ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ | ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর

ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ | ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর - আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ | ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ | ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর ।

ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ  ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর
ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ | ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর

ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ | ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর

উত্তর : ভূমিকা : আমির হিশামের শাসনামলে স্পেনের রাজনৈতিক, সামাজিকসহ সর্বক্ষেত্রে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় ছিল। কিন্তু আমির হাকামের সিংহাসনারোহণ ও তার অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য স্পেনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আন্দোলন দানা বাধে । সর্বপ্রথম ফকিহগণের সাথে আমিরের দ্বন্দ্ব চরম পর্যায় পৌঁছে। অবশ্য পরে আমির তা দমন করতে সক্ষম হন ৷

→ ফকিহ বিদ্রোহের কারণ : ফকিহগণ আমির হাকামের কার্যক্রম ও আচার আচরণ বরদাস্ত করতে পারতেন না। নিম্নে ফকিহ আন্দোলনের কারণ আলোচনা করা হলো :

১. হাকামের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য : আমির হাকাম ছিলেন উগ্র চরিত্রের । তিনিই সর্বপ্রথম যুবরাজ যিনি জাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে থাকতেন। সবসময় সাজসজ্জা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন এবং প্রকাশ্যে মদ্যপান করতেন। আমিরের এরুপ কার্যকলাপ ও চরিত্র ধর্মবেত্তাদের নিকট ছিল আপত্তিজনক। ইসলামের এসব অনৈতিক কার্যাবলি ধর্মবেত্তাদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। তারা আমিরকে কোনোভাবেই সহ্য করতে পারছিল না। ফকিহগণ জুম্মার খুতবায় আমিরের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিতে থাকেন ।

২. ধর্মবেত্তাদের প্রভাব ক্ষুণ্ন : আমির প্রথম হিশাম ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ শাসক। তিনি ধর্মবেত্তাদের খুবই সমীহ করতেন বিধায় তারা ছিলেন সীমাহীন ক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছিলেন। রাজ্যের মধ্যে মালিক বিন আনাসের শিষ্যগণ ছিলেন খুবই শক্তিশালী। হাকাম এদের সুযোগ-সুবিধা ও ক্ষমতা হ্রাস করেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, রাজনীতি ও রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে ধর্মগুরুদের অংশ গ্রহণ করা উচিত নয়। অন্যদিকে ধর্মবেত্তাদের কাম্য ছিল দেশের শাসনব্যবস্থা ধর্মীয় ভাবাপন্ন শাসক কর্তৃক পরিচালিত হোক। ফলে আমির যখন তাদের প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলেন তারা তখন নিরাশ হয়ে প্রকাশ্যে আমিরকে অভিশাপ দিতে শুরু করে।

৩. ফকিহদের প্রচারণা : ফকিহগণ তাদের প্রাপ্ত সুযোগ- সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আমিরের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম প্রচারণা করতে থাকে। তাদের ধর্ম প্রচারের মঞ্চ হতে প্রকাশ্যে আমিরকে বিধর্মী বলে নিন্দা ও ভর্ৎসনা করতে লাগলেন। আমিরের অনৈসলামিক কার্যাবলিকে পুঁজি করে তার বিরুদ্ধে জনপ্রিয়তা সৃষ্টির নানারকম প্রচারণা চালাতে থাকে এবং তাকে উৎখাতে ষড়যন্ত্র করতে থাকে ।

৪. নওমুসলিমদের প্রতি বৈষম্য : স্পেনের জনগণের মধ্যে নও মসলিম হিসেবে একটি সামাজিক শ্রেণির উদ্ভব ঘটে। আরব মুসলমানগণ মুয়ালাদেরকে তাদের তুলনায় নিকৃষ্ট বলে মনে করতো। স্পেনীয় সমাজে তারা অবহেলিত ও ঘৃণিত ছিল। ক্রীতদাস হিসেবে তারা বিবেচিত হতো এবং সরকারি চাকরিতে উচ্চপদ হতে তাদেরকে বঞ্চিত করা হতো। ফলশ্রুতিতে নওমুসলিমগণ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ব্যস্ত ।

৫. অতিরিক্ত করারোপ : কর্ডোভা বাসীর উপর হাকাম অতিরিক্ত নগর শুল্ক ও কর আরোপ করেন। নতুন দেহরক্ষী বাহিনীর তহবিল গঠন করার জন্য করের বোঝাটি চাপানো হয় বণিক সম্প্রদায়ের ঘাড়ে।

৬. নওমুসলিমগণ ফকিহদের সমর্থন লাভ : ধর্মবেত্তাগণ বিদ্রোহ করতে কর্ডোভার বাসিন্দাদের ইন্ধন যোগাতে থাকে। নওমুসলিমদের উপর ফকিহগণের বিরাট প্রভাব ছিল। ধর্মের ক্ষেত্রে তারা ইসলামের সকল বিধিবিধান মেনে চলতো। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে বঞ্চিত এই নওমুসলিমগণ তাদের আন্দোলনের ক্ষেত্রে সহানুভূতিশীল হিসেবে ফকিহদের কাছে পান। ৮০৫ খ্রিস্টাব্দে কোনো একদিন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমিরকে উত্তেজিত জনতা পাথর ছুড়ে আক্রমণ করে এবং ধর্মবেত্তাগণ এরূপ কার্যকলাপকে সমর্থন করেন। ফকিহগণ তাদের প্রতি সমর্থন দিয়ে আমিরের বিরুদ্ধে আরও ক্ষিপ্ত করে তোলেন ।

৭. ফকিহদের শক্তি বৃদ্ধি : ফকিহদের আন্দোলনে সমর্থন দেয় নব দীক্ষিত মুসলমানগণ ও অভিজাতবর্গ । ফকিহদের আন্দোলনের ঢেউ রাজদরবারে গিয়ে পৌছলে এক শ্রেণির অমাত্যবর্গ তাদের এ আন্দোলনে সমর্থন দেয়। ফলে ফকিহ আন্দোলন আরও শক্তিশালী রূপ নেয় ।

৮. দেহরক্ষীদের মধ্যে খ্রিস্টান ও নিগ্রো নিয়োগ : হাকাম রাজপ্রাসাদের নিরাপত্তার জন্য প্রায় ৬ হাজার অশ্বারোহীর সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী অশ্বারোহী রক্ষী বাহিনী গঠন করেন। নতুন এই বাহিনীতে ছিল কিছু সংখ্যক নিগ্রো কিন্তু অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশগুলোর খ্রিস্টান। তারা আরবি বলতে পারতো না বলে ‘মূক’ বলা হতো। মুসলিম রাজ্যের বা রাজার দেহরক্ষী বাহিনী বিধর্মীদের গঠিত হবে তা মুসলিম জনগণ বা ফকিহ ও মুয়ালাদনরা সহজে মেনে নিতে পারেনি।

৯. দেহরক্ষীদের উগ্র আচরণ : অধিকিন্তু এই নতুন দেহরক্ষী বাহিনীর আচরণ ছিল উগ্র ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ। একদা একজন দেহরক্ষী দোকানে তরবারি ধারালো করানোর জন্য গেলে কর্মকারের একটু দেরি হয় এবং তর্কযুদ্ধ বাধে। এ অজুহাতে সৈন্যটি ঐ লোকটিকে হত্যা করে ফেলে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনগণ বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ে । বৃহৎ আন্দোলনের পথকে ত্বরান্বিত করে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, কাজেই আমির হাকামের সময়ে ফকিহ বিদ্রোহ একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। ধ্বংস প্রাপ্ত হয় তাদের ঘরবাড়ি এবং শেষ পরিণতি হয় তাদের উচ্ছেদ ও নির্বাসন। অবশ্য শেষ জীবনে হাকাম ধর্মবেত্তাদের প্রতি কিছুটা সদয় হন ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ | ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ফকিহ বিদ্রোহের কারণগুলো লিখ | ফকির বিদ্রোহের কারণসমূহ বর্ণনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ