতেন। সুকুমার সেন কাহ্নপাকে কাপালিক, যোগী, নাঙ্গা বলেছেন।

তারানাথ বলেছেন, জলাম্বরীপা রাজা ভর্তৃহরিকে দীক্ষা দান করেন। ভর্তৃহরির মৃত্যুকাল ৬৫১ খ্রিস্টাব্দ। এ হিসেবে কাহ্নপার সময়কাল ৬৭৫-৭৭৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ চর্যাপদের কাহ্নপা এবং নাথ গীতিকার কাহ্নপাকে অভিন্ন জ্ঞান করেন।

 সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় কাহ্নপাকে দশম শতাব্দীর লোক মনে করেন। কাহ্নপা, কানুপা, কৃষ্ণপা, কৃষ্ণাচার্য, কৃষ্ণবস্তু প্রভৃতি নাম ব্যবহার করলেও আসলে তিনি একই ব্যক্তি। কাহপা রচিত গ্রন্থগুলো হচ্ছে— গীতিকা, মহাটুন, বসন্ততিলক, অসম্বন্ধ দৃষ্টি, বজ্রগীতি, দোহাকোষ, শ্ৰী হে বজ্রপঞ্জিকাযোগে রত্নমালা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ