একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ আলোচনা কর ।

একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ আলোচনা কর
একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ আলোচনা কর

একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ আলোচনা কর

  • সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ক্রমবিকাশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা কর। 
  • অথবা, সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশের সমাজবিজ্ঞানীদের অবদান বিশ্লেষণ কর।

উত্তর : সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করাই মানুষের স্বভাব । সমাজে বসবাস করতে গিয়ে মানুষ বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। মানুষের এসব সমস্যা ও সমাধানের নিমিত্তে সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি। 

সমাজবিজ্ঞান একদিনেই উৎপত্তি লাভ করেনি। সামাজবিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রমে সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি। সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয় অগাস্ট কোঁৎকে। তাঁর হাত ধরেই সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি। 

পরবর্তী Max weber, Marlver সমাজ বিজ্ঞানের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এর ফলে সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান হিসেবে মর্যাদা লাভ করে ।

এ সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ : সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত রয়েছে। নিম্নে সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ আলোচনা করা হলো :

১. প্লেটোর অবদান : সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশে প্লেটো আধুনিক সমাজব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেছিলেন। যেটি ছিল তার আদর্শ সমাজ কাঠামো

২. এরিস্টটলের অবদান : এরিস্টটল ছিলেন গ্রিক দার্শনিক এবং প্লেটোর ছাত্র। তিনি তার Polities ও Ethies গ্রন্থয়ের বাস্তবভিত্তিক ও আদর্শ সমাজ কাঠামোর রূপরেখা তুলে ধরেছেন। তিনি তার গ্রন্থে জীব ও জীবনের সম্পর্ক তুলে ধরেন। এরিস্টটলের মতে, মানুষ সামাজিক জীব, যে সমাজে বসবাস করে না সে হয় দেবতা না হয় পশু।

৩. হাম্বুরাবির সনদ : হাম্বুরাবির সনদ সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশে সহায়তা করেন। এই সনদে খ্রিস্টপূর্ব প্রায় দু'হাজার বছর পূর্বে ব্যবিলনীয়দের সমাজব্যবস্থার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন। পরবর্তী গবেষকগণ এই সনদের উপর ভিত্তি করে গবেষণা করেন।

৪. টমাস হবস এর অবদান : টমাস হবস সমাজ নিয়ে আধুনিক চিন্তাভাবনা করেন। তিনি সমাজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গবেষণা ও সমাধানের সঠিক পন্থা আলোচনা করেন। আধুনিক সমাজব্যবস্থা ও কাঠামো নিয়ে তিনি আলোচনা করেছিলেন।

৫. ম্যাকিয়াভেলির অবদান : ম্যাকিয়াভেলি ছিলেন একজন সমাজবিজ্ঞানী। তিনি তার "The Prince" গ্রন্থে সমাজবিজ্ঞানের কাঠামো ও গঠনপ্রণালি তুলে ধরেছেন। তার এই গ্রন্থটি সমাজবিজ্ঞানের বিকাশকে ত্বরান্বিত করে।

৬. ভিকোর অবদান : ভিকো ছিলেন ইতালিয়ান লেখক ও সমাজবিজ্ঞানী। সমাজবিজ্ঞানে তার অবদানের জন্য তাকে পাশ্চাত্যের সমাজবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। তিনি তাঁর "The New science" গ্রন্থে সমাজবিজ্ঞানের বিবর্তনের কথা তুলে ধরেন।

৭. ইবনে খালদুনের অবদান : সমাজবিজ্ঞানের অন্যতম জনক হিসেবে খ্যাত ইবনে খালদুন। তিনি তাঁর "Science of culture" গ্রন্থে সমাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন। সমাজবিজ্ঞানের উন্নতিতে খালদুনের আসাবিয়া, বাদওয়া এবং হার্ডয়া এর অবদান অনেক।

৮. ডারউইনের অবদান : 'সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশে ডারউইনের অবদান অপরিসীম। তিনি সমাজকে জীববিজ্ঞানের সাথে তুলনা করেন ।

৯. অগাস্ট কোঁৎ-এর অবদান : সমাজবিজ্ঞানের জনক হলেন অগাস্ট কোঁৎ। তিনি সমাজবিজ্ঞানে সর্বপ্রথম Sociology শব্দটি ব্যবহার করেন। তিনি সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্যবিষয় ও পরিধি নিয়ে গবেষণা করেন ।

১০. কার্ল মার্কস এর অবদান : কার্ল মার্কস সমাজবিজ্ঞানী ছিলেন। সমাজবিজ্ঞান বিকাশে তাঁর শ্রেণিসংগ্রাম তত্ত্ব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সামাজিক স্তরকে তিনটি ভাগে ভাগ করেন। যথা-

(ক) ধর্মতান্ত্রিক স্তর;

(খ) দার্শনিক স্তর ও 

(গ) দৃষ্টিবাদ স্তর ।

১১. হার্বার্ট স্পেন্সারের অবদান : সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশে স্পেন্সারের অবদান অপরিসীম। তিনি সামাজিক বিবর্তনের তত্ত্ব, অধিকার তত্ত্ব, হিয়াবাদী তত্ত্ব, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ ইত্যাদি আবিষ্কার করেন।

১২. এমিল ডুর্খেইমের অবদান : ফরাসি দার্শনিক এমিল ডুর্খেইম ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশে তিনি সামাজিক সংহতি ধারণা আত্মহত্যার কারণ বিশ্লেষণ করেন । এছাড়াও বিভিন্ন শ্রমবিভাজন ধারণা দেন ।

১৩. ম্যাক্স ওয়েবার : সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশে ম্যাক্স ওয়েবার এর অবদান অনেক। তিনি বিভিন্ন গ্রন্থ রচনা, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বে ব্যাখ্যা, আমলাতন্ত্রের ধারণা, সামাজিক স্ত রবিন্যাস করেন। যা সামাজিক বিজ্ঞানের উৎপত্তি ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষ সামাজিক জীব। সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনের ফলে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তিত হচ্ছে। ডুর্খেইম এর সামাজিক সংহতি ধারণাটি সমাজবিজ্ঞানে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে। তিনি সমাজের এই চিরাচরিত সত্যটি তুলে ধরেছেন।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞানের উদ্ভব ও বিকাশ আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ