পদ্ধতি ভেদে গবেষণা কত প্রকার ও কী কী

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো পদ্ধতি ভেদে গবেষণা কত প্রকার ও কী কী জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের পদ্ধতির ভিত্তিতে গবেষণার প্রকারভেদ উল্লেখ কর।

পদ্ধতি ভেদে গবেষণা কত প্রকার ও কী কী
পদ্ধতি ভেদে গবেষণা কত প্রকার ও কী কী

পদ্ধতি ভেদে গবেষণা কত প্রকার ও কী কী

  • অথবা, পদ্ধতির ভিত্তিতে গবেষণার প্রকারভেদ উল্লেখ কর ।
  • অথবা, গবেষণাকে পদ্ধতিগত দিক থেকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? ও কী কী?

উত্তর ভূমিকা : বর্তমানে সমাজের প্রায় সর্ব মহলে গবেষণা ‘শব্দটি অতি সুপরিচিত এবং বহু আলোচিত। সমাজে বিভিন্ন পেশাজীবী, বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক সকলেই গবেষণার ওপর গুরুত্বরোপ করেন । এমনকি আমাদের গ্রামীণ সমাজের সাধারণ জনগণ ও গবেষণা শব্দটির সাথে পরিচিত । 

কারণ কৃষিকাজে উন্নত চাষাবাদের লক্ষ্যে গবেষক ও গবেষণা কর্মীদের সাথে তাদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ঘটছে। সমাজ গবেষকগণ গবেষণার পদ্ধতি, লক্ষ্য ও প্রতিবেদনের রূপ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় এনে গবেষণার ভিন্ন ভিন্ন প্রকারভেদ নির্ণয় করেন ।

● পদ্ধতিভেদে গবেষণার প্রকারভেদ : গবেষণার তথ্য অনুসন্ধান ও তথ্যের বিশ্লেষণ প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ সকল পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে গবেষণাকে সাধারণত পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায় । যথা : 

১. ঐতিহাসিক গবেষণা, 

২. পরীক্ষামূলক গবেষণা, 

৩. বিষয়বস্তু বিশ্লেষণমূলক গবেষণা, 

৪. কেস স্টাডি গবেষণা ও 

৫. সামাজিক জরিপ গবেষণা। 

নিম্নে পদ্ধতির ভিত্তিতে বিভাজিত উক্ত গবেষণা পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. ঐতিহাসিক গবেষণা : ঐতিহাসিক সমস্যা সম্পর্কে অনুসন্ধান পরিচালনার জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগই ঐতিহাসিক গবেষণা নামে পরিচিত। অপরাপর গবেষণার ন্যায় ঐতিহাসিক গবেষণায়ও মানসম্মত পদ্ধতির ব্যবহার অপরিহার্য। 

ঐতিহাসিক গবেষণার ফলাফল সমাজকর্মী, শিক্ষাবিদ প্রমুখ পেশাগত কর্মীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অতীতের কার্যকলাপের ফলাফল হতে ভবিষ্যতে কি প্রকারের কর্মপন্থা উপযুক্ত হবে সে সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়। 

২. পরীক্ষামূলক গবেষণা : যখন কতিপয় উপাদান যত্নসহকারে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে যথার্থতা যাচাই বা অনুসন্ধান করা হয় তখন তাকে পরীক্ষামূলক গবেষণা বলে । এ ধরনের গবেষণা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানেই বেশি ব্যবহৃত হয় । 

পরীক্ষণ হলো প্রমাণাদি সংগ্রহের অন্যতম সুসংবদ্ধ উপায় যার মাধ্যমে কোনো পূর্বানুমান যাচাই করা যায়। পরীক্ষণের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গবেষকের ইচ্ছানুযায়ী এক বা একাধিক স্বাধীন চলকের নিয়ন্ত্রণকরণ এবং যার ফলে অধীন চলকে পরিবর্তন সূচিত হয়।

৩. বিষয়বস্তু বিশ্লেষণমূলক গবেষণা : সাক্ষাৎকার, প্রশ্নমালা এবং লিখিত বা মৌলিক ভাষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের রীতিবদ্ধ, বস্তুনিরপেক্ষ এবং সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ বা বর্ণনার ভিত্তিতে যে গবেষণা করা হয় তাকে বিষয়বস্তু বিশ্লেষণমূলক গবেষণা বলা হয় । 

পূর্বে এ ধরনের গবেষণা কেবল সাংবাদিকতা ও গণযোগযোগের মধ্যে সীমিত থাকলেও বর্তমানে তা সামাজিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ধরনের গবেষণায় গবেষক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিষয়বস্তু সংগ্রহ করেন এবং সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্তে উপনীত হন ।

৪. কেস স্টাডি গবেষণা : কোনো পরিবেশ, মানবিক আচার-আচরণ, জনগোষ্ঠী, সম্প্রদায় ইত্যাদি ক্ষেত্রে সাধারণত কেস স্টাডি বা ঘটনা অনুধাবন গবেষণা পরিচালিত করা হয়ে থাকে। এ ধরনের গবেষণায় বিশ্বাস করা হয় যে, 

যে বিশেষ ঘটনাটি অনুধ্যান করা হচ্ছে সেটি সমস্ত ঘটনা না হলেও সমগোত্রীয় বহু ঘটনা প্রতিনিধিত্ব করে। কেস স্টাডি গবেষণার সাহায্যে ঘটনার বিবরণ সংগ্রহ করা হয় । সমাজের চিত্র তুলে ধরার জন্য কেস স্টাডি হলো তথ্যের গুণগত বিশ্লেষণ । 

৫. সামাজিক জরিপ গবেষণা : কোনো নির্দিষ্ট সমগ্রকের সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক চলকের আন্তঃসম্পর্ক ও তাদের প্রাসঙ্গিক প্রভাব আবিষ্কারের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হিসেবে বর্তমানে জরিপ গবেষণা বেশ জনপ্রিয়। 

বর্তমানে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অতিদ্রুত জানার প্রয়োজনীয়তার সাথে সাথে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনায় উপকারভোগীর সংখ্যা ও হার নির্ধারণের প্রয়োজনে, 

কোনো সামাজিক সমস্যার ব্যাপকতা ও ধরন নির্ধারণে, মতামত যাচাইয়ের জন্য সরকারি বা প্রতিষ্ঠানিক নীতিনির্ধারণে কোনো নীতিমালার সাফল্য ও ব্যর্থতা যাচাইয়ে জরিপ গবেষণা করা হয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার পদ্ধতি একটি ব্যাপক ব্যবহৃত পদ্ধতি অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে তথ্যানুসন্ধানের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার পদ্ধতি অধিক উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয় । 

কেননা এ সমস্ত দেশের সামাজিক পরিবেশে ও সমস্যাবলির প্রকৃতি এমন যে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য গবেষককে তথ্য সরবরাহকারীর সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ প্রয়োজন হয় । প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে ও সাক্ষাৎকার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ পদ্ধতি ভেদে গবেষণা কত প্রকার ও কী কী

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গবেষণাকে পদ্ধতিগত দিক থেকে কয় ভাগে ভাগ করা যায়? ও কী কী। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ