গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয় ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয়  ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয়  ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয়  ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর
গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয়  ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর

গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয়  ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর

  • অথবা, গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবেই অর্জন করা যায় না, গণতন্ত্র আপনা-আপনি সমাজে বিকশিত হয়” ম্যাকাইভারের উক্তিটি যথার্থ বিচার কর।

উত্তর : ভূমিকা : গণতন্ত্র একটি শক্তিশালী ও জনপ্রিয় শাসনব্যবস্থা। এতে শাসকের কর্তব্য ও শাসিতের অধিকার উভয়ই সমহারে রক্ষার বিধিবিধান নিহিত থাকে। 

সাধারণ মানুষের ইচ্ছানুযায়ী এ শাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয়। জনগণের ইচ্ছাই এর মূলভিত্তি । এতে ব্যক্তির ইচ্ছা বা স্বৈরশাসনের কোনো স্থান নেই ।

→ গণতন্ত্র : গণতন্ত্র শব্দটি এসেছে ইংরেজি শব্দ Democracy থেকে। ইংরেজি Democracy শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ Demos এবং Kratia থেকে। Demos অর্থ জনগণ এবং Kratia অর্থ শাসন ক্ষমতা। 

সুতরাং শাব্দিক অর্থ Democracy অর্থ জনগণের শাসন ক্ষমতা অর্থাৎ যে সরকার ব্যবস্থা জনগণের অংশগ্রহণে এবং জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয় তাকে গণতন্ত্র বলে ।

প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন লেখক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ গণতন্ত্রের সংজ্ঞা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দিয়েছেন। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা প্রদান করা হলো :

প্রোসডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের মতে, জনগণের কল্যাণাথে, জনগণের জন্য, জনগণ দ্বারা পরিচালিত শাসনব্যবস্থাকে গণতন্ত্র বলে।" (Democracy is a government of the people, by the people and for the people.)

অধ্যাপক সীলির মতে, "গণতন্ত্র হচ্ছে এমন এক শাসনব্যবস্থা যেখানে সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।" (Democracy is a government in which everybody has a share.)

অধ্যাপক ডাইসি বলেন, "গণতন্ত্র হচ্ছে এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে শাসকগণ তুলনামূলকভাবে জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ।" (Democracy is a form of government is which the governing body is a comparatively large fraction of the entire population.)

সি. এফ. স্ট্রং বলেন, “শাসিত জনগণের সক্রিয়া সম্মতির উপর যে সরকার প্রতিষ্ঠিত, তাকে গণতন্ত্র বলে।" (Democracy implies that government which shall rest on active consent of the governed.)

হিরোডোটাস বলেন, “গণতন্ত্র এমন এক প্রকার শাসনব্যবস্থা যেখানে শাসনক্ষমতা আইনত কোনো শ্রেণি বা শ্রেণিসমূহের উপর ন্যস্ত না থেকে সমাজের সকল সদস্যদের উপর ন্যস্ত থাকে।"

→ গণতন্ত্র সম্পর্কে ম্যাকাইভারের উক্তি : গণতন্ত্র সম্পর্কে মাকাইভার বলেন, “গণতন্ত্র এমন একটি সরকার যা কোনো দিনই পরিপূর্ণতা লাভ করে না। 

গণতন্ত্র ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে বহু শতাব্দী বিকাশের পর বলা যায় এ রাষ্ট্রটি গণতান্ত্রিক।” ম্যাকাইভারের উক্তিটির যথার্থতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো :

১. গণতন্ত্র বিকাশের জন্য পূর্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন : ম্যাকাইভারের মতে, গণতন্ত্রের বিকাশের জন্য পূর্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন। হঠাৎ করে একটি দেশে গণতন্ত্র চালু করলেই তা সফল হয়ে যায় না। 

একটি শিশু যেমন জন্মহাহণের সাথে সাথেই হাঁটতে পারে না, তেমনি গণতন্ত্র চালুর সাথে সাথেই তা সফল হয়ে ওঠে না। এর জন্য পূর্ব প্রস্তুতির প্রয়োজন।

২. গণতন্ত্রে পরিপূর্ণতা লাভ করা যায় না : গণতন্ত্রের বাস্তব- রূপ বিশ্লেষণ করা খুবই দুরূহ কাজ। বর্তমান বিশ্বের যেকোনো দেশই হোক সেটা উন্নত বা উন্নয়নশীল গণতন্ত্রের পরিপূর্ণতা লাভ করেছে বলে জোরালোভাবে দাবি করতে পারবে না। 

কারণ গণতন্ত্র ক্রমশই বিকাশ লাভ করে একদিনেই তা পরিপূর্ণতা পায় না।

৩. গণতন্ত্র বিকাশের পূর্বশর্ত : ম্যাকাইভার বলেছেন যে, গণতন্ত্র বিকাশের জন্য কতকগুলো পূর্বশর্তের প্রয়োজন। 

যেমন : দ্রুত কৃষ্টিসম্পন্ন অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নতরাষ্ট্র, শিল্পোন্নত জাতি ইত্যাদি। কেননা অর্থনৈতিকভাবে উন্নত না হলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল এবং দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

৪. গণতন্ত্র সহসা প্রতিষ্ঠা করা যায় না : ম্যাকাইভারের মতে, গণতন্ত্র হঠাৎ করেই প্রতিষ্ঠা হয়ে যায় না তার জন্য ব্যাপক সময়ের প্রয়োজন। 

কেননা নব্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত একটি দেশে হঠাৎ করে গণতন্ত্র চালু করলে শুধু বিশৃঙ্খলাই বেড়ে যায়। গণতন্ত্রের জন্য অবকাঠামোর প্রয়োজন রয়েছে।

৫. গণতন্ত্রের উৎপত্তি : গণতন্ত্রের উৎপত্তির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, অপেক্ষাকৃত সভ্য, কৃষ্টিসম্পন্ন দেশগুলোতেই গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটেছে। 

প্রাচীন গ্রিসে, রোমান সাম্রাজ্যে, ইংল্যান্ডে প্রভৃতি কৃষ্টিসম্পন্ন দেশেই মূলত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

৬. গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় উন্নয়নশীল দেশ : গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে | উন্নয়নশীল দেশগুলোই বেশি চেষ্টা করেছে। 

অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না হলে সে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। যদিও গণতন্ত্র চালু থাকে তথাপিও তা আদর্শচ্যুত গণতন্ত্র বিদ্যমান।

৭. কৃষ্টিসম্পন্ন দেশে গণতন্ত্র : গণতন্ত্রের সক্ষলতার অন্যতম পূর্বশর্ত হচ্ছে কৃষ্টিসম্পন্ন সংস্কৃতি। দেশে যদি সংকীর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিদ্যমান থাকে তাহলে সেখানে গণতন্ত্র বিকশিত হবে না। 

কারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছাড়া গণতন্ত্র বিকশিত হয়। না। তাই গণতন্ত্র বিকাশে সময়ের প্রয়োজন পড়ে।

৮. দরিদ্র দেশে গণতন্ত্র : ম্যাকাইভার বলেছেন, দরিদ্র দেশে কয়েকটি কারণে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়ে। 

যেমন- কোনো একটি দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পরিমাণ অধিক থাকলে, রাষ্ট্রের জনগণ যদি রাজনৈতিক দিক থেকে অসচেতন হয় তাহলে নব্য গণতন্ত্র দ্রুত বিকাশ লাভ করতে ব্যর্থ হয়।

৯. অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশে গণতন্ত্র : অর্থনৈতিক ও শিল্পোন্নত দেশের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির পরিমাণ বেশি বলে সেসব দেশে গণতন্ত্রের দ্রুত বিকাশ ঘটে। 

কারণ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের জনগণ, নিজেদের অধিকার রাজনীতি ও তাদের অধিকার সম্পর্কে বেশি সচেতন থাকে বিধায় সেসব দেশের গণতন্ত্র তার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় খুব দ্রুতই। 

জনগণ চায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য ও স্বাধীনতা। গণতন্ত্র তাদের সেই কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার সুযোগ দেয় বলে এসব দেশে গণতন্ত্র দ্রুতই বিকাশ লাভ করে ।

১০. মুক্ত প্রচার মাধ্যমের অভাব : প্রত্যেকটি দেশের গণমাধ্যমগুলো যদি মুক্ত এবং স্বাধীন থাকে তাহলে গণতন্ত্র দ্রুতই বিকাশ লাভ করবে। 

কিন্তু অধিকাংশ দেশ তাদের দেশের গণমাধ্যমগুলোকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে চায় না। বিভিন্ন নীতিমালার মাধ্যমে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রে পদে পদে বাধাগ্রস্ত হয়।

১১. শিক্ষার প্রসার : গণতন্ত্র বিকাশের অন্যতম একটি পূর্বশর্ত হচ্ছে ব্যাপকভিত্তিক শিক্ষা প্রচলন। কিন্তু এই শিক্ষা হঠাৎ করেই জনগণকে শিক্ষিত করে তুলতে পারে না। 

ক্রমান্বয়ে জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করে তুলে । তাই গণতন্ত্র বিকাশেও সময়ের প্রয়োজন পড়ে।

১২. গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক জ্ঞানের অভাব : জনগণ যদি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিকভাবে সচেতন না হয় তাহলে গণতন্ত্র সফল করতে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন পড়ে। কারণ জনগণের সজাগ দৃষ্টি ও সচেতনতা ছাড়া গণতন্ত্র পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে না ।

১৩. কার্যকরী বিরোধী দলের অভাব : গণতন্ত্রে কার্যকরী কোনো বিরোধী দল না থাকলে গণতন্ত্র অকার্যকর হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক দল ছাড়া গণতন্ত্র চলতে পারে না। 

কেননা গণতন্ত্রে জনগণের প্রতিনিধি থাকতে হয় এবং কোনো একটি নির্দিষ্ট দল থাকলেই চলবে না । এক বা একাধিক বিরোধী দলের প্রয়োজন রয়েছে ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, গণতন্ত্র সম্পর্কে ম্যাকাইভার যে উক্তি করেছেন তা যথার্থ এবং যুক্তিযুক্ত। গণতন্ত্র হঠাৎ করে অর্জন বা পুরোপুরি অর্জন করা যায় না। তা বিকাশের জন্য সময় লাগে । কালের পরিক্রমায় তা আপনা-আপনি বিকশিত হয়।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয়  ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয়  ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। যদি তোমাদের আজকের গণতন্ত্র এমন এক ধরনের সরকার যা পুরোপুরিভাবে অর্জন করা যায় না গণতন্ত্র আপনা আপনি বিকশিত হয়  ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ