১০টি অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর - Oporichita Srijonshil Question Answer

১০টি অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  Oporichita Srijonshil Question Answer
১০টি অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  Oporichita Srijonshil Question Answer

১০টি অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর  Oporichita Srijonshil Question Answer - hsc bangla 1st paper oporichita cq

১ নম্বর প্রশ্ন

কন্যার পিতা রামসুন্দর রায়বাহাদুরের হাতে পায়ে ধরিয়া বলিলেন, “শুভকার্য সম্পন্ন হইয়া যাক, আমি নিশ্চয়ই টাকাটা শোধ করিয়া দিব।” রায়বাহাদুর বলিলেন, “টাকাটা হাতে না পাইলে বর সভাস্থ করা যাইবে না।' এই দুর্ঘটনায় অন্তঃপুরে একটা কান্নার রোল পড়িয়া গেল । ইতোমধ্যে একটা সুবিধা হইল, বর সহসা তার পিতৃদেবের অবাধ্য হইয়া উঠিল । সে বাপকে বলিয়া বসিল, 'কেনা-বেচা দরদামের কথা আমি বুঝি না, বিবাহ করিতে আসিয়াছি, বিবাহ করিয়া যাইব ।

ক. কাকে মাকাল ফল বলে বিদ্রুপ করা হয়েছে?

খ. “একে তো বরের হাট মহার্ঘ, তাহার পরে ধনুক ভাঙা পণ” এইকথার অর্থ বুঝিয়ে লেখো।

গ. উদ্দীপকের বরের সাথে ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের কোন বিষয়ে বৈসাদৃশ্য রয়েছে?  বুঝিয়ে লেখো ।

ঘ. উদ্দীপকের ঘটনাটি 'অপরিচিতা' গল্পের কোন সামাজিক অসঙ্গতির দিকটি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে? তোমার মতের যুক্তি দাও।

১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক.উত্তর:  অনুপমকে মাকাল ফল বলে বিদ্রূপ করা হয়েছে।

খ. উত্তর: পনেরো বছর বয়সেও কল্যাণীর বিয়ে না হওয়ার কারণ নির্দেশ করা হয়েছে উক্তিটির মাধ্যমে।

কল্যাণীর বয়স পনেরো যা তৎকালীন সমাজব্যবস্থায় বিয়ের যোগ্য কন্যার জন্য অনেকটাই বেশি। মোটা টাকা পণ দিতে হয় বলে সুপাত্র মেলাই ভার। তবে এ ব্যাপারে কল্যাণীর বাবা চিন্তিত নয়। বয়স যতই হোক উপযুক্ত পাত্র ছাড়া কন্যার বিয়ে না দিতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ । তখনকার সমাজে কন্যার পিতার এরূপ মনোভাবের প্রকাশ ঘটতে সাধারণত দেখা যেত না।

গ. উত্তর: ব্যক্তিত্ব প্রকাশে উদ্দীপকের বরের সঙ্গে 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের বৈসাদৃশ্য রয়েছে । ‘অপরিচিতা' গল্পে অনুপম উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেও ব্যক্তিত্বহীন, পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায় পুতুলমাত্র। তাকে দেখলে আজও মনে হয়, যেন মায়ের কোলসংলগ্ন শিশু। মামার ইচ্ছার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কোনো সিদ্ধান্ত সে দিতে পারে না। 

এমনকি তার মামার অপমানের কারণে ও তার ব্যক্তিত্বহীনতায় কন্যার পিতা বিয়ের আসর থেকে তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন । যদিও গল্পের শেষ দিকে অনুপমের চরিত্র ক্রমশ ইতিবাচক হয়ে উঠেছে কিন্তু শুরুতেই তার চরিত্র সম্পর্কে পাঠকমনে এক নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়ে গেছে।

উদ্দীপকের বর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক পুরুষ। তার পিতা যখন যৌতুকের সমগ্র টাকা না পেলে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন, তখন সে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে জানায়। পিতার অবাধ্য হয়ে সে কেনাবেচা দরদামের কথা ভেবে বিয়ে করবে না বলে জানায়। পরিবারতন্ত্রের বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাই উদ্দীপকের বরকে গল্পের অনুপম থেকে ভিন্ন করে তুলেছে।

ঘ. উত্তর:‘অপরিচিতা' গল্পে সামাজিক অভিশাপ হিসেবে চিহ্নিত যৌতুকপ্রথার মন্দ দিকটি ফুটে উঠেছে। 'অপরিচিতা' গল্পে যৌতুকপ্রথার সামাজিক অসংগতি চিহ্নিত করা হয়েছে। যৌতুকপ্রথার বিরুদ্ধে নারী-পুরুষের সম্মিলিতি প্রতিরোধের চিত্র এখানে ফুটে উঠেছে। 

সমগ্র ঘটনার কেন্দ্রে আছে এই সামাজিক অসংগতি। অনুপমের মামা বিয়ের আগে কল্যাণীর গহনা পরীক্ষা করা নিয়ে যে নীচতার পরিচয় দিয়েছেন, তাতেই সমাজের যৌতুকপ্রথার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায় ।

উদ্দীপকে যৌতুকপ্রথার অসংগতি বর্ণিত হয়েছে। বিয়ের দিনে সমগ্র টাকা না পেলে ছেলেকে বিয়ের আসরে বসতে না দেওয়ার হুমকি দেন রায় বাহাদুর। 

যদিও কন্যার পিতা রায় বাহাদুরের কাছে অনুরোধ করেন, ‘শুভ কার্য সম্পন্ন হয়ে গেলে ধীরে ধীরে তিনি বাকি টাকাটা শোধ করে দিবেন' কিন্তু যৌতুকপ্রথার কুপ্রভাবের ফলস্বরূপ রায় বাহাদুর তা মানেননি। ‘অপরিচিতা' গল্পেও বিশেষত অনুপমের মামার আচরণে এ বিষয়টি ঔজ্জ্বল্য পেয়েছে ।

উদ্দীপক ও ‘অপরিচিতা' গল্প উভয়ক্ষেত্রেই যৌতুকপ্রথার নির্মমতা উন্মোচিত হয়েছে। ‘অপরিচিতা' গল্পে অনুপমের নিস্পৃহ মনোভাব তার মামার যৌতুক নিয়ে বাড়াবাড়ির দিকটিকে প্রশ্রয় দেয়। তেমনি উদ্দীপকেও রায় বাহাদুরের যৌতুকলোভী মনোভাব প্রকাশিত হয়েছে। তাই বলা যায়, প্রশ্নোল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ ।

২ নম্বর প্রশ্ন

মা-মরা ছোটো মেয়ে লাবনি আজ শ্বশুরবাড়ি যাবে। সুখে থাকবে এই আশায় দরিদ্র কৃষক লতিফ মিয়া আবাদের সামান্য জমিটুকু বন্ধক রেখে পণের টাকা জোগাড় করলেন। কিন্তু তাতেও কিছু টাকার ঘাটতি রয়ে- গেল। এদিকে বর পারভেজের বাবা হারুন মিয়ার এক কথা, সম্পূর্ণ টাকা না পেলে তিনি ছেলেকে নিয়ে চলে যাবেন। বিষয়টি পারভেজের কানে গেলে সে বাপকে সাফ জানিয়ে দেয়, 'সে দরদাম বা কেনাবেচার পণ্য নয়। সে একজন মানুষকে জীবনসঙ্গী করতে এসেছে, অপমান করতে নয় । ফিরতে হলে লাবনিকে সঙ্গে নিয়েই বাড়ি ফিরবে।'

ক. শম্ভুনাথ সেকরার হাতে কী পরখ করতে দিয়েছিলেন? 

খ. 'বাংলাদেশের মধ্যে আমিই একমাত্র পুরুষ যাহাকে কন্যার বাপ বিবাহ আসর হইতে নিজে ফিরাইয়া দিয়াছে' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. অনুপম ও পারভেজের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বৈপরীত্য ব্যাখ্যা করো।

ঘ. অনুপমের মামা ও হারুন মিয়ার মতো মানুষের কারণে আজও কল্যাণী ও লাবনিরা অপমানের শিকার হয়- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ করো ।

২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. উত্তর: শম্ভুনাথ সেকরার হাতে একজোড়া এয়ারিং পরখ করতে দিয়েছিলেন।

খ. উত্তরঃ বিয়ের দিনে অনুপমের ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচয় পেয়ে শম্ভুনাথ সেন কল্যাণীর সাথে তার বিয়ে ভেঙে দেওয়ার মতো অভাবনীয় কাণ্ডে অনেকটা হতবিহ্বল হয়ে অনুপম এ কথা বলেছে।

অনুপমের বিয়ের লগ্ন উপস্থিত হলে তার লোভী মামা কল্যাণীর বাবার কথায় আস্থা না রেখে বিয়ের আগেই সমস্ত গহনা সেকরা দিয়ে পরখ করাতে চান। আর এ সময় অনুপম কোনো প্রতিবাদ না করায় শম্ভুনাথ অপমানিত বোধ করেন এবং কন্যাদানে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন। 

এ রকম ঘটনা সচরাচর লক্ষ করা যায় না। এরূপ পরিস্থিতিতে শম্ভুনাথ সেন কর্তৃক অনুপমের অপমানের দিকটিকে বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটির উল্লেখ করা হয়েছে।

গ. উত্তর:‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মাঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উদ্দীপকের পারভেজের মতো চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয় পাওয়া যায় না। 1. 'অপরিচিতা' গল্পে দেখা যায় অনুপমের বাবা মারা যাওয়ার পর মামাই তার পরিবারে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। 

অনুপমের বিয়ের আসরে তার মামা কল্যাণীর বাবার দেওয়া গহনা পরীক্ষার মাধ্যমে যে অপমানজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন, অনুপম তার কোনো প্রতিবাদ করে না। এমনকি শম্ভুনাথ সেন বিয়ে ভেঙে দিলেও সে নীরব থাকে ।

উদ্দীপকে পারভেজের বাবা হারুন মিয়াকে একজন যৌতুকলোভী ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি সামান্য টাকার জন্য ছেলেকে নিয়ে বিয়ের আসর থেকে চলে যাবার হুমকি দেন। বিষয়টি পারভেজ জানতে পারলে বাবাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, সে যেহেতু পণ্য কিনতে আসেনি তাই ফিরতে হলে লাবনিকে বিয়ে করেই বাড়ি ফিরবে। 

এর মধ্য দিয়ে পারভেজের দৃঢ় মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু আলোচ্য গল্পের অনুপম তার মামার অন্যায় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কল্যাণীকে বিয়ে করার মতো সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। এদিক থেকে উভয়ের চরিত্রে বৈপরীত্য লক্ষ করা যায় ।

ঘ. উত্তর: 'অপরিচিতা' গল্পে যৌতুকপ্রথার কারণে নারীদের অপমানের দিকটি লক্ষ করা যায় । 'অপরিচিতা' গল্পে অনুপমের মামার মধ্যে যৌতুকলোভী মনোভাব লক্ষ করা যায়। তিনি অনুপমের বিয়েতে কল্যাণীর বাবার কাছে অর্থ ও গহনা যৌতুক হিসেবে দাবি করেন। কল্যাণীর বাবা অনুপমের মামার সব কথা মেনে নেন। 

বিয়ের দিন অনুপমের মামা মেয়ের বাবা খাঁটি গহনা দিচ্ছেন কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য সেকরাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। এতে কল্যাণীর বাবা অপমানিত হন এবং অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে কল্যাণীও আর বিয়েতে আগ্রহী হয় না এবং মেয়েদের শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করে ।

উদ্দীপকে দেখা যায়, লতিফ মিয়া মা-মরা মেয়ে লাবনির সুখের জন্য শেষ সম্বল আবাদের জমিটুকুও বন্ধক রেখে যৌতুকের টাকা জোগাড়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু সামান্য কিছু টাকা বাকি থাকায় হারুন মিয়া ছেলের বিয়েতে অস্বীকৃতি জানান। এতে হারুন মিয়ার হীন মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়, যা ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার মাঝেও বিদ্যমান । আর তাদের কারণে দুর্ভোগের শিকার হতে হয় উদ্দীপকের লাবনি ও 'অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণীকে।

উদ্দীপকে ও ‘অপরিচিতা' গল্পে যৌতুকপ্রথার কারণে যেভাবে লাবনি ও কল্যাণীকে অপমানিত হতে হয়েছে আমাদের সমাজে আজও সে বাস্তবতা বিদ্যমান। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারীকে অবমূল্যায়ন করা হয় বলেই আজও সমাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে টিকে আছে যৌতুকপ্রথার মতো কুৎসিত প্রথা । আর এর ফলে অনেক সময় বিয়ে ভেঙে যায় কিংবা বিয়ের পর মেয়েদের ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। অর্থলোভী মানুষদের অমানবিক আচরণের বলি হয় অধিকারবঞ্চিত নারীরা। এ ক্ষেত্রে উদ্দীপকের হারুন মিয়া ও ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার মতো মানুষের কারণে আজও কল্যাণী ও লাবনির মতো মেয়েরা অপমানের শিকার হয় মন্তব্যটি যথার্থ ।

৩ নম্বর প্রশ্ন

প্রজাপতির দুই পক্ষ। বরপক্ষ এবং কন্যাপক্ষ। বরপক্ষ কন্যাপক্ষের কাছে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা ও পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার চেয়ে বসল । নিত্যানন্দ রায় কোনোকিছু বিবেচনা না করে তাতেই মেয়ের বিয়ে দিতে সম্মত হয়ে গেল। তার মতে, এমন শিক্ষিত ছেলে আর বনেদি পরিবার কিছুতেই হাতছাড়া করা যায় না। তার ইচ্ছায় যথারীতি আশীর্বাদ পর্ব শেষে শুভ বিবাহের দিন ধার্য হয়ে গেল। নিত্যানন্দ অনেক কষ্ট স্বীকার করে বিয়ের যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করার পরও নিতান্ত এক তুচ্ছ কারণে বিয়ের আসরেই এই বিয়ে ভেঙে যায় ।

ক. 'অপরিচিতা' গল্পের মামা অনুপমের চেয়ে কত বছরের বড়ো?

খ. “একে তো বরের হাট মহার্ঘ, তাহার পরে ধনুক-ভাঙা পণ”— এই কথার অর্থ বুঝিয়ে দাও ।

গ. উদ্দীপকের নিত্যানন্দ রায়ের সঙ্গে ‘অপরিচিতা' গল্পেও শম্ভুনাথের সাদৃশ্য নির্ণয় করো।

ঘ. তুমি কি মনে করো যৌতুক প্রথাই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার একমাত্র কারণ? উদ্দীপক ও 'অপরিচিতা' গল্পের আলোকে বিচার করো। 

৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

‘অপরিচিতা' গল্পের মামা অনুপমের চেয়ে ছয় বছরের বড়ো। খ পনেরো বছর বয়সেও কল্যাণীর বিয়ে না হওয়ার কারণ নির্দেশ করা হয়েছে উক্তিটির মাধ্যমে।

খ. কল্যাণীর বয়স পনেরো যা তৎকালীন সমাজব্যবস্থায় বিয়ের যোগ্য কন্যার জন্য অনেকটাই বেশি। মোটা টাকা পণ দিতে হয় বলে সুপাত্র মেলাই ভার। তবে এ ব্যাপারে কল্যাণীর বাবা চিন্তিত নয়। বয়স যতই হোক উপযুক্ত পাত্র ছাড়া কন্যার বিয়ে না দিতে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তখনকার সমাজে কন্যার পিতার এরূপ মনোভাবের প্রকাশ ঘটতে সাধারণত দেখা যেত না ।

গ. কন্যার বিয়েতে যৌতুক প্রদানের দিক থেকে উদ্দীপকের নিত্যানন্দ রায়ের সঙ্গে ‘অপরিচিতা' গল্পের শম্ভুনাথ সেনের সাদৃশ্য রয়েছে। ‘অপরিচিতা' গল্পে শম্ভুনাথ সেন নগদ অর্থ ও গহনা যৌতুক দিতে রাজি হয়ে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিলেন ধনী ঘরের সন্তান অনুপমের সঙ্গে। 

যদিও শেষ পর্যন্ত অনুপমের মামার হীন মানসিকতার কারণে শম্ভুনাথ সেন নিজেই মেয়ের বিয়ে ভেঙে দেন। তবে বিয়েতে যে পরিমাণ গহনা দেওয়ার কথা ছিল শম্ভুনাথ সেন তার চেয়েও বেশি গহনা দিয়েছিলেন। এতে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য যৌতুক প্রদানে শম্ভুনাথ সেনের মানসিক সমর্থনই প্রকাশ পায় । 

উদ্দীপকের নিত্যানন্দ সুপাত্রের সন্ধান পেতেই কোনো প্রকার ভাবনা ছাড়া মেয়ের বিয়ে দিতে চান। বিয়ের আয়োজনে আর্থিক কষ্টের স্বীকার হতে হলেও তিনি সব ব্যবস্থাই করেন। তবে শেষ পর্যন্ত এ বিয়ে ভেঙে যায়। দেখা যায়, ‘অপরিচিতা' গল্পে শম্ভুনাথ সেন তাঁর কন্যার বিয়ের যে সমারোহ দেখিয়েছেন উদ্দীপকের নিত্যানন্দও তেমনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যৌতুকের জোগান দিয়েছেন। যৌতুক প্রদানের ক্ষেত্রে তাঁদের মনোভাব একই সূত্রে গাঁথা ।

ঘ. যৌতুকপ্রথা চিরবহমান একটি সামাজিক ব্যাধি হলেও যৌতুকপ্রথাই বিয়ে ভাঙার একমাত্র কারণ বলে আমি মনে করি না ।

‘অপরিচিতা’ গল্পে যৌতুকপ্রথার ঘৃণ্য রূপটি ফুটে উঠেছে। এ প্রথা নারীকে পণ্য ও বিয়ে ব্যাপারটিকে বেচাকেনার সম্পর্কে পরিণত করেছে। যৌতুকের লোভ যে মানুষের মানসিকতাকে কতটা হীন করে দিতে পারে তার প্রমাণ হলো অনুপমের মামার আচরণ ।

. উদ্দীপকে যৌতুকের কারণে বিয়ে ভাঙার চিত্র দেখা যায় না। নিত্যানন্দ রায় কষ্ট হলেও মেয়ের সুখের আশায় যৌতুকের টাকা জোগাড় করে। তবে এত কষ্টের পরেও বিয়েটা ভেঙে যায়। উদ্দীপকের মতো গল্পেও বিয়ে ভাঙার একমাত্র কারণ হিসেবে যৌতুকপ্রথাকে দায়ী করা যায় না ।

‘অপরিচিতা' গল্পে শম্ভুনাথ এবং উদ্দীপকের নিত্যানন্দ রায় দুজনেই কন্যার সুখের জন্য যৌতুক দিতে প্রস্তুত ছিলেন। অনুপমের মামার আচরণে হীনতার প্রকাশ এবং অনুপমের ব্যক্তিত্বহীন গলগ্রহের মানসিকতা গল্পে | বিয়ে ভাঙার জন্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। 

আর উদ্দীপকে যৌতুক প্রস্তুত থাকলেও তুচ্ছ কোনো এক কারণে বিয়ে ভাঙার চিত্র দেখা যায়। তাই উদ্দীপক ও গল্প বিবেচনায় বলা যায়, যৌতুকপ্রথাই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলেও একমাত্র কারণ নয় ।

আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারের শিক্ষিত ছেলে কৌশিকের মা-বাবা তার মতামত না নিয়েই সুরবালার সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে। সুরবালার বাবার অঢেল সম্পদ। গোপনে ঘটকের মধ্যস্থতায় এ বিয়েতে বরপক্ষকে নগদ টাকা, গাড়ি এবং ঢাকার অভিজাত এলাকায় একটি ফ্ল্যাট দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

যৌতুকের বিষয়টি জানতে পেরে কৌশিক ও সুরবালা বেঁকে বসে এবং সম্পূর্ণ যৌতুকবিহীনভাবে পরস্পর বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয় । 

ক. অনুপমের বাবার পেশা কী ছিল?

খ. “এই তো আমি জায়গা পাইয়াছি।”- ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের কৌশিকের সঙ্গে 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের তুলনা করো ।

ঘ. “উদ্দীপকে ‘অপরিচিতা' গল্পে বর্ণিত সামাজিক অসংগতি অনেকাংশেই  প্রতিফলিত।”—  ব্যাখ্যা করো ।

৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

অনুপমের বাবার পেশা ছিল ওকালতি

খা প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে অনুপম কল্যাণীর কাছাকাছি থাকা বলতে তার হৃদয়ে জায়গা পাওয়ার কথা বুঝিয়েছে ।

কানপুরে পৌঁছে কল্যাণীর পরিচয় জানতে পেরে অনুপমের হৃদয় আবারো কল্যাণীর চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়। সে কল্যাণীকে বিয়ে করতে চাইলেও কল্যাণী রাজি হয় না। কল্যাণীর কাছাকাছি থাকার জন্য সে কানপুরেই বসবাস করতে শুরু করে। সুযোগ পেলেই সে কল্যাণীর কাজে সাহায্য করে । কল্যাণীর আশপাশে থাকার সুযোগটুকুকেই সে পরম পাওয়া মনে করে আর ভাবে— জীবনসঙ্গী হিসেবে পাইনি; কিন্তু কাছে থাকার সুযোগটুকুইবা কম কীসে ।

‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মাঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয় পাওয়া যায় না, যা উদ্দীপকের কৌশিকের মাঝে দেখতে পাওয়া যায় ।

‘অপরিচিতা’. গল্পের অনুপম চরিত্রটি মেরুদণ্ডহীন, ব্যক্তিত্বহীন যুবকের প্রতীক। বাবা মারা যাওয়ার পর মামাই তার পরিবারে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। অনুপমের বিয়ের আসরে তার মামা কল্যাণীর বাবার দেওয়া গহনা পরীক্ষার মাধ্যমে যে অপমানজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন, অনুপম তার কোনো প্রতিবাদ করে না। এমনকি শম্ভুনাথ সেন বিয়ে ভেঙে দিলেও সে নীরব থাকে ।

উদ্দীপকের কৌশিক এবং সুরবালার পরিবার গোপনে যৌতুক আদান- প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেও কৌশিক ও সুরবালা এতে বেঁকে বসে। তারা একত্রে সিদ্ধান্ত নেয় যৌতুকবিহীন বিয়ে করার । এই সিদ্ধান্তের মধ্য ■ দিয়ে তাদের উন্নত ও দৃঢ় মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু গল্পে অনুপম কৌশিকের মতো সৎসাহস দেখাতে পারেনি। চারিত্রিক দৃঢ়তার এ দিকটি তাদের পৃথক করেছে 

উদ্দীপকে 'অপরিচিতা' গল্পে বর্ণিত একটি সামাজিক অসংগতি— যৌতুকপ্রথার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

'অপরিচিতা' গল্পে অনুপমের মামার মধ্যে যৌতুকলোভী মনোভাব লক্ষ করা যায় । তিনি অনুপমের বিয়েতে কল্যাণীর বাবার কাছে অর্থ ও গহনা, যৌতুক হিসেবে দাবি করেন। কল্যাণীর বাবা অনুপমের মামার সব কথা মেনে নেন । বিয়ের দিন অনুপমের মামা মেয়ের বাবা খাঁটি গহনা দিচ্ছেন কি না, তা পরীক্ষা করার জন্য সেকরাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। এতে কল্যাণীর বাবা অপমানিত হন এবং অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে কল্যাণীও আর বিয়েতে আগ্রহী হয় না এবং মেয়েদের শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করে।

উদ্দীপকে দেখা যায়, সচ্ছল পরিবারের শিক্ষিত ছেলে কৌশিকের বিয়ে ঠিক করা হয় ধনী পরিবারের মেয়ে সুরবালার সঙ্গে। গোপনে যৌতুক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবারের লোকেরা। তবে কৌশিক ও সুরবালা যৌতুকের কথা জানতে পেরে বেঁকে বসে। তারা পরস্পর যৌতুকবিহীন বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। সামাজিক ব্যাধি যৌতুকের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ তাদের শুভ চিন্তা ও দৃঢ় চরিত্রের পরিচায়ক

উদ্দীপকে ও ‘অপরিচিতা' গল্পে যৌতুক প্রথার যে চিত্র আমরা পাই তা আমাদের সমাজে আজও বিদ্যমান। যৌতুক প্রথার ফলে অনেক কন্যার পিতা হন সর্বস্বান্ত, অনেকের বিয়ে ভেঙে যায় এবং অনেক মেয়ে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়। সমাজের এ ঘৃণ্য প্রথার রূপটি আমরা দেখতে পাই উদ্দীপক এবং ‘অপরিচিতা' গল্প উভয়ক্ষেত্রেই। উদ্দীপকের কৌশিক ও সুরবালার অভিভাবকগণ তাদের বিয়ে ধার্য করার ক্ষেত্রে দেনাপাওনার বিষয়টি গোপনে স্থির করে নেন। যদিও কৌশিক ও সুরবালার দৃঢ় অবস্থানের কারণে আর্থিক লেনদেনটি বাধাপ্রাপ্ত হয়। আলোচ্য গল্পেও সমাজে যৌতুকপ্রথার প্রকোপ লক্ষ করা যায় এবং যৌতুকের লোভই পরোক্ষভাবে অনুপম কল্যাণীর বিয়েভঙ্গের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যৌতুকের স্বরূপ ও কুফল তুলে ধরার দিক থেকে উদ্দীপকটি 'অপরিচিতা' গল্পকে অনেকাংশেই প্রতিনিধিত্ব করে। অর্থাৎ, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ ।

৫ নম্বর প্রশ্ন

গৌরী ও সঞ্জয় অনেক দিন ধরে একই অফিসে চাকরি করছে কিন্তু সহকর্মীরা জানে না দুজনার অন্তরে গভীর ক্ষত। গৌরীকে নিজে পছন্দ করে বিয়ে করতে চেয়েছিল সঞ্জয়। বছর পাঁচেক আগে লোক খাওয়ানো নিয়ে বিয়ে ভেঙেছে তাদের। পিতৃহীন, সঞ্চয় কাকার আশ্রয়ে মানুষ তাই তার দোষ জেনেও প্রতিবাদ করতে পারেনি। একদিন গৌরীর কাছে নিজের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরে সঞ্জয়। বলে, তার জন্য সে সারা জীবন অপেক্ষা করবে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে গৌরী বলে, “কী দরকার, এই তো বেশ আছি!”

ক. কোন কথা স্মরণ করে অনুপমের মামা ও মা একযোগে বিস্তর হাসিলেন'?

খ. “মেয়ের চেয়ে মেয়ের বাপের খবরটাই তাহার কাছে গুরুতর” উক্তিটি বুঝিয়ে লেখো ।

গ. উদ্দীপকের সঞ্জয় 'অপরিচিতা' গল্পের কোন চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করে? বুঝিয়ে দাও ।

ঘ. ‘এই তো বেশ আছি!' “গৌরীর এই উক্তিতে ‘অপরিচিতা' গল্পের পরিণতি প্রতিফলিত হয়েছে”— উক্তিটি মূল্যায়ন করো ।

৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

গায়ে হলুদে কনের বাড়িতে যে সংখ্যক বাহক গিয়েছিল, তাদের আপ্যায়নে কল্যাণীদের কী রকম নাকাল হতে হবে, সে কথা স্মরণ করে অনুপমের মামা ও মা 'একযোগে বিস্তর হাসিলেন।'

খ. বিয়েতে কল্যাণীর যোগ্যতার চেয়ে তার পিতা শম্ভুনাথ কী পরিমাণ পণ দিতে সক্ষম অনুপমের মামার কাছে সেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল । হরিশ অনুপমের মামার কাছে অনুপমের জন্য পাত্রীর সন্ধান দেয়। পাত্রীর কথা জানার চেয়ে মামার কাছে পাত্রীর বাবার বিষয়-সম্পত্তির ব্যাপারে জানার বেশি আগ্রহ দেখা যায় । রূপ বা গুণ নয় বরং তার বাবার আর্থিক সক্ষমতার মানদণ্ডে পাত্রীর যোগ্যতা যাচাই করে অনুপমের মামা। আলোচ্য উক্তিটিতে অনুপমের মামার যৌতুকলিপ্সার দিকটি উন্মোচিত হয়েছে ।

ব্যক্তিত্বহীনতা প্রদর্শনের বিচারে উদ্দীপকের সঞ্জয় ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের প্রতিনিধিত্ব করে।

‘অপরিচিতা' গল্পের কথক ও নায়ক অনুপম। বাবার মৃত্যুর পর অনুপমের মামা তাদের পরিবারের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেন। বিয়ের আসরে কনের গহনা পরীক্ষার মাধ্যমে অনুপমের মামা যে হীন মানসিকতার পরিচয় দেন, অনুপম তার কোনো প্রতিবাদ করে না। বিয়ে ভেঙে গেলেও অনুপম নীরব ভূমিকা পালন করে ।

উদ্দীপকের সঞ্জয়ের কাকা খাবার নিয়ে ঝামেলা করে সঞ্জয়ের বিয়ে ভেঙে দিলেও সে নীরব থাকে। সঞ্জয় কাকার দোষ জেনেও কোনো প্রতিবাদ করে না, গল্পের অনুপমের মতো সঞ্জয় ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। সৎ সাহসের অভাবে অনুপমের মতো সঞ্জয় গৌরীকে আপন করে নিতে পারে না। দৃঢ় ব্যক্তিত্বের অভাবেই অনুপম কল্যাণী সঞ্জয় আর গৌরীকে আপন করে নিতে পারেনি। এভাবেই সঞ্জয় গল্পের অনুপমের প্রতিনিধি হয়ে ওঠে।

আত্মমর্যাদা-সচেতন নারীর যে রূপ কল্যাণীর মাঝে ফুটে উঠেছে তারই প্রতিফলন দেখা যায় উদ্দীপকের গৌরীর মাঝে ।

‘অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণী ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী। অনুপমের সাথে বিয়ে ভেঙে গেলে সে পিতার যৌক্তিক মতামতকে সম্মান জানিয়েছে। পরবর্তী সময়ে সে দেশসেবার ব্রত গ্রহণ করেছে। নারী জাগরণের পথপ্রদর্শক হয়ে কল্যাণী দেশের জন্য কাজ করে চলেছে। গল্পের শেষে অনুপমের অনুরোধ ও মিনতিতে শম্ভুনাথের হৃদয় নরম হলেও বিয়ে না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকে কল্যাণী ।

উদ্দীপকের গৌরী ও সঞ্জয় একসময় প্রণয়ের বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। তবে একপর্যায়ে সঞ্জয়ের কাকার বিরূপ আচরণে বিয়ে ভেঙে যায় তাদের । এতে

পরে সঞ্জয় গৌরীর জন্য সারাজীবন অপেক্ষার কথা বললেও মন গলে না গৌরীর। কল্যাণীর মতো গৌরীর জীবনদর্শনেও পরিবর্তন এসেছে। যৌথ জীবনের স্বপ্নকে সে এখন আর আবশ্যিক মনে করে না ।

উদ্দীপকের গৌরী এবং গল্পের কল্যাণী উভয় চরিত্রের মাধ্যমে সমাজে নারী জাগরণের বিষয়টি উঠে এসেছে। কল্যাণী যেমন অনুপমের শত অনুরোধেও বিয়েতে রাজি হয়নি, তেমনি গৌরী সঞ্জয়ের কথার উত্তরে বলেছে ‘এই তো বেশ আছি'। উভয়ের মাঝেই সমাজের প্রচলিত প্রথাকে অস্বীকার করে স্বাধীন ও স্বাবলম্বী জীবনগড়ার ইঙ্গিত বিদ্যমান । আত্মমর্যাদাবোধে উদ্বুদ্ধ নারীর যে রূপ গল্পের পরিণতিতে লেখক তুলে ধরেছেন তারই দেখা পাই আমরা উদ্দীপকে গৌরীর মাঝে। এ বিবেচনায়, আলোচ্য মন্তব্যটি যথাযথ ।

৬ নম্বর প্রশ্ন

কন্যার বাপ সবুর করিতে পারিতেন, কিন্তু বরের বাপ সবুর করিতে চাহিলেন না। তিনি দেখিলেন, মেয়েটির বিবাহের বয়স পার হইয়া গিয়াছে, কিন্তু আর কিছুদিন গেলে সেটাকে ভদ্র বা অভদ্র কোনো রকমে চাপা দিবার সময়টাও পার হইয়া যাইবে না। মেয়ের বয়স অবৈধ রকমে বাড়িয়া গিয়াছে বটে, কিন্তু পণের টাকার আপেক্ষিক গুরুত্ব এখনো তাহার চেয়ে কিঞ্চিৎ উপরে আছে, সেইজন্য তাড়া।

ক. অনুপমের পিসতুতো ভাইয়ের নাম কী?

খ. ‘অন্নপূর্ণার কোলে গজাননের ছোট ভাইটি'— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের বরের বাপের সাথে 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য নিরূপণ করো।

ঘ. “উদ্দীপকের ঘটনাচিত্রে 'অপরিচিতা' গল্পের খণ্ডাংশ প্রতিফলিত হয়েছে”– উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।

৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

অনুপমের পিসতুতো ভাইয়ের নাম— বিনু।

খ. প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে ব্যঙ্গার্থে দেবতা কার্তিকের সঙ্গে অনুপমের তুলনা করা হয়েছে।

দেবী দুর্গার দুই পুত্র— অগ্রজ গণেশ ও অনুজ কার্তিক। দেবী দুর্গার কোলে দেব সেনাপতি কার্তিক অপূর্ব শোভায় ভাস্বর। বড়ো হয়েও অনুপম কার্তিকের মতো মায়ের কাছাকাছি থেকে মাতৃআজ্ঞা পালনে ব্যস্ত থাকে। তাই পরিণত বয়সেও তার স্বাধীন ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে না। ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপম পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায় ও ব্যক্তিত্বহীন একটি চরিত্র। উচ্চশিক্ষিত হলেও তার নিজস্বতা বলতে কিছু নেই। ..তাকে দেখলে মনে হয় আজও সে যেন মায়ের কোলে থাকা শিশুমাত্র। এজন্যই ব্যঙ্গ করে অনুপমকে গজাননের ছোটো ভাই কার্তিকের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

গ. যৌতুকলোভী মনোভাব ধারণের দিক থেকে উদ্দীপকের বরের বাপের সাথে 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য দুটোই রয়েছে ।

‘অপরিচিতা' গল্পে অনুপমের মামা যৌতুকলোভী চরিত্র। তিনি অনুপমের বিয়ের জন্য একটি জুতসই ঘর খুঁজছিলেন; যেখানে না চাইলেও অনেক টাকা যৌতুক পাওয়া যাবে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর শম্ভুনাথ সেনের কন্যা কল্যাণীর সাথে মামা অনুপমের বিয়ে ঠিক করেন। বিয়ের দিন মেয়ের বাড়ি থেকে দেওয়া যৌতুকের গহনা নিয়ে অনুপমের মামা হীন মানসিকতার পরিচয় দেন। গহনাগুলো আসল না নকল তা পরীক্ষা করার জন্য তিনি বিয়েবাড়িতে সেকরাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন ।

উদ্দীপকের বরের বাবার মাঝেও যৌতুকলোভী মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। সে কারণেই বিয়ের জন্য মেয়ের বয়স বেশি হলেও যৌতুকের পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলে তিনি এ বিয়ে নিয়ে তাগাদা দেন।

উদ্দীপকের বরের বাবার যৌতুকলোভী মানসিকতার এ দিকটি 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। কিন্তু অনুপমের মামা যেমন গহনা পরীক্ষা করার জন্য সেকরাকে সাথে নিয়ে বিয়েবাড়িতে আসেন, তেমন বিষয় উদ্দীপকের বরের বাবার মাঝে দেখা যায় না। এছাড়া অনুপমের মামা মেয়ের বাবাকে যেভাবে অপমান করেছে, সে বিষয়টিও উদ্দীপকের বরের বাবার মাঝে অনুপস্থিত। সুতরাং বলতে পারি, যৌতুককে কেন্দ্র করে উভয় ঘটনা আবর্তিত হলেও উদ্দীপকের বরের বাপের সাথে 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য দুটোই রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকের ঘটনাচিত্রে 'অপরিচিতা' গল্পের যৌতুকপ্রথার মতো সামাজিক অসংগতির দিকটি ফুটে উঠলেও যৌতুকের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধের দিকটি অনুপস্থিত।

আলোচ্য গল্পে অনুপমের মামা চরিত্রের মাধ্যমে যৌতুকের মতো ঘৃণ্য প্রথার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। অনুপমের মামা কন্যার বাবার দেওয়া গহনা যাচাই করার জন্য বিয়েবাড়িতে সেকরাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। এতে কন্যার বাবা শম্ভুনাথ সেন অপমান বোধ করেন এবং কল্যাণীর সঙ্গে অনুপমের বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। কল্যাণীও বাবার এ মতকে সমর্থন করে।

উদ্দীপকে যৌতুকপ্রথার স্বরূপ উপস্থাপিত হয়েছে, যেখানে বিয়ে প্রসঙ্গে মেয়ের বাবার চেয়ে বরের বাবার তাড়া বেশি দেখা যায়। কেননা মেয়ের বয়স বেশি হওয়ায় যৌতুকের টাকার পরিমাণও বেশি। উদ্দীপকে উল্লিখিত বরের বাবার এ অর্থলোভী মানসিকতা ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সঙ্গে মিলে যায় । কিন্তু গল্পের অন্য দিকগুলো উদ্দীপকে অনুপস্থিত ।

‘অপরিচিতা' 'গল্প ও উদ্দীপকে যৌতুকপ্রথার মতো সামাজিক ব্যাধির বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। তবে আলোচ্য গল্পে যৌতুকপ্রথার বিরুদ্ধে বাবা ও মেয়ের সম্মিলিত প্রতিরোধের প্রসঙ্গ এসেছে যার ফলে অনুপমের সঙ্গে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে যায় এবং পরবর্তী সময়ে কল্যাণী মেয়েদের শিক্ষাদানের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করে। যৌতুকের বিরুদ্ধে এমন প্রতিবাদী অবস্থানের স্বরূপ উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাছাড়া গল্পে নারী জাগরণের যে ইঙ্গিত রয়েছে তাও উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় না। অতএব বলতে পারি, যৌতুকপ্রথার সঙ্গে মিল থাকলেও উদ্দীপকের ঘটনাচিত্রে ‘অপরিচিতা' গল্পের খণ্ডাংশই প্রতিফলিত হয়েছে। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ ।

৭ নম্বর প্রশ্ন

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাঠ শেষ করতে করতেই আমার বোনের অনেক বয়স হয়ে যায়। তিন তিনবার তার বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে যাবার পর কেমন যেন হতাশ হয়ে পড়ি। একদিন তাকে ডেকে বলি, ‘সানজিদা, কাল বাসায় একটি নতুন বরপক্ষ তোকে দেখতে আসবে।' শুনে ওর চেহারা কঠিন হয়ে ওঠে, বলে, 'তুই শুধু শুধু ব্যস্ত হচ্ছিস তপন, প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আমার যা কাজ তা জীবনভর শেষ হবার নয়।'

ক. কাকে ‘মাকাল ফল' বলে বিদ্রুপ করা হয়েছে? 

খ. অনুপমের বিবাহযাত্রার বর্ণনা দাও।

গ. উদ্দীপকের সাথে ‘অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণীর সাদৃশ্য- বৈসাদৃশ্যগুলো আলোচনা করো ।

ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘অপরিচিতা' গল্পের মূলবক্তব্য কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে? যৌক্তিক বিশ্লেষণ করো।

৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

অনুপমকে ‘মাকাল ফল বলে বিদ্রুপ করা হয়েছে।

অনুপম মহাসমারোহের সাথে বিয়ে করতে গিয়েছিল। ধনী ঘরের ছেলে অনুপম। তাই তার বিয়েতে ছিল আভিজাত্যের ছোঁয়া। ব্যান্ড, বাঁশি, কন্সর্ট কোনো কিছুরই কমতি ছিল না। দামি পোশাক ও বাহারি গহনায় জড়ানো ছিল অনুপমের শরীর। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল সে যেন ভাবী শ্বশুরের সঙ্গে আভিজাত্যের মোকাবিলা করতে বিয়ের আসরে যাচ্ছে।

উদ্দীপকের সানজিদার সঙ্গে কল্যাণীর দৃঢ় ব্যক্তিত্বের সাদৃশ্য এবং বিয়ে করার মানসিকতায় বৈসাদৃশ্য উভয়ই লক্ষ করা যায় ।

‘অপরিচিতা' গল্পে কল্যাণী চরিত্রটি বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সমাজে গেড়ে বসা যৌতুকপ্রথার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ধ্বনিত হয়েছে এ চরিত্রের মাধ্যমে। পিতার কথায় অনুপমকে বিয়ে না করে সে পিতার যৌক্তিক সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে। এছাড়া সমাজের অবহেলিত নারীদের শিক্ষাদানের মহান দায়িত্বে সে নিজেকে নিয়োজিত করতে চেয়েছে। সর্বোপরি সেবাব্রত ও নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে কল্যাণী এক অসাধারণ নারী চরিত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

উদ্দীপকের সানজিদা বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সে বারবার বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরও দুঃখে কাতর হয়নি । বিয়েই যে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়, তা সে উপলব্ধি করতে পেরেছে। ‘অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণীও একইভাবে মানবসেবার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছে। সামাজিক প্রেক্ষাপটে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া তাদের পক্ষে মোটেও সহজ ছিল না। এরূপ বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বই তাদের দুজনকে এক করে দিয়েছে। কিন্তু কল্যাণী বরপক্ষকে বিয়ের আসর থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ বিয়ে করার ব্যাপারে তার অমত ছিল । প্রথমবার বিয়ে ভাঙার পর সে সংসার জীবনের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। অন্যদিকে উদ্দীপকের সানজিদা শুরু থেকেই বিয়ের ব্যাপারে অনাগ্রহী। এদিকটি বিচারে উদ্দীপকের সানজিদার সাথে কল্যাণীর বৈসাদৃশ্যও বিদ্যমান ।

ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘অপরিচিতা' গল্পের মূলবক্তব্য আংশিক প্রতিফলিত হয়েছে।

'অপরিচিতা' গল্পে যৌতুকপ্রথার বিরুদ্ধে নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রতিরোধের কথা তুলে ধরেছেন লেখক। ‘অপরিচিতা' বিশেষণের আড়ালে বর্ণিত হয়েছে বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী এক নারীর কাহিনি। ব্যক্তিত্বের জাগরণ ও তার অভিব্যক্তিতে গল্পটি সার্থক হয়ে উঠেছে।

উদ্দীপকে সানজিদা পুরুষশাসিত সমাজে বিরূপ মনোভাবের শিকার। কিন্তু সে এ কারণে হতাশ হয়ে পড়েনি। মানবসেবায় সে নিজেকে ব্যস্ত করে রেখেছে। বিয়ে না হওয়া একজন নারীর জীবন আপাতদৃষ্টিতে অসম্পূর্ণ হলেও সানজিদা এটিকে জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য মনে করে না। এর মধ্য দিয়ে তার দৃঢ় ব্যক্তিত্বের পরিচয় পাওয়া যায় ।

‘অপরিচিতা' গল্পে উদ্দীপকের বক্তব্য ফুটে উঠলেও সেই সঙ্গে ধ্বনিত হয়েছে প্রতিবাদের সুর। গল্পের কল্যাণী চরিত্রের মাধ্যমে তৎকালীন সমাজে নারী জাগরণের বিষয়টি উঠে এসেছে। সমসাময়িক যৌতুকপ্রথার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ গল্পে উঠে এলেও উদ্দীপকে তার আভাস নেই। গল্পে উল্লিখিত সময়কালে কন্যাপক্ষ কর্তৃক বিয়ে ভেঙে দেওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল । কিন্তু পিতা শম্ভুনাথ ও কন্যা কল্যাণীর স্বতন্ত্র মানসিকতা ও ব্যক্তিত্বের কারণে সেটা সম্ভব হয়েছিল। অন্যদিকে উদ্দীপকে কেবল নারী সত্তার জাগরণের কথাই উঠে এসেছে। এসব বিচারে উদ্দীপকটি ‘অপরিচিতা' গল্পের মূলবক্তব্যের সম্পূর্ণ প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি

৮ নম্বর প্রশ্ন

প্রায় এক বছর হলো বাজিতপুর নিবাসী কেরামত আলীর ছোটো মেয়ে বিজলীর সাথে মনোহরপুর গ্রামের হোসেন মিয়ার একমাত্র ছেলে হাশিমের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই হাশিমের পরিবার বিজলীর ওপর অমানবিক অত্যাচার ও নির্যাতন শুরু করেছে। বিজলীর অপরাধ— বিয়ের সময় তার বাবা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যৌতুকের সমস্ত টাকা পরিশোধ করতে পারেনি । তাই বিজলীকে নীরবে সহ্য করতে হচ্ছে এ নির্যাতন। 

ক. ‘কন্সট’ শব্দের অর্থ কী?

খ. অনুপমের মামার মন কীভাবে নরম হলো?

গ. উদ্দীপকের বিজলীর সাথে ‘অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণী চরিত্রের সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য তুলে ধরো।

ঘ. যদি অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে হতো, তার পরিণতিও কি উদ্দীপকের বিজলীর মতো হতো? তোমার মতামত দাও।

৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক 'কন্সট' শব্দের অর্থ নানারকম বাদ্যযন্ত্রের ঐকতান ।

খ ‘অপরিচিতা' গল্পের হরিশ অনুপমের মামার কাছে কল্যাণী ও তার পরিবারের প্রশংসা করার ফলে মামার মন নরম হলো। ।

বিয়ের পাত্রী তথা কল্যাণীর পারিবারিক অবস্থা, বংশমর্যাদার ব্যাপারে অনুপমের মামাকে বিশদ বর্ণনা দেয় হরিশ। সেসব কথা শুনে তিনি আশ্বস্ত হলেও কল্যাণীর বয়স বেশি মনে করে বিয়ে নিয়ে দ্বিধাগ্রস্তও হন। কিন্তু হরিশের ছিল সরস কথা দ্বারা মানুষের মনকে প্রভাবিত করার বিশেষ গুণ। তাই তো পরে তার কাছ থেকে পাত্রী ও তার পরিবারের বিষয়ে নির্ভরযোগ্য প্রশংসাবাক্য শুনে মামার মন নরম হয়েছিল।

গ 'অপরিচিতা' গল্পে কল্যাণীর মাঝে দৃঢ়চেতা ও সাহসী মনোভাব লক্ষ করা যায় । আলোচ্য গল্পের কল্যাণী বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন নারী। একই সঙ্গে তার পিতা শম্ভুনাথ সেনও দৃঢ়চেতা ও সচেতন মানুষ। পিতা-কন্যা উভয়ের মাঝেই আত্মসম্মানবোধ প্রবল ছিল। বরপক্ষের যৌতুকের দাবি মেটাতে আপত্তি না থাকলেও পরবর্তীতে তাদের হীন মানসিকতার পরিচয় পেয়ে কল্যাণীর বাবা বিয়ে ভেঙে দেন। কল্যাণী বিয়ে ভাঙার পর হতাশাগ্রস্ত না হয়ে নারীশিক্ষায় ব্রতী হয়েছিল ।

উদ্দীপকের বিজলীর সঙ্গে হাশিমের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই হাশিমের পরিবার যৌতুকের কারণে বিজলীর ওপর নির্যাতন শুরু করে। বিজলী নীরবে এ নির্যাতন সহ্য করতে থাকে। 'অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণীর হবু শ্বশুরবাড়ির মানুষেরাও ছিল যৌতুকলোভী ও নীচু মনের অধিকারী। এছাড়া বরের ব্যক্তিত্বহীনতা উপলব্ধি করতে পেরে কল্যাণীর পিতা এ বিয়ে ভেঙে দেন । আত্মসম্মানে বলীয়ান কল্যাণীও পিতার সিদ্ধান্তে দ্বিমত করেনি। প্রাথমিকভাবে যৌতুকপ্রথাকে সমর্থন করার দিক দিয়ে বিজলী ও কল্যাণীর মাঝে সাদৃশ্য ফুটে উঠলেও পরবর্তীতে এর বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণে দৃঢ়তার পরিচয়ে বিজলীর সঙ্গে কল্যাণীর বৈসাদৃশ্য লক্ষ করা যায় ।

ঘ। অনুপমের সঙ্গে কল্যাণীর বিয়ের পর তার পরিস্থিতি উদ্দীপকের বিজলীর মতো হলেও কল্যাণী ওই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দৃঢ়তার পরিচয় দিত বলে আমি মনে করি।

.‘অপরিচিতা' গল্পের কল্যাণী আত্মসম্মানে বলীয়ান এক নারী। অন্যায়কে প্রতিহত করার দৃঢ়তা তার রয়েছে। বিয়ের দিনে তার পিতা বিয়ে ভেঙে দিলে সে হতাশ না হয়ে দেশসেবায় নিয়োজিত হয়েছে। পুনরায় বিয়ে করে নিজেকে মাতৃ-আজ্ঞা থেকে দূরে সরিয়ে রাখেনি ।

উদ্দীপকের বিজলীর সঙ্গে হাশিমের বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার পরিবার বিজলীর ওপর অত্যাচার করতে থাকে। অত্যাচারের কারণ হলো যৌতুকের টাকা পরিশোধ না করা। এ অত্যাচার বিজলী নীরবে সহ্য করতে থাকে। অন্যদিকে আলোচ্য গল্পের অনুপমের সঙ্গে কল্যাণীর বিয়ে যদি হয়ে যেত, নিঃসন্দেহে সেও বিজলীর মতো নির্যাতনের শিকার হতো। কেননা অনুপমের মামা যৌতুকলোভী ও নীচু মনের অধিকারী ছিল। কিন্তু কল্যাণী ছিল দৃঢ়চেতা প্রতিবাদী নারী। সে অনুপমের পরিবারের নিপীড়ন থেকে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা অবশ্যই করত।

‘অপরিচিতা' গল্পে কল্যাণী এক আত্মমর্যাদাপূর্ণ, স্বাবলম্বী নারীর প্রতীক। পিতা তার বিয়ে ভেঙে দিলেও সে ভেঙে পড়েনি। বরং যৌতুকপ্রথার নির্মমতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হয়েছে। পরবর্তীতে অনুপম অনেক সাধ্যসাধনা করেও কল্যাণীর মন গলাতে পারেনি। কল্যাণীর মাঝে ফুটে ওঠা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এটাই নিশ্চিত করে, সে বিজলীর মতো নীরবে অত্যাচার সহ্য করত না। আত্মসম্মানের শক্তি নিয়ে একসময় সে ওই অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতই। তাই বলা যায়, অনুপমের সঙ্গে কল্যাণীর বিয়ে হলে তার পরিণতি বিজলীর পরিণতির দিকে মোড় নিলেও তা থেকে নিজেকে মুক্ত করত কল্যাণী ।

৯ নম্বর প্রশ্ন

‘কন্যার বাপ সবুর করিতে পারিতেন, কিন্তু বরের বাপ সবুর করিতে চাহিলেন না। তিনি দেখিলেন, মেয়েটির বিবাহের বয়স পার হইয়া গিয়াছে, কিন্তু আর কিছুদিন গেলে সেটাকে ভদ্র বা অভদ্র কোনো রকমে চাপা দিবার সময়টাও পার হইয়া যাইবে। মেয়ের বয়স অবৈধ রকমে বাড়িয়া গিয়াছে বটে, কিন্তু পণের টাকার আপেক্ষিক গুরুত্ব এখনো তাহার চেয়ে কিঞ্চিত উপরে আছে, সেই জন্যই তাড়া।'

ক. কন্যাকে আশীর্বাদ করার জন্য কাকে পাঠানো হলো?

খ. অনুপমের মামা সেকরাকে বিয়েবাড়িতে এনেছিল কেন? 

গ. উদ্দীপকের কন্যার বাপের সাথে ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সাদৃশ্য দেখাও।

ঘ. উদ্দীপকের ঘটনাচিত্র 'অপরিচিতা' গল্পের খণ্ডাংশের প্রতিনিধিত্ব করে মাত্র— কথাটির যথার্থতা বিচার করো ।

৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক . কন্যাকে আশীর্বাদ করার জন্য অনুপমের পিসতুতো ভাই বিনুদাদাকে পাঠানো হয়েছিল ।

খ. অনুপমের মামা যৌতুকলোভী ও হীন মানসিকতার মানুষ হওয়ায় বিয়ের গহনা পরীক্ষা করতে সেকরাকে বিয়েবাড়িতে এনেছিলেন ।

কল্যাণীর বিয়েতে তার বাবা শম্ভুনাথ সেন নগদ পণের সঙ্গে অনেক গহনা দেন। অনুপমের মামা শম্ভুনাথ সেনের কথায় আস্থাশীল ছিলেন না। কন্যাপক্ষ যে গহনা দেবে তা আসল না নকল সেটি পরীক্ষা করার জন্য তিনি বিয়েবাড়িতে সেকরাকে সঙ্গে এনেছিলেন।

গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত কন্যার বিয়ের প্রতি তার বাবার উদাসীনতার সাথে 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সাদৃশ্য রয়েছে।

‘অপরিচিতা' গল্পে অনুপমের মামা যৌতুকলোভী চরিত্র। তিনি অনুপমের বিয়ের জন্য একটি জুতসই ঘর খুঁজছিলেন। ধনীর কন্যারা মাথা উঁচু করে চলবে বলে বড়ো করে ভাগিনার বিয়ে দিতে চান না তিনি । যেখানে না চাইলেও অনেক টাকা যৌতুক পাওয়া যাবে এবং কন্যা ও তার পরিবারও তাদের সম্ভ্রম দেখাবে, এমন জায়গাতেই মামা অনুপমকে বিয়ে দিতে চান। এজন্য অনুপমের বিয়ের জন্য মামার মাঝে কোনো প্রকার তাড়াহুড়ো পরিলক্ষিত হয় না ।

উদ্দীপকে কন্যার বাবার মাঝে কন্যার বিয়ের প্রতি বিশেষ উৎসাহ দেখা যায় না। সমাজের চোখে কন্যার বয়স অবৈধ রকমে বেড়ে গেলেও তিনি তার বিয়ে সম্পর্কে ছিলেন নির্বিকার। এতে উদ্দীপকে উল্লিখিত বাবার মাঝে কন্যার বিয়ের বিষয়ে উদাসীন মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। কন্যার বিয়ের বয়স পার হয়ে যাওয়ায় পাত্রের বাবা যেখানে বিয়ের জন্য তাড়াহুড়ো করছেন, সেখানে কন্যার বাবা ছিলেন নির্লিপ্ত। আর সন্তানের বিয়ের বিষয়ে কন্যার বাবার এই মানসিকতা তাঁকে 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সাথে সাদৃশ্যময় করে তুলেছে।

ঘ . উদ্দীপকের ঘটনাচিত্রে 'অপরিচিতা' গল্পের যৌতুকপ্রথার মতো সামাজিক অসংগতির দিকটি ফুটে উঠলেও যৌতুকের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধের দিকটি অনুপস্থিত।

আলোচ্য গল্পে অনুপমের মামা চরিত্রের মাধ্যমে যৌতুকের মতো ঘৃণ্য প্রথার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। অনুপমের মামা কন্যার বাবার দেওয়া গহনা যাচাই করার জন্য বিয়েবাড়িতে সেকরাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। এতে কন্যার বাবা শম্ভুনাথ সেন অপমান বোধ করেন এবং কল্যাণীর সঙ্গে অনুপমের বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। কল্যাণীও বাবার এ মতকে সমর্থন করে।

উদ্দীপকে যৌতুকপ্রথার স্বরূপ উপস্থাপিত হয়েছে, যেখানে বিয়ে প্রসঙ্গে মেয়ের-বাবার চেয়ে বরের বাবার তাড়া বেশি দেখা যায়। কেননা মেয়ের বয়স বেশি হওয়ায় যৌতুকের টাকার পরিমাণও বেশি। উদ্দীপকে উল্লিখিত বরের বাবার এ অর্থলোভী মানসিকতা 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের মামার সঙ্গে মিলে যায় । কিন্তু গল্পের অন্য দিকগুলো উদ্দীপকে অনুপস্থিত।

‘অপরিচিতা’ গল্প ও উদ্দীপকে যৌতুকপ্রথার মতো সামাজিক ব্যাধির বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। তবে আলোচ্য গল্পে যৌতুকপ্রথার বিরুদ্ধে বাবা ও মেয়ের সম্মিলিত প্রতিরোধের প্রসঙ্গ এসেছে যার ফলে অনুপমের সঙ্গে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে যায় এবং পরবর্তী সময়ে কল্যাণী মেয়েদের শিক্ষাদানের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করে। যৌতুকের বিরুদ্ধে এমন প্রতিবাদী অবস্থানের স্বরূপ উদ্দীপকে অনুপস্থিত। তাছাড়া গল্পে নারী জাগরণের যে ইঙ্গিত রয়েছে তাও উদ্দীপকে লক্ষ করা যায় না। অতএব বলতে পারি, যৌতুকপ্রথার সঙ্গে মিল থাকলেও উদ্দীপকের ঘটনাচিত্রে ‘অপরিচিতা' গল্পের খণ্ডাংশই প্রতিফলিত হয়েছে । প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ ।

১০ নম্বর প্রশ্ন

এমএ পাশ রফিক বন্ধুদের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথাবার্তা বলার সময় বলে নিজের পায়ে না দাঁড়িয়ে বিয়ে নয় । কিন্তু পিতৃহীন রফিক চাচার সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারে না। পরসম্পদলোভী চাচার আদেশে তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। নিজের মতামত প্রকাশের মানসিক দৃঢ়তা না থাকার কারণে বিয়ে বাড়িতে যৌতুকের মালামাল নিয়ে লোভী চাচার প্রশ্নের কারণে বিয়ে ভেঙে যায়। রফিকও চাচার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিয়ে বাড়ি থেকে অসহায়ের মতো চলে আসে ।

ক. কল্যাণী কোন স্টেশনে নেমেছিল?

খ. ‘কন্যার পিতা মাত্রেই স্বীকার করিবেন আমি সৎপাত্র’– কেন? 

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত রফিক চরিত্রের সাথে ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপম চরিত্রের সাদৃশ্য বিশ্লেষণ করো।

ঘ. দৃঢ়তার অভাবে রফিক নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে চাচার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে— 'অপরিচিতা' গল্পের আলোকে এ সিদ্ধান্তের সাথে তুমি কি একমত?

১০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. কল্যাণী কানপুর স্টেশনে নেমেছিল ।

খ. 'অপরিচিতা' গল্পে অনুপমকে মাতৃ-আজ্ঞাবহ, নিরীহ এক চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

ভালো মানুষ হওয়ার কোনো ঝঞ্ঝাট না থাকায় অনুপম স্বভাবতই একজন ভালো মানুষ। এমএ পাশ অনুপম মায়ের আদেশ যথাযথভাবে পালন করে। এমনকি সে তামাক পর্যন্ত খায় না। আমাদের সমাজে বিয়ের প্রসঙ্গে সৎপাত্র সম্পর্কে যে ধারণা পোষণ করা হয়, এ সকল বৈশিষ্ট্য তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই অনুপমের বিশ্বাস— কন্যার পিতা মাত্রেই -স্বীকার করবেন সে সৎপাত্র।

স্বাধীন ব্যক্তিত্ব এবং মানসিক দৃঢ়তার অভাব 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপম এবং উদ্দীপকের রফিকের চরিত্রকে সাদৃশ্যপূর্ণ করে তুলেছে । ‘অপরিচিতা' গল্পের অনুপম শিক্ষিত কিন্তু ব্যক্তিত্বহীন এবং পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায়। যদিও গল্পের প্রথম থেকেই অনুপমের মনস্তাপ আমরা অনুভব করি কিন্তু নিজের বিয়ের সময়ে সে যে ধরনের ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিয়েছে তা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তার নেই। মামা যৌতুকের দাবি করলেও সে তার বিরোধিতা করেনি । এমনকি বিবাহের পূর্বে কন্যার শরীর থেকে গহনা খুলে পরীক্ষা করার যে প্রস্তাব মামা দেন তাতেও কোনো বিরোধিতা করতে পারেনি। পরিস্থিতি বিবেচনায় কন্যার পিতা শম্ভুনাথ সেন অনুপমের সঙ্গে কল্যাণীর বিবাহ দিতে অসম্মতি জানান। আর অনুপমকে নীরবে সে অপমান সহ্য করতে হয়। উদ্দীপকের রফিক চরিত্রেও এ দিকটি লক্ষিত হয়।

উদ্দীপকের রফিক অনুপমের মতোই ব্যক্তিত্বহীন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অপারগ। কারণ পিতৃহীন রফিক চাচার সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারে না। পরসম্পদলোভী চাচার আদেশে তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। যৌতুকের কারণে তারও বিয়ে ভেঙে যায়। অনুপমের মতো রফিকও নিজের মতামত প্রকাশে মানসিক দৃঢ়তা দেখাতে পারে না। চাচাকে অনুসরণ করে বিয়ের আসর থেকে সেও অনুপমের মতো অসহায়ভাবে চলে আসে। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের রফিক যেন 'অপরিচিতা' গল্পের অনুপমের যথার্থ প্রতিচ্ছবি।

ঘ ‘অপরিচিতা' গল্পের মামা ও উদ্দীপকের চাচার অন্যায় সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার মাধ্যমে অনুপম ও রফিকের ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচয় পাওয়া যায়। ‘অপরিচিতা' গল্পে অনুপম মানসিকভাবে দুর্বল একজন মানুষ। শিক্ষিত কিন্তু ব্যক্তিত্বরহিত অনুপম নিজের জীবন সম্পর্কে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে অপারগ, এমনকি অর্থনৈতিকভাবেও সে স্বাবলম্বী নয়। তার এ পরাবলম্বনের দিকটি আলোচ্য উদ্দীপকেও লক্ষণীয়

উদ্দীপকের রফিক অনুপমের মতোই মানসিক দৃঢ়তাহীন। এজন্যই সে তার চাচার নির্দেশ পালনে বাধ্য হয়েছে। মূলত চাচার সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই। এমনকি অনুপমের মতো নিজের বিয়েতে সে যৌতুক গ্রহণেরও বিরোধিতা করেনি। 

তাছাড়া অনুপমের মতো রফিকও চাচার সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিয়ের আসরে কিছু বলতে পারেনি । বিয়ে ভেঙে গেলে সে পুতুলের মতো অসহায়ভাবে বিয়ের সভা ছেড়ে বেরিয়ে যায়। বলা যায়, মানসিক দৃঢ়তার অভাবেই রফিকের এমন পরিণতি । 

সার্বিক বিবেচনায় তাই প্রশ্নোক্ত সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করি। 'অপরিচিতা' গল্পে অনুপম ব্যক্তিত্বহীন, পরনির্ভরশীল একটি চরিত্র। নিজের বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো দৃঢ়তা তার নেই। তার মতে, মামাই পৃথিবীতে তার ভাগ্যদেবতার প্রধান এজেন্ট। মানসিক দৃঢ়তার অভাবে সে চূড়ান্ত অপমানিত হয়েছে বিয়ের আসরে। 

পিতা তার সঙ্গে নিজের কন্যাকে বিয়ে দিতে অসম্মতি জানিয়েছেন। এত কিছু সত্ত্বেও অনুপম স্বাধীন ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিতে পারেনি। উদ্দীপকের রফিকও তেমনি মানসিক দৃঢ়তার অভাবে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে চাচার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে । তাই 'অপরিচিতা' গল্পের আলোকে প্রশ্নে উল্লেখিত মন্তব্য সম্পূর্ণ সত্য বলে আমি মনে করি

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ