রীট কি | রীট কাকে বলে | রীট কত প্রকার ও কি কি

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় ভিজিটর আপনি কি জানতে চান রীট কি | রীট কাকে বলে | রীট কত প্রকার ও কি কি। তাহলে স্বাগতম জানাই আপনাকে কারন আমাদের আজকের বিষয় হলো রীট কি | রীট কাকে বলে | রীট কত প্রকার ও কি কি।

রীট কি  রীট কাকে বলে  রীট কত প্রকার ও কি কি
রীট কি  রীট কাকে বলে  রীট কত প্রকার ও কি কি

রীট হচ্ছে আদালত বা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঘোষিত বিধান বা আদেশ। বাংলাদেশের সংবিধান হাইকোর্ট বিভাগকে শুধুমাত্র রীট জারীর আদি এখতিয়ার দিয়েছে । 

সংবিধানের ১০২ নাম্বার অনুচ্ছেদে বলা আছে হাইকোর্ট বিভাগ কারো মৌলিক অধিকার লংঘিত হলে তা বলবৎ করতে পারে এবং বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনাকে কার্যকর করতে পারে।

রীট কি | রীট কাকে বলে

রীটের উৎপত্তি হয়েছে ইংল্যান্ড থেকে একমাত্র রাজা বা রানীর রীট জারী করার অধিকার ছিল বলে একে প্রথমে বিশেষাধিকার রীট বলা হত। 

রাজা বা রানী তাদের কর্মচারী কর্মকর্তাদের কার্যাবলি পালনে বাধ্য করার জন্য এই রীট জারী করতেন। পরবর্তীতে এই বিশেষাধিকার সাধারণ জনগণের অধিকারে চলে আসে যাতে করে একজন নাগরিক সরকারী কর্মকর্তাদের আচরণ ও কাজে ক্ষুদ্ধ হয়ে হাই কোর্টে রীট জারী করতে পারে।

রীট কত প্রকার ও কি কি

বাংলাদেশের সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রদত্ত ক্ষমতা বলে মৌলিক অধিকার বলবত করার জন্য কতিপয় আদেশ নির্দেশ জারী করার জন্য ৫ ধরনের রীট আছে সেগুলো হলো।

১. হেবিয়াস কর্পাস (বন্দী প্রদর্শন রিট)

২. ম্যাণ্ডেমাস (পরমাদেশ বা হুকুমজারি)

৩. রিট অফ প্রহিবিশন (নিষেধাজ্ঞামুলক রিট)

৪. রীট অফ রিট অফ সার্শিওরারি (উৎপ্রেষণ)

৫. কো ওয়ারাণ্টো (কারণ দর্শাও)

হেবিয়াস কর্পাস

কোন ব্যক্তি যদি মনে করে তাকে অন্যায়ভাবে দোষারোপ বা কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, তাহলে সেই ব্যাক্তি এই রীট করতে পারবেন। 

তারপর আদালত কারাগার কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিবে কয়েদীকে আদালতে নিয়ে আসার জন্য। যাতে আদালত বিচার করে দেখবে তাকে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে কিনা।

ম্যাণ্ডেমাস

রীট অফ ম্যাণ্ডেমাস যার অর্থ হচ্ছে আমরা হুকুম দিচ্ছি। সাধারণত এটি কোনও সরকারি সংস্থাকে দেওয়া একটি আদেশ। 

কোনো সরকারি সংস্থা যখন আইন অনুসারে কোনও কাজ করতে গাফিলতি করে তখন তাকে আইন অনুযায়ী কাজ করার আদেশ দেওয়া।

রিট অফ সার্শিওরারি

এই রীট হচ্ছে নিম্ন আদালত থেকে আসা আপীল শুনানী করার সিদ্ধান্ত। প্রজাতন্ত্রের কাজে নিযুক্ত কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ বা কোন অধস্তন আদালত বা ট্রাইবুনাল এর আদেশ আইনানুগ না হয়ে থাকলে সেই আদেশকে অকার্যকর ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে আদেশ দেন তাকে উৎপ্রেশন বা রিট অফ সার্শিওরারি বলে।

কো ওয়ারাণ্টো

কো ওয়ারাণ্টো যার শাব্দিক অর্থ হচ্ছে কোন ওয়ারেণ্টের বলে? এটি যাকে পাঠানো হয় তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি যে কাজ করার অধিকার আছে বলে দাবী করছেন, তার ডকুমেন্ট বা ভিত্তি কি? 

অর্থাৎ কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালত যদি আপনার কোনো ব্যাবসা প্রতিস্টান সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করে তাহলে আপনাকে কো ওয়ারাণ্টো রীট করতে হবে।

রিট অফ প্রহিবিশন

রিট অফ প্রহিবিশন হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট থেকে নিম্ন আদালতের উপর হুকুম জারি করা অর্থাৎ হাইকোর্ট যদি কোনো মামলায় রিট অফ প্রহিবিশন জারি করে তাহলে নিম্ন আদালত সেই মামলার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না কারণ রিট অফ প্রহিবিশন জারি করার পর সেই মামলা নিম্ন আদালতের এক্তিয়ার বহির্ভূত।

রীট করার নিয়ম

আপনি যদি কোনো বিষয়ে রীট করতে চান তাহলে সবার প্রথমে আপনাকে হাইকোর্টে যেতে হবে, সেখানে গিয়ে একজন উকিল বা আইনজীবীর সাথে আপনি যেই বিষয়ে রীট করতে চান তার সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে হবে। 

আইনজীবী আপনার সকল বিষয়াবলী শুনে এবং বুঝে রিটের কারণগুলো উল্লেখ করে একটি রীট পিটিশন লিখে উক্ত রীট পিটিশনটি হাইকোর্টে দাখিল করবে।

তারপর রীট পিটিশনের উপর ভিত্তি করে আদালতে একটি প্রাথমিক শুনানি হবে, সেই শুনানিতে আদালত বাদী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট হলে বিবাদীর উপর রুল জারি করবেন। 

তারপর বিবাদীর থেকে রুলের জবাব পাওয়ার পর উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে আদালত চূড়ান্ত শুনানি গ্রহন করবেন। 

সবশেষে শুনানির উপর ভিত্তি করে আদালত সুচিন্তিত একটা ডিরেকশন দিবেন। আদালতের এই ডিরেকশন প্রদানের মাধ্যমে একটি রীট মামলার চূড়ান্ত নিস্পত্তি হয়ে থাকে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ রীট কি | রীট কাকে বলে | রীট কত প্রকার ও কি কি

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম রীট কি | রীট কাকে বলে | রীট কত প্রকার ও কি কি। আশা করি আমাদের আজকের এই পোষ্ট টি আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি ভালো লাগে তাহলে এখনি ফেসবুক বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিন। আর এই রকম নিত্য নতুন পোষ্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ