আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ কি

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ কি।

আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ কি
আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ কি

আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ কি

উত্তর : ভূমিকা : ভাঙা, গড়া, উত্থান-পতন প্রভৃতি যেকোনো রাজবংশের চিরাচরিত নিয়ম, আব্বাসীয়দের বেলাও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এক সময় উন্নতির শীর্ষে আরোহণ করে প্রজাপতি পাখায় প্রতিনিধিত্ব করা এ বংশটি সবাইকে হতবাক করে দিয়ে কালের অতলে হারিয়ে যায়। 

কিন্তু কেন এমন হলো, ঐতিহ্য গ্রিকগণ এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে আব্বাসীয়দের স্বৈরশাসন, দুর্নীতি,সীমাহীন ভোগ বিলাস ও যথেচ্ছারের কথা উল্লেখ করেছেন। দুর্বল শাসন নীতি উত্তরাধিকারীর নীতির ফলে এবং আল ওয়াসিকের পরবর্তী খলিফাদের রাজোচিত গুণাবলিসমূহ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং এটিই তাদের পতনকে ত্বরান্বিত করেন। নিয়ে অবনতির কারণগুলো তুলে ধরা হলো-

→ আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ : নিয়ে আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ তুলে ধরা হলো :

১. ঐতিহাসিক কারণ : প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে খালদুনের মতে, কোন রাজ বংশ একশত বছরের অধিককাল শৌর্য-বীর্যের সাথে রাজত্ব করতে পারে না। তিনি বলেন, রাজ বংশকে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা, সাম্রাজ্যের বিকাশ সাধন ও পতন এই তিনটি অধ্যায়কাল অতিক্রম করতে হয়। 

এ নীতি অনুসারে ৭৫০ | খ্রিস্টাব্দে খলিফা আবুল আব্বাস আস সাফফাহ কর্তৃক আব্বাসীয় | বংশের উত্থান ঘটে। বিভিন্ন খলিফাগ সাম্রাজ্যের উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করে সুদীর্ঘ ৫০০ বছর স্থায়ী থাকার পর ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দে মোঙ্গল নেতা হালাকু খান কর্তৃক ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ।

২. উত্তরাধিকার নীতির অভাব : আব্বাসীয় শাসনামলে উত্তরাধিকার | নীতির ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন ছিল না। উত্তরাধিকার নীতির | অস্পষ্টতার কারণে রাজকুমারদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তারা ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সংঘর্ষে লিপ্ত হতো। যেমন- খিলাফতকে কেন্দ্র করে আল মামুন ও আল আমিনের মধ্যে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তা আব্বাসীয় বংশ পতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী।

৩. খলিফাদের দুর্বলতা : আব্বাসীয় খিলাফত পতনের অন্যতম | কারণ ছিল উত্তরাধিকারীদের দুর্বলতা, অযোগ্যতা এবং অকর্মণ্যতা। আব্বাসীয় বংশে সর্বমোট ৩৭ জন খলিফা ছিলেন। তাদের মধ্যে আবুল আব্বাস, আল মনসুর ও হারুন অর রশীদ ব্যতীত সবই ছিলেন দুর্বল ও অযোগ্য শাসক। 

খলিফাদের দুর্বলতার ফলে গৃহযুদ্ধ দেখা দেয়। সেনাবাহিনী উচ্ছৃঙ্খল হয়ে উঠে এবং আমিরদের স্বার্থপরতা আব্বাসীয় বংশ পতনের দিকে ধাবিত করে ।

৪. মন্ত্রীদের অযোগ্যতা : অযোগ্য খলিফাগণ তাদের শাসন পরিচালনার দায়িত্ব অদক্ষ এবং অযোগ্য মন্ত্রীদের হাতে অর্পণ করে বিলাসব্যসনে মত্ত হয়ে পড়েন। এমনকি, কোনো কোনো খলিফার সময় সম্পূর্ণ ক্ষমতা মন্ত্রীর হাতে চলে যায়। এসব মন্ত্রীদের স্বার্থপরতা এবং অযোগ্যতা আব্বাসীয় বংশ পতনের জন্য দায়ী।

৫. ত্রুটিপূর্ণ শাসন কাঠামো : আব্বাসীয়দের শাসন কাঠামোটি ত্রুটিপূর্ণ। আব্বাসীয় খলিফাগণ প্রাদেশিক সরকারকে এক বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন। এতে প্রাদেশিক শাসনকর্তাগণ রাজত্ব এর সামরিক বিভাগে পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করে। প্রাদেশিক সরকার অর্থনৈতিক ভিত্তি মজবুত করে এবং সামরিক শক্তিতে স্বয়ংসম্পন্ন হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে অস্বীকার করে। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার ধীরে ধীরে তাদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

৬. খলিফাদের ভোগ-বিলাসিতা : আব্বাসীয় বংশ পতনের আরেকটি কারণ খলিফাদের ভোগ-বিলাস। তারা অযোগ্য মন্ত্রীদের হাতে শাসন পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত করে ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে থাকতেন। মদ, ক্রীতদাস এবং বন্দিদের সাথে অবাধ মেলামেশার ফলে তাদের রক্তের বিশুদ্ধতা নষ্ট হয়ে যায়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উত্থান-পতনের এই সংসারে পতন সবার হবেই। যেমনি তারা উমাইয়াদের ধ্বংসস্তূপের ৭৫০ খ্রি. আব্বাসীয় শাসনক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করেছিল। তেমনি ১২৫৮ সালে দুর্বল শাসননীতি, অনেক ক্ষুদ্র রাজবংশের গঠন সর্বোপরি সময় অতিক্রান্ত হবার ফলে তাদের স্বাভাবিকভাবে পতন ঘটে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ কি

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আব্বাসীয় বংশের পতনের কারণ কি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ