গেরিলা যুদ্ধ কি | গেরিলা যুদ্ধ কি ব্যাখ্যা করো

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গেরিলা যুদ্ধ কি | গেরিলা যুদ্ধ কি ব্যাখ্যা করো জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের গেরিলা যুদ্ধ কি | গেরিলা যুদ্ধ কি ব্যাখ্যা করো ।

গেরিলা যুদ্ধ কি  গেরিলা যুদ্ধ কি ব্যাখ্যা করো
গেরিলা যুদ্ধ কি  গেরিলা যুদ্ধ কি ব্যাখ্যা করো

গেরিলা যুদ্ধ কি | গেরিলা যুদ্ধ কি ব্যাখ্যা করো

উত্তর: ভূমিকা : পাকস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়, অত্যাচার এবং নিপীড়নমূলক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি চূড়ান্ত প্রতিবাদ গড়ে তোলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। 

সমগ্র বাঙালি জাতি পৃথক আবাসভূমি এবং স্বাধিকার আদায়ের জন্য অবতীর্ণ হয় এক ভয়াবহ গেরিলা যুদ্ধে ।

গেরিলা যুদ্ধ : গেরিলা যুদ্ধ হলো এক ধরনের বিশেষ কৌশল সমৃদ্ধ যুদ্ধ। গেরিলা যুদ্ধে এমন কতিপয় কৌশল অবলম্বন করা হয় যার মূল বিষয়বস্তু হলো অল্প সময়ের মধ্যে শত্রুর ঘাঁটি আক্রমণ করে ধ্বংস করা এবং পলায়ন করে পুনরায় শক্তি অর্জন করা। 

গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে শত্রুদের মনস্তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল করে দেয়া হয় এবং শত্রুর দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে আক্রমণ পরিচালনা করা হয়। 

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনী গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন করে। মুক্তিবাহিনীর অপার সাহসিকতা এবং কৌশলের কারণে সহজেই পাকবাহিনী পরাজিত হয়।

→ গেরিলাদের তিন নীতি : তিনটি নীতি নিম্নে দেওয়া হলো : 

১. পাকিস্তানি দোসর, রাজাকার, আলবদর ও আলশামসদের চিহ্নিত করা এবং হত্যা করা।

২. যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাতে পাক সেনারা সমস্যার সম্মুখীন হয় ।

৩. ‘হিট এন্ড রান' পদ্ধতি অপারেশন পরিচালনা করা ।

→ গেরিলাদের অবদান : অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও গেরিলা যুদ্ধ সাফল্যজনকভাবে অগ্রসর হয় । গেরিলাদের কার্যক্রমে আপামর জনতার সার্বিক সমর্থন ছিল । অক্টোবর মাসের শেষ দিকে গেরিলারা ২০,০০০ পাকসেনা হত্যা করে । গ্রামাঞ্চলে গেরিলাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়। নভেম্বর মাসে ৩০,০০০ গেরিলা ঢাকা শহর ও তার আশপাশে অবস্থান করে । ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫,০০০ পাকসেনা গেরিলাদের হাতে নিহত হয়।

ব্রিজ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করার জন্য গেরিলারা সড়ক, ও রেললাইন তুলে দেয়। একপর্যায়ে তারা চট্টগ্রাম ও চালনা বন্দর দখল করে। এছাড়া গেরিলারা পাকিস্তান থেকে আসা অস্ত্র বোঝাই জাহাজ ডুবিয়ে দেয়।

→ গেরিলা যুদ্ধের সাফল্যের কারণ : গেরিলা যুদ্ধের সাফল্যের কারণ নিম্নে আলোচনা হলো :

১. সার্বিক অংশগ্রহণ : ১৯৭১ সালের গেরিলা যুদ্ধে আবাল- ও বণিতা সর্বস্তরের লোক স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে । ২. সমর্থন : গেরিলারা বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের পাশাপাশি বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয় ।

৩. দৃঢ়চেতা মনোভাব : গেরিলারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশপ্রেমের মহান আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে অসীম শক্তি সঞ্চয় করে । দৃঢ়চেতা মনোভাবই তাদের সাফল্যের মূল কারণ ।

৪. যথাযথ প্রশিক্ষণ : গেরিলারা ভারতে গিয়ে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরিপক্কতা লাভ করে। অতর্কিত আক্রমণে পাকবাহিনী নাজেহাল হয়।

৫. বৈদেশিক সাহায্য : গেরিলারা ভারত থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ লাভ করে। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ অস্ত্র, খাদ্য এবং ঔষধপত্রের যোগান দেয়া হয় ।

উপসংহার : আলোচ্য আলোচনা শেষে বলা যায়, উপরিউক্ত আলোচনা পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ১৯৭১ সালের গেরিলা যুদ্ধ ছিল পাকসেনাদের জন্য আতঙ্ক। 

গেরিলারা অতি অল্প সময়ের মধ্যে পাকিবাহিনীকে কাবু করতে সমর্থ হয়। একটি সুসজ্জিত এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলারা যে প্রতিরোধ গড়ে তোলে তা সত্যিই ছিল নজিরবিহীন ঘটনা। 

গেরিলাদের ইস্পাত কঠিন মনোবল এবং সার্বিক জনতার অংশগ্রহণে মাত্র ৯ মাসের মাথায় বাঙালি জাতি স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করে ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ গেরিলা যুদ্ধ কি | গেরিলা যুদ্ধ কি ব্যাখ্যা করো

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গেরিলা যুদ্ধ কি | গেরিলা যুদ্ধ কি ব্যাখ্যা করো । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ