সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়? উক্তিটি বিশ্লেষণ কর

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়? উক্তিটি বিশ্লেষণ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়? উক্তিটি বিশ্লেষণ কর ।

সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয় উক্তিটি বিশ্লেষণ কর
সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়? উক্তিটি বিশ্লেষণ কর

সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়? উক্তিটি বিশ্লেষণ কর

  • অথবা, ‘সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান।' এ বিষয়ে তোমার যুক্তি উপস্থাপন কর ৷

উত্তর : ভূমিকা : সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ সমাজে বসবাস করে। সমাজ ও সমাজের মানুষ নিয়ে সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে। সমাজবিজ্ঞান এগুলো নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা করেন। 

সমাজবিজ্ঞানে বিজ্ঞানের সকল বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। সমাজবিজ্ঞানী অগাস্ট কোঁৎ সমাজবিজ্ঞানকে একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। 

সমাজবিজ্ঞান কি বিজ্ঞান, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। সমাজবিজ্ঞান সমাজের গঠন, পদ্ধতি, কাঠামো ও মানুষের প্রকৃতি ইত্যাদি নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেন ।

→ সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞান কি না : সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান কি না তা জানার জন্য সমাজবিজ্ঞান ও বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। নিম্নে সমাজবিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের সংজ্ঞা উল্লেখ করা হলো :

১. সমাজবিজ্ঞান : সমাজবিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা। যে শাস্ত্র সমাজ ও সমাজের মানুষ নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করে তাকে সমাজবিজ্ঞান বলা হয়। সমাজের কল্যাণ সাধনই সমাজবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য।

২. বিজ্ঞান : বিজ্ঞান হলো কোনো বিষয় সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান। পরীক্ষা, প্রমাণ, যুক্তি ইত্যাদি দ্বারা নির্ণীত সুশৃঙ্খল জ্ঞানই হলো বিজ্ঞান। 

অন্যভাবে বলতে গেলে অনুসন্ধানলব্ধ সাধারণ নিয়ম প্রয়োগে রীতিগতভাবে অগ্রসর হয়ে যে জ্ঞান সংগ্রহ করা হয় তাকেই বিজ্ঞান বলে ।

→ সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞান হওয়ার পক্ষে যুক্তি : সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞান কি না তা নিম্নে তুলে ধরা হলো :

১. কলাকৌশল প্রয়োগের ক্ষেত্রে : সমাজবিজ্ঞান তাঁর আলোচনার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে না, বরং সরাসরি গবেষণাগারে মানুষ নিয়ে কাজ করে। তবে তারা মানুষের আচরণ নিয়ে কাজ করেন। 

সমাজবিজ্ঞান মানুষের আচরণ পরিমাপের জন্য সমাজ পরিমিত স্কেল, এক সিল ভূমিকরণ, প্রশ্নমালা প্রণয়ন, সাক্ষাৎকার এবং ঘটনা অধ্যয়ন ইত্যাদি কলাকৌশল নিয়ে কাজ করে। তাই দেখা যায়, সমাজবিজ্ঞান বৈজ্ঞানিক কলাকৌশল নিয়ে কাজ করে ।

২. পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির ব্যবহার : বিজ্ঞানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য পর্যবেক্ষণ। সমাজবিজ্ঞান পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সমাজের সমস্যা চিহ্নিত করেন। 

এছাড়াও সমস্যা সমাধানের জন্য এই পদ্ধতির ব্যবহার করে থাকে। কোন ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞান লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো পর্যবেক্ষণ। সুতরাং সমাজবিজ্ঞান পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির অনুসরণ করে থাকে।

৩. তথ্য সংগ্রহ : সমাজবিজ্ঞান কোন ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য পর্যাপ্ত তথ্যসংগ্রহ করেন। এক্ষেত্রে সমাজবিজ্ঞান বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন। 

কেননা যেকোন সমস্যা সমাধান করার জন্য তথ্যের গুরুত্ব অনেক। উপযুক্ত তথ্যের | মাধ্যমেই কোন ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা যায়। সেই ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা সম্ভব।

৪. পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে : বিজ্ঞানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। সমাজবিজ্ঞান অন্যান্য বিজ্ঞানের মত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে না পারলেও এটি কোন ঘটনাকে পরীক্ষা- নিরীক্ষার মাধ্যমে করে থাকে। তাই সমাজবিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের মর্যাদা থেকে একেবারে বঞ্চিত করা সম্ভব না ।

৫. ভবিষ্যদ্বাণী করা : বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য হলো কোন ঘটনাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর একটি সূত্র তৈরি করা। সমাজবিজ্ঞান কোন ঘটনা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে। তাই এই দিক থেকে সমাজবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা যায় ।

৬. কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় : বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য হলো, কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করা। সমাজবিজ্ঞান কার্যকারণ সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে। উপরের বৈশিষ্ট্যের আলোকে আমরা বলতে পারি সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান কারণ সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে বৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। তাই সমাজবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা হয় ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান। কেননা সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে বিজ্ঞানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। দার্শনিক ল্যাণ্ডবার্গের মতে, বিজ্ঞান হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সংঘটিত ঘটনার কারণসমূহ আবিষ্কার করা সম্ভব। 

মনোবিজ্ঞানী ম্যাক্সওয়েবার এর মতে, সমাজবিজ্ঞান হচ্ছে এমনই একটি বিজ্ঞান যেখানে সামাজিক ক্রিয়ার ব্যাখ্যামূলক উপলব্ধির প্রয়াস পরিলক্ষিত হয় এবং এর মাধ্যমে কার্যকারণ সম্পর্কের একটি ব্যাখ্যা দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করানো সম্ভব। তাই আমরা বলতে পারি সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়? উক্তিটি বিশ্লেষণ কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সমাজবিজ্ঞানকে কেন বিজ্ঞান বলা হয়? উক্তিটি বিশ্লেষণ কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ