মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব মূল্যায়ন কর

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব নিরূপণ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব মূল্যায়ন কর ।

মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব মূল্যায়ন কর
মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব মূল্যায়ন কর

মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব নিরূপণ কর

মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব মূল্যায়ন কর

উত্তর : ভূমিকা : মূল সুলতান ও শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় স্পেনে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের চরম বিকাশ ঘটে। মুসলিম বুদ্ধিজীবীগণ তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন তাদের রচিত অসংখ্য গ্রন্থাবলিতে। এ সকল সাহিত্য গ্রন্থাবলি স্পেনের | ইতিহাসের উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

→ স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব : স্পেনীয় আরবরা ইতিহাস, ভূগোল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর মূল্যবান গ্রন্থ রচনার জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। মুসলিম শাসকদের অনেকে বিখ্যাত ও দুর্লভ রচনাবলি সংগ্রহের জন্য পণ্ডিত ব্যক্তিদের বিশেষভাবে উৎসাহিত এবং বিদ্যোৎসাহী পণ্ডিতদিগকে পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। 

স্বাধীন নর-নারী ও ক্রীতদাস সকলেরই জ্ঞান সাধনার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান ছিল এবং স্পেনে গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠায় তাদের উদ্দীপনা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাদের সংগৃহীত অধিকাংশ মূল্যবান গ্রন্থাদি সময়ের খর স্রোতে বিনষ্ট হয়ে যায়। 

১৪৯৯ খ্রিস্টাব্দে কার্ডিন্যাল জিমেনেস প্রায় আট হাজার গ্রন্থ ধ্বংস করে। এগুলো ছিল জ্ঞান ভুবনে মৌলিক রচনাবলির সমাহার যা স্পেনের মুসলমান লেখকগণ রচনা করেছিলেন। এই ধ্বংস যজ্ঞের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কিছু আরবি পাণ্ডুলিপি পুরোহিতদের হাতে পড়ে যা পরবর্তীকালে বিভিন্ন গ্রন্থাগারে স্থানান্তর করা হয়। 

এ সমস্ত আরবি গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ ও তৃতীয় ফিলিপ সংগ্রহ করে মাদ্রিদের সন্নিকটে এস্কোরিয়াল রাজকীয় লাইব্রেরিতে ছিল। ১৬৭১ খ্রিস্টাব্দে লাইব্রেরিতে এক অগ্নিকাণ্ডে রক্ষিত মূল্যবান আরবি পাণ্ডুলিপির তিন-চতুর্থাংশ ভস্মীভূত হয়। 

পরবর্তী স্পেন সরকার এই মহামূল্যবান গ্রন্থের সংগ্রহ, সম্পদের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে এবং আরবি সাহিত্য ও বিজ্ঞান চর্চায় সরকার দেশবাসীকে বিশেষভাবে প্রণোদিত করেন ।

যে সমস্ত মূল্যবান আরবি গ্রন্থাবলি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল নিম্নে তার কিছু বিবরণ দেওয়া হলো-

১. আখবারুল মুলুকুল উন্দুলূস : দশম শতাব্দীতে কর্ডোভার আহম্মেদ বিন মুহম্মদ আল রাজী লিখিত “আখবারুল মুলুকুল উন্দুলূস” নামের স্পেনে মুসলিম শাসনের উপর গ্রন্থখানি পরবর্তীকালের ইতিহাসবেত্তাদের জন্য গবেষণার উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল ।

২. তারিখ-ই-ইফতেতাহুল আন্দালুস : গ্রন্থখানি রচনা করেন আবু বকর ইবন উমার যিনি ইবনুল কুতিয়াহ নামে পরিচিত। গথিক শাসক উইটিয়ার বংশধর কর্ডোভায় জন্মগ্রহণকারী এই পণ্ডিত ঐতিহাসিক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ইবনুল কুতিয়া রচিত গ্রন্থটি স্পেনের মুসলিম বিজয় এবং রাজনৈতিক ঘটনাবলির উপর একটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ ।

৩. তারিখ ফাতহুল মিশর : ইবনে আবদ আল হাকামের “তারিখ ফাতহুল মিশর” গ্রন্থের পঞ্চম অধ্যায়ে সন্নিবেশিত হয়েছে স্পেন বিজয়ের বিস্তারিত বিবরণ। গ্রন্থটি ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে এবং উর্দুতে ভারত থেকে “যিকার ফাতহে উনদুলুস” নামে প্রকাশিত হয়েছে।

৪. আল বায়ান আল মাগরিব ফি আখবারিল আনদালুস ওয়াল মাগরিব : ত্রয়োদশ শতাব্দীতে প্রয়াত মারকুশ নিবাসী প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ইবনে ইযারী বিখ্যাত গ্রন্থ “আল বায়ান আল মাগরিব ফি আখবারিল আনদালুস ওয়াল মাগরিব” রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি সমসাময়িক স্পেনের অর্থনৈতিক অবস্থার বিবরণ দিয়েছেন ।

৫. কিতাব আল ইবার ওয়া দীওয়ান আল মুবতাদা ওয়া আল খবর ফী আয়য়াম আল আজম ওয়া আল বারবার : ঐতিহাসিক, দার্শনিক, সমাজবিজ্ঞানী এবং সর্বোপরি বহুমুখী প্রতিভাধর আব্দুর রহমান ইবনে খালদুন জগৎ বিখ্যাত গ্রন্থ “কিতাব আল ইবার ওয়া দীওয়ান আল মুবতাদা ওয়া আল খবর ফী আয়য়াম আল আজম ওয়া আল বারবার” রচনা করেন। এ গ্রন্থটি মূল বিষয়বস্তু হলো আরব, পারসিক এবং বার্বারদের সম্পর্কিত ইতিহাস ও এর দৃষ্টান্তসমূহ।

৬. অন্যান্য গ্রন্থাবলি : আবু মারওয়ান হাইয়ান ইবনে খালাফ রচিত ‘আল মুকতাবিস ফি তারিখে রিজালুল আন্দালুস, ইবনে খাতিব রচনা করেছেন, “কিতাব আমাল আল আ-লাম” নামক গ্রন্থ। 

স্পেনে মুসলিম শাসনের রাজনৈতিক ইতিহাসের অফর একজন শ্রেষ্ঠ লেখক তিলিসমানের অভিবাসী আহমদ ইবনে মুহাম্মদ আল মাক্কারী আল মাগরিবী। তিনি রচনা করেন “আযহারুল রিয়াদ ফি আখবার আল যিয়াদ।”

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, স্পেনের মুসলিম শাসনের ইতিহাসে সাহিত্যের ভূমিকা অন্যতম। খ্রিস্টানদের ধ্বংসযজ্ঞের হাত থেকে যে কয়টি মূল্যবান গ্রন্থ রক্ষা পায় তা মুসলিম স্পেনের ইতিহাসে উৎস হিসেবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কাজেই সাহিত্যই স্পেনের মুসলিম ইতিহাসের উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব মূল্যায়ন কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মুসলিম স্পেনের ইতিহাসের উৎস হিসেবে সাহিত্যের গুরুত্ব মূল্যায়ন কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ