স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মূল বক্তব্য কি ছিল

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মূল বক্তব্য কি ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মূল বক্তব্য কি ছিল ।

স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মূল বক্তব্য কি ছিল
স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মূল বক্তব্য কি ছিল

স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মূল বক্তব্য কি ছিল

উত্তর : ভূমিকা : মেহেরপুর জেলার বৈধ্যনাথতলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় যা মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত । মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা অবিস্মরণীয় । 

তবে মুজিবনগর সরকারের কৃতিত্ব নির্বাচিত সদস্য সংখ্যা ছিল ১৬৭ জন। বিশ্বে যে কটি দেশ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দিয়ে যুদ্ধ করেছিল বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। 

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে মূলত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণার কারণ এবং গণপরিষদ গঠনের কথা বিশদভাবে তুলে ধরা হয়। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে পুঁজি করে বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় এবং মুক্তিযুদ্ধ সাংগঠনিক রূপ পায় ।

→ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূল বক্তব্য : অধ্যাপক ইউসুফ আলী কর্তৃক গঠিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে যুদ্ধ ঘোষণার কারণ এবং যুদ্ধকালীন সরকারের গঠন সম্পর্কিত তথ্যাদি তুলে ধরা হয় । নিম্নে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূলবক্তব্য তুলে ধরা হলো :

নিয়ে স্বাধীনতার

১. স্বাধীনতা ঘোষণার কারণ : স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূল বক্তব্যে বলা হয় ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়েছিল দেশের শাসনতন্ত্র প্রণয়নের জন্য। 

যার মধ্যে ১৬৯ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগের গণপরিষদ গঠন করার কথা এরই প্রেক্ষিতে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ গণপরিষদের অধিবেশনের আহ্বান করেন। 

কিন্তু ১ মার্চ এক বেতার ভাষণে ইয়াহিয়া খান আহুত পরিষদ সভা স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। 

পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার পরিবর্তে এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় একটি অন্যায় ও বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করে। 

তাই এরূপ বিশ্বাসঘাতকতার আচরণের পরিপেক্ষিতে বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রতিনিধি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের আইনানুগ আধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করেন এবং বাংলাদেশের মানুষকে বাংলাদেশের সম্মান ও সংহতি রক্ষার আহ্বান জানান। এ পটভূমিকায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বঙ্গবন্ধুর সেই ঘোষণাকে অনুমোদন করেছে।

২. গণপরিষদ গঠনের কারণ : স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের আরেকটি বিষয় ছিল গণপরিষদ গঠনের কারণ সংক্রান্ত। 

এই ঘোষণাপত্রে গণপরিষদ গঠন সম্পর্কে বলা হয়, পাকিস্তানি বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে বর্বর ও নৃশংস যুদ্ধ পরিচালনা করেছে এবং এখানে বাংলাদেশে বেসামরিক ও নিরস্ত্র জনগণের বিরুদ্ধে নজীরবিহীন গণহত্যা ও নির্যাতন চালাচ্ছে এবং পাকিস্তান সরকার অন্যায় যুদ্ধ, গণহত্যা ও নানাবিধ নৃশংস অত্যাচার পরিচালনা দ্বারা বাংলাদেশের গণপ্রতিনিধিদের একত্রিত হয়ে শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা অসম্ভব করে তুলেছে । 

কিন্তু বাংলাদেশের বীর সন্তানগণ তাদের সাহস বীরত্ব ও বিপ্লবী চেতনার মাধ্যমে বাংলাদেশের উপর কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে । তাই আমরা যারা বাংলাদেশের জনগণ আমাদের উপর যে গুরু দায়িত্ব ন্যস্ত করেছে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলনে আমরা একটি গণপরিষদ গঠন করলাম ।

৩. গণপরিষদের গঠন বিন্যাস : স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে গণপরিষদ গঠনের কারণের পাশাপাশি গণপরিষদের গঠন ও কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। 

এতে বলা হয় যে পর্যন্ত না একটি সংবিধান প্রণয়ন করা হয় সে পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরাষ্ট্রপতি থাকবেন এবং রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে সরকারের সশস্ত্র বাহিনীসমূহের সর্বাধিনায়ক থাকবেন এবং তিনি রাষ্ট্রে সমুদয় নির্বাহী ও রাষ্ট্রীয় অন্যান্য ক্ষমতাসহ ক্ষমা প্রদানের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন। 

তিনি প্রধানমন্ত্রী ও প্রয়োজনে অন্যান্য মন্ত্রিকেও নিয়োগ করতে পারবেন। তিনি কর ধার্য ও রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয় করতে পারবেন। তিনি গণপরিষদ আহ্বান ও মুলতবি ঘোষণা করতে পারবেন। এ ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয় । 

রাষ্ট্রপতির অবর্তমানে উপরাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতির সকল দায়িত্ব পালন করবেন। বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু সরকার গঠনের প্রয়োজনে তিনি যেকোনো কাজ করতে পারবেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ছিল মূলত মুক্তিযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার দলিল । 

এ ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে স্বাধীনতা ঘোষণার কারণ তুলে ধরা হয় এবং একই সাথে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণাকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। 

এর পাশাপাশি এই ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করার জন্য একটি যুদ্ধকালীন সরকার গঠনের কারণ চিহ্নিত করা হয় এবং সেই সরকারের রূপরেখার কি হবে সে বিষয়েও অভিহিত করা হয়। এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব অর্পণ করা হয় এবং যাবতীয় ক্ষমতা তাকে প্রদান করা হয় । 

যদিও তার অবর্তমানে এ দায়িত্ব উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অর্পণ করা হয়। অর্থাৎ স্বাধীনতা ঘোষণার কারণ ও স্বীকৃতি এবং গণপরিষদ গঠন প্রভৃতি ছিল এ ঘোষণাপত্রের মূলকথা।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মূল বক্তব্য কি ছিল

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মূল বক্তব্য কি ছিল । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ