বিজয় দিবস রচনা | ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস রচনা

প্রশ্নঃ একটি বিজয় দিবস রচনা লিখ। 

বিজয় দিবস রচনা - প্রিয় শিক্ষার্থী ভাই বোনেরা তোমাদের জন্য আমরা বিজয় দিবস রচনা নিয়ে আসছি। তোমরা যাতে খুব সহজে এখান থেকে পড়তে পারো বিজয় দিবস রচনা। এখন প্রায় সব পরিক্ষায় বিজয় দিবস রচনা আসে। 

বিজয় দিবস রচনা  ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস রচনা
বিজয় দিবস রচনা  ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস রচনা

তোমরা সবাই জানো বিজয় দিবস কি। তোমাদের যদি কারো জানা না থাকে তাহলে নিচের বিজয় দিবস রচনা পড়লেই তোমরা ভালো ভাবে জেনে যাবে। ক্লাস ৬ থেকে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত সবাই এই বিজয় দিবস রচনা পড়তে পারবে। কোনো রকম সমস্যা হবে না বিজয় দিবস রচনা টি পড়তে ও লিখতে। তোমরা যেকোন পরিক্ষায় এই বিজয় দিবস রচনা টি লিখতে পারবে। রচনাটি পড়ার আগে জেনে নাও প্রবন্ধ রচনা লেখার নিয়ম। বিজয় দিবস রচনা টিতে কি কি থাকতেছে তা সুচিপত্রে দেখে নেই।

সুচিপত্রঃ বিজয় দিবস রচনা | ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস রচনা

  • সূচনা
  • বিজয় দিবসের ইতিহাস
  • বিজয় দিবসের তাৎপর্য
  • বিজয় দিবসের উৎসব
  • উপসংহার

বিজয় দিবস রচনা

সূচনা: আমাদের জাতীয় জীবনে ১৬ই ডিসেম্বর সবচেয়ে আনন্দ ও গৌরবের একটি দিন। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর এই দিনে আমাদের প্রিয় স্বদেশ দখলদারমুক্ত হয়েছিল। লাখাে শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ লাভ করেছিলাম । এই দিনটি তাই আমাদের জাতীয় জীবনে সবচেয়ে মরণীয় দিন। এটি আমাদের বিজয় দিবস'।

বিজয় দিবসের ইতিহাস: বিজয় মহান, কিন্তু বিজয়ের জন্য সংগ্রাম মহত্তর। প্রতিটি বিজয়ের জন্য কঠোর সংগ্রাম প্রয়ােজন। আমাদের বিজয় দিবসের মহান অর্জনের পেছনেও বীর বাঙালির সুদীর্ঘ সংগ্রাম ও আত্মদানের ইতিহাস রয়েছে। পাকিস্তান সৃষ্টির প্রায় প্রথম থেকেই বাঙালিদের ইহার জাগরণ ঘটে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব প্রবল আকার ধারণ করতে থাকে। অবশেষে বাঙালির স্বাধিকার চেতনা ১৯৬৯ সালে গণ-অত্যুথানে রূপ লাভ করে। বাঙালির স্বাধিকারের ন্যায্য দাবিকে চিরতরে নির্মূল করার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পশ্চিমা সামরিক জান্তাবাহিনী বাঙালি-নিধনের নিষ্ঠুর খেলায় মেতে ওঠে। ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তােলে। কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-শিক্ষক, মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান  সবাইকে নিয়ে গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী। যার যা আছে তাই নিয়ে " দেশমাতৃকার মুক্তি সংগ্রামে। সুদীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ চলে। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীরা শহরে বন্দরে পাখির মতাে গুলি করে হত্যা করে নিরীহ জনসাধারণকে। ঘর বাড়ি লুট করে জ্বালিয়ে দেয়। মা-বােনদের ওপর পাশবিক নির্যাতন করে। প্রাণ বাঁচাতে সহায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় নিতে হয় প্রতিবেশী দেশ ভারতে। তবু বাঙালি দমে যায় নি। পৃথিবী অবাক তাকিয়ে দেখে:

সাবাস বাংলাদেশ! এ পৃথিবী। 

অবাক তাকিয়ে রয় । 

জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার 

তবু মাথা নােয়াবার নয়।

অবশেষে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরাজয় স্বীকার করে নেয়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর এদেশের মুক্তিসেনা ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। রক্তাক্ত সংগ্রামের অবসান ঘটে। বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়। সূচিত হয় বাংলাদেশের মহান বিজয়।

বিজয় দিবসের তাৎপর্য: ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর গৌরবময় বিজয়ের মাধ্যমে স্বাধীন জাতি হিসেবে। বাঙালির জয়যাত্রার শুরু। এই দিনে স্বপরিচয়ে আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা তুলে দাঁড়াবার সুযােগ পাই। এই দিনটির জন্যই সারা বিশ্বে বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশের মর্যাদা আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। ১৬ই ডিসেম্বর তাই। আমাদের বিজয় দিবস। প্রতি বছর সবিশেষ মর্যাদা নিয়ে জাতির কাছে হাজির হয় বিজয় দিবস। সব অন্যায়অত্যাচার, শােষণ-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে বিজয় দিবস আমাদের মনে প্রেরণা সৃষ্টি করে।

বিজয় দিবসের উৎসব: ১৬ই ডিসেম্বর ভােরে সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে। দিয়ে দিবসটির শুভ সূচনা হয়। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ মহাসমারােহে বিজয় দিবস পালন করে। ১৫ ডিসেম্বর রাত থেকেই বিজয় দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি চলে। দেশের সমস্ত স্কুল-কলেজ, ঘর-বাড়ি, দোকানপাট, রিক্সা-গাড়ি ইত্যাদিতে শােভা পায় লাল-সবুজ পতাকা। স্কুল-কলেজ কিংবা রাস্তায় রাস্তায় আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। স্বাধীনতার আনন্দে সব শ্রেণির মানুষ যােগ দেয় এসব অনুষ্ঠানে। ও ও কোথাও বসে বিজয় মেলা। সরকারিভাবে এনাট বেশ জাকজমকভাবে পালন করা হয়। ঢাকার জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সামরিক ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যগণ কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিরােধীদলীয় নেতা-নেত্রীগণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে হাজার হাজার মানুষ এই কুচকাওয়াজ উপভােগ করেন। অনেক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বিজয় দিবস স্মরণে অনুষ্ঠান করে। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয় বিশেষ ক্রোড়পত্র। বেতার ও টেলিভিশনে বিশেষ সব অনুষ্ঠানমালা। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের আত্মার শান্তি ও দেশের কল্যাণ কামনায় প্রার্থনা করা হয়। শহরে সন্ধ্যায় আয়ােজন করা হয় বিশেষ আলােকসজ্জার। সমগ্র দেশ জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বিজয় দিবস পালিত হয়।

উপসংহার: এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এই স্বাধীনতা আমাদের অর্জিত হয় ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। এই দিনটি শুধুই আমাদের বিজয়ের দিন নয়, বেদনারও দিন। আমাদের চেতনা জাগরণেরও দিন। যাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা ও রক্তের বিনিময়ে আমরা এই গৌরবের অধিকার পেয়েছি, তাদের সেই আত্মােৎসর্গের কথা মনে রেখে আমাদেরও সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। দেশ ও জাতিকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তবেই বিজয় দিবসের মহিমা অর্থবহ হয়ে উঠবে।

বিজয় দিবস রচনা | ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস রচনা

ভূমিকা: ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালির জাতীয় জীবনে এক অবিস্মরণীয় আনন্দ-বেদনায়_রোমাঞ্চিত উজ্জ্বল দিন। এদিন আমরা দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ শেষে বিজয় লাভ করেছিলাম, আমাদের প্রিয় স্বদেশ হয়েছিল হানাদার বাহিনীমুক্ত। এ বিজয়ের গৌরব ও আনন্দ অম্লান হয়ে থাকবে চিরদিন। ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের পর স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে ঠাঁই হয়েছিল আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের। বিজয় দিবসের মাধ্যমে জাতির নবযাত্রা শুরু হয়েছিল। স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করেছিল । ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় মর্যাদার প্রতীক।

স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপট: ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় লাভের পেছনে 9 আমাদের দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের প্রেক্ষাপট জড়িত। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে নিরীহ বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরচিত হামলার পর ২৬শে মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলেও प আমাদের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ বিভাগের পর থেকেই। দেশ বিভাগের ফল হিসেবে যে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়েছিল, সে পাকিস্তান আমাদের দেশের মানুষকে চরম দুর্ভোগ ও দুর্যোগের দিকে ঠেলে দেয়। পাকিস্তান সৃষ্টির পর বাঙালি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন-শোষণ, জুলুম, নির্যাতন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য স্বাধিকার ও স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতে থাকে। জাতি হিসেবে আমাদের ধ্বংস করার জন্য পাকিস্তানিরা প্রথমেই আঘাত হানল আমাদের প্রিয় মাতৃভাষার ওপর। তারা উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। প্রতিবাদে, বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এদেশের মানুষ। শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় অভিষিক্ত করতে পেরেছিলাম। তারপর বাঙালি ভাবতে থাকল স্বাধিকার আন্দোলনের কথা। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১১ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনেরই অংশ। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পরও সরকার গঠন করতে পারেনি। তারপর ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর পশ্চিমা হানাদার বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে উচ্চারণ করেছিলেন- 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।'

মুক্তিযুদ্ধের বিবরণ: দীর্ঘ তেইশ বছরের পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর শোষণে বঞ্চিত হতে হতে বাঙালি একসময় তার অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়ে উঠল, অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে শুরু করল। এটা শোষক পাকিস্তানিদের বুকে শেলের মতো বিধে। ৭ই মার্চ, ১৯৭১ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যখন সমগ্র পূর্ব বাংলায় অসহযোগ আন্দোলন চলছিল, ঠিক তখন ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কাপুরুষের মতো ঘুমন্ত জনগণের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। তারা অপারেশন সার্চলাইট নাম ধারণ করে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায় পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গ্রেফতার হবার আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন । তাঁর ঘোষণা বার্তাটি তৎকালীন ইপিআরের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র প্রেরণ করা হয়। এরপর চট্টগ্রামের 'স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র' থেকে ২৬ ও ২৭শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর নামে প্রচারিত হয় স্বাধীনতার ঘোষণা। ১০ই এপ্রিল ১৯৭১ সালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় বঙ্গবন্ধুকে প্রেসিডেন্ট মনোনীত করে অস্থায়ী সরকার গঠন করা হয়। এই অস্থায়ী সরকার ১৭ই এপ্রিল শপথ গ্রহণ করে। এরই মাঝে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে স্বতঃস্ফূর্ত মুক্তির সংগ্রাম। দেশের সর্বত্র বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে । ভারতের মিত্রবাহিনী এ দেশের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দেয়। নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত দেখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে ১৪ই ডিসেম্বর এদেশের অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। আর এ হীন কাজে তাদের সাহায্য করে রাজাকার, আলবদর নামধারী এদেশের স্বাধীনতাবিরোধী, বাঙালি জাতীয়তার বিপক্ষের কিছু জঘন্য মানুষ। এরপর ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাধ্যমে আমাদের প্রিয় দেশ বাংলাদেশ বিশ্বমানচিত্রে স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ।

বিজয় দিবসের তাৎপর্য: বিজয় দিবসের তাৎপর্যকে খাটো করে দেখার উপায় নেই । এ দিনেই আমরা গৌরবময় বিজয় অর্জন করেছিলাম, স্বপরিচয়ে মাথা তুলে বিশ্বের দরবারে দাঁড়াবার সুযোগ পেয়েছিলাম। রক্তনদীর উজান বেয়ে এসেছে স্বাধীনতা। স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে নিজের ভাগ্য নিজে গড়ার। স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত আমাদের দেশ পুনর্গঠনের সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা বিজয় দিবসের মাধ্যমে । জাতির কাছে প্রতিবছর বিশেষ মর্যাদা নিয়ে এসে হাজির হয় বিজয় দিবস। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা অনেক কঠিন। বিজয় দিবসে আমাদের শপথ হওয়া উচিত, যেকোনো মূল্যে হোক আমরা আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ণ রাখব। সুখী ও সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গঠন করতে পারলেই বিজয় দিবসকে অর্থবহ করে তোলা সম্ভব হবে।

বিজয় দিবসে দেশবাসীর করণীয়: বিজয় দিবসে শপথ নিতে হবে যে, বাংলাদেশের গৌরবময় বিজয়কে জাতীয় জীবনে অক্ষুণ্ণ রাখার প্রত্যয়ে দেশ ও জাতির জন্য আমরা আমাদের কাজ করে যাব। বিজয় দিবসের চেতনাকে জাতীয় জীবনের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। একটি শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই বিজয় দিবসের সত্যিকারের তাৎপর্য আমরা অনুধাবন করতে সক্ষম হব। আমাদের জাতীয় জীবনের বিভিন্ন সমস্যা, সংকট, অভাব, অনটন, অশিক্ষা, দারিদ্র্য দূর করে দেশকে একটি আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই স্বাধীনতাপ্রাপ্তি সকল দিক থেকে অর্থবহ হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমাদের ভৌগোলিক স্বাধীনতা এলেও অর্থনৈতিক মুক্তি এখনো পুরোপুরি আসেনি। অর্থনৈতিক মুক্তি এলেই বিজয় দিবসের চেতনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। আমাদের সকলকে তাই অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, জাতির কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে।

উপসংহার: বিজয় দিবসকে আমরা যথাযথ মর্যাদার মধ্য দিয়ে প্রতিবছর জাতীয়ভাবে পালন করে থাকি। এদিন আমরা মুক্তিযুদ্ধের জন্য যারা শহিদ হয়েছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাঁদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। শহিদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনাসভা, কবিতা আবৃত্তি, সংগীতানুষ্ঠান, নাট্যাভিনয় ইত্যাদির মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করি। এদিনে আমরা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংবর্ধনারও আয়োজন করি। বিজয় দিবস আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে আনন্দের দিন। আনন্দের পাশাপাশি আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি। সে রক্তক্ষয়, ত্যাগ, সংগ্রাম আন্দোলনের কথা স্মরণ রেখে বিজয় দিবসের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাতীয় উন্নতির জন্য আমাদের সকলকে সব বিভেদ ভুলে গিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ বিজয় দিবস রচনা

শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে আমরা জানলাম বিজয় দিবস রচনা । যদি আজকের এই বিজয় দিবস রচনা টি ভালো লাগে তাহলে এখনি ফেসবুকে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন আর এই রকমই নিত্যনতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ