আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।.

আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর
আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর

আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর

  • অথবা, শাসন বিভাগ কাকে বলে? শাসন বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর। 
  • অথবা, শাসন বিভাগ কী? একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে শাসন বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি বর্ণনা কর। 
  • অথবা, শাসন বিভাগ বলতে কী বুঝ? আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে শাসন বিভাগের ক্ষমতা, ও কার্যাবলি তুলে ধর।

উত্তর : ভূমিকা : শাসন বিভাগ হলো সরকারের একটি . শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। সাধারণত রাষ্ট্রীয় প্রশাসন বিভাগে বা ব্যবস্থার প্রেক্ষিতে শাসন বিভাগের উৎপত্তি। আইনসভার মাধ্যমে ইচ্ছা প্রণয়ন আর শাসন বিভাগের মাধ্যমে আইন বাস্তবায়ন করে। 

Prof. Carry বলেছেন, “সরকারের মূল অংশ হলো শাসন বিভাগ, আর আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ শাসন বিভাগের কাজকে সংবিধান সম্মত করার মাধ্যম মাত্র।”

→ শাসন বিভাগের অর্থ ও সংজ্ঞা : শাসন বিভাগ হলো সরকারের দ্বিতীয় বিভাগ। যে বিভাগের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণীত ও কার্যকরী হয় তাকে শাসন বিভাগ বলে। 

ব্যাপক অর্থ শাসনের অন্তর্ভুক্ত সচিবালয়ের উচ্চতর কর্মকর্তা হতে গ্রাম্য চৌকিদার পর্যন্ত সবাই শাসন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। শাসন বিভাগ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে ।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা : শাসন বিভাগ সম্বন্ধে বিভিন্ন তাত্ত্বিকগণ বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন নিচে তাদের মতামত তুলে ধরা হলো :

Duverger -এর ভাষায়, “আইনসভা ও বিচার বিভাগ ব্যতীত সরকারি কাজে নিয়োজিত সবকর্মকর্তাই শাসনবিভাগের অন্তর্ভুক্ত।”

Prof. Finer বলেন, “শাসন সংক্রান্ত কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তির সমন্বয়ে শাসন বিভাগ গঠিত।”

অতএব আইনবিভাগ ও বিচার বিভাগের কাজে নিয়োজিত ব্যতীত সকল সরকারি কর্মকর্তা শাসন বিভাগের আওতাভুক্ত।

→ শাসন বিভাগের প্রকারভেদ বা সংগঠন : নিচে তা প্রদত্ত হলো : 

(ক) নামমাত্র ও প্রকৃত শাসন বিভাগ;

(খ) একক ও সমষ্টিগত শাসন বিভাগ;

(গ) সংসদীয় ও রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন বিভাগ ও 

(ঘ) উত্তরাধিকার ও মানোনীত শাসন বিভাগ ।

→ নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি : সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ও বিশাল বা বৃহৎ বিভাগ শাসন বিভাগ । শাসন বিভাগ কাজ করে থাকে বিভিন্ন প্রকার । শাসন বিভাগের কার্যাবলি নিচে আলোচনা করা হলো :

১. শাসন সংক্রান্ত কাজ : শাসন বিভাগের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো শাসনকার্য পরিচালনা করা। দেশের শাসনকার্য নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে শাসন বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আইনসভা ভেঙে গেলে অন্তর্বর্তীকালীন সময় শাসন বিভাগের অরাজনৈতিক অংশ শাসনকার্য পরিচালনা করে।

২. শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কাজ : শাসন বিভাগের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো শৃঙ্খলা বজায় রাখা। বাহ্যিক দিকে তাকালে দেখা যায় শাসন বিভাগ বলতে পুলিশের শাসনকার্য বুঝায় ।

৩. আইনসংক্রান্ত কাজ : কাজের বিশালতার জন্য আইন | বিভাগের কিছু কিছু কাজ শাসন বিভাগ করে থাকে। শাসন | বিভাগ অর্পিত ক্ষমতা বলে উপ-আইন ও নিয়মাবলি তৈরি করে। 

সংসদীয় ব্যবস্থায় শাসন বিভাগের সদস্যগণ আইনসভায় অংশ গ্রহণ করে আইন প্রণয়ন করে।

৪. প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কাজ : শাসন বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত কাজ করা। বিশেষ করে রাষ্ট্রের অখণ্ডতা ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষেত্রে শাসন বিভাগ গুরুদায়িত্ব পালন করে। শাসন বিভাগের উদ্দেশ্য হলো স্থল, নৌ ও বিমান বাহিনী গঠন করে।

৫. বিচার সংক্রান্ত কাজ : শাসন বিভাগ বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগ দিয়ে থাকে। এছাড়া কোনো আসামির শাস্তির বিধান হলে শাসন বিভাগ তাকে দণ্ড হ্রাস বা দণ্ড মওকুফ করতে পারে। পাশাপাশি শাসনবিভাগের কর্মচারীদের অন্যায় ও দুর্নীতির বিচার করে থাকে ।

৬. জনকল্যাণমূলক : শাসন বিভাগ বিচার বিভাগের পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক কাজ করে থাকে। জনশিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, পরিবহন, ডাক ও তার এবং শিল্প-বাণিজ্য ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক কাজের পরিধিভুক্ত। 

৭. নীতিনির্ধারণ : শাসন বিভাগ বিভিন্ন প্রকার নীতিনির্ধারণ করে থাকে। শাসন বিভাগ প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের কাজের নীতিনির্ধারণ করে থাকে। আর সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যথোপযুক্ত নীতিনির্ধারণ করা আবশ্যক।

৮. অর্থ সংক্রান্ত কাজ : সরকারের বিবিধ কার্য সম্পাদনের জন্য সরকারের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন পড়ে। শাসন বিভাগ কর ধার্য ও আদায়ের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া বাজেট প্রণয়নের পূর্বে শাসক প্রধানের পরামর্শ নিতে হয়।

৯. পররাষ্ট্রবিষয়ক কাজ : শাসন বিভাগ বিভিন্ন পররাষ্ট্র বিষয়ক কার্যসম্পাদন করে। অনেক সময় আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গে শাসন বিভাগ বক্তব্য প্রদান করে। পররাষ্ট্র ও কূটনীতিক কাজ করে শাসন বিভাগ অনেক সময়।

১০. জরুরি কাজ : আইন বিভাগের সীমাবদ্ধতার জন্য জরুরি পরিস্থিতিতে শাসন বিভাগ কার্যকর ভূমিকা রাখে। 

আবার বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা বা প্রতিরক্ষা করার জন্য শাসন বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া সকল পরিস্থিতি ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বও এ বিভাগের ওপর ন্যস্ত।

১১. জনমত গঠন : জনমত গঠনের জন্য শাসন বিভাগ কাজ করে। জনমত অনুকূলে রাখার জন্য শাসন বিভাগ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। সুতরাং জনমত সৃষ্টি করা শাসন বিভাগের অন্যতম কাজ।

১২. সামিট সম্মেলন : কোনো দেশের শাসন বিভাগের প্রধান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা সরকার শাসন বিভাগের দায়িত্ব পালন করে এবং সরকার প্রধানরাই সামিট সম্মেলনে নেতৃত্ব দেন। এ সব দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

১৩. সামরিক কার্য : বিভিন্ন দেশের সংবিধান অনুযায়ী যেমন বাংলাদেশ ও USA এর সর্বাধিনায়ক হলো রাষ্ট্রপতি। ফলে সশস্ত্র সকল কার্য; যেমন- নিয়োগ, প্রমোশন, সামরিক বিষয়ক প্রভৃতি কাজ সম্পাদন করে থাকেন। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে জরুরি অবস্থায় কোনো সিদ্ধান্ত ও যুদ্ধ ঘোষণায় শাসন বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নির্বাহী বিভাগ নিঃসন্দেহে সরকারের বিভাগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করে থাকে। তাছাড়া নির্বাহী বিভাগের হাতে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত থাকে।

 এতে ক্রমান্বয়ে শাসন বিভাগের ক্ষমতা অপ্রতিহত। অবস্থায়, ধাবিত হচ্ছে। তাই বলা যায়, শাসন বিভাগের লাগামহীন ক্ষমতা স্বৈরাচারী শাসকের উত্থান করতে পারে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের আধুনিক রাষ্ট্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ