গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী কী

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী কী জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের পূর্বশর্তসমূহ বর্ণনা কর।

গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী কী
গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী কী

গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী কী

  • অথবা, গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের পূর্বশর্তসমূহ বর্ণনা কর ।
  • অথবা, গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের বিবেচ্যবিষয়গুলো সংক্ষেপে আলোচনা কর ।

উত্তর ভূমিকা : সামাজিক জীবন, সামাজিক পরিবর্তন ও সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত ও বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞান অর্জন গবেষণা ব্যাতীত সম্ভব নয় । সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রতিটি সমাজেই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। 

এসব সমস্যা সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান অর্জন করে নিরপেক্ষ ও তীক্ষ্ণ বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে উপর্যুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সামাজিক গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। 

সমাজে অসংখ্য সমস্যা বিদ্যমান থাকায় সামাজিক গবেষণার প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো গবেষণার সমস্যা নির্বাচন। সমাজের যেকোনো সমস্যা নিয়ে গবেষণা পরিচালনা সম্ভব নয় ।

গবেষণা সমস্যা নির্বাচনে বিবেচ্য বিষয় : নিম্নে গবেষণা সমস্যা নির্ধারণের পূর্বশর্ত বা প্রধান প্রধান বিবেচ্য বিষয় আলোচনা করা হলো :

১. ব্যবহারিক দিক : সমস্যা নির্বাচনের বিষয়ে গবেষণার তাত্ত্বিক বা ব্যবহারিকযোগ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এ বিষয়টি গবেষণার বিষয়বস্তু নির্ধারণের সময় যথাযথভাবে বিবেচনা করা হয়। 

যে গবেষণা তাত্ত্বিক বা ব্যবহারিক সমস্যা সমাধান করতে পারে না তা সমাজের মানুষের সমর্থন অর্জন করতে পারে না। তাই গবেষণা সমস্যা নির্ধারণের সময় লক্ষ করা অপরিহার্য যে, এটি কীভাবে কোন ক্ষেত্রে তাত্ত্বিক বিকাশ বা উন্নয়নে সাহায্য করতে পারবে।

২. প্রয়োজনীয় উপকরণ : যেকোনো গবেষণা সফলভাবে সম্পন্ন করতে হলে 'আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা এবং প্রয়োজনীয় উপকরণ অপরিহার্য । সহায়ক বইপত্র, সাময়িকী, দৈনিক পত্রিকা, তথ্য ও উপাত্ত, প্রশ্নমালা, প্রত্যাশিত নমুনা প্রভৃতি গবেষণা পরিচালনার প্রয়োজনীয় উপকরণের অন্তর্ভুক্ত। 

একটি গবেষণার জন্য এসব উপকরণের সহজপ্রাপ্যতা থাকতে হবে। উপকরণ জোগাড় কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ হলে গবেষণা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। তাই যে কোনো গবেষণা সমস্যা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় উপকরণের বিষয়টির যোগান সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা থাকতে হবে।

৩. ব্যয় ও সময় : যেকোনো গবেষণার সাথে সময় ও অর্থ উভয় বিষয়টি গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট । সময় ও অর্থ ব্যতীত কোনো সমস্যা নিয়ে অনুসন্ধান সম্ভব নয়। 

গবেষণার জন্য যে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত তা হলো পর্যাপ্ত সময় ও অর্থ সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা এবং তা অর্জনের প্রচেষ্টা করা। সাধারণত প্রতিটি গবেষণার নকশা ও প্রাথমিক পর্যায়ে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয় । 

যেসব গবেষণা পরিচালনার জন্য প্রচুর জনবল ও অর্থ প্রয়োজন তা স্বল্প সংখ্যক জনসংখ্যা ও স্বল্প পরিমাণ অর্থ সম্পদ নিয়ে গুরুত্ব না করাই সর্বোত্তম। সুতরাং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও অর্থ সম্পদের নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই কেবল অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা দরকার ।

৪. গবেষণার যোগ্যতা : গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের পূর্বে অবশ্যই গবেষকের যোগ্যতা ও দক্ষতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন । গবেষকের যোগ্যতা ও দক্ষতা এবং সমস্যা সম্পর্কে সঠিকভাবে অনুসন্ধান এ দুইয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকলেই কেবল তা নিয়ে গবেষণা পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় আগ্রহ প্রকাশ করলে তা কখনও সফল হবে না। সুতরাং সমস্যা যতই প্রকট ও কঠিন হোক না কেন তা যদি গবেষকের যোগ্যতা ও সাধ্যের বাইরে চলে যায় তা সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা আদৌ সমীচীন নয়।

৫. সমস্যার তাৎপর্য : গবেষণা সমস্যা নির্ধারণের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো গুরুত্ব বিবেচনার ভিত্তিতে যেকোনো সমস্যাকে গবেষণার টেবিলে স্থান দেওয়া। যদি কোনো সমস্যার গুরুত্ব না থাকে 

তাহলে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উপকরণ, আনুষঙ্গিক বিষয়ের সহজলভ্যতা, সময় ও অর্থ প্রভৃতি নাগালের মধ্যে থাকলেও তা নিয়ে গবেষণা করা উচিত নয়। সামাজিক সমস্যা সমাধানের উপযোগিতা ও গুরুত্ব না থাকলে সেটি নিয়ে গবেষণা পরিচালনা আদৌ ঠিক নয় । 

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কোনো একক শর্ত বা কারণের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা সমস্যা নির্বাচন উচিত নয়। কতিপয় বিষয়ের ওপর সামগ্রিক পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণের পরই শুধু গবেষণা সমস্যা নির্ধারণ সম্ভব । 

গবেষণা সমস্যা নির্বাচন প্রাথমিক ও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে গবেষকগণ গবেষণা সমস্যা নির্ধারণ করে থাকেন। কারণ গবেষণা সমস্যা নির্বাচন যথার্থ ও সময়োপযোগী না হলে তা সামাজিক মঙ্গল সাধনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে না।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের বিবেচ্য বিষয়সমূহ কী কী

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গবেষণা সমস্যা নির্বাচনের বিবেচ্যবিষয়গুলো সংক্ষেপে আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ