পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর ।

পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর
পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর

পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর।

  • অথবা, পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর ।
  • অথবা, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে সামরিক আমলাতন্ত্রের কি প্রভাব ছিল? আলোচনা কর । অথবা, পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থায় সামরিক আমলাদের প্রভাব আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : পাকিস্তানের মতো বহু ভাষাভাষী এবং ভিন্ন সংস্কৃতির অধিকারী ও ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন নাগরিকদের মধ্যে ঐক্য সুদৃঢ় করতে হলে তাদের মধ্যে “এক জাতি একরাষ্ট্র” এ চেতনাবোধ সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয়তা ছিল। আর তা সম্ভব ছিল পাকিস্তানের দুই অংশের নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক মমত্ববোধ ও সহানুভূতি সৃষ্টি করে। একের সমস্যা অন্যের অনুধাবন করার মানসিকতা অর্জনের মাধ্যমে। কিন্তু নতুন রাষ্ট্রের যাত্রালগ্নেই ঘটে এক অংশের প্রতি অন্য অংশের অবিশ্বাস ও সন্দেহ। এ সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করার জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে তারা অস্বাভাবিক আমলাতান্ত্রিক প্রভাব বিস্তার করে। তারা সামরিক ও বেসামরিক উভয় বিভাগেই প্রভাব বিস্তার করে পাকিস্তানি শাসনামলের সামরিক ও বে-সামরিক আমলাতান্ত্রিক প্রভাব আলোচনা করা হলো :

→ সামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব : পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী অস্বাভাবিক প্রভাব বিস্তার করে। নিচে সামরিক আমলাতান্ত্রিক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. সুশৃঙ্খল সামরিক আমলাতন্ত্র : পাকিস্তান ব্রিটিশদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে এক সুশৃঙ্খল আমলাগোষ্ঠী লাভ করে। ব্রিটিশ আমলে এ আমলা গোষ্ঠীই ছিল প্রশাসনের সকল ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিল আমলাগোষ্ঠী। পাকিস্তান সৃষ্টির পর এর আমলাশ্রেণি প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী হয় এবং তারা সর্বক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে।

২. পাকিস্তানি সিভিল সার্ভিস : ১৯৪৭ সালে মুসলমান ICS অফিসারদের এক-তৃতীয়াংশ ছিলেন পাঞ্জাবি, অবশিষ্টরা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আগত অবাঙালি রিফুজি মুসলমান। আর এদের নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস। তারা পাকিস্তান প্রশাসনের উচ্চতম পদগুলো দখল করেন। স্বভাবতই স্বাধীনতার সূচনালগ্নেই পাকিস্তান প্রশাসনে অবাঙালি মুসলমানদের একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করে। ১৯৪৭ এরপর ১৫ জন | প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসের সদস্যকে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এখানেও পশ্চিম পাকিস্তানি আমলাদের প্রভাব অক্ষুণ্ণ থাকে। এখানে ১৫ জনের মধ্যে বাঙালি ছিলেন। | মাত্র ৪ জন। বাঙালির পরিবর্তে বাঙালিদের প্রভাব অক্ষুণ্ণ থাকে ।

৩. রাজনীতিতে প্রভাব : আইয়ুব খান ছিলেন একজন সরকারি আমলা। তিনি ক্ষমতা দখল করে প্রকাশ্যে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন। তিনি মৌলিক গণতন্ত্রের নামে প্রকৃত গণতন্ত্রকে হত্যা করেন। মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেন। এভাবে সামরিক উর্দি পরে রাষ্ট্রের কেন্দ্রবিন্দুতে বসে ব্যাপকভাবে সামরিক আইন জারি করেন।

৪. সামরিক শাসনে সামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব : পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারির পর প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সামরিক আমলাদের প্রভাব ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। সামরিক শাসনের ১৯৪৪ সালে ৭৯০ জন জুনিয়র গ্রেড কর্মচারী নিয়োগ করা হয়। যার মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের ছিল মাত্র ১২০ জন। ১৯৫৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ১৯৬০ সালের মে মাস পর্যন্ত ৯ মাসে ৭৩৪ জন সেকশন অফিসার নিয়োগ করা হয়। যার মাত্র ৭৪ জন পূর্ব পাকিস্তানের। ১৯৫৯-১৯৬৩ সময়কালে রাওয়াল পিন্ডিস্থ কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের ...৩১৫ জন কেরানি নিয়োগ করা হয়। এর মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানি ছিল মাত্র ৩৬ জন ১১%। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৩ সময়কালের মধ্যে ১৪ জন সামরিক কর্মকর্তাকে বেসামরিক প্রশাসনে নিয়োগ দেয়া হয়। তারা সকলেই ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি অর্থাৎ পাকিস্তানি প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করেন যেসব সামরিক কর্মকর্তা তাদের অধিকাংশই পশ্চিম পাকিস্তানি ।

৫. প্রতিরক্ষা বিভাগে প্রভাব বিস্তার : প্রতিরক্ষা বিভাগের সকল শাখার সদর দপ্তর ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। প্রতিরক্ষা ট্রেনিং ইনস্টিটিউটগুলোও ছিল সেখানে। প্রতিরক্ষা বিভাগে নাম লেখাতেই চলে যেতে হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। ১৬ থেকে ২০ বা ২২ বছর মাতৃভূমি ছেড়ে হাজার মাইল দূরে যাওয়ার আগ্রহ খুব কম পূর্ব পাকিস্তানির ছিল। আবার ইচ্ছা থাকলেও প্রতিরক্ষা সার্ভিসে নিয়োগ লাভ বাঙালিদের জন্য ছিল বেশ কঠিন। রিক্রুটিং বোর্ডগুলো গঠিত ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের নিয়ে। তারা সহসা বাঙালিদের অফিসার পদে নিয়োগ দিত না। এমনকি জোয়ান পদে নিয়োগের জন্য যে দৈহিক মাপ ও গঠন নির্ধারণ করা হয়েছিল তা খুব কম বাঙালির ছিল । ফলে প্রতিরক্ষা বিভাগে একমাত্র প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পায় পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক আমলারা। তারা দেশের ভালো- মন্দের কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে ইচ্ছামতো অনেক সিদ্ধান্ত নিত ।

৬. সেনা বাহিনী : তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক আমলাদের মধ্যে যারা সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করে তাদের মধ্যে সবার আগে যাদের নাম আসে তারা হলো সেনাবাহিনী। আর এ সেনাবাহিনী ছিল প্রতিরক্ষা বিভাগের অধীনে যেখানে বাঙালিদের খুব কমই করি দেওয়া হতো। ১৯৬৬ সালে দেখা যায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে মোট ১৭টি উচ্চপদস্থ সামরিক পদের মধ্যে সেনাবাহিনীর জেনারেল ২টি লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও ১৪টি মেজর জেনারেলের মধ্যে মেজর জেনারেল পদে ছিলেন মাত্র একজন বাঙালি। সামরিক অফিসারদের মধ্যে ৫% ছিলেন বাঙালি আর বাকি ৯৫% ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি। শুধু অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে না সাধারণ সৈনিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও বাঙালিদের সুযোগ ছিল সীমিত। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ৫০,০০০ সদস্যের মধ্যে বাঙালি ছিলেন মাত্র ২০,০০০ এরই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানি প্রশাসনে একচ্ছ আধিপত্য বিস্তার করার সুযোগ পায় পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক আমলারা।

৭. নৌবাহিনী : নৌবাহিনীতে ১৯% টেকনিক্যাল লোক ছিল বাঙালি এবং বাকি ৮১% ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি। নন টেকনিক্যাল লোকের মধ্যে বাঙালি ছিলেন ৯%।

৮. বিমানবাহিনী : ফলে পশ্চিম বিমানবাহিনীতে প্রশাসনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাঙালিদের প্রতি সংকীর্ণতা গ্রহণ করা হয়। এ বাহিনীতে মাত্র ১১% বাঙালি পাইলট অফিসার এবং ১.৭% বাঙালি টেকনিশিয়ান ছিলেন। পাকিস্তান এয়ার লাইন্সের মোট ৭২৮০ জন লোকের মধ্যে বাঙালি ছিলেন মাত্র ২৮০ জন এবং পি.আই এর ১০ জন পরিচালকের মধ্যে মাত্র ১ জন ছিলেন এবং ৫ জন এরিয়া ম্যানেজারের সবাই ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি। পাকিস্তান এয়ার লাইন্সের ১০৩ জন বিমানবালার মধ্যে মাত্র ৪ জন ছিলেন বাঙালি পাকিস্তানি বিমানবাহিনীতেও আমলারা প্রভাব বিস্তার করতে থাকে ।

৯. পশ্চিম পাকিস্তানি আমলাদের সরকারের তোষামোদ : বেসামরিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা প্রথা ও অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে বর্ধিত বাঙালি নিয়োগ করার ব্যাপারটি সম্ভবপর করে তুললেও সামরিক বাহিনীতে অনুরূপ নীতি না থাকায় সেক্ষেত্রে বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব ছিল খুবই সামান্য। উল্লেখ্য সেনাবাহিনীতে পাঞ্জাবি আধিপত্য নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীতে প্রাদেশিক কোটা নির্ধারণ করা হয়। এতে ৬০% পাঞ্জাবি, ৩৫% পাঠান এবং বাদবাকি ৫% পশ্চিম পাকিস্তান ও অন্যান্য এলাকা ও পূর্ব পাকিস্তান থেকে নিয়োগ করার বিধান চালু করা হয় ।

→ বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব : পাকিস্তানি শাসনতান্ত্রিক | ইতিহাসে বেসামরিক আমলারাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। নিম্নে বেসামরিক আমলাতান্ত্রিক প্রভাব আলোচনা করা হলো-

১. প্রশাসনিক কাঠামোর অবাঙালি বেসামরিক আমলাদের প্রভাব : রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক কাঠামোর বিভিন্ন শাখা প্রশাখায় অবাঙালিদের কতখানি আধিপত্য ছিল তা বুঝা যায় নিয়োগের ক্ষেত্রে। পাকিস্তান সরকারের ১৯৫০ সালের ৬ অক্টোবর এক আদেশে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে কোটা পদ্ধতি প্রবর্তনের আদেশ জারি করেন। এই আদেশে নতুন চাকরির ক্ষেত্রে মেধা যাচাইয়ের পাশাপাশি আঞ্চলিক কোটা সংরক্ষণেরও গুরুত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এই আদেশে সত্ত্বেও প্রশাসনিক পদে পশ্চিম পাকিস্তানি ও পাঞ্জাবিদের প্রভাব বাড়াতেই থাকে। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ৪২,০০০ কর্মচারী কর্মকর্তার মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানিদের সংখ্যা ছিল মাত্র ২,৯০০ এবং তারা অধিকাংশ ছিলেন নিম্নপদস্থ।

২. গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক পদে পশ্চিম পাকিস্তানি আমলা। নিয়োগ : ১৯৬৫ সালে দুজন বাঙালিকে প্রথমবারের মতো ন জাতীয় পরিষদ সচিবালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত ধু সচিব করা হয়। ১৯৬৬ সালে ৬-দফাভিত্তিক আন্দোলন শুরু হলে আরও চারজন বাঙালিকে সচিব নিযুক্ত করা হয়। তবে এবার বাঙালিদের স্বরাষ্ট্র, অর্থ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক, পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদে নিযুক্ত করা হয়নি। পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি কর্তৃত্ব বজার রাখার জন্য এখানে উচ্চ পদের সিংহভাগই পশ্চিম পাকিস্তানিদের নিযুক্ত করা হয়। সম্পদের ভাগাভাগিতে বাঙালিদের অধিকার সম্বন্ধে যেন কেউ কোনো কথা বলতে না পারে এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হতো না। আর এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে বেসামরিক পশ্চিম পাকিস্তানি আমলা প্রভাব বিস্তার করতো।

৩. অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে পাকিস্তানি আমলা : বেসামরিক | উচ্চপদে বাঙালি প্রতিনিধি যেমন কম ছিল, তেমনি এ কারণে তাদের প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতাও কম ছিল। বেসামরিক আমলার হিসাব পরিবারে হয়ে যায় যে ১৩টি কর্পোরেশনের মধ্যে মাত্র একটির চেয়ারম্যান ছিলেন বাঙালি। অন্যদিকে ১৯৬৩ সালের এক হিসাব অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মাত্র ৩.৪% বাঙালি নিযুক্ত ছিলেন। পাকিস্তান রেলওয়ের ৮ জন বোর্ড ডিরেক্টরের মধ্যে মাত্র ১ জন ছিল বাঙালি । রেডিও পাকিস্তান-এর ২০ জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার মধ্যে ১৯ জনই ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি এবং মাত্র ১ জন ছিলেন বাঙালি। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি এবং এসব বিভাগের সদর | দপ্তরগুলো ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। কেন্দ্রীয় আমদানি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের ৮৯ জন এক্সিকিউটিভ অফিসারের মধ্যে মাত্র ১৬ জন ছিলেন বাঙালি এবং ৪৫ জন সহকারী আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের মধ্যে বাঙালি ছিলেন মাত্র ১৫ জন। এসব ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানি বেসামরিক আমলাদের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ কম থাকায় পশ্চিম পাকিস্তানিরা প্রভাব বিস্তার করতো।

৪. বিদেশে পশ্চিম পাকিস্তানি আমলাদের প্রভাব : বিদেশেও পশ্চিম পাকিস্তানি বেসামরিক আমলাদের প্রভাব বজায় ছিল। বিদেশে পাকিস্তানি মিশনগুলোতে ৮৫% কর্মচারী ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি এবং ১৫% পূর্ব পাকিস্তানি। বিদেশে পাকিস্তানের ৬৯ জন রাষ্ট্রদূতের মধ্যে ৬০ জন দূত ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানি। ১০৪ জন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তার মধ্যে ৩০ জন ছিলেন বাঙালি । দ্বিতীয় শ্রেণির নন-গেজেটেড ২০৪ জনের মধ্যে বাঙালি ছিলেন ৫৫ জন। প্রশাসনিক সব কিছু পশ্চিম পাকিস্তানে থাকায় তাদের আধিপত্য বেশি ছিল । তাই দেখা যায় সামরিক আমলাদের মতো বেসামরিক আমলারাও পশ্চিম পাকিস্তানের অধিকসংখ্যক হওয়ায় তারা পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থায় যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেন। আর তারা কৌশলে সামরিক ও বেসামরিক আমলারা কৌশলে পূর্ব পাকিস্তানের উপরও প্রভাব বিস্তার করতে থাকে যাতে বাঙালিরা শাসন কেন্দ্রিক বিষয়গুলোতে জড়িত না হয় ।

উপসংহার : পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থায় পশ্চিম পকিস্তানি আমলা তথা সামরিক ও বেসামরিক আমলারা প্রভাব বিস্তার করে। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক শ্রেণিরাও চেয়েছিলেন বাঙালি জাতিকে সরকারি ও সামরিক কাজের থেকে দূরে রেখে স্বার্থ হাসিল করতে। যাতে পূর্ব বাংলার জনগণ শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করতে না পারে । আর প্রশাসনিকভাবে এ বিভাগগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যাতে বাঙালি চাইলেও সে পদে যেতে না পারে। তাই পশ্চিম পাকিস্তানি আমলারা রাষ্ট্রের ভালো-মন্দ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক ইতিহাসে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব বর্ণনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ