ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি
ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি

ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি

  • অথবা, ইতিহাস জানার উৎসগুলো সংক্ষেপে তুলে ধর।

উত্তর : ভূমিকা : মধ্যযুগীয় ভারতে মুসলিম রাজত্বের ইতিহাস রচনার উপকরণ ও উপাদান প্রচুর, তবে বিভ্রান্তিকরও বটে। ঐ সময়ের ইতিবৃত্ত লেখক, সুলতানদের সভাকবি, সভাপণ্ডিত, বিদেশি বণিক ও পর্যটকদের পরস্পরবিরোধী উক্তি ও মতবাদের দ্বন্দ্বের মধ্য হতে প্রকৃত ঐতিহাসিক সত্য উদ্ধার করা হলো মধ্যযুগের ভারতের ইতিহাস লেখকদের কঠিন দায়িত্ব। 

সুতরাং ভারতে মুসলিম শাসনের সঠিক ইতিহাস লিখতে হলে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে বিষয়বস্তু ও তথ্যাদি বিশ্লেষণ করা উচিত ।

→ ইতিহাস জানার উৎসসমূহ : ভারতবর্ষে মুসলিম শাসনের ইতিহাস জানার উৎস মূলত ৫টি। যথা- 

১. সরকারি দলিলপত্র; 

২. সমসাময়িক রচনা; 

৩. বিদেশি বণিক; ও পর্যটকদের বিবরণী; 

৪. মুদ্রা ও শিলালিপি এবং 

৫. স্মৃতিস্তম্ভ ও অট্টালিকা ।

১. সরকারি দলিলপত্র : সুলতানি ও মুঘল আমলের সরকারি দলিলপত্র ঐ যুগের ইতিহাস লেখার অভ্যন্ত নির্ভরযোগা উপকরণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। মুঘল সম্রাটদের রাজত্বকালে সরকারি নথিপত্রাদি বিশেষভাবে সংরক্ষণের বন্দোবস্ত ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো পরবর্তীকালে যুদ্ধবিগ্রহ ও অযত্নের ফলে এই সকল মূল্যবান ঐতিহাসিক তথ্যসম্বলিত দলিলপত্রের অধিকাংশই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।

২. সমসাময়িক ঐতিহাসিকদের রচনা : ভারতের মুসলিম রাজত্বের ইতিহাস জানতে হলে সমসাময়িক ঐতিহাসিকদের গ্রন্থাবলি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই উপমহাদেশের ইতিহাস রচনায় সমসাময়িক মুসলিম ইতিহাসবিদদের অবদান ছিল অপরিসীম। 

এসব ঐতিহাসিক রচনার মধ্যে অন্যতম হলো আলী বিন হামিদের 'চাচনামা', আল বিরুনী রচিত "কিতাবুল হিন্দ', মিনহাজ সিরাজ রচিত 'তাবাকাত ই-নাসিরী", জিয়াউদ্দিন বারানীর ‘তারিখ-ই-ফিরোজ শাহী' প্রভৃতি।

৩. বিদেশি পর্যটকদের বর্ণনা : অনেক বিদেশি পর্যটক সুলতানি ও মুঘল শাসনামলে ভারতে আগমন করেছিলেন। তাদের অনেকেই ভারতের তৎকালীন রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ লিখে গিয়েছেন।

সুতরাং তাদের রচনায় মুসলিম ভারতের ইতিহাসের নানাবিধ উপাদান রয়েছে। ভারতের মুসলিম শাসনের ইতিহাস জানার জন্য এসব বিদেশি পর্যটকদের বর্ণনা অত্যন্ত মূল্যবান।

৪. মুদ্রা ও শিলালিপি : মুসলিম ভারতের ইতিহাস রচনায় সে সময়কার মুদ্রা ও শিলালিপি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য উৎস। সুলতানি ও মুঘল শাসনকালের মুদ্রা ও লিপি ঐ যুগের মুদ্রানীতি এবং ধাতু শিল্পের পরিচয় দিয়ে থাকে। 

গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলির সঠিক তারিখ এবং তৎকালীন অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা জানতে মুদ্রা যথেষ্ট সাহায্য করে।

৫. স্মৃতিভয় ও অট্টালিকা : ভারতে সুলতানি ও মুঘল যুগের স্থাপত্যশিল্প ও ললিতকলার প্রচুর নিদর্শন আজও বিদ্যমান। সুলতানি আমলের স্থাপত্যশিল্প ও ললিতকলার নিদর্শনে, স্মৃতিস্তল্পে, অট্টালিকায় হিন্দু ও মুসলিম শিল্প কৌশলের সংমিশ্রণের সুস্পষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। 

স্মৃতিভয় ও অট্টালিকা সেই সময়ের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার উপর যথেষ্ট আলোকপাত করে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মূলত উপর্যুক্ত পাঁচটি উৎসের মাধ্যমেই ভারতের মুসলমানদের ইতিহাস জানা যায়। তবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো সমসাময়িক ঐতিহাসিকদের রচিত বিভিন্ন সাহিত্য। 

কেননা বিভিন্ন শাসকের আমলে যে ঐতিহাসিক ছিলেন তারা অত্যন্ত নিপুণভাবে সেই শাসকের শাসনব্যবস্থা তুলে ধরেছেন। তাছাড়াও বিদেশি পর্যটকদের বিভিন্ন রচনা রয়েছে, যা সমসাময়িক ইতিহাস জানতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি। যদি তোমাদের আজকের ইতিহাস জানার উৎসগুলো কি কি পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ