জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও
জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও

জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও

  • অথবা, জালালউদ্দিন খলজি সম্পর্কে কী জান?  
  • অথবা, জালালউদ্দিন খলজির কে ছিলেন?

উত্তর : ভূমিকা : ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে জালালউদ্দিন ফিরোজ শাহ খলজি এক অবিস্মরণীয় নাম। দিল্লির সুলতান কায়কোবাদও তার পুত্র কায়মুর্সকে হত্যা করে ১২৯০ সালে নিজেকে দিল্লির সুলতান হিসেবে ঘোষণা করে। 

তার ক্ষমতা লাভের মাধ্যমে ভারতবর্ষে খলজি বংশের উত্থান ঘটে। আর এ বংশ প্রতিষ্ঠা করে জালালউদ্দিন ফিরোজশাহ খলজি ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক অক্ষয় স্থান দখল করে আছেন ।

জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় : জালালউদ্দিন ফিরোজ শাহ খলজির পূর্বপুরুষরা তুর্কি জাতির লোক ছিল। সে সূত্রে জালালউদ্দিন ছিলেন মূলত তুর্কি। 

কিন্তু দীর্ঘকাল ভারতে বসবাসের ফলে তারা হিন্দুস্থানি মুসলমান বলে পরিচিত। নিজামউদ্দিনের রচনা থেকে জানা যায় যে, জালালউদ্দিন চেঙ্গিস খানের জামাতা কুলিজ খানের বংশধর।

সিংহাসনে আরোহণ : ১২৯০ সালে কায়কোবাদকে হত্যার মাধ্যমে জালালউদ্দিন ফিরোজ শাহ খলজি দিল্লির মসনদে আসীন হন। রক্তপাতের মাধ্যমে ক্ষমতা লাভের ফলে রাজ্যের অভিজাত বংশের এবং দিল্লির নাগরিকগণ তার প্রতি বিরুদ্ধভাবাপন্ন হন। 

এজন্য নিতির নিকটবর্তী কিলোঘিরি প্রাসাদে তার অভিষেক ক্রিয়া সংঘটিত হয়। কিছুকাল দিল্লিতে প্রবেশ না করে সেখান থেকে তিনি রাজকার্য পরিচালনা করেন।

বংশের প্রতিষ্ঠা : জালালউদ্দিন খলজির অন্যতম কৃতিত্ব হলো খলজি বংশের প্রতিষ্ঠা। প্রথমে কায়কোবাদের মন্ত্রীর পদ লাভ। অতপর মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ করে তার কৃপার অধিকারী হন।

 এর ফলে তুর্কি আমির তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়। | তারা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। এ সংবাদ পেয়ে তিনি বাহারপুরে পলায়ন করেন এবং তারকেশ্বরের মাধ্যমে কায়কোবাদকে হত্যা করে খলজি বংশ প্রতিষ্ঠা করেন।

সাচ্চুর বিদ্রোহ দমন : সুলতান জালালউদ্দিন খলজির | রাজত্বের দ্বিতীয় বছর বলবনের চাচাতো ভাই এবং কারা প্রদেশের শাসনকর্তা সাচ্চু বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। 

অন্যান্য অভিজাত বর্গের সহায়তায় সুলতান তাকে পরাজিত ও বন্দি করেন। অতঃপর তাকে ক্ষমা করে সুলতান উদার নীতি প্রদর্শন করেন। তার উদার নীতির কারণে ভারতবর্ষের ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন।

মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ : ১২৯২ সালে মোঙ্গল নেতা হালাকু খা ভারত আক্রমণ করেন। এ সময় সুলতান অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় প্রদর্শন করে মোঙ্গলদের সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করেন।

অধিকাংশ মোঙ্গল ভারত ত্যাগ করে স্বদেশে চলে যায় । উলুঘ খানের নেতৃত্বে কতিপয় মোঙ্গল ইসলাম গ্রহণ করে।

খলজি আমিরদের বিদ্রোহ দমন : সুলতান হওয়ার পূর্বে জালালউদ্দিন ফিরোজশাহ খলজি একজন সফল সেনাপতি ছিলেন, কিন্তু সুলতান হওয়ার পর তিনি আক্রমণাত্মক নীতি পরিহার করেন। 

খলজি আমিরগণ সুলতানের ক্ষমাকে ও দয়াকে দুর্বল ভেবে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করলে তিনি তাদের কঠোর হস্তে দমন করেন।

উদার নীতি প্রদর্শন : একদা একজনকে জালালউদ্দিনের সামনে গ্রেফতার করলে তিনি তাকে শাস্তি দানের পরিবর্তে ক্ষমা প্রদর্শন করেন এবং সদুপদেশ প্রদান করে ছেড়ে দেন। তার উদার নীতির কাছে রাজ্যে অরাজকতার সৃষ্টি হয় ।

রাজ্যবিস্তার : সুলতান জালালউদ্দিন খলজি রণথম্ভোরে দুইবার অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হন। তবে তার অধীনে তার ভ্রাতুষ্পুত্র আলাউদ্দিন খলজি মালৰ ও দেবগিরিতে সফল অভিযান পরিচালনা করেন।

চরিত্র : সুলতান জালালউদ্দিন খলজি ছিলেন শান্তিপ্রিয় শাসক । তিনি ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত সৎ, পরহেজগার, আল্লাহ ভীরু, খাটি, ভদ্র এবং অতীব দয়ালু ছিলেন। 

তিনি আড়ম্বরপূর্ব জীবনযাপন পরিত্যাগ করেন । সিংহাসনে আরোহণ করে গোলযোগ, বিশৃঙ্খলা ও রক্তপাত তিনি পছন্দ করতেন না। 

সুলতান জালালউদ্দিন খলজি জ্ঞান-বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি শিক্ষা-দীক্ষা ও সাহিত্যচর্চার অনুরাগী ছিলেন। 

তার রাজদরবারে বড় বড় আলেম, পণ্ডিত, কবি-সাহিত্যিক ছিলেন; যেমন- আমির খসরু, শুমীর হাসান, দেহলভী তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জালালউদ্দিন খলজি তথাকথিত দাস বংশের উপর খলজি বংশ প্রতিষ্ঠা করেন। আর এ রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে ভারতবর্ষের ইতিহাসে জালালউদ্দিন খলজি অমর হয়ে আছেন। 

তাকে দিল্লি সালতানাতের প্রথম স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আদর্শ স্থাপনকারী সুলতান হিসেবে আখ্যায়িত করলে অত্যুক্তি হবে না। শাসক হিসেবে ব্যর্থ হলেও তিনি ছিলেন নিতান্তই ভদ্রলোক এবং তার সময়ের অন্যতম ধার্মিক মুসলমান।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও । যদি তোমাদের আজকের জালাল উদ্দিন খলজি কে ছিলেন | জালালউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ