নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ কর।

নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ কর
নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ কর

নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ কর

উত্তর : ভূমিকা : নারী ও পুরুষের অখণ্ড ব্যক্তি সমবায় মানব সমাজের মূল কাঠামো। কিন্তু সমাজ ও সভ্যতার অপরিহার্য এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েও নারীরা অবহেলিত ও বৈষম্যের শিকার। 

যুগে যুগে পুরুষের এসব ধারণাকে কেন্দ্র করেই সৃষ্টি হয়েছে পুরুষ শাসিত সমাজ। এ সমাজ স্বীকার করেননি নারীর প্রতিভা, বিকশিত হতে দেয়নি নারীকে। 

আর তাই বিশ্ব জুড়ে আজ নারী মুক্তি, নার মর্যাদা বৃদ্ধি এবং অবস্থার উন্নতির জন্য নারী সমাজ প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। তৈরি করেছে নারীবাদের বিভিন্ন মতবাদ । নারীবাদী চিন্ত াচেতনা বিশ্লেষণ করে যে মতবাদসমূহ লক্ষ্য করা যায়, সেগুলো নিরূপ :

১. আধুনিক নারীবাদ : আধুনিক নারীবাদীরা নারী পুরুষের বৈষম্যের জন্য দায়ী করে অসচেতনতাকে। Capital যখন পুরুষের হাতে চলে যায় তখন শ্রেণি বিভক্ত সমাজ হয়ে যায়। এ মতবাদ সন্তান জন্মদানকে অগ্রগতির অন্তরায় মনে করে না। 

এটি হলো প্রাচীন মতবাদ। ১৯২০ এর দশক থেকে এটি বহুল প্রচলিত। এ মতবাদে পুরুষকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। সমাজ পরিবর্তনের জন্য তার সামাজিক বিপ্লবের কথা বলেন। তারা সকল ক্ষেত্রে নারীর বৈষম্যের কথা উল্লেখ করেন। এর থেকে মুক্তির জন্য সরকার- 

(i) শিক্ষা,

(ii) সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধি ও

(iii) গণআন্দোলন।

২. সমাজতান্ত্রিক নারীবাদ : র‍্যাডিক্যাল ও মার্কসীয় নারীবাদের এক ধরনের মিলিত রূপ হলো সমাজতান্ত্রিক নারীবাদ। এতে সামাজিক ও ঐতিহাসিক কাঠামোকে নারী নিপীড়নের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তারা মনে করেন যে, জৈবিক পার্থক্য নয়, 

নারী-পুরুষের মধ্যে গড়ে উঠা সামাজিক সম্পর্কই নারীর মর্যাদাহীনতার জন্য দায়ী। যা আবার পিতৃতন্ত্রকে পাকাপোক্ত করছে। তাই পিতৃতন্ত্রের বিলুপ্তি ও নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি উভয়ের মাধ্যমে নারীমুক্তি সম্ভব ।

৩. মৌলিক নারীবাদ : বিংশ শতাব্দীর ৬০ এর দশকে Radical Feminist দের উৎপত্তি। এটা নারীবাদের দ্বিতীয় পর্যায়। এর নারী নির্যাতনের মূলে জৈবিক কারণকে দায়ী করেন। প্রকৃতি নারী ও পুরুষের মাঝে বিভেদ ও বৈষম্যের সৃষ্টি করছে। 

নারীকে সন্তান ধারণের ক্ষমতা দিয়েছে কিন্তু এ সন্তান ধারণের ক্ষমতার কারণে নারী পুরুষের চেয়ে দুর্বল। Radical Feminist দের মতে পুরুষের পুরুষত্ব একেবারেই মানসিক ব্যাপার এবং এ পুরুষত্ব প্রকাশের মাধ্যমেই সমাজে নারী পুরুষ বৈষম্য ।

তিনি নারী পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণের জন্য কতকগুলো পদ্ধতির কথা বলেন। যেমন :

(i) উন্নত প্রযুক্তি;

(ii) কৃত্রিম উপায়ে প্রয়োজনে সন্তান জন্মদান;

(iii) সঠিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ও

(iv) পিতৃতান্ত্রিকতার নিয়ন্ত্রণ ।

৪. মার্কসীয় নারীবাদ : মার্কসবাদী মতাদর্শ হলো মার্কসীয় মতবাদের ভিত্তি, যা ব্যক্তি মালিকানাভিত্তিক শ্রেণি বিভক্ত সমাজকেই নারী পরাধীনতার মূল কারণরূপে চিহ্নিত করেন। এ নারীবাদ দেখায় যে, নারীর দাসত্ব সূচিত হয়েছে দাস প্রথারও পূর্বে। 

অন্য দিকে সমাজের ব্যক্তিগত উৎপাদনের অন্যান্য উপায়সমূহের মতো নারীও সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র স্বরূপ পুরুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে। এ মতবাদের প্রবক্তারা নিােক্ত কারণে নারী মুক্তি অসম্ভব বলে মনে করেন :

(i) ব্যক্তিগত সম্পত্তি;

(ii) মালিকানা বিলুপ্তি ও

(iii) সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বর্তমান বিশ্বের সর্বত্র আজ একটি দাবি তা হলো নারীমুক্তি। নারী মুক্তির ধারক বাহক হিসেবে নারীবাদকে উপেক্ষা করার কোন অবকাশ নেই। 

সময়ের প্রেক্ষিতে নারীরা অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে গড়ে উঠে বিভিন্ন নারীবাদী তত্ত্ব। তবে সব নারীবাদী তত্ত্বের মূল কথা হলো, নারী মুক্তি, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম নারীবাদী চিন্তা চেতনার বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ