মার্কসের নারী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কসের নারী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কসের নারী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা কর।

মার্কসের নারী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা কর
মার্কসের নারী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা কর

মার্কসের নারী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা কর

উত্তর : ভূমিকা : মার্কসীয় নারীবাদীরা বলেন যে, নারী নির্যাতনকে ব্যক্তির স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কর্মের ফল বলা যায় না। বরং এটি ব্যক্ত যে, সামাজিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যে বাস করে সেই কাঠামোর ফল। 

ঊনবিংশ শতাব্দীর নারীবাদীরা নারী নির্যাতনের প্রধান কারণ বলে চিহ্নিত করেন শ্রেণি বৈষম্যকে। অন্যদিকে সামজবাদীরা পিতৃতন্ত্রের জটিল পারস্পরিক ক্রিয়াকে নারী নির্যাতনের কারণ বলে মনে করে। মার্কসের নারীবাদীদের মতে নারী সংঘবদ্ধ ও সচেতন হলে নারী নির্যাতন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।

- মার্কসের নারী : নারী সম্পর্কে কার্ল মার্কস ও তার অনুসারীদের চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে মার্কসীয় নারীবাদ বলা হয় । মার্কসীয় নারীবাদীরা বলেন- নারীরা মনমানসিকতা ও সামাজিক অস্তিত্ব গঠনে ভূমিকা রাখে। পুরুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধীনস্থতা থেকে নারীরা তাদের মান্যতা ও হীনমন্যতা গঠন করে।

→ মার্কস নারীবাদের মূলভাব : মার্কসবাদীরা শ্রমিকের উপার নির্যাতনকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তারা নারী নির্যাতন অপেক্ষাও অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে থাকে শ্রমিক নির্যাতনকে। তাদের মতে, নারী নির্যাতন বন্ধের জন্য প্রয়োজন হলো শ্রেণি বৈষম্য দূরীকরণ। তাহলে নারী নির্যাতন বন্ধ হবে।

প্রশ্নের আলোকে মার্কসের নারীবাদী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা করা হলো :

→ মার্কসের নারীবাদী রাজনৈতিক মতবাদ : কার্লমার্কস বলেছেন- নারী ও পুরুষ উভয়ে শ্রমিক। শ্রমিকেরা যখন নিজেদের সংগঠিত করবে এবং সচেতনতা জাগ্রত হবে তখনই শ্রেণি বৈষম্য ও ধনিকতন্ত্রের পতন হবে এবং মানব সমাজে উত্তরণ ঘটবে সাম্যবাদের। মার্কসের রাজনৈতিক দর্শনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হলো :

১. নারী পুরুষের সাম্য : মার্কসবাদীরা মনে করে যে, ধনিকতন্ত্রের পতনের উপর যে সচেতন সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে সেখানে মানুষের উপর কোন অত্যাচার নির্যাতন ও শোষণ থাকবে না। কেউ কারো কোন ক্ষতি ও কাউকে কেউ প্রভাব দেখাবে না । 

নারী ও পুরুষ সকলে স্বাধীনভাবে বাস করবে। তখন নারী ও পুরুষ হবে স্বাধীন, একই সম্প্রদায়, পরস্পর সমান ও সমতাপূর্ণ একই জাতি। শ্রেণি বৈষম্যহীন সমাজ হবে স্বাধীন ও সাম্য সমতাপূর্ণ এবং সামাজিক।

কার্ল মার্কস আরো বলেছেন- The complete and conscious return of man himself as a social that is human being. অর্থাৎ, মানবিক অস্তিত্বরূপে প্রত্যেক মানুষের সচেতনতা ও পূর্ণতা ফিরে আসবে ।

২. সচেতনতা সৃষ্টি : কার্ল মার্কস বলেছেন-নারী পুরুষ উভয়ে শ্রমিক হতে পারে। যখন শ্রমিক নিজের মধ্যে সুসংগঠিত হবে তখন তাদের মধ্যে সচেতনতা উদ্ভব হবে। তখন নারী পুরুষ সকলের শ্রেণিসংগ্রামের মাধ্যমে ধনিকতন্ত্রের অবসান ঘটবে। 

যার ফলে মানব সমাজের উদ্ভব হবে এবং পরবর্তীতে সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের আবির্ভাব হবে। এর ফলে যেই সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে সেখানে মানুষের উপর মানুষ অত্যাচার, নির্যাতন ও শোষণ করবে না। তাই সমাজে সাম্যবাদের আনয়নই দিতে পারে নারী মুক্তি ও স্বাধীনতা।

৩. মনমানসিকতা পরিবর্তন : কার্ল মার্কস নারী মুক্তির জন্য এমন একটি সমাজের চিত্রের কল্পনা করেছেন যা নারীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে। সেই সমাজ ব্যবস্থায় নারী হবে স্বাধীন ও মুক্ত । নারীর উপর কারো শাসন থাকবে না। 

নিশ্চিত হয়ে যাবে সকল অধীনস্থতা। এই সমাজ ব্যবস্থায় নারীদের মনমানসিকতায় পরিবর্তন আসবে। যার ফলে সমাজে উঁচু-নিচু, প্রভু-দাস ইত্যাদি কোন বৈষম্য থাকবে না । প্রত্যেকে স্ব-স্ব ইচ্ছায় প্রত্যেক ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে নিজের কর্ম ও মতামত পেশা করতে পারবে।

৪. শ্রম ও নারী : ধনিকতন্ত্র নারীকে ভোক্তা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। নারীরা ব্যয় করে আর পুরুষ আয় করবে। মার্গারেট ধনিক তন্ত্রে প্রবলভাবে বিশ্লেষণ ও আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেছেন-নারী প্রধানত উৎপাদনকারী এবং গৌণত ভোক্তা। 

নারী এমন শ্রেণি যারা গৃহ কর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট ও অন্তর্ভুক্ত। তিনি আরো বলেছেন- Responsible for the production of simple use value in those activities associated with the home and family. অর্থাৎ, গৃহ ও পরিবারের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সহজ ব্যবহারযোগ্যতা মূল্যবান সৃষ্টির জন্য দায়ী

৫. শ্রমিকের স্বাধীনতা : শ্রমশক্তির একটি বিরাট চাহিদা মেটায় নারী। নারী মোট শ্রমশক্তির একটি বিরাট অংশ। যার ফলে নারীকে শ্রমিক হিসেবে গণ্য করা হয়। 

এজন্য মালিক রাজনৈতিক শক্তি বলে মজুরির বিনিময়ে নারীকে কাজ করতে বাধ্য করতে পারে । শ্রমিক মালিকের ইচ্ছামতো কর্ম ও মজুরি পেয়ে থাকে। মূলত শ্রমিকের ক্ষেত্রে নারী স্বাধীনতা মুখে কথা ছাড়া আর কিছু নাই । 

উপসংহার : পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, নারী সমাজের ঐক্যবদ্ধের ফলে তাদের শ্রেণি বৈষম্য দূরীভূত হবে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর সকল অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সাথে সাথে নারীর প্রতি সকল বৈষম্য ও নির্যাতন বন্ধ হয়ে যাবে। যার ফলে নারী মুক্তি ও নারীর সচেতনতা এবং নারীর মনমানসিকতায় উন্নতি আসবে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কসের নারী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কসের নারী রাজনৈতিক মতবাদ আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ