আব্বাসীয় বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আব্বাসীয় বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আব্বাসীয় বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

আব্বাসীয় বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর
আব্বাসীয় বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর

আব্বাসীয় বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর

উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় খেলাফতের ১০০ বছর পর শাসকদের দুর্বলতা বিলাসিতাসহ বিভিন্ন প্রকার অযোগ্যতার প্রভাবে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যে উত্তর অঞ্চলে তুর্কিদের প্রভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশ এবং পারস্যদের প্রভাবে পূর্বাঞ্চলে 'ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র  রাজবংশ গড়ে ওঠে। 

এই রাজবংশগুলো গড়ে তোলে আব্বাসীয় খেলাফতের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ। তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীন এবং কেউ কেউ পরাধীন অর্থাৎ কেন্দ্রীয় খলিফাদের প্রতি অনুগত থেকে রাজ্যশাসন করতেন।

→ পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশ ও তাদের সাথে সম্পর্ক : নিম্নে আব্বাসীয় | বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক আলোচনা করা হলো :

১. তাহিরি রাজবংশ : ৮২০ সালে তাহিরি রাজবংশের প্রতিষ্ঠিত করেন তাহির ইবনে হুসাইন। এদের রাজধানী ছিল নিশাপুরে। আব্বাসীয় খলিফা মামুন ও আমিনের গৃহযুদ্ধের ফলে তাহির কর্তৃক মামুনের সেনাপতি হয়ে আমিনকে পরাজিত করার ফলে খলিফা মামুন তাহিরকে খোরাসানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। তাহির খোরাসানের শাসনভার গ্রহণ করে নিজ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাহিরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন ।

→ খলিফাদের সাথে সম্পর্ক : 

(ক) রাজস্ব ও উপঢৌকন প্রদান করতেন। 

(খ) খুৎবায় নাম পাঠ করলেও খলিফাদের প্রতি অনুগত ছিলেন। 

(গ) নিজেদেরকে খলিফা বলে দাবি না করা ।

২. সাফফারি বংশ : আব্বাসীয় খিলাফতের পূর্বাঞ্চলের সাফফারি রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ইয়াকুব সাফফারি। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল ইয়াকুব বিন আল লায়েস। তিনি সিজিস্তানে ও দস্যুর দলের নেতা হিসেবে দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। যার ফলে তাহাকে সিজিস্তানের শাসক ও পরবর্তীতে তাকে সেখানকার গভর্নর নিযুক্ত করা হয়।

→ খলিফাদের সাথে সম্পর্ক : আব্বাসীয় খলিফা সাফফারি বংশের শক্তি বৃদ্ধিতে শংকিত হয়ে পড়েন, যার জন্য সামানি বংশের ইসমাঈলকে সাফফারি রাজ্য আক্রমণ করার জন্য প্রেরণ করেন। তাই এই বংশের পরাজয় ঘটে। এই রাজবংশ ৩৫ বছর স্থায়ী ছিল।

(ক) খলিফাদের সাথে সুসম্পর্ক ছিল না, কারণ এই রাজবংশ খলিফাদের উপঢৌকন রাজস্ব প্রদান করতেন না ।

(খ) তারা কেন্দ্রীয় খলিফাদের অবাধ্য হয়ে শাসন কার্য পরিচালনা করতেন ।

(গ) রাজ্যর জনগণের প্রতি অত্যাচার ইত্যাদির কারণে তাদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফাদের সাথে সম্পর্ক ভালো ছিল না।

৩. সামানি বংশ : বলখের অধিবাসী সামান নামক সম্ভান্ত ব্যক্তি অগ্নি উপাসকের ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তাঁর বংশধরগণ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বংশই সামানি বংশ হিসেবে পরিচিত। এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা নসর ইবনে আহমদ। 

তাদের রাজ্য সীমানা ছিল সিজিস্তান, কামরান, জুরজান, তারারিস্তান, খোরাসান, ট্রান্স অক্সিয়ানা তাদের রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। তাদের রাজধানী ছিল বুখারা। তারা নগরীর সমরকন্দকে আধুনিক সভ্যতা ও গৌরবের কেন্দ্রে পরিণত করেন।

→ খলিফাদের সাথে সম্পর্ক : আব্বাসীয় খলিফাদের সাথে সামানি বংশের সুসম্পর্ক বিদ্যমান ছিল তার। কারণ হলো আব্বাসীয় খেলাফতের যে সকল খলিফা দুর্বল ছিলেন তারা সামানি রাজবংশের ক্ষমতার উপর খুবই শঙ্কিত ছিল এই সম্পর্কে কারণ হচ্ছে : 

(ক) আব্বাসীয় দুর্বল শাসক কর্তৃক সামানিদের বিভিন্ন উপাধি প্রদান । 

(খ) আব্বাসীয় খলিফাদের নামে খুৎবা পাঠ । 

(গ) আব্বাসীয় খলিফাদের কর্তৃত্ব মেনে চলতো । 

(ঘ) তাদেরকে প্রতি বছর কর প্রদান।

৪. গজনি বংশ : গজনি বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আলপ্তগীন। তিনি ছিলেন তুর্কি সেনাপতি। এই গজনি বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। সামানি রাজবংশের ধ্বংসস্তূপের উপর। আলপ্তগীন ৯৬২ সালে গজনি অধিকার করে সেখানে গজনি | বংশ নামে একটি স্বাধীন রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন। এই | রাজবংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা বলা হয় তার জামাতা সবুক্তগীনকে। 

এই সবুক্তগীন ছিলেন ইরানী। তিনি শৈশবে | ক্রীতদাসরূপে বিক্রিত হন আলপ্তগীনের কাছে পরবর্তীতে তার যোগ্যতা বলে তিনি আলপ্তগীনের কন্যাকে বিবাহ করেন এবং | গজনি বংশের উত্তরাধিকারী গ্রহণ করেন। এই বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন সুলতান মাহমুদ।

৫. খলিফাদের সাথে বুওয়াইয়াদের সম্পর্ক : আবু সুজা বুয়াইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। দশম শতাব্দীতে বুয়াইয়াগণ আবু সুজার নেতৃত্বে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আব্বাসীয় খেলাফতের ইরাকে দালাইলামি শাসকগণ দখলের প্রচেষ্টা করলে আব্বাসীয় খলিফা বুওয়াইয়াদের আমন্ত্রণ জানায় অপরদিকে আহমদ তুর্কিদের বিতাড়িত করলে খলিফাদের সাথে সম্পর্কের অবনতি হয় তার এর কারণ হলো-

১. খুত্বা হতে খলিফার নাম প্রত্যাহার;

২. খলিফার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে; 

৩. স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন

৪. নিজ নামে মুদ্রা জারি ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আব্বাসীয় খেলাফতের শাসন আমলে আমরা যে সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশ শাসন ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করেছিল তাদের মধ্যে কেউ কেউ স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন করে কিন্তু তারা স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন করলেও আব্বাসীয় খলিফাদের প্রতি অনুগত থেকে তার স্বাধীনভাবে রাজ্য শাসন করে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ আব্বাসীয় বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আব্বাসীয় বংশের খলিফাদের সাথে পূর্বাঞ্চলীয় রাজবংশসমূহের সম্পর্ক সংক্ষেপে বর্ণনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ