অস্তিত্ববাদী নারীবাদ বলতে কী বুঝ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো অস্তিত্ববাদী নারীবাদ বলতে কী বুঝ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের অস্তিত্ববাদী নারীবাদ বলতে কী বুঝ।

অস্তিত্ববাদী নারীবাদ বলতে কী বুঝ
অস্তিত্ববাদী নারীবাদ বলতে কী বুঝ

অস্তিত্ববাদী নারীবাদ বলতে কী বুঝ

উত্তর : ভূমিকা : আধুনিক নারীবাদী চিন্তাজগতের অন্যতম পথ প্রদর্শক সিমন দ্য বেভোয়ার (Simone de Beauvior) প্যারিসের এক ক্যাথলিক বুর্জোয়া পরিবারে (১৯০৮-১৯৮৬) জন্মগ্রহণ করেন। 

একজন নারীবাদী লেখিকা হিসেবে কাজ শুরু করলেও এর পূর্ব থেকে তিনি ‘অস্তিত্ববাদী’ দার্শনিক ও সক্রিয় আন্দোলনকর্মী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। 

সিমন ছিলেন অস্তিত্ববাদীদের মধ্যে অগ্রগণ্য এবং তাঁর বিখ্যাত গ্ৰন্থ ‘The Second Sex' ষাটের দশকে আমেরিকায় এবং এরও এক দশকে পরে ইউরোপীয় নারীবাদী আন্দোলনে প্রচণ্ড প্রভাব ফেলে ।

→ অস্তিত্ববাদী নারীবাদ : অস্তিত্ববাদী নারীবাদের প্রবক্তা হলেন আধুনিক নারীবাদী চিন্তা জগতের অন্যতম পথপ্রদর্শক সিমন দ্য বেভোয়ার। তিনি সমাজস্থ নারী-পুরুষের সম্পর্ক নির্ণয় করতে গিয়ে অস্তিত্ববাদী দর্শন প্রয়োগ করেন। 

অস্তিত্ববাদের মূল স্লোগান হলো, মানুষ নিজের বা আত্ম অস্তিত্বকে মুক্ত করতে চায় আর এজন্য তাকে (Other) অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে হয় । আর নারী ও পুরুষের মধ্যে সংঘর্ষের ক্ষেত্রে আমরা এই রূপটিই দেখতে পাই। 

সিমন বলেন, “পুরুষ নিজেকে সর্বদাই Self এবং নারীকে Other-হিসেবে অভিহিত করে। Other যেহেতু Self এর জন্য হুমকিস্বরূপ কাজেই পুরুষ নিজের স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে Other কে অর্থাৎ নারীকে পদানত রাখে। 

ফলে পুরুষ Subject এবং নারী Object হিসেবে বিবেচিত হয়। বেভোয়ার মনে করেন, “যে মুহূর্তে একজন নিজেকে আত্ম (Self) স্বাধীন সত্তা হিসেবে কল্পনা করে, ঠিক সেই মুহূর্তেই অপর তথা other এর ধারণার জন্ম হয় ।”

সিমন জীববিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী এবং মার্কসবাদীদের ব্যাখ্যা তুলে ধরেন এবং নিজ মতামতও উপস্থাপন করেন। জীব বিজ্ঞানীরা নারী ও পুরুষের পার্থক্যের ক্ষেত্রে নারীর সন্তান জন্মদান, যৌন ভূমিকা ও শারীরিক দুর্বলতার কথা উল্লেখ করেন যা নারীকে অপর (Other) এ পরিণত করে। 

তিনি আরও বলেন, “নারীর উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় পুরুষ নানাবিধ মিথ বা কাল্পনিক কাহিনীর সৃষ্টি করেছে। নারীকে চিত্রিত করেছে রহস্যময়ী, জটিল বহুরূপী ও প্রকৃতির ন্যায় পরিবর্তনশীল হিসেবে। বিভিন্ন লেখনীর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে আত্মবিসর্জনই নারীর আদর্শ। 

আর নারী সেই আদর্শ রূপটিই আত্মস্থ করে সমাজে ‘অপর' হিসেবে গড়ে উঠেছে। সামাজিকীকরণের মধ্য দিয়েই নারীকে ‘নারী' হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে সিমন নারীকে Other থেকে মানুষে রূপান্তরের কথা বলেছেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সিমন সমাজস্থ নারীর অধীনতাকে দূরীকরণে নারীর আত্ম অধীনতাকে দূরীকরণে নারীর “আত্মজাগরণের কথা বলেছেন। 

তিনি নারীকে নিজ পরাধীনতার কারণটি অনুসন্ধান করে নারীর মুক্তির জন্য নারীকেই জগতে তথা নারীর সত্তাকে জাগরিত করতে চেয়েছেন। আর এক্ষেত্রে নারীই হবে প্রধান ক্রীড়নক এবং জাগরিত হবে নারীর মনুষত্বের সত্তা ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ অস্তিত্ববাদী নারীবাদ বলতে কী বুঝ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম অস্তিত্ববাদী নারীবাদ বলতে কী বুঝ। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ