অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ বর্ণনা কর।

অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ আলোচনা কর
অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ আলোচনা কর

অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ আলোচনা কর

  • অথবা, অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ বর্ণনা কর ।
  • অথবা, অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণগুলো উল্লেখ কর ।

উত্তর ভূমিকা : সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে মানবজীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন জন্মলাভ করেছে। তবে অনেক সমাজে উদ্ভূত বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক সংগঠন মানবজীবনের সব সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হয়নি। 

ফলশ্রুতিতে কালের পরিক্রমায় বিভিন্ন সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক সংগঠনের বিস্তার ঘটে। আনুষ্ঠানিক সংগঠনে নানা ধরনের আইন, বিধিনিষেধ ও জটিলতার কারণে অনেক সময় কর্ম সম্পাদন করা যায় না। 

তাই মানুষ তাদের সমস্যা সমাধান করার জন্য কতিপয় অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার আশ্রয় গ্রহণ করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণের চেষ্টা চালায়।

অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণ : সময়ের পরিক্রমায় মানব সভ্যতার প্রয়োজন মিটাতে অনানুষ্ঠানিক সংগঠন জন্মলাভ করেছে। নিম্নে অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ আলোচনা করা হলো :

১. আত্মতৃপ্তির অভাব : একটি সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ সমাজে বসবাস করার মাধ্যমে সে তার স্বাভাবিক চাহিদা পূরণের প্রচেষ্টা চালায় । 

কিন্তু সমাজে বিদ্যমান আনুষ্ঠানিক সংগঠনসমূহ সবসময় মানুষের সব চাহিদা বা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারে না বিধায় মানুষ অনানুষ্ঠানিক সংগঠনে যোগদান করে। এসব সংগঠনে সে মনের ভাব দ্ব্যর্থহীনভাবে ব্যক্ত করে সুযোগ সুবিধা লাভ করে ।

২. যোগাযোগের মাধ্যমে : অনানুষ্ঠানিক সংগঠন মানবসমাজের বিভিন্ন শ্রেণি, গোত্র, পরিবারের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে। 

মানবজীবনের বহুবিধ প্রয়োজনে মানুষ একে অন্যের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে চলে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সবার সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভবপর হয় না বিধায় অনানুষ্ঠানিক সংগঠন এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

৩. সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষা : অনানুষ্ঠানিক সংগঠনসমূহ যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। 

তাই যেকোনো প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানের অনানুষ্ঠানিক সংগঠন কর্মীদের নির্বাচন, প্রশিক্ষণ, একতার বন্ধন প্রভৃতির মাধ্যমে তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সুদৃঢ় করে থাকে ।

৪. আচরণ সম্পর্কিত জ্ঞানলাভ : যেকোনো অনানুষ্ঠানিক সংগঠন তার সদস্যদের গ্রহণযোগ্য ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

কোনো কর্মীকে নতুন কর্ম পরিবেশে নিজেকে খাপখাইয়ে কাজের উপযুক্ত করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা এবং ঐ নতুন স্থানে টিকে থাকার প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও অনানুষ্ঠানিক সংগঠনের মাধ্যমে লাভ করা যায় । 

৫. উদ্দেশ্য অর্জন : বিভিন্ন কারণবশত আনুষ্ঠানিক সংগঠন উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়। বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীদের গাফিলতি ও অহেতুক হস্তক্ষেপের কারণে প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম বাধাপ্রাপ্ত হয়। 

তাই সংগঠনে কর্মরত ব্যক্তিরা নিজেদের ব্যক্তিগত বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে থাকেন।

৬. সৃজনশীলতার সুযোগ সৃষ্টি : কর্মীদের মধ্যে সৃজনশীলতার বিকাশকে ত্বরান্বিত করার জন্য অনেক সময় অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

এখানে আইনের বেড়াজাল বা বাধ্যবাধকতায় থাকতে হয় না বলে কর্মীরা সৃজনশীলতার বিকাশের মাধ্যমে তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টা চালায় ।

৭. প্রভাব বিস্তারের সুযোগ : সাধারণত আনুষ্ঠানিক সংগঠনসমূহে সরাসরি প্রভাব বিস্তারের সুযোগ থাকে না, কেননা এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মনীতির বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। 

তাই অনানুষ্ঠানিক সংগঠনের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রমের ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালানো হয়।

৮. সহানুভূতি লাভ : যেকোনো প্রশাসনিক সংগঠনে মানুষ কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। তাই সে এসব থেকে মুক্তিলাভ করতে চায় এবং তার দুঃখ কষ্টগুলো অন্যকে জানিয়ে তাদের কাছ থেকে সম্ভাব্য সমাধান পেতে চায়। 

আনুষ্ঠানিক সংগঠনের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানের কোনো সুযোগ নেই বিধায় মানুষ অনানুষ্ঠানিকভাবে তার নিকটজন বা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারীদের সহানুভূতি লাভের চেষ্টা চালায় ।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিত বলা যায় যে, মানবজীবনের বহুমুখী কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। 

সময়ের আবর্তনে মানুষ তার সার্বিক চাহিদা মিটানোর জন্য অনানুষ্ঠানিক সংগঠনের দ্বারস্থ হয় এবং এর মাধ্যমে তার মানসিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাহিদা মিটাতে সচেষ্ট হয় ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণসমূহ আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম অনানুষ্ঠানিক সংগঠন গড়ে ওঠার কারণগুলো উল্লেখ কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ