২০টি অপরিচিতা গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর | Oporichita Onudhabon

অপরিচিতা গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর
অপরিচিতা গল্পের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

১. প্রশ্ন:. “আর আমি লজ্জায় জানালার বাহিরে মুখ বাড়াইয়া প্রকৃতির শোভা দেখিতে লাগিলাম” কেন এ উক্তিটি করা হয়েছে?

উত্তরঃ পুরুষ হয়েও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে না পারা এবং মেয়ে হয়েও কল্যাণী সে কাজ করায় মনে মনে লজ্জিত হয় অনুপম । রেলগাড়িতে করে অনুপম তার মাকে নিয়ে তীর্থে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ঘটনাচক্রে কল্যাণীদের গাড়িতে ওঠে তারা। কোনো এক স্টেশনে এক ইংরেজ সাহেবের জন্য অনুপমদের সিট রিজার্ভ বলে সেখান থেকে তাদের সরে যেতে বলে রেলওয়ের এক কর্মচারী। অনুপম কাজটি অন্যায় জেনেও মেনে নিতে যাচ্ছিল। কিন্তু কল্যাণী এ কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং সাহেব তখন অন্য গাড়িতে যেতে বাধ্য হয়। এ কাজ নিজের করা উচিত ছিল ভেবে মনে মনে লজ্জিত হয়ে অনুপম একথা বলে ।

২. প্রশ্ন:. . “ঠাট্টার সম্পর্কটিকে. স্থায়ী করিবার. ইচ্ছা আমার নাই”— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ  অনুপমের সাথে কল্যাণীর বিয়ে ভেঙে দেওয়াটাকে অনুপমের মামা ঠাট্টা মনে করলে শম্ভুনাথ সেন এ কথা বলেছিলেন।

অনুপমের মামা বিয়ের আগেই সেকরা দিয়ে কনের গায়ের গয়না যাচাই করে দেখেতে চান তা আসল কি না। এ কারণে শম্ভুনাথ সেন অপমানিত বোধ করেন। গয়না যাচাইয়ের ব্যাপারে পাত্রের নির্লিপ্ততা দেখে তিনি এমন ব্যক্তিত্বহীন ছেলের সাথে মেয়ে বিয়ে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । তাই তিনি পাত্রপক্ষকে যথাযথ আপ্যায়নের পর গাড়ি ডেকে বিদায় দিতে চাইলে অনুপমের মামা এ বিষয়টি ঠাট্টা মনে করেন। এর জবাবে তিনি বলেন – ‘ঠাট্টার সম্পর্ককে. স্থায়ী করিবার. ইচ্ছা আমার. নাই।'

৩. প্রশ্ন:. ‘সে বলিল ‘মাতৃ-আজ্ঞা।'— বক্তার মনোভাব বিশ্লেষণ করো। 

উত্তরঃ  সে বলিল ‘মাতৃ-আজ্ঞা'— এখানে বক্তার মনোভাবে দেশমাতৃকার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে।

বিবাহ ভেঙে যাওয়ার পর কল্যাণীর ভেতর সুপ্ত দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। তার মতে মাতৃভূমির জন্য তার উচিত কিছু করা। আর এ বোধ থেকে সে মেয়েদের শিক্ষার ব্রত গ্রহণ করেছে। তাই নিজ কর্তব্য যথাযথ পালনের মাধ্যমে দেশমাতার জন্য নিজেকে সমর্পণ করা বিধায় কল্যাণীর জন্য অনুপম দ্বিতীয়বার বিবাহের প্রস্তাব আনলে সে তা ফিরিয়ে দেয় এবং বলে ‘মাতৃ-আজ্ঞা ।’

৪. প্রশ্ন:. “কিন্তু ভাগ্য আমার. ভালো, এই তো আমি জায়গা. পাইয়াছি'— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

 উত্তরঃ  প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দ্বারা. অনুপম কল্যাণীর কাছাকাছি থাকা বলতে. হৃদয়ে জায়গা পাওয়ার. কথা বুঝিয়েছে।

কানপুরে পৌঁছে কল্যাণীর পরিচয় জানতে পেরে অনুপমের হৃদয় আবারো কল্যাণীর চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়। সে কল্যাণীকে বিয়ে করতে চাইলেও কল্যাণী রাজি হয় না। কল্যাণীর কাছাকাছি থাকার জন্য সে কানপুরেই বসবাস করতে শুরু করে। সুযোগ পেলেই সে কল্যাণীর কাজে সাহায্য করে । কল্যাণীর আশপাশে থাকার সুযোগটুকুকেই সে পরম পাওয়া মনে করে আর ভাবে-জীবনসঙ্গী হিসেবে পাইনি; কিন্তু কাছে থাকার সুযোগটুকুইবা কম কীসে।

৫. প্রশ্ন:. ‘তারপর বুঝিলাম, মাতৃভূমি আছে’– বুঝিয়ে লেখো ।

 উত্তরঃ  পুনর্বার বিয়েতে রাজি না হওয়ায় কল্যাণী সম্পর্কে আলোচ্য উক্তিটি করেছে অনুপম ।

অনুপম কানপুরে এসে কল্যাণী ও তার পিতার সামনে হাতজোড় করে, মাথা হেঁট করে ক্ষমা চেয়ে আবার বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু কল্যাণী ততদিনে দাম্পত্য জীবনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে, সে মনোযোগী হয়েছে দেশমাতৃকার সেবার প্রতি। তাই অনুপমকে ফিরিয়ে দিয়ে সে. বলে ‘মাতৃ-আজ্ঞা' আছে। অনুপম বুঝতে পারে, মাতৃ-আজ্ঞা মানে মাতৃভূমির জন্য কল্যাণীর উৎসর্গিত প্রাণ। তাই অনুপম বলেছে ‘তারপর বুঝিলাম, মাতৃভূমি 'আছে।'

৬. প্রশ্ন:.'গাড়িতে জায়গা আছে'- উক্তিটির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

 উত্তরঃ  অনুপম মাকে নিয়ে তীর্থে যাওয়ার সময় ফার্স্ট ক্লাসে জায়গা না পেয়ে ভাবনায় পড়ে যায়, তখন সেকেন্ড ক্লাস থেকে কল্যাণী তাদের আহ্বান করে ।

কোনো এক ফৌজের বড় জেনারেল সাহেব ভ্রমণে বের হয়েছেন। তাই ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড়। অনুপম বুঝতে পারে ফার্স্ট ক্লাসের আশা ছেড়ে দিতে হবে। তখন সেকেন্ড ক্লাস থেকে কল্যাণী তাদের আহ্বান করে বলে যে সেখানে জায়গা আছে। এখানে মূলত কল্যাণীর সহযোগিতামূলক মনোভাবের পরিচয় পাওয়া যায় ।

৭. প্রশ্ন:.‘কিন্তু ভাগ্য আমার ভালো, এই তো আমি জায়গা পাইয়াছি’ বক্তার এমন অনুভূতির কারণ বুঝিয়ে লেখো।

 উত্তরঃ  প্রশ্নোক্ত উক্তিটিতে অনুপম কল্যাণীর কাছাকাছি থাকা বলতে তার হৃদয়ে জায়গা পাওয়ার কথা বুঝিয়েছে ।

কানপুরে পৌঁছে কল্যাণীর পরিচয় জানতে পেরে অনুপমের হৃদয় আবারো কল্যাণীর চিন্তায় আচ্ছন্ন হয়। সে কল্যাণীকে বিয়ে করতে চাইলেও কল্যাণী রাজি হয় না। কল্যাণীর কাছাকাছি থাকার জন্য সে কানপুরেই বসবাস করতে শুরু করে। সুযোগ পেলেই সে কল্যাণীর কাজে সাহায্য করে । কল্যাণীর আশপাশে থাকার সুযোগটুকুকেই সে পরম পাওয়া মনে করে আর ভাবে—" জীবনসঙ্গী হিসেবে পাইনি; কিন্তু কাছে থাকার সুযোগটুকুইবা কম কীসে ।

৮. প্রশ্ন:.. কল্যাণীর ‘মাতৃ-আজ্ঞা'র ধরন আলোচনা করো ।

 উত্তরঃ অনুপমের সাথে বিয়ে ভাঙার পর কল্যাণী নারীশিক্ষার ব্রত গ্রহণ করে । কানপুরে অনুপম কল্যাণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে কল্যাণী তা প্রত্যাখ্যান করে। এই প্রত্যাখ্যানের কারণ তার মাতৃ-আজ্ঞা । বস্তুত এ মাতৃ-আজ্ঞা আর কিছু নয়, দেশমাতৃকার সেবা করা। আর এ সেবার পথ হলো মেয়েদের সুশিক্ষিত করে তোলা। মেয়েরা শিক্ষিত হলেই একটা সমাজ পরিপূর্ণ রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠে। কল্যাণীর মাতৃ-আজ্ঞার ধরন বলতে নারীশিক্ষার এই বিষয়টিকেই বোঝানো হয়েছে।

৯. প্রশ্ন:.. ‘তবে অপানাদেরই গাড়ি বলিয়া দিই'— উক্তিটি শম্ভুনাথ কেন করেছিল?

 উত্তরঃ ‘অপরিচিতা' গল্পের অপরিচিতা তথা কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন বিবাহ সভা স্থগিত রেখে অনুপমদের বিদায় দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যত হয়ে উক্তিটি করেছেন। মেয়ের জন্য যে সব গহনা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি করা হয়েছে, সেগুলোর পরিমাণ ও খাঁটিত্ব প্রমাণের জন্য অনুপমের মামা বাড়াবাড়ি রকম অভদ্রতা করেছে। মামার অভদ্র-আচরণ ও হীন মানসিকতায় অপমানিত বোধ করেছেন শম্ভুনাথ সেন। তাই শিক্ষিত, সচেতন, স্নেহময়ী পিতা শম্ভুনাথ সেন, বিবাহ ভেঙে দেন । প্রশ্নোক্ত কথাটি শম্ভুনাথ সেন মেয়ের বিয়ে ভেঙে দেওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন ।

১০. প্রশ্ন:..মামা কেন শম্ভুনাথ বাবুকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে যান?

 উত্তরঃ অনুপমের মামা ভাগিনার বিয়ের আগে কন্যার গহনা পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন বলে শম্ভুনাথ বাবুকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে যান ।

অনুপমের মামার জীবনের লক্ষ্য হলো কারো কাছে ঠকবেন না। শম্ভুনাথ সেন গহনা কম দিয়ে বা খাদযুক্ত গহনা দিয়ে তাঁকে ঠকাতে পারেন। এরূপ ভাবনা থেকে তিনি বিয়ের আগেই গহনাগুলো যাচাই করে দেখতে চান । আর এজন্যই শম্ভুনাথ বাবুকে পাশের ঘরে ডেকে নিয়ে যান তিনি ।

১১. প্রশ্ন:..কল্যাণীর ‘মাতৃ-আজ্ঞা'র ধরন আলোচনা করো

 উত্তরঃ অনুপমের সাথে বিয়ে ভাঙ্গার পর কল্যাণী যে নারীশিক্ষার ব্রত গ্রহণ করেছিল তাকেই মাতৃআজ্ঞা বলা হয়েছে।

কানপুরে অনুপম কল্যাণীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে কল্যাণী তা প্রত্যাখ্যান করে । এই প্রত্যাখ্যানের কারণ তার মাতৃ-আজ্ঞা। বস্তুত এ মাতৃ-আজ্ঞা আর কিছু নয়, দেশমাতৃকার সেবা করা। আর এ সেবার পথ হলো মেয়েদের সুশিক্ষিত করে তোলা। মেয়েরা শিক্ষিত হলেই একটা সমাজ পরিপূর্ণ রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠে। কল্যাণীর মাতৃ-আজ্ঞার ধরন বলতে নারীশিক্ষার এই বিষয়টিকেই বোঝানো হয়েছে ।

১২. প্রশ্ন:.. বলিলেন, 'সে কী কথা । লগ্ন'- কে, কেন বলেছিল? প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বুঝিয়ে দাও ।

 উত্তরঃ কল্যাণীর বিয়ের গহনা পরীক্ষা করানোর পর শম্ভুনাথ বরপক্ষকে খাবার কথা বললে অনুপমের মামা অবাক হয়ে লগ্নের কথা উল্লেখ করে ।

অনুপমের মামা কল্যাণীর গয়না যাচাই করে দেখতে চাইলে শম্ভুনাথ সেনের আত্মসম্মানে আঘাত লাগে। অনুপম এ ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করলে শম্ভুনাথ স্থির করেন তিনি এমন ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেবেন না। তাই নিয়ম না থাকলেও শম্ভুনাথ বরকে বিয়ের পূর্বেই খাওয়ার কথা বলেন । আর এতে বিস্মিত হয়ে অনুপমের মামা শম্ভুনাথকে লগ্নের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

১৩. প্রশ্ন:.. ‘আমার ভাগ্যে প্রজাপতির সঙ্গে পঞ্চশরের কোনো বিরোধ নাই'— বাক্যটির তাৎপর্য কী?

 উত্তরঃ প্রশ্নোক্ত বাক্যটিতে অনুপমের ভাগ্যের সুপ্রসন্নতার কথা বলা হয়েছে। অনুপমের বিবাহের জন্য কন্যাকে আশীর্বাদ করতে তার পিসতুতো ভাই বিনুকে পাঠানো হলো। সে ফিরে এসে কন্যার প্রশংসা করে। বিনু খুবই রুচিশীল মানুষ, সে অল্প কথায় অনেক অর্থ প্রকাশ করে। সে যখন বলে খাঁটি সোনা, তখন অনুপমের বুঝতে বাকি থাকে না যে তার জন্য যে পাত্রী পছন্দ করা হয়েছে, সে অনন্য গুণসম্পন্ন নারী। তার ভাগ্যে বিবাহের দেবতা প্রজাপতি ও প্রেমের দেবতা মদনের শুভদৃষ্টি পড়েছে। উভয় দেবতার মধ্যে আশীর্বাদের কোনো রকম বিরোধ নেই ।

১৪. প্রশ্ন:..“এ কেবল একটি মানুষের গলা, শুনিলেই মন বলিয়া ওঠে, ‘এমন তো আর শুনি নাই।” অনুপমের এমন মনে হওয়ার কারণ কী? ব্যাখ্যা করো।

 উত্তরঃ অনুপমের কানপুর স্টেশনে অচেনা এক নারীর মধুর কণ্ঠস্বর শুনে এরকম মনে হয় ।

অনুপম চিরকাল গলার স্বরের পূজারি। তার মতে, মানুষের মধ্যে যা অন্তরতম এবং অনির্বচনীয় তার চেহারাই হচ্ছে কণ্ঠস্বর। হঠাৎ অচেনা এক নারীর কণ্ঠস্বর শুনে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান । কিন্তু শুধু নারীর গলার স্বর বলে সেটিকে তিনি সুন্দর বলতে চান না। বরং এ কণ্ঠস্বরটি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার মধ্যেই ভালো। অনুপমের মতে, যে কেউ এ গলার স্বর শুনে মুগ্ধ হবে ।

১৫. প্রশ্ন:..ঠাট্টা তো আপনিই করিয়া সারিয়াছেন'— বুঝিয়ে দাও । 

 উত্তরঃ কল্যাণীর সাথে অনুপমের বিয়ে ভেঙে দেওয়ার মাধ্যমে অনুপমের মামার প্রতি শম্ভুনাথ সেনের ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। বিয়ের পূর্বমুহূর্তে অনুপমের মামা কনের পরিহিত সকল গয়না পরখ করে দেখতে চান । তার এ অসংগত প্রস্তাব দৃঢ়চিত্ত শম্ভুনাথ সেনের আত্মমর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করে । তাই কৌশলে বরযাত্রীদের খাইয়ে দিয়ে তাদের তিনি বিদায় জানান । এরূপ আচরণে অনুপমের মামা আশ্চর্য হয়ে মন্তব্য করলে তার প্রত্যুত্তরে শম্ভুনাথ সেন প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেন। মূলত বিয়ের আগে গহনা নিয়ে মামার অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের কারণেই শম্ভুনাথ বিয়ে ভাঙার কথা বলেছেন ।

১৬. প্রশ্ন:..অপরিচিতা' গল্পে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অনুপমের গুরুত্বহীনতার কথা বুঝতে পেরে শম্ভুনাথ সেন অনুপমকে একটি কথাও বলার আবশ্যকতা বোধ করলেন না।

 উত্তরঃ মেয়ের গহনা যাচাইয়ের ব্যাপারে শম্ভুনাথ সেন অনুপমের মতামত জানতে চাইলে সে কোনো মতামত দিতে পারে না। অনুপমকে শম্ভুনাথ সেন খেতে বললেও মামার আদেশ অমান্য করে সে খায় না। এসব কারণে শম্ভুনাথ বাবু বুঝতে পারেন, অনুপমের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই । তাই পরবর্তীতে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত শম্ভুনাথ একাই নেন, অনুপমের মতামত জানার প্রয়োজনবোধ করেন না ।

১৭. প্রশ্ন:..শম্ভুনাথ সেন কেন অনুপমকে একটি কথা বলাও আবশ্যক বোধ করলেন না?

 উত্তরঃ অপরিচিতা' গল্পে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অনুপমের গুরুত্বহীনতার কথা বুঝতে পেরে শম্ভুনাথ সেন অনুপমকে একটি কথাও বলার আবশ্যকতা বোধ করলেন না।

মেয়ের গহনা যাচাইয়ের ব্যাপারে শম্ভুনাথ সেন অনুপমের মতামত জানতে চাইলে সে কোনো মতামত দিতে পারে না। অনুপমকে শম্ভুনাথ সেন খেতে বললেও মামার আদেশ অমান্য করে সে খায় না। এসব কারণে শম্ভুনাথ বাবু বুঝতে পারেন, অনুপমের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই । তাই পরবর্তীতে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত শম্ভুনাথ একাই নেন, অনুপমের মতামত জানার প্রয়োজনবোধ করেন না ।

১৮. প্রশ্ন:..কারণ প্রমাণ হইয়া গেছে আমি কেহই নই'— ব্যাখ্যা করো ।

 উত্তরঃ আলোচ্য উক্তিটির মধ্যে অনুপমের ব্যক্তিত্বহীনতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।

অনুপম শিক্ষিত যুবক হয়েও ব্যক্তিত্ববিবর্জিত পরিবারতন্ত্রের কাছে অসহায় পুতুল । শম্ভুনাথবাবুর কাছে এ কথা প্রমাণিত হওয়ায় বিয়ে ভেঙে দেওয়ার সময় অনুপমের সাথে তিনি একটি কথা বলাও প্রয়োজন মনে করেননি । তাই অনুপম নিজের অবস্থানটি বোঝাতে গিয়ে এই অভিমতটি ব্যক্ত করে যে, ‘প্ৰমাণ হইয়া গেছে আমি কেহই নই।'

১৯. প্রশ্ন:.‘ফল্গুর বালির মতো তিনি আমাদের সমস্ত সংসারটাকে নিজের অন্তরের মধ্যে শুষিয়া লইয়াছেন।' কার কথা বলা হয়েছে? এ কথার তাৎপর্য কী?

 উত্তরঃ অনুপমদের পরিবারে ব্যাপক প্রভাব বিস্তারের কারণে অনুপমের মামাকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলা হয়েছে।

‘অপরিচিতা' গল্পে অনুপমের আসল অভিভাবক তার মামা। অনুপমের জীবনের সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণে এই মামার ভূমিকাই প্রধান। তিনি অনুপমের চেয়ে মাত্র ছয় বছরের বড়ো। অথচ সংসারে তাঁর মতামত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ফল্গু একটি নদীর নাম। যার উপরের অংশে বালির আস্তরণ কিন্তু ভেতরে জলস্রোত প্রবাহিত। অনুপমের মামার সর্বেসর্বা হয়ে সমস্ত দায়- দায়িত্ব পালনের বিষয়টিকে এ নদীর সাথে তুলনা করা হয়েছে। অনুপমের মামা যেন ফল্গু নদীর বালির মতো তাদের সংসারটাকে নিজের অন্তরের মধ্যে শুষে নিয়েছেন । আর এ বিষয়টি বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে ।

২০. প্রশ্ন:.‘বাবাজি একবার এইদিকে আসতে হচ্ছে’– কে, কাকে বলেছে? ব্যাখ্যা করো ।

 উত্তরঃ বিয়ের আগেই কনের স্বর্ণ যাচাই করে দেখা প্রসঙ্গে ডা. শম্ভুনাথ অনুপমকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য কথাটি বলেছিলেন।

অনুপমের বিয়ের অনুষ্ঠানে কনেকে যৌতুক হিসেবে দেওয়া স্বর্ণলঙ্কারগুলো খাঁটি কি না তা যাচাই করতে চায় অনুপমের মামা। কনের পিতা শম্ভুনাথকে তিনি স্বর্ণগুলো নিয়ে আসতে বললে হবু বর অনুপমের ব্যক্তিত্ব ও মানসিকতা অনুধাবন করার মানসে শম্ভুনাথ অনুপমকে বলেছিলেন, 'বাবাজি একবার এইদিক আসতে হচ্ছে।' কিন্তু অনুপম মামার অনুমতি ছাড়া এক পাও নড়তে চায়নি তার ব্যক্তিত্বহীনতার কারণে ।

Next Post Previous Post
10 Comments
  • Anonymous
    Anonymous 08 December

    Pdf এর ব্যবস্থা করলে ভালো হয়

  • Anonymous
    Anonymous 06 January

    Thank you vaiya

  • Anonymous
    Anonymous 23 February

    good

  • Anonymous
    Anonymous 16 April

    এই লিখা গুলো পিডিএফ আকারে পাওয়া গেলে অনেক উপকার হতো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া 🖤🖤

  • Anonymous
    Anonymous 16 September

    ‘কী সর্বনাশ। এ পক্ষেও মাতুল আছে নাকি’- কেন বলা হয়েছে?
    -খ নং এর জন্য এর আন্সার কি হবে

  • Anonymous
    Anonymous 19 January

    Onk sundor..!!🤎

  • Anonymous
    Anonymous 29 January

    Onyk sundor kalky test exam doa korbyn 🥺

  • Anonymous
    Anonymous 25 June

    Thanks. Very helpful.

  • Anonymous
    Anonymous 20 October

    khub bhalo. Kintu aro onek onudhabon ache, shegulo add korle aro bhalo hoto. r pdf thakle porte shubidha hoito

  • Anonymous
    Anonymous 09 November

    ধন্যবাদ 😊

Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ