একুশে বই মেলা রচনা | তোমার দেখা একটি বই মেলা রচনা Class 6, 7, 8, 9, 10

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো তোমার দেখা একটি বই মেলা রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি একুশে বই মেলা রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আমার দেখা একটি বই মেলা রচনা  টি।

আমার দেখা একটি বই মেলা রচনা
আমার দেখা একটি বই মেলা রচনা

তোমার দেখা একটি বই মেলা রচনা

ভূমিকা: বাঙালি জাতির জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারি একটি স্মরণীয় দিন। এদিনের ইতিহাস আমাদের চেতনার সংগ্রামী ইতিহাস। এ সংগ্রামী চেতনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে অন্যতম হলো বইমেলার আয়োজন। বাংলাদেশে 'বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের মেলা উদ্‌যাপিত হয়ে থাকে। কিন্তু একুশে বইমেলা আমাদের চেতনায় ভিন্ন আঙ্গিকে ধরা দেয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের জাতীয়তাবোধের চেতনাকে প্রতিবছর আমাদের অন্তরে নতুনভাবে উপস্থাপন করে এ একুশের বইমেলা। তাই একুশে ফেব্রুয়ারির প্রতিটি মুহূর্ত স্মরণীয় করে রাখার জন্য বাংলা একাডেমি প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে একুশের বইমেলা আয়োজন করে আসছে।

একুশের বইমেলার আয়োজন: একুশের বইমেলা প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিনে শুরু হয় । বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বাংলা একাডেমির উদ্যোগেই মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এখানে বিচিত্র ধরনের বইয়ের সমাহার ঘটে। বই বিক্রেতা ও প্রকাশক বিচিত্র বইয়ের দোকান সাজিয়ে বসেন । প্রতিদিন বইপ্রেমী মানুষেরা বইয়ের আকর্ষণে ছুটে আসেন বইমেলার স্টলগুলোতে। নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষের ঢল নামে মেলা প্রাঙ্গণে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি লেখক, ভাষাবিদ, ভাষাসৈনিক প্রমুখ বরেণ্য ব্যক্তিত্ব এ বইমেলাকে সরগরম করে তোলেন। বিচিত্র বইয়ের সম্ভারে পরিপূর্ণ থাকে দোকানগুলো। এটি বাংলা একাডেমির এক মহৎ উদ্যোগ ও মহা আয়োজন ।

বইমেলার প্রয়োজনীয়তা: বই ক্রয় উৎসাহিত করতে প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরী বলেছেন- “বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।” কারণ, জ্ঞানবিকাশের পূর্বশর্ত হলো প্রচুর অধ্যয়ন। এজন্য প্রয়োজন বিচিত্র প্রকারের গ্রন্থ। আর গ্রন্থ ক্রয়ে সংকীর্ণ-মানসিকতা মেধা বিকাশের পরিপন্থী। সেদিক থেকে বইমেলার বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বৈচিত্র্যময় জ্ঞানের ভান্ডার হলো বই। বই পড়ে আমরা অতীত, বর্তমান সম্পর্কে জানতে পারি। কিন্তু সবসময় আমাদের বই কেনা হয়ে ওঠে না। তাই মেলার সময় সকলের বই কেনার উৎসাহ বাড়ে। তবে সবাই বই . কেনার উদ্দেশ্যে না গেলেও ঘুরতে ঘুরতে কোনো বই ভালো লেগে গেলে তা কিনে নেয়। বইমেলায় ছোটো-বড়ো সকলেই নিজেদের পছন্দমতো বই কিনতে পারে। বইমেলা বই কেনার অনুপ্রেরণা জাগিয়ে আমাদের জ্ঞানকে আরও প্রসারিত করে। এ মেলায় গিয়ে অনেক গুণী লেখকের সঙ্গে আমরা পরিচিত হতে পারি। তাছাড়া মেলা চলাকালীন যে সমস্ত সভা-সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় তাতে যোগদান করে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানলাভ করতে পারি। প্রায় প্রতিবছরই নবীন লেখকদের লেখা বই মেলায় স্থান পায়। নবীন-প্রবীণ, জ্ঞানী-গুণী সকলের মিলনকেন্দ্র এ বইমেলা। বিশেষ করে বই কেনায় উৎসাহ জোগানোর ব্যাপারে বইমেলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম 1 লেখক, প্রকাশক ও ক্রেতার সুযোগ: বইমেলায় বিচিত্র বইয়ের সমাবেশ ঘটে। তাই ক্রেতারা সহজেই তাদের চাহিদা অনুযায়ী বই সংগ্রহ করতে পারে। তাছাড়া মেলা প্রাঙ্গণে প্রকাশক ও লেখকদের সঙ্গে ক্রেতাদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের সুযোগ করে দেয় বইমেলা। বইমেলার উন্মুক্ত পরিবেশ প্রকাশক, লেখক ও ক্রেতাদের মধ্যে এক অপূর্ব মিলনের সুযোগ ঘটায়

বই কেনার আগ্রহ বৃদ্ধি: বইমেলা পাঠকদের বই কেনার প্রতি আগ্রহ বাড়ায়। বইমেলার পরিবেশ ক্রেতাদের সৌন্দর্য পিপাসায় উদ্বুদ্ধ করে বলে ক্রেতারা বইমেলা থেকে বই কেনার প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাছাড়া বইমেলায় মূল্যের দিক থেকে ক্রেতাদের জন্য কমিশন দেওয়া হয় এবং অনেক স্টলে দুষ্প্রাপ্য বিচিত্র সব বই প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। এসব সুযোগ-সুবিধার জন্য ক্রেতারা বইমেলা থেকে বেশি করে বই কেনেন ।

ক্রেতাদের পারস্পরিক ভাববিনিময়: বইমেলায় ক্রেতারা তাদের পছন্দ- অপছন্দ, প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয়, ভালোমন্দ বিভিন্ন ধরনের বই কেনার ব্যাপারে পরস্পরের সঙ্গে ভাব বিনিময় করতে পারেন। মেলার সুস্থ পরিবেশ বড়দের পাশাপাশি ছোটদেরও বই কেনার ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলে। মেলায় অসংখ্য ক্রেতার সমাবেশের ফলে প্রকাশকদের প্রচার সহজ হওয়ায় বইয়ের বিক্রিও বাড়ে।

মেলার বিচিত্র মানুষ ও বিচিত্র বই: মেলায় বিচিত্র ধরনের বইয়ের পাশাপাশি বিচিত্র মানুষেরও সমাবেশ ঘটে। সাহিত্য, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, কম্পিউটার, রান্নার বই, মেয়েদের রূপচর্চার বই, বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের ওপর লিখিত বই, ছোটদের বই ইত্যাদি বিচিত্র ধরনের বইয়ের সমাবেশ ঘটে বইমেলায় । স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ছেলে, বুড়ো, শিক্ষক, জ্ঞানী- গুণী অর্থাৎ কিশোর-যুবক, বৃদ্ধ সকলেই বইমেলায় আসেন। কেউ আসে দেখতে, কেউ আসেন বই কিনতে। অর্থাৎ বিচিত্র বইয়ের পাশাপাশি আবির্ভাব ঘটে বিচিত্র মানুষের।

মেলার উৎসবমুখর পরিবেশ: বইমেলার আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য আলোচনা, আবৃত্তি, গান-বাজনার আয়োজন করা হয়ে থাকে মেলা প্রাঙ্গণে । ফলে মেলা প্রাঙ্গণে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় । অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও কর্মব্যস্ত মানুষ উৎসবে মেতে উঠেন এ বইমেলায় ।

বইমেলা প্রাণের মেলা: বইমেলা শুধু মেলা নামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি বাঙালির প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছে। কারণ এখান থেকে বই কেনার সময় পাঠক শুধু নির্ধারিত বইই পান না, তিনি তার কাঙ্ক্ষিত লেখককেও পেয়ে যান । যার ফলে মেলা তার কাছে অন্য আঙ্গিকে ধরা দেয় ।

উপসংহার: একুশের বইমেলা আমাদের জাতীয় চেতনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছে। এ মেলা আমাদের জীবনে একুশের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে তোলে । ফলে জাতীয় চেতনার প্রতি আমাদের যেমন মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, তেমনই বই পড়া ও কেনার প্রতি মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি হয়। বর্তমানে ঢাকার বাইরে ও বিভাগীয় এবং জেলা শহরগুলোতেও বইমেলার আয়োজন আমাদের দেশে বইমেলার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেছে ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ আমার দেখা একটি বই মেলা রচনা

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বই মেলা রচনা class 10  টি। যদি তোমাদের আজকের এই বই মেলা রচনা class 6  টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ