খারেজীদের ধর্মীয় মতবাদ

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো খারেজীদের ধর্মীয় মতবাদ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের খারেজীদের ধর্মীয় মতবাদ  টি।

খারেজীদের ধর্মীয় মতবাদ
খারেজীদের ধর্মীয় মতবাদ

খারেজীদের ধর্মীয় মতবাদ

উত্তর : ভূমিকা : ইসলামে যেসব ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দল উপদল সৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যে প্রথম যে দলটি সৃষ্টি হয়েছে তারা হলো খারিজি সম্প্রদায়। আমির মুয়াবিয়া (রা.) ও হজরত আলী (রা.)-এর মধ্যে “দুমাতুল জন্দাল” সালিশীকে অমান্য করে হজরত আলীর দল থেকে ১২০০ হাজার সৈন্য বেরিয়ে পড়ে। ইতিহাসে এদেরকে খারিজি বলে। খারিজিরা আল্লাহর হুকুম ছাড়া অন্য কারো হুকুম মানতে নারাজ। তাদের মূলকথা হলো আল্লাহর হুকুম ছাড়া আর কারো হুকুম চলবে না।

→ খারিজিদের ধর্মীয় মতবাদসমূহ : খারিজি সম্প্রদায় বিভিন্ন ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী ছিল। খারিজিদের ধর্মীয় মতবাদসমূহ নিম্নে আলোচনা করো হলো :

১. খারিজিদের মতে কোনো মুসলমান যদি তওবা না করে মারা যায় তবে সে দোযখে যাবে।

২. যে মুসলমান খারিজিদের মত সমর্থন করে না তারা তাদেরকে নাস্তিক বলে মনে করে।

৩. খারিজিরা বিবেকের পবিত্রতাকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তাদের মতে, বিবেকের পবিত্রতা মানুষকে মহৎ করে তোলে ।

৪. খারিজি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় মতবাদের মধ্যে অন্যতম দিক হলো নিয়মিত অনুশাসন পালন। তাদের মতে, যে মুসলমান নিয়মিত নামাজ ও অন্যান্য ইবাদত পালন না করে সে ধর্মদ্রোহী তাকে সপরিবারে হত্যা করা কর্তব্য।

৫. সুন্নিদের মতে, খারিজিরা আল কুরআনের উপর আস্থা রাখলেও ধর্মীয় ব্যাপারে খুবই গোড়া ছিল। খারিজিদের মতে, যে মুসলমান নিয়মিত নামাজ রোজ৷ পালন করে না সে কাফেরদের সমপর্যায়ভুক্ত।

৬. খারিজিরা কুরআন শরীফের বিশুদ্ধতায় বিশ্বাস করতো। তারা কুরআন ও হাদিসভিত্তিক ইসলামি জীবন বিধান প্রচার করতো। এজন্য খারিজিরা ইসলামের বিশুদ্ধতাবাদী বলে পরিচিত

ইসলাম ধর্মের বিধি-বিধান মেনে চলা ও এর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করাই ইমান। খারিজিরা ইমান ও আমলের উপর সমান গুরুত্ব দিতো এবং আধ্যাত্মিক পবিত্রতায় বিশেষ গুরুত্বারোপ করতো।

৮. ধর্মই শান্তি বয়ে আনে। শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ধর্মীয় বিধান মেনে চলা আবশ্যক। তাই খারিজিরা যদিও বিভিন্ন দল উপদলে বিভক্ত ছিল। তথাপি তারা ধর্মকে কোনো প্রকার বিতর্কমূলক বিষয়ের সাথে জড়াতে রাজি নয় ।

৯. খারিজিরা অমুসলমানদের প্রতি অত্যন্ত উদার। তাদের মতে, যদি কোনো অমুসলিম মুহাম্মদ (সা.)-কে আল্লাহর নবি বলে স্বীকার করে তবে সে মুসলমানদের সমান অধিকার পাবে।

 ১০. খারিজিরা অনারব মুসলমানদের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল ছিল। অনারবদেরকে অন্যান্য মুসলমান বিশেষ করে আরবদের সমপর্যায়ে উন্নতি করার জন্য তারা আপ্রাণ চেষ্টা করে।

১১. খারিজি মতবাদের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বিবেকের উপর গুরুত্বারোপ । তারা ইমান ও কর্মের মতো বিবেকের উপর ও সমান গুরুত্বারোপ করে।

১২. খারিজিরা কুরআনের শাব্দিক অর্থসমূহকে গ্রহণ করে ।

 উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, খারিজিরা ছিল দোষগুণের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা একটি সম্প্রদায়। যদিও খারিজিদের উগ্র ও চরম মতবাদ ইসলামের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে, তথাপি তারা ধর্মে শুদ্ধাচারী এবং রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক ছিল। খারিজিরা বহু নাশকতামূলক কার্য করলেও ইসলামের ইতিহাসে তাদের অবদান কোনো অংশে কম নয়।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ খারেজীদের ধর্মীয় মতবাদ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম খারেজীদের ধর্মীয় মতবাদ  টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ