মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে পর্যালোচনা কর

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে পর্যালোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে পর্যালোচনা কর ।

মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে পর্যালোচনা কর
মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে পর্যালোচনা কর

মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে পর্যালোচনা কর

  • অথবা, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বীর বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক প্রতিরোধের বিবরণ দাও । 
  • অথবা, মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফুর্ত প্রশাসনিক প্রতিরোধ সম্পর্কে একটি নিবন্ধ রচনা কর ।
  • অথবা, যুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী কি ধরনের প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল? আলোচনা কর । 
  • অথবা, পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক প্রতিরোধ ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে আলোচনা
  • অথবা, মুক্তিযুদ্ধের স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক প্রতিরোধ সম্পর্কে লিখ ।

উত্তর : ভূমিকা : ২৫ মার্চের পর থেকেই ঢাকা শহরসহ বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলা শহরে ইপিআর, আনসার, ছাত্র, শ্রমিক, বিভিন্ন, সংগঠনের কর্মী এবং সরকারি বেসরকারি কর্মচারীদের সমন্বয়ে রাতারাতি মুক্তিবাহিনী গড়ে উঠেছিল। 

কিন্তু অতর্কিত আক্রমণের মুখে যে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল তা সুপরিকল্পিত ছিল না। কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিতও ছিল না। তাছাড়া তাদের হাতে আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্র ও ছিল না। 

তাই মুজিবনগরে বিপ্লবী সরকার গঠন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ চলেছিল স্বতঃস্ফূর্ত ও বিক্ষিপ্তভাবে। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে মুজিবনগর সরকার আঞ্চলিক কমান্ডারদের নিয়ে গঠন করে একটি ফৌজ যা পরবর্তীকালে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত হয়। 

এছাড়া গঠিত হয় তিনটি ব্রিগেড। স্থানীয় পর্যায়ে দেশের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠে বিভিন্ন ব্যক্তির উদ্যোগে আঞ্চলিক বাহিনী। এভাবে সামরিক ও বেসামরিক উদ্যোগে বাঙালি জাতি রণাঙ্গনে ক্রমান্বয়ে সাফল্য লাভ করতে থাকে ।

→ মুক্তিযুদ্ধে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ : মুক্তিযুদ্ধে পাকবাহিনী ৩টি পর্যায় প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছিল। 

(ক) প্রথম পর্যায় : প্রথম পর্যায় ছিল স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ প্রাথমিক ।

(খ) দ্বিতীয় পর্যায় : দ্বিতীয় পর্যায় ছিল সরকারের অধীন সংগঠিত প্রতিরোধ ।

(গ) শেষ প্রতিরোধ পর্যায় : শেষ পর্যায় ছিল যৌথ কমান্ডারের অধীন বিজয় অভিযান। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :-

→ প্ৰথম পর্যায় :

(ক) স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক প্রতিরোধ : বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা এবং ঢাকার গণহত্যার খবর পৌঁছা মাত্র ঢাকার বাইরে প্রতিরোধ শুরু হয়। 

এর মধ্যে চট্টগ্রামে মেজর রফিক ও পরবর্তীকালে মেজর জিয়াউর রহমানের প্রতিরোধ উল্লেখযোগ্য। চুয়াডাঙ্গায় মেজর উসমান তার ইপিআর বাহিনী নিয়ে প্রতিরোধ করেন। 

মেজর খালেদ মোশাররফ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সবচেয়ে আগে প্রতিরোধ শুরু করেন মেজর শফিউল্লাহ্ রাজেন্দ্রপুরে। এভাবে বিভিন্ন রেজিমেন্টে বাঙালি অফিসার যারা ছিলেন তাদের অনেকে সপক্ষ ত্যাগ করেন। তাদের কমান্ডের অধীনে বাঙালি সৈন্যদের নিয়ে প্রাথমিক প্রতিরোধ করেন। 

প্রায় ক্ষেত্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ছাত্র, যুবক, জনতা সংগৃহীত পুরনো আমলের অস্ত্র দিয়ে প্রতিরোধ করেন। অর্থাৎ এক কথায় বলা যায়, ২৬ মার্চ থেকেই স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক প্রতিরোধ শুরু হয়ে যায়। যদিও এসব প্রতিরোধ এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণে ভেঙে পড়ে ।

→ দ্বিতীয় পর্যায় :

(খ) সংগঠিত প্রতিরোধ : স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধ ব্যর্থ হলে অনেকে তখন সীমান্ত পেরিয়ে যান নতুনভাবে সংগঠিত হওয়ার জন্য । 

অনেকে দেশের অভ্যন্তরে সংগঠিত হওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এ পর্যায়ে ১১টি সেক্টর ও অনেকগুলো সাব সেক্টর ছাড়াও রণাঙ্গনকে তিনটি ব্রিগেড ফোর্সে বিভক্ত করা হয়। 

অধিনায়কদের নামানুসারে ফোর্সের নামকরণ করা হয় জেড ফোর্স, এস ফোর্স এবং কে ফোর্স। মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের নিয়মিত ও অনিয়মিত এই দুই ভাগে বিভক্ত করে প্রতিরোধ কর্মসূচি চালু রাখা হয়।

→ নিয়মিত বাহিনী : মুক্তিযুদ্ধের সময় নিয়মিত বাহিনীকে আবার কয়েক স্তরে ভাগ করে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল। এগুলো নিম্নরূপ-

১. মুক্তিফৌজ : ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ইউনিটগুলোর সমন্বয়ে বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে এই বাহিনী গঠিত হয়। 

সৈন্যবলের ঘাটতি পূরণের জন্য আধা সামরিক বাহিনী বা যুবকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ৮টি ব্যাটালিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়া সেক্টর ট্রুপস গড়ে তোলা হয় । সেক্টর ট্রুপসের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০,০০০ । 

নিয়মিত বাহিনীর সদস্যদের সেক্টর ট্রুপসে নেয়া হয়। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ব্যাটালিয়ন নিয়ে ৩টি ব্রিগেড ফোর্স গঠন করা হয় । সরকারি পর্যায়ে এদের নামকরণ করা হয় মুক্তিফৌজ । নিয়মিত বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ১৮,৬০০ জন ।

২. বিমানবাহিনী: ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গঠিত হয়। ১৮ জন পাইলট ও ৫০ জন বৈমানিক নিয়ে এ বাহিনীর যাত্রা শুরু হয়। 

ভারত থেকে পাওয়া একটি ডাকোটা, একটি ওয়াটার বিমান এবং একটি এলুয়েট হেলিকপ্টার দিয়েই বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যাত্রা আরম্ভ হয়েছিল। 

বিমানবাহিনীর অনেক সদস্য স্থল যুদ্ধেও সাফল্যের পরিচয় দেন। ৩ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় বিমানবাহিনী ঢাকা ও চট্টগ্রামে যে সকল আক্রমণের ধারা রচনা করেছিল তার প্রথম আক্রমণের কৃতিত্বের দাবিদার বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। 

ঢাকা পতন পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানবাহিনী প্রায় বারো বারের বেশি পাকিস্তানি লক্ষ্যবস্তুর উপর আক্রমণ চালিয়েছিল ।

৩. নৌবাহিনী : মুক্তিযুদ্ধে নিয়মিত বাহিনী হিসেবে ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে নৌবাহিনী গড়ে তোলা হয়। ৯ নভেম্বর পাকবাহিনীর কাছ থেকে ৬টি দখলকৃত নৌযান নিয়ে প্রথম ‘বঙ্গবন্ধু' নৌবাহিনী উদ্বোধন করা হয়। 

৪৫ জন পালিয়ে আসা নৌ সেনা নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গোড়াপত্তন হয়। নভেম্বর পর্যন্ত ৮৬০ জন নৌ কমান্ডোকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। 

এর অনেক সফল অভিযান চালিয়ে কোস্টার, ট্যাংকার, টাগ ও বড় জাহাজের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এছাড়া ১৪ আগস্ট কমান্ডো অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের সম্ভার বহনকারী দুটি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিল। 

ডিসেম্বর পর্যন্ত এমনি নৌ অভিযানে পাকিস্তানিদের | ক্ষতি হয়েছিল ৪০ কোটি টাকার মত। যুদ্ধের শেষদিকে নৌবাহিনী গঠিত হওয়ায় নৌপথে যুদ্ধ পরিচালনার কৃতিত্ব মূলত নৌ কমান্ডো গেরিলাদের ছিল।

→ অনিয়মিত বাহিনী : নিয়মিত বাহিনীর বাইরের সদস্যদের অংশগ্রহণে অনিয়মিত বাহিনী গড়ে উঠেছিল। এগুলো কয়েকটি ভাগে বিভক্ত ছিল । যথা-

১. মুক্তিযোদ্ধা বা গণবাহিনী : যুবক, ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক ও সকল পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে বিভিন্ন সেক্টরের অধীনে অনিয়মিত বাহিনী গঠিত হয়। 

এই বাহিনীর সরকারি নামকরণ ছিল গণবাহিনী বা ফ্রিডম ফাইটার। এ বাহিনীর সদস্যদের দু'সপ্তাহের প্রশিক্ষণের পর একজন কমান্ডারের অধীনে তাদের নিজ নিজ এলাকায় গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ করার জন্য প্রেরণ করা হতো। 

এদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। সরকারিভাবে এদের অনিয়মিত বাহিনী বা গণবাহিনী নামে অভিহিত করা হলেও জনগণের কাছে এরা পরিচিত ছিল মুক্তিবাহিনী নামে। 

স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকেও মুক্তিবাহিনী শব্দটিই ব্যবহার করা হত। বিভিন্ন সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা প্রশিক্ষণের পর বাংলাদেশে প্রবেশ করে গেরিলা কার্যক্রম চালানোর জন্য এবং অচিরেই তারা হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে তোলে ।

২. আঞ্চলিক গেরিলা বাহিনী : সেক্টর এলাকার বাইরে আঞ্চলিক পর্যায়ে যেসব বাহিনী গড়ে উঠে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কাদেরিয়া বাহিনী, আফসার ব্যাটালিয়ন, বাতেন বাহিনী, হেমায়েত বাহিনী, হালিম বাহিনী, আকবর বাহিনী, লতিফ মীর্জা বাহিনী ও জিয়া বাহিনী উল্লেখযোগ্য। 

এসব গেরিলা বাহিনীর কর্মকাণ্ড ছিল ব্যাপক এবং তারাই ছিল যুদ্ধের প্রাণ। এই বাহিনীগুলোর সদস্যদের বিপুল সংখ্যক ছিল স্বেচ্ছাসেবক, স্বল্পপ্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যোদ্ধা। 

দেশের অভ্যন্তরে জনগণের মনোবল অটুট রাখা পাকিস্তানি ও তাদের দোসরদের অতর্কিত আক্রমণে পরাস্ত করা ও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তু যেমন যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ধ্বংস করা, যুদ্ধের জন্য লোকজন সংগ্রহ ও তাদের ট্রেনিং প্রদান ছিল এদের প্রধান কাজ। 

কাগজে কলমে গেরিলারা সেক্টর কমান্ডার দ্বারা পরিচালিত হলেও বাস্তবে এরা এলাকাভিত্তিক নির্যাতনের অধীনে ছিল। বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক বাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গেরিলার সংখ্যা ছিল লক্ষাধিক 1 এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ছিল এর ৩ থেকে ৪ গুণ সদস্য।

৩. মুজিব বাহিনী : বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর কর্তৃত্ব ছাড়ায় মুজিব বাহিনী বা বিএলএফ গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বাছাই করা তরুণ ও শিক্ষিত কর্মীদের নিয়ে এ বাহিনী গঠিত হয়। 

মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত ও শক্তিশালী করা ছাড়াও যুদ্ধের নেতৃত্ব যাতে কোনো উগ্রপন্থি বা চরমপন্থি দলের হাতে চলে না যায়। সেটাও মুজিব বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্য ছিল । 

ভারতীয় জেনারেল উবানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দেরাদুনে এদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। মোট চারটি সেক্টরে মুজিব বাহিনী বিভক্ত ছিল। যদিও এই বাহিনী মুজিবনগর সরকারের কর্তৃত্ব না থাকায় পরবর্তী সময়ে বহু সমস্যা দেখা দিয়েছে।

শেষ পর্যায় :

(গ) যৌথ কমান্ডের প্রতিরোধ : মূলত মধ্য নভেম্বর থেকে ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিক্ষিপ্তভাবে প্রবেশ করতে থাকে। ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথ কমান্ড গঠন করে। 

মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে এটি গঠিত হয়। লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশের রণাঙ্গনকে ৪টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। 

যৌথ কমান্ড গঠন ইয়াহিয়া খানকে ভাবিয়ে তোলে। ৮-৯ ডিসেম্বর কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালি শহর যৌথ বাহিনীর অধিকারে আসে। যশোর, চাঁদপুর, সিলেট, দাউদকান্দি, ও ফেনী জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা যৌথ বাহিনীর দখলে আসে। 

১১-১২ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ, হিলি, কুষ্টিয়া, খুলনা, রাজশাহী, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ মুক্ত হলে যৌথ বাহিনী ঢাকা দখলকে প্রাধান্য দেয়। ১৪ ডিসেম্বর যৌথ বাহিনী ঢাকার মাত্র ১৫ কিঃ মিঃ দূরে অবস্থান করছিল। 

১৬ ডিসেম্বর সকাল দশটায় পাকিস্তানি ১৪ ডিভিশন কমান্ডার মেজর জেনারেল জামশেদ ঢাকার মিরপুর ব্রিজের কাছে ভারতীয় জেনারেল নাগরার কাছে আত্মসমর্পণ করে। 

ভারতীয় মিত্র বাহিনী ও কাদের সিদ্দিকী সকাল ১০ : ৪০ মিনিটে ঢাকা নগরীতে প্রবেশ করেন। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বিকেল ৪ টা ২১ মিনিটে পাকহানাদার বাহিনীর অধিনায়ক লেঃ জেনারেল একে নিয়াজী ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্মিলিত মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সেনাপতি লেঃ জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করে। 

এভাবে দীর্ঘ নয় মাসের প্রতিরোধের পর - বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ- যেখানে যৌথ বাহিনীর কৃতিত্ব অবিস্মরণীয় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ২৫ মার্চ পাকিস্তান বাহিনীর আক্রমণের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল যা মুজিবনগর সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত কার্যকর ছিল। 

কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের তোপে এ প্রতিরোধ ভেঙ্গে গেলে সংগঠিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠে। যেখানে নিয়মিত ও অনিয়মিত বাহিনীর মাধ্যমে সফলভাবে পাকিস্তান বাহিনীকে প্রতিরোধ করা হয়। 

যা সম্ভব হয়েছিল গেরিলাযুদ্ধ ও সম্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমে এরপর চূড়ান্ত পর্যায়ে ভারত বাংলাদেশ যৌথ বাহিনীর শেষ প্রতিরোধ ব্যবস্থার মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে থাকে এবং ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে। 

এভাবে বিভিন্ন সেক্টরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগঠিতভাবে সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধে লিপ্ত হয় মুক্তিবাহিনী যার পারিসমাপ্তি ঘটে যৌথ বাহিনীর কমান্ডো বিজয় অভিযানে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে পর্যালোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্ত প্রাথমিক ও সংগঠিত প্রতিরোধ সম্পর্কে পর্যালোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ