অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর | অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বুঝ

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর | অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বুঝ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর | অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বুঝ ।

অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর  অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বুঝ
অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর  অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বুঝ

অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর | অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বুঝ

  • অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বোঝ? 
  • অথবা, অপারেশন সার্চলাইট কি?
  •  অথবা, অপারেশন সার্চলাইট সংক্ষেপে আলোচনা কর । 

উত্তর : ভূমিকা : ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন হলেও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে না দিয়ে কূটকৌশল অনুসরণ করেন। 

ফলে বাঙালি জাতি স্বায়ত্তশাসন থেকে ক্রমশ স্বাধীনতার দিকে ঝুঁকে পড়ে। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভকারী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে। 

এরূপ পরিস্থিতি সরকার গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাঙালি হত্যার এক নীলনকশায় প্রণয়ন করে। অপারেশন সার্চলাইট নামক নীল নকশায় বলি হয় হাজার হাজার নিরস্ত্র নিরীহ বাঙালি ।

→ অপারেশন সার্চলাইট : বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন কায়েম করার জন্য পাকিস্তানি সেনারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক সরকারের নির্দেশে যে ঘৃণ্য, বর্বর নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করেছিল সেই সামরিক অভিযানকে অপারেশন সার্চলাইট বলে ।

মার্চ এ → বিস্তৃত আলোচনা : ১৯৭১ সালের ২৫ অপারেশন সংঘটিত হলেও মূলত মার্চের প্রথম থেকে এর প্রস্তুতি চলতে থাকে । একদিকে ১৬ মার্চ থেকে সহযোগিতার বৈঠক শুরু হয়। 

অন্যদিকে জেনারেল টিক্কা খান মে. জে খাদিম হোসেন এবং রাও ফরমান আলী অপারেশন সার্চলাইটের নকশা চূড়ান্ত করেন। 

১৯ মার্চ থেকে পূর্ব-বাংলার ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যদের নিরস্ত্র করা শুরু হয়। একই দিনে জয়দেবপুরে বাঙালি সৈন্যদের নিরাস্ত্র করতে গেলে সংঘর্ষ বাঁধে। 

৭ মার্চ অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ জারি করে এবং জেনারেল হামিদ ক্যান্টনমেন্ট হতে ক্যান্টনমেন্টে ঘুর-ঘুর শুরু করেন। ২০ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দরে এম ভি সোয়াত থেকে অস্ত্র ও রসদ খালাস শুরু হয় । 

সব প্রস্তুতি শেষে ২৫ মার্চ গণহত্যার জন্য বেছে নেয়া হয় । মেজর জেনারেল রাও ফরমানকে ঢাকা শহরের মূল দায়িত্ব দেয়া হয়। অন্যদিকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে গণপরিষদের অধিবেশন আহ্বান করা হয়। 

এর পূর্বে পাকিস্তানি শাসক ইয়াহিয়া খান এক শাসনতান্ত্রিক আলোচনার জন্য ৫ মার্চ রাত ঢাকায় আসনে এবং ১৬ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ আলোচনায় বসে। 

অর্থাৎ একদিকে অভিযান প্রস্তুতি অপরদিকে আলোচনা দুটি একই সাথে চলতে থাকে । শেষ পর্যন্ত আলোচনা ব্যর্থ হলে ইয়াহিয়া খান ঐদিন ঢাকা ত্যাগ করেন কিন্তু সামরিক বাহিনীকে গোপনে নির্দেশ দিয়ে যান সামরিক অভিযান চালাতে। 

ফলে ২৫ মার্চ রাত ১০ টায় শুরু হয় ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড। সাংবাদিক ম্যান্থনি ম্যাসকারেনহাস এই ঘটনাকে বিশ্ব শতকের ঘৃণ্যতম প্রবঞ্চনা বলে আখ্যায়িত করেছেন। 

ঐদিন পাক সেনাবাহিনীর ব্যাটেলিয়ান সৈন্য ট্যাংক, মেশিনগান, মর্টার নিয়ে নিরস্ত্র অবস্থায় বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং অসংখ্য নর-নারী শিশু যুবক হত্যা করে । উদ্দেশ্য ছিল দেশের নেতৃবৃন্দ, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র-যুবক নির্মূল করা আর বাঙালি জাতিকে ক্রীতদাসে পরিণত করা। 

শুধু ঢাকাতেই সে রাতে প্রায়। ৫০ হাজার নর-নারী নিহত হয়। পাকবাহিনীর প্রথম লক্ষ্যবস্তু ছিল জহিরুল হক হল, জগন্নাথ হল, পিলখানাস্ত তৎকালীন ই পি আর ব্যারাক ও রাজারবাগ পুলিশ লাইন প্রভৃতি স্থান। 

ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। বন্দি হবার পূর্বে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । আর ১৯৭১ সালের সেই কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যা ধ্বংসযজ্ঞকে ইতিহাসে অপারেশন সার্চলাইট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্বিচারে গণহত্যা বিশ্বের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়ের সংযোগ করে। 

বিশ্বের স্বাধীনতাকামী সাধারণ জনতাকে এরূপ হত্যার নজীর খুব কমই দেখেছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা সরকার আলোচনায় ব্যর্থ হয়ে বাঙালিকে দমন করার নিমিত্তে সামরিক অভিযানের নামে যে গণহত্যা চালিয়েছিল তা ঢাকা শহরকে মৃত্যুকূপে পরিণত করেছিল। 

এ অভিযানের মাধ্যমে খুঁজে খুঁজে নির্বিচারে সাধারণ জনগণতে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভিক মুহূর্তে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যামূলক সামরিক অভিযানের নামই অপারেশন সার্চলাইট।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর | অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বুঝ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম অপারেশন সার্চলাইট কি ব্যাখ্যা কর | অপারেশন সার্চলাইট বলতে কি বুঝ । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ