পরিসংখ্যানের অপব্যবহার লিখ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো পরিসংখ্যানের অপব্যবহার লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের পরিসংখ্যানের অপব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা কর।.

পরিসংখ্যানের অপব্যবহার লিখ
পরিসংখ্যানের অপব্যবহার লিখ

পরিসংখ্যানের অপব্যবহার লিখ

  • অথবা, পরিসংখ্যানের অপব্যবহার সম্পর্কে যা জান লেখ
  • অথবা, পরিসংখ্যানের অপব্যবহার বর্ণনা কর।

উত্তর ভূমিকা : অতি প্রাচীনকাল হতে পরিসংখ্যানের যাত্রা শুরু হয়েছে। অর্থাৎ যেদিন থেকে মানবগোষ্ঠী ভাষা ব্যবহার করে আসছে সেদিন থেকেই পরিসংখ্যান ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সমাজ অধ্যয়নে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব ক্রমবর্ধমানভাবে বেড়েই চলছে। 

তত্ত্বগত ও শিক্ষাগত দিকের পাশাপাশি জীবনের প্রতিক্ষেত্রেই পরিসংখ্যানের ব্যাপক উপযোগিতা রয়েছে। মানুষের সামাজিক জীবনের সূচনালগ্নে ও পরিসংখ্যানের ব্যবহার ছিল। 

তবে প্রাকযুগের পরিসংখ্যান এবং আধুনিকালের পরিসংখ্যানের মধ্যে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বিশেষ করে সমাজবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে সামাজিক গবেষণার পরিসংখ্যানের গুরুত্ব খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ।

পরিসংখ্যানের অপব্যবহার : উপাত্ত বিশ্লেষণের মাধ্যমে কোনো বস্তুর পরিমাণগত দিক বর্ণনা করাই পরিসংখ্যানের কাজ। সুতরাং এ কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হয় এবং এর ব্যত্যয় ঘটলে অপব্যহৃত হতে পারে। 

নিম্নে পরিসংখ্যানের অপব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. অপরিসংখ্যানবিদ : পরিসংখ্যানবিদ নয় এমন লোকের দ্বারা এর অপব্যবহার হতে পারে। কেননা তারা পরিসংখ্যানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে সঠিকভাবে পরিচিত নয় এবং এর অন্তর্নিহিত বিভিন্ন দিক সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয় ।

২. প্রশাসনিক সমস্যা : প্রশাসনে পরিসংখ্যানিক তথ্যের বিকৃত ব্যবহার লক্ষ করা যায়। প্রশাসনে পরিসংখ্যানিক তথ্যে সংগ্রহ করা হয় না । অধিক স্পর্শকাতর তথ্যগুলো গোপন রাখা হয় নতুবা এড়িয়ে যাওয়া হয় ।

৩. অনভিজ্ঞতার সমস্যা : পরিসংখ্যান সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান নেই এমন অনভিজ্ঞদের দ্বারা পরিসংখ্যান পদ্ধতিকে কার্যকর করতে চাইলে তা যথার্থ হবে না। কেননা, এদের দ্বারা সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তথ্যগত অসংলগ্নতার কারণে তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিশ্লেষণ যথাযথ হয় না। এতে পরিসংখ্যানের অপব্যবহার হয়।

৪. অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হতে সংগৃহীত উপাত্ত : উপাত্ত সব সময় নিয়মতান্ত্রিক এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উপাত্ত সংগ্রহ করলে ভুল সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে। ফলে পরিসংখ্যান অপব্যবহৃত হতে পারে।

৫. সমন্বয়হীনতা : পরিসংখ্যানিক তথ্যের সমন্বয়হীনতা একটি বড় ধরনের সমস্যা। একই বিষয়ে একাধিক সংস্থার তথ্যগত ব্যবধান পরিলক্ষিত হয়। 

ফলে পরিসংখ্যানের গ্রহণযোগ্যতা অনেকাংশে হ্রাস পায়। জাতীয় আয়, শিক্ষার হার, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার শিশু মৃত্যুর হার, মাথাপিছু আয় ইত্যাদি সম্পর্কে বিভিন্ন সংস্থা ভিন্ন ভিন্ন সূচক উপস্থাপন করে থাকে।

৬. অজ্ঞতা : পরিসংখ্যানিক পদ্ধতিগুলো সম্বন্ধে অজ্ঞতা অথবা সেগুলো ইচ্ছাকৃত রদবদলের ফলে সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে। এবং ভুল যুক্তির উদ্ভব হতে পারে।

৭. বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির অভাব : বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি যথাযথ প্রয়োগ না করলে সংগৃহীত তথ্যের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা হ্রাস পায়। চলকের সংজ্ঞায়ন, তথ্যের শ্রেণিবিভাগ, সারণিবদ্ধকরণ প্রভৃতি কাজে গ্রেডিং এর অভাব দেখা দেয়। এতে তুলনামূলক পরিসংখ্যান বাধাগ্রস্ত হয়।

৮. তথ্যের অপর্যাপ্ততা : অপর্যাপ্ত তথ্যের দ্বারা কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে পরিসংখ্যান অপব্যবহৃত হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, প্রকাশিত রিপোর্টের সুনির্দিষ্ট কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয় না। 

রিপোর্টের উদ্দেশ্য, তাৎপর্য, পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহ ও সংকলনে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ করা হয় না। এতে একদিকে যেমন জনগণ বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে, আবার অন্যদিকে অসত্য তথ্যের দ্বারা প্রতারণার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে ।

৯. ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্য সিদ্ধি : কেউ হয়তো নিজের উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে সংখ্যাগুলোর রদবদল করতে পারে। 

সে নিজস্ব মতামত প্রমাণের জন্য উপাত্তের এক অংশ বাদ দিয়ে অন্য অংশ গ্রহণ করতে পারে। ফলে ব্যবহারকারীদের উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য একই উপাত্ত হতে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে।

১০. বিলম্বিত প্রকাশ : পরিসংখ্যানিক পদ্ধতির একটি মারাত্মক অপব্যবহার হলো বিলম্বিত প্রকাশ। পরিসংখ্যানিক তথ্যের বিলম্বিত প্রকাশনার জন্য সর্বসাধারণ থেকে শুরু করে নীতিনির্ধারক মহল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়।

১১. সঠিক ধারণার অভাব : রাশিতথ্যের সঠিক ধারণা না থাকলে সংখ্যাভিত্তিক ব্যাখ্যাকরণ সঠিক হয় না। যেমন— কোনো প্রতিষ্ঠানের ৯০টি শিক্ষিত দম্পত্তি পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং ১০টি দম্পত্তি গ্রহণ করেনি। 

এ তথ্যকে যদি ব্যাখ্যা করা হয় যে, শিক্ষিত দম্পত্তিরা ছোট পরিবারের প্রতি আকৃষ্ট তবে ব্যাখ্যা সঠিক হবে না কেননা, এ প্রতিষ্ঠানের শতকরা কতটি শিক্ষিত দম্পত্তি পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তা বুঝা যায়নি এবং ঐ প্রতিষ্ঠানে মোট কতটি শিক্ষিত দম্পত্তি আছে তাও জানা যায়নি।

১২. আদি বিন্দু এবং মাপক নির্দেশনা না করা : লেখচিত্র এবং নকশা আঁকার সময় সঠিকভাবে আদিবিন্দু এবং মাপক নির্দেশ না করলে লেখচিত্র এবং নকশা থেকে উপাত্ত সম্বন্ধে সঠিক ধারণা লাভ করা যায় না এবং উপাত্ত সম্বন্ধে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ সৃষ্টি হয় ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, পরিসংখ্যান পদ্ধতি ব্যবহার অত্যন্ত ব্যাপক ও বিস্তৃত। মানব সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে এবং রাজনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা যত বৃদ্ধি পেয়েছে পরিসংখ্যানের কর্মকে অপব্যবহার তত বৃদ্ধি পেয়েছে। 

বর্তমান সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের ব্যবহার রীতিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু কতকগুলো ভুল পদ্ধতি ও ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়ার বহুল প্রয়োগের জন্যই পরিসংখ্যানের বিশ্বাসযোগ্যতা ।

সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে এবং পরিসংখ্যানের মধ্য দিয়ে যে সত্য উদ্ভাসিত হতে চায় তাকে প্রকাশিত হতে দেওয়া হয় না। পরিসংখ্যানের বিভিন্ন অপব্যবহার সম্পর্কে সফলের সুদৃষ্টি থাকা অপরিহার্য ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ পরিসংখ্যানের অপব্যবহার সম্পর্কে যা জান লেখ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম পরিসংখ্যানের অপব্যবহার বর্ণনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ