দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর
দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর

দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর

  • অথবা, দিল্লির সালতানাতের প্রকৃত ইলতুৎমিশের ভূমিকা মূল্যায়ন কর। 
  • অথবা, দিল্লির সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের অবদান আলোচনা কর। 
  • অথবা, দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সুলতান ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব মূল্যায়ন কর।

ভূমিকা: ভারতীয় উপমহাদেশে দিল্লি সালতানাতে সুলতান ইলতুৎমিশ এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকার নাম। পাস বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। 

কুতুবউদ্দিন আইবেকের মৃত্যুর পর তার পোষ্যপুত্র আরাম শাহের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সমগ্র সাম্রাজ্যে বিদ্রোহ ও বিশৃঙ্খলা চরম আকার ধারণ করে, ঠিক সে পরিস্থিতিতে শাসনক্ষমতা গ্রহণ করে সাম্রাজ্য সুসংহত ও সুদৃঢ় করে দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হবার গৌরব অর্জন করেন ইলতুৎমিশ।

দিল্লি সানতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব : ভারতীয় উপমহাদেশের উজ্জ্বল এক আলোকবর্তিকার নাম ইলতুৎমিশ। দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের উল্লেখযোগ্য অবদান সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. বিজেতা হিসেবে : ১২২৬ সালে ইলতুৎমিশ রনথয়োর পুনর্দখল এবং সেখানকার রাজপুত বিদ্রোহীদের শাস্তি প্রদান করেন। ১২২৭ সালে তিনি মান্দাওয়ার ও সিওয়ানিক ১২৩২ সালে গোয়ালিয়ার, ১২৩৪ সালে ভিলসা ও উজ্জয়িনী নগরী দখল করেন।

২. উপাধি লাভ : ইলভূমিশের উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব- বাগদাদের খলিফা আল-মুনতাসির বিল্লাহর নিকট হতে ১২২১ সালে সুলতান-ই-আযম খেতাব প্রাপ্তি ও স্বীকৃতি লাভ। তাই ড. হাবিবুল্লাহ বলেন, “এভাবে দিল্লির রাজ্য একটি পূর্ণ আইনসম্মত রাজ্যের রূপ লাভ করে ।

৩. সামরিক ব্যবস্থা : ইলতুৎমিশ রাজার বাহিনী হিসেবে একটি সুদক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তুলে এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে তাদের ভরণপোষণ করেন।

৪. আরবি মুদ্রার প্রচলন : মুসলমান শাসক হিসেবে তিনিই সর্বপ্রথম আরবি মুদ্রার প্রচলন করেন। এটি রুপাইয়া নামে পরিচিত ছিল। একটি রুপাইয়ার ওজন ছিল ১৭৫ যেন।

৫. শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ : ইলতুৎমিশ সাহিত্য সংস্কৃতি ও শিক্ষার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি দিল্লিকে ইসলামি সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠ কেন্দ্রে পরিণত করেছিলেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হতে বহু খ্যাতনামা পণ্ডিতকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এসে দিল্লিতে তাদের বসবাসের উপযুক্ত ব্যবস্থা করেন।

৬. স্থাপত্যকলা : ইলতুৎমিশের পৃষ্ঠপোষকতায় দিল্লির বিখ্যাত কুতুবমিনার নির্মিত হয়েছিল, যা তার শিল্পানুরাগের নিদর্শন স্বরূপ আজও বিদ্যমান। এছাড়া তিনি কুওয়াতুল ইসলাম ও আড়াই-দিনকা ঝোপড়া মসজিদ নির্মাণ করেন।

৭. ধর্মীয় নীতি : ইলতুমিশ ব্যক্তিগত জীবনে খুবই ধর্মপরায়ণ ছিলেন। ঐতিহাসিক মিনহাজ-উস-সিরাজ বলেন, তার মতো ধার্মিক, দয়ালু, খোদাভক্ত, ধর্মভীরু, বিধান ও জ্ঞানীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল সুলতান আর কখনও দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেননি ।

৮. বিচার ব্যবস্থা : ইলতুৎমিশের বিচারকার্য ছিল ন্যায়পরায়ণতার আঙ্গিকে গঠিত। তার ন্যায়বিচারে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে ইবনে বতুতা বলেন, জনসাধারণের অভিযোগ শ্রবণের জন্য তার প্রাসাদে একটি শিকল বাঁধা ঘণ্টা থাকতো এবং অভিযোগকারী তা বাজিয়ে সুলতানের দৃষ্টি আকর্ষণ করত।

৯. বন্দেগান-ই-চেহেলগান প্রতিষ্ঠা : ইলতুৎমিশ প্রথম ভারতীয় সাম্রাজ্যে মুসলিম রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি সর্বপ্রথম একটি সুপরিকল্পিত রাজধানী, একটি স্বাধীন রাজ্য এবং ৪০ জন ক্রীতদাসের সমন্বয়ে বন্দেগান-ই-চেহেলগান প্রতিষ্ঠা করে অমর হয়ে আছেন।

১০. জনহিতকর কার্যাবলি : ইলতুৎমিশ সাম্রাজ্যে অনেক রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, সরাইখানা ইত্যাদি নির্মাণ করেন ।

→ ইলতুৎমিশের চরিত্র : ইলতুৎমিশ ছিলেন সুচতুর, নির্ভীক ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিবিদ। একমাত্র আত্মবিশ্বাসের উপর নির্ভর করেই তিনি নব প্রতিষ্ঠিত দিল্লি সালতানাতকে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে শুধু রক্ষাই করেন নি; বরং তিনি দিল্লি সাম্রাজ্যের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

এ প্রসঙ্গে কে কে দত্ত বলেছেন, ১২৯০ সাল পর্যন্ত দিল্লির তুর্কি সালতানাতের প্রাথমিক যুগের সুলতানদের মধ্যে ইলতুৎমিশকে ন্যায়সংগতভাবে সর্বশ্রেষ্ঠভাবে সুলতান বলে গণ্য করা যেতে পারে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দাস বংশের শ্রেষ্ঠ ও প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব অপরিসীম। নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে সিংহাসনে আরোহণ করে তিনি যেভাবে অতি কৌশলে সমগ্র সাম্রাজ্যে শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তাই ঐতিহাসিক ঈশ্বরী প্রসাদ যথার্থই বলেছেন, ইলতুৎমিশ নিঃসন্দেহে দাস বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর। যদি তোমাদের আজকের দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইলতুৎমিশের কৃতিত্ব বর্ণনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ