টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ  টি।

টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ
টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ

টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ

উত্তর ভূমিকা : আব্দুর রহমান আল গাফিকি ৭৩২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে অভিযান পরিচালনা করে টুরস বা পয়টিয়ার্সের যুদ্ধে সম্মিলিত খ্রিস্টানদের নিকট পরাজিত ও নিহত হন। টুরসের যুগসন্ধিক্ষণকারী যুদ্ধ স্পেন তথা মুসলমানদের ইতিহাসে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ যুদ্ধের ফলে মুসলিম বাহিনীর ভাগ্যে এক ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে ।

→ টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ : টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের পেছনে অনেক কারণ ছিল । নিম্নে কারণগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. স্বল্পসংখ্যক মুসলিম সৈন্য : টুরসের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল খুবই অল্প। এ স্বল্প সৈন্য নিয়ে বিশাল খ্রিস্টান সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করতে মুসলিম বাহিনী ব্যর্থ হয় ।

২. শৃঙ্খলার অভাব : মুসলিম বাহিনীর মধ্যে কোনো ঐক্য ও শৃঙ্খলা ছিল না। তাদের মধ্যে নানান জাতির সৈন্য থাকলেও তারা একত্রিত হয়ে আক্রমণ পরিচালিত করতে পারে নাই ।

৩. মুসলিম সেনাদের লোভ : মুসলিম বাহিনী যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক সে সময় মুসলিম সৈন্যরা গনিমতের মাল সংহার করার জন্য তাদের অবস্থান থেকে সরে যায়। আর এ সুযোগে খ্রিস্টান বাহিনী কাঁধে কাঁধ রেখে মুসলিম বাহিনীর উপর দুর্ধর্ষের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। গনিমতের মাল সংগ্রহের লোভ মুসলিম বাহিনীর পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল।

৪. গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা : আব্দুর রহমান আল গাফিকির গুপ্তচর বাহিনী তাকে খ্রিস্টান বাহিনীর প্রকৃত শক্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে চরম ব্যর্থ হয়। তাই আব্দুর রহমান শত্রু বাহিনীর প্রকৃত ক্ষমতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে না পেরে শুধু একদিক দিয়ে আক্রমণ করে বসে। গুপ্তচর বাহিনীর এ ব্যর্থতা মুসলিম বাহিনীর পরাজয়ের প্রধান কারণ । বহুজাতিক খ্রিস্টান বাহিনী চার্লস বেলজিয়াম, জার্মানিসহ প্রায় সমগ্র ইউরোপের সাহায্য ও সহযোগিতা লাভ করে ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় করে মুসলিম বাহিনীর মোকাবিলা করে। এতে তার শক্তি বহু গুণ বৃদ্ধি পায়। এটাও মুসলিম বাহিনীর পরাজয়ের আর একটি কারণ ছিল।

৫. মুসলিম বিশ্বের অসহযোগিতা : দামেস্ক, মিশর, উত্তর আফ্রিকা ও স্পেন থেকে আব্দুর রহমান আল গাফিকি কোনো সাহায্য পায়নি। কাজেই মুষ্টিমেয় সৈন্য নিয়ে তিনি খ্রিস্টানদের সম্মিলিত বাহিনীর সাথে লড়াই করে পরাজিত ও নিহত হন।

৬. খ্রিস্টানদের অস্তিত্বের লড়াই : খ্রিস্টান জগৎ মুসলিম বাহিনীর এ অগ্রযাত্রাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে তাদেরকে ধ্বংস সাধন করতে বদ্ধপরিকর হয় এবং একত্রিত হয়ে মুসলিম বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। এ যুদ্ধকে তারা নিজেদের অস্তিত্বের লড়াই হিসেবে দেখে। কাজেই নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তারা মরণ পণ যুদ্ধ করে ফলে মুসলমানদের পরাজয় হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মুসলমানদের দুর্বলতা ও ভুলের কারণে এ যুদ্ধে তাদের পরাজয় ঘটে। টুরসের যুদ্ধের পর থেকে ৭৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময় স্পেনে এক মারাত্মক আত্মকলহ ও গৃহযুদ্ধের অবস্থা বিরাজমান ছিল। আধুনিক যুগের ঐতিহাসিকগণ ইসলাম ও খ্রিস্টান জগতের মধ্যে সংঘটিত এ নিষ্পত্তিকর যুদ্ধটির উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং খ্রিস্টান জগৎ ও পাশ্চাত্যের জাতিসমূহের ভাগ্য পরিবর্তনে এ যুদ্ধের ব্যাপক ও সুদৃঢ়প্রসারী ফলাফলের প্রতি ইঙ্গিত প্রদান করেছেন ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম টুরসের যুদ্ধে মুসলমানদের পরাজয়ের কারণ  টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ