১৯৬২ সালে সংঘটিত হওয়া সংবিধান বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে যা জান লিখ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ১৯৬২ সালে সংঘটিত হওয়া সংবিধান বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে যা জান লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ১৯৬২ সালে সংঘটিত হওয়া সংবিধান বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে যা জান লিখ ।

১৯৬২ সালে সংঘটিত হওয়া সংবিধান বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে যা জান লিখ
১৯৬২ সালে সংঘটিত হওয়া সংবিধান বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে যা জান লিখ

১৯৬২ সালে সংঘটিত হওয়া সংবিধান বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে যা জান লিখ

উত্তর : ভূমিকা : ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান পাকিস্তানে সামরিক আইন প্রতিষ্ঠা করার পর পাকিস্তানে ভয়ানক অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছিল। তার শাসনামলে রাজনৈতিক দলসমূহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকে। দুর্নীতি দমনের অন্তরালে আইয়ুব খান পাকিস্তানে নিজ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করার মিথ্যা প্রয়াস চালায়। আর পাকিস্তান যখন একেবারে সরকার পক্ষের দখলে চলে যায় তখন আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ, সাংবাদিক, লেখক সকলে ক্ষোভে আক্রোশে পরোক্ষভাবে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। সোহরাওয়ার্দী গ্রেফতারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলনের সূচনা ঘটে সেটি ছিল প্রথম প্রত্যক্ষ এবং প্রকাশ্য আন্দোলন । এ আন্দোলনের পরপরই আইয়ুব প্রণীত সংবিধান বিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।

১৯৬২ সালের সংবিধানবিরোধী আন্দোলন : ১৯৬২ সালের আইয়ুব প্রণীত সংবিধানের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল তা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো :

১. নতুন সংবিধান প্রণয়ন : আইয়ুব খান পাকিস্তানের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সাথে সাথে পুরাতন সংবিধান নাকচ করে নতুন সংবিধান চালু করেন এবং তার সিদ্ধান্ত আপামর জনসাধারণের উপর চাপিয়ে দেয়। ১৯৬২ সালের ১ মার্চ পাকিস্ত ানে এই দ্বিতীয় সংবিধান, ঘোষণা করা হয়েছিল। আর উক্ত সংবিধান চালু করা হয়েছিল ১৯৬২ সালের ৮ জুন থেকে।

২. জনগণের দাবির প্রতি অশ্রদ্ধা : পাকিস্তানে দ্বিতীয় সংবিধান চালু করার পর থেকে দেশের আপামর জনসাধারণের মৌলিক অধিকারগুলোকে চরমভাবে উপেক্ষা করা হয়। তাদের সকল দাবি দাওয়ার প্রতি অশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আইয়ুব খান নিজস্ব অভিমতকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছিলেন। এটি ছিল আইয়ুব খানের মস্তিষ্কপ্রসূত সংবিধান।

৩. জনগণের ভোটাধিকার সংরক্ষণ : দ্বিতীয় সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী পাকিস্তানের আপামর জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ভোটদানের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হলে আইয়ুব খান নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করতে অনেক ধরণের বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়। আর তাই তিনি প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটদানের অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন।

৪. মৌলিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা : জনগণের ভোটাধিকার লুপ্ত করে তিনি মৌলিক গণতন্ত্রী নামক নতুন এক শ্রেণি সৃষ্টি করেছিলেন। উক্ত শ্রেণি আইয়ুব খানের স্বার্থ রক্ষার রসদ ছাড়া আর কিছুই ছিল না। শাসকগোষ্ঠীর তল্পীবাহক হিসেবেই মৌলিক গণতন্ত্রী দলের নেতারা দায়িত্ব পালন করতেন ।

৫. ছাত্র সমাবেশের সূত্রপাত : দ্বিতীয় সংবিধানের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ বিক্ষুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন সভা, বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশের আহ্বান জানায়। পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র সমাজ এক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। উক্ত সমাবেশ থেকে বহু ছাত্রনেতা গ্রেফতার হয়েছিল। ক্লাশ বর্জন করে ছাত্র সমাজ উক্ত সংবিধানের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছিল।

৬. প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন বয়কটের চেষ্টা : দ্বিতীয় সংবিধানের আওতায় ১৯৬২ সালের ২৮ এপ্রিল জাতীয় পরিষদের এবং ৬ মে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছাত্র সমাজ উক্ত নির্বাচনদ্বয়কে বাতিল করার উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের আহ্বান জানায় কিন্তু ছাত্র সমাজের এই আহ্বানে রাজনৈতিক নেতা কর্মীরা কোনো সাড়া দেননি।

৭. ছাত্রদের কারামুক্তি : অবশেষে ছাত্র সমাজের আহ্বানে সাড়া না দিলেও কিছু নেতাকর্মীদের প্রচেষ্টায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর গ্রেফতারকৃত ছাত্ররা মুক্তি পায় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আইয়ুব খানের গভীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজই প্রথম সোচ্চার কণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। আর তারই একটি বহিঃপ্রকাশ আইয়ুব খান প্রণীত দ্বিতীয় সংবিধানের বিরুদ্ধে আন্দোলন। এই আন্দোলন বাঙালি জাতি তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অধিকার আদায়ের আন্দোলন। উক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানিরা আইয়ুব খানের জন্য চক্রান্তকে ব্যর্থ করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করার সাহস পেয়েছিল।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ ১৯৬২ সালে সংঘটিত হওয়া সংবিধান বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে যা জান লিখ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ১৯৬২ সালে সংঘটিত হওয়া সংবিধান বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে যা জান লিখ । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ