আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর। আমাদের গুগল নিউজগুগল নিউজ ফলো করুন।

আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর
আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর

আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর

  • অথবা, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দল কীরূপ ভূমিকা পালন করে?
  • অথবা, গণতন্ত্রের চর্চায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলোচনা কর।
  • অথবা, আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের গুরুত্ব মূল্যায়ন কর।

উত্তর : ভূমিকা : বর্তমান যুগকে গণতন্ত্রের যুগ বলা হয়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই গণতন্ত্র বিদ্যমান। সাধারণভাবে বলা যায়, জনগণের কর্তৃক শাসিত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে গণতন্ত্র বলে। 

কিন্তু বাস্তবে বর্তমানকালের বিশাল আয়তনবিশিষ্ট রাষ্ট্রগুলোর বিপুল জনগোষ্ঠীর পক্ষে প্রত্যক্ষভাবে শাসনকার্য করা সম্ভব নয় বলে জনগণ প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে শাসনকার্যে অংশগ্রহণ করে থাকে। তাই বর্তমান যুগকে গণতন্ত্রের যুগ বলা হয়।

গণতন্ত্র চর্চায় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা : আধুনিক রাষ্ট্রে গণতন্ত্র চর্চায় রাজনৈতিক দলগুলো ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। নিম্নে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলোচনা করা হলো :

১. স্বাধীনতা অর্জন : যেসব দেশ এখনো স্বাধীনতা পায়নি, সেসব দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধান প্রধান কাজ হচ্ছে স্বাধীনতা অর্জন করার জন্য চেষ্টা করা এবং স্বাধীনতা অর্জিত হলে যাতে সরকার গঠন করতে পারে এবং একটি নির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করে দেশের শাসনতান্ত্রিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বুনিয়ান দৃঢ় করতে পারে সেজন্য চেষ্টা করা।

২. গণতন্ত্রের স্বরূপ বজায় : বর্তমানে গণতান্ত্রিক শাসন দলীয় শাসনে পরিণত হয়েছে। নল ব্যবস্থা ছাড়া প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হওয়া অসম্ভব। ফাইনার বলেন, গণতন্ত্র তার আশা-নিরাশা সমবেত দল ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল।

৩. রাজনৈতিক সংঘবদ্ধতা : রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক দিক থেকে নাগরিকদের সংঘবদ্ধ করতে পারে। সভা-সমিতি, জমায়েত, পতাকা একই রকমের পোশাক পরিচ্ছেদ ইত্যাদির মাধ্যমে দল ও জনসাধারণের মধ্যে ঐক্যের মনোবল গড়ে তোলার চেষ্টা করা। সাধারণভাবে ফ্যাসিস্ট দল এ ধরনের জঙ্গি পদ্ধতি গ্রহণ করে।

৪. আইন প্রণয়নে সহায়তা : রাজনৈতিক দল আইনসভাকে সচল রাখার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে। আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে সুসম্পর্কের উপর সংসদের কার্যকারিতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। আর সেটা নিশ্চিত করতে পারে একমাত্র রাজনৈতিক দল। কেননা দলীয় নেতৃবৃন্দই সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হন। সেজন্য তারা দলের কথা না শুনে পারেন না।

৫. সরকার পরিবর্তন : গণতন্ত্র দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো দ্বারা পরিবর্তিত হয়। এতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করা যায়। সরকার পরিবর্তনের জন্য বিপ্লব বা কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির প্রয়োজন হয় না।

৬. বিকল্প সরকারের ভূমিকা পালন : গণতান্ত্রিক দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোট সরকার গঠন করে এবং অন্যান্য দল বা জোট বিরোধী দলের ভূমিকা অবতীর্ণ হয়। বিরোধী দলের মূল কাজ হলো সরকারের দোষ-ত্রুটির সমালোচনা করা। কাজেই সরকারি দল যাতে স্বৈরাচারী ও দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে গণতন্ত্রকে নষ্ট করতে না পারে তাই বিরোধী দলের উদ্ভব হয়।

৭. দরিদ্র ব্যক্তিকে শাসনকার্য পরিচালনায় অংশগ্রহণের সুযোগ দান : দলীয় ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করে বলে সুযোগ্য, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সৎ ও  নিষ্ঠাবান দরিদ্র ব্যক্তিরা সরকার পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে। এতে শাসনকার্যের গুণগত উৎকর্ষ সাধিত হয়।

৮. স্বদেশ ও স্বজনপ্রীতির সৃষ্টি করে : রাজনৈতিক দলগুলো দেশে বিশৃঙ্খলার মধ্যে শৃঙ্খলা আনে, জনগণের মধ্যে ঐক্যেবোধ সৃষ্টি করে। দল ব্যবস্থা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে প্রভৃতি ক্ষেত্রে সংকীর্ণতা দৃঢ় করে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে দেশবাসীর মধ্যে স্বদেশ ও স্বজনপ্রীতি জাগ্রত করে।

৯. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন : গণতন্ত্র চর্চা ও রক্ষায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অপরিহার্য অবদান রাখে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে সংহতি রক্ষায় সচেষ্ট হয়। বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও উন্নত রাষ্ট্রে এটি সক্রিয়ভাবে দেখা যায়। কাজেই সহযোগিতা ও সহনশীলতার মাধ্যমে রাজনৈতিক দল ব্যতীত সরকারের স্থিতিশীলতা অর্জন করা সম্ভব নয়।

১০. গণতন্ত্র রক্ষা : গণতন্ত্র সুরক্ষায় রাজনৈতিক দল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে সচেষ্ট। কেননা রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের মতামতের স্বাধীনতা ও অধিকারকে প্রাধান্য দেয়।

১১. জনগণের সঙ্গে ঐক্যবোধ সৃষ্টি : জনগণের মধ্যে ঐক্যবোধ জাগ্রত করার জন্য তারা জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে নিজ নিজ আদর্শ ও নীতিনির্ধারণ করে থাকে। ফলে দলীয় সদস্য ও সমর্থকদের ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগত সংকীর্ণ স্বার্থপর মনোবৃত্তি গড়ে উঠার সুযোগ পায় না ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গণতন্ত্র চর্চায় রাজনৈতিক দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । রাজনৈতিক দল ব্যতীত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার কথা কল্পনা করা যায় না। 

কেননা গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক দল একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। গণতন্ত্রকে সুসংহত ও শক্তিশালী তথা গণতন্ত্রের স্থায়িত্ব সংরক্ষণে রাজনৈতিক দল গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে। বস্তুত রাজনৈতিক দলই প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রকে সঞ্জীব ও প্রাণবন্ত করে রাখে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর। যদি তোমাদের আজকের আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আলােচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ