স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর ।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর

স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর

  • অথবা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা বর্ণনা কর।
  • অথবা, সুস্বাস্থ্যের জন্য যেসব ব্যবস্থা নেওয়া উচিত তা বিশ্লেষণ কর ।

উত্তর : ভূমিকা : মানবজীবন প্রকৃতির এক অনবদ্য সৃষ্টি। সে জীবন চির অমর নয়। মৃত্যু মানবজীবনের জন্য অবশ্যম্ভাবী এ জীবনের অর্থ, আত্মরক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও প্রয়োজনীয় কাজের মাধ্যমে আনন্দ অনুভব করা। 

স্বাস্থ্য মানুষের এক অমূল্য সম্পদ। মানুষের এ স্বাস্থ্য রক্ষায় তাকে নানা রকম ব্যবস্থা/পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়। প্রাচীনকাল থেকেই স্বাস্থ্য রক্ষায় নানা রকম গবেষণা হয়ে আসছে এবং বর্তমান সময়ে বা আধুনিক যে চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে তা মূলত ব্যক্তির স্বাস্থ্যের সাথে সম্পৃত্ত। স্বাস্থ্য কিভাবে রক্ষা করা যায় এ বিষয়ে বর্তমানে নানা ব্যক্তি নানা রকম মতামত ব্যক্ত করেছেন ।

→ স্বাস্থ্য : স্বাস্থ্য হলো সম্পূর্ণ দৈহিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা। অর্থাৎ সকল প্রকার অসুস্থতা থেকে মুক্তি থাকাই হলো স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য অনেক সময় পরিবেশের উপর নির্ভর করে থাকে ।

→ সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ : সুস্বাস্থ্যর অথবা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো

১. সুষম খাদ্য গ্রহণ : সুষম খাদ্য গ্রহণ মানব জীবনের অস্তি ত্ব রক্ষা তথা স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য। মানব শরীর সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত রাখার জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাদ্যের। 

কিন্তু সকল প্রকার খাদ্য সকল পুষ্টির উপাদান বিদ্যমান নেই। কিন্তু মানবদেহে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সকল প্রকার পুষ্টিকর উপাদান। গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে, বিশেষ-বিশেষ পুষ্টি উপাদান তার স্বাভাবিক ক্রিয়া পরিচালানার জন্য অন্য পুষ্টি উপাদানের উপর নির্ভরশীল। 

তাছাড়া এক পুষ্টিগুণের এক এক কাজ। যেমন প্রোটিনের কাজ হলো শরীর গঠন করা, কার্বোহাইড্রেটের কাজ তাপ উৎপাদন, ভিটামিনের কাজ রোগ প্রতিরোধ করা। 

কিন্তু এসব উপাদান একটি কম বা বেশি হলে শরীরে নানাবিধ অসুবিধার সৃষ্টি হয়। বিপাক শোষণ ও পরিপাকে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে শরীরে যন্ত্রের সচলতা নষ্ট হয়। শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে। 

তাই সব পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য শরীরের জন্য প্রয়োজন। কিন্তু মাঝে মাঝে দেখা যায় অনেকেই টাকার অভাবে অল্পমূল্যের খাবার খায় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

২. ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ : প্রতিটি মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য তার ব্যক্তিগত ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি ব্যক্তির আচরণ সুস্থ ও ভারসাম্যপূর্ণ হয় তাহলে বুঝতে হবে যে সুস্বাস্থ্যের একটি শর্ত পূরণ করেছে। 

সাধারণত স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় আচার-আচরণগুলো ব্যক্তির, সামাজিক মূল্যবোধ দ্বারা প্রভাবিত হয়। মানুষ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠার পাশাপাশি এসব মূল্যবোধ ও আদর্শের সাথে পরিচিত হতে থাকে, বড় হওয়ার সাথে সাথে সে সামাজিক মূল্যবোধগুলো আয়ত্ত করে নিতে থাকে। 

বিভিন্ন সময় বাংলা মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য বিষয়সমূহ ব্যক্তির স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় আচরণকে প্রভাবিত করে। ছেলে বেলার সুস্বাস্থ্যের আচরণ শিখতেও এটা ভূমিকা পালন করে। 

আবার যদি পারিপার্শ্বিক অবস্থা শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ না হয় তবে তারা সুস্বাস্থ্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে পক্ষান্তরে যদি পরিবেশ ঝুঁকিপূর্ণ/বৈরি হয় তবে তারা অস্বাভাবিক স্বাস্থ্যহীনভাবে বেড়ে ওঠে।

৩. প্রতিষেধকমূলক ব্যবস্থা সহজলভ্য করা : মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিষেধকমূলক ব্যবস্থা সহজলভ্য করা উচিত। 

নবজাতক ও শিশুদেরকে মারাত্মক ভয়াবহ। জটিল রোগগুলো থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন । 

বিভিন্ন স্বাস্থ্যহানিকর মারাত্মক রোগগুলো থেকে তাদেরকে নিরাপদে রাখতে হলে সতর্ক থাকতে হবে। বিংশ শতাব্দীতে প্রতিষেধকমূলক টিকা ব্যবস্থা আবিষ্কার হয়। তখন বিভিন্ন দেশ এ টিকা দান কর্মসূচি গ্রহণ করে। 

বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রতিষেধকমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার যক্ষ্মা, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুস্টংকার এর মতো জটিল ও মারাত্মক রোগগুলো কমতে থাকে। ১৯৮০ সালের দিকে গুটিবসন্ত পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়। 

এইভাবে যদি প্রতিটি দেশ প্রতিষেধকমূলক টিকাদান কর্মসূচি গ্রহণ করে তবে অনেক রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব।

৪. নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ গঠন : সুস্বাস্থ্যর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় মৌলিক উপাদান হলো স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ। নির্মল বাতাস, নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি, বিষমুক্ত জমি, স্বাস্থ্যসম্মত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ও আশ্রয় যা মানুষকে সুরক্ষা দেয়। 

আগের দিনে উনবিংশ শতাব্দীর Filth disease অনাকাঙ্ক্ষিত রোগ নামক একটি পরিভাষার প্রচলন ছিল। এ পরিভাষার মাধ্যমে তৎকালীন সময়ে বিরাজমান পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতাকে ইঙ্গিত করা হতো। 

বিশুদ্ধ পানি সূচি পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং উন্নত গৃহায়ন পরিকল্পনার কারণে উন্নতবিশ্বে স্বাস্থ্যখাতে অনেক উন্নত হয়েছে। স্বাস্থ্য উন্নয়নে EU এর কয়েকটি পদক্ষেপ উল্লেখ করা যায় যেমন বাঁচার জন্য খাদ্য বিশুদ্ধ পানি অত্যাচার ও বৈষম্য থেকে মুক্তি ইত্যাদি। সুতরাং পরিবেশ সুস্বাস্থ্য রক্ষার অন্যতম একটি উপাদান ।

৫. স্বাস্থ্যবান নবজাতক : স্বাস্থ্যবান নবজাতক বলতে বোঝায় ঐসব শিশুরা যারা বংশগত, জন্মগত স্বাস্থ্যহীনতায় নয় । 

যারা নির্ধারিত সময় পেরোনোর পর মায়ের গর্ভ থেকে সহজে এবং সুস্বাস্থ্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং সুস্বাস্থ্য নিয়েই বেড়ে ওঠতে থাকে। 

আর স্বাস্থ্যবান নবজাতক সৃষ্টির জন্য গর্ভবর্তী মায়ের পরিচর্যার জন্য পরবর্তী শিশুর সঠিক পরিচর্যা প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় পরিচর্যার অর্থ হলো - নিয়মানুযায়ী গর্ভবতী নারীর পরীক্ষা ও উপযুক্ত নির্দেশনা প্রদান। নিরাপদ মাতৃত্ব ও সুস্থ প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ।

৬. পরিপূর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্থা : স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সুস্বাস্থ্যের জন্য দরকার উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার সহজলভ্যতা। মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য দরকার রোগমুক্ত ও হতাশামুক্ত থাকা। 

আর উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষকে রোগ মুক্ত করা যায়। চিকিৎসা সুবিধা অবশ্যই সহজলভ্য করা দরকার। কেননা দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষদের চিকিৎসা ব্যবস্থা তাদের আয়ত্তে না আনলে তারা এটা ভোগ করতে পারবে না। 

তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন উন্নত স্বাস্থ্য সেবার সহজলভ্যতা ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতার আয়ত্তে থাকা। আগের দিনে দেখা যেত ডাক্তারের সাথে দেখা করে মাত্র ৫০% সুবিধা পেত বর্তমানে এ পরিস্থিতি অনেক উন্নতি সাধন করছে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুস্বাস্থ্য যদিও অর্জন সহজ তথাপি সেই সুস্বাস্থ্য টিকিয়ে রাখা অনেক কঠিন। তাই সুস্বাস্থ্যবান হওয়া ও টিকিয়ে রাখার জন্য সবারই নানারকম পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সরকারিভাবে ও বেসরকারিভাবে যেসব পদক্ষেপ রয়েছে তা অপ্রতুল। এ সমস্ত সেবা বৃদ্ধি করতে হবে সাথে সাথে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম স্বাস্থ্য সুরক্ষা বা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ