সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও
সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও

সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও

  • অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন খলজি কে?
  • অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সম্পর্কে কি জান?

উত্তর : ভূমিকা : ভারত উপমহাদেশের সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক অক্ষয় স্থান দখল করে আছেন। 

সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সমর কুশলনৃপতি, সামরিক সংগঠক, দিগ্বিজয়ী বীর ও সুদক্ষ শাসক এবং বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ভারতীয় ইতিহাসে এক স্থায়ী আসন দখল করে আছেন। ইবনে বতুতা তাকে দিল্লির শ্রেষ্ঠ সুলতানগণের মধ্যে অন্যতম বলে অভিহিত করেছেন।

[] আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য স্থান দখল করে আছেন। নিম্নে তার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. প্রাথমিক জীবন : আলাউদ্দিন খলজি জালালউদ্দিনের ভ্রাতা শিহাবউদ্দিনের পুত্র। তিনি আলী নামে পরিচিত। বাল্যকালে পিতার মৃত্যুর পর পিতৃব্য জালালউদ্দিনের নিকট লালিত হন।

সম্ভবত তিনি ১২৬৫-১২৬৭ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেন। আলাউদ্দিনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই বললেই চলে। তিনি বাল্যকাল থেকে অসি ও অশ্ব চালনায় দক্ষতা অর্জন করে ।

২. সিংহাসনে আরোহণ : খলজি বংশের প্রতিষ্ঠাতা জালালউদ্দিন পিরোজ শাহ খলজির মৃত্যুর পর আলাউদ্দিন খলজি ১২৯৬ সালের ১৯ জুলাই নিজেকে দিল্লির সুলতান বলে ঘোষণা করেন। 

সিংহাসন আরোহণ করে তিনি তার সহযোগীদের পুরস্কৃত করেন। তিনি তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা আলমাস বেগকে উলুঘ খান, ভগিনেয় হিজবরউদ্দিন ইউসুফকে জাফর খান, ভগ্নিপতি নসরতকে নসমরত খান এবং শ্যালক মালিক সঞ্জয়কে আলপখান উপাধি দেন।

→ সুলতান আলাউদ্দিনের খলজি কৃতিত্ব : সুলতান আলাউদ্দিন খলজির কৃতিত্ব নিচে আলোচনা করা হলো :

১. মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ : ভারতবর্ষের অপরিসীম ধন- সম্পদের প্রতি পৃথিবীর যে সকল যোদ্ধা শ্রেণির প্রবল লোভ ও আগ্রহ ছিল তাদের মধ্যে মোঙ্গলরা অন্যতম। 

কথিত দাস বংশের আমল থেকে তারা তা অর্জনের চেষ্টা করে আসছিল। ত্রিপাঠির মতে, “আলাউদ্দিন ক্ষমতাবান ক্ষমতাশীল হওয়ার পর এক ডজন মোঙ্গল আক্রমণের সম্মুখীন হয়। তবে সুলতান অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেসব প্রতিরোধ করেন।”

২. রাজ্যবিস্তার : সুলতান আলাউদ্দিন খলজির অন্যতম কৃতিত্ব হল রাজ্যবিস্তার। তার শাসন আমল থেকে মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তারের সূচনা শুরু হয়। 

তার শাসন আমলে মুসলিম সাম্রাজ্য বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। তিনি ১২৯৭-১৩০৬ সাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে গুজরাট, চিতোর, মালব, মারওয়াঝালোর বিজয় করেন। 

অতঃপর তিনি দক্ষিণ ভারত বিজয়ে মনোনিবেশ করেন। ১৩০৬-১৩ সালের মধ্যে দেবগিরি বরাঙ্গলদ্বার, সমুদ্র এবং পাঞ্জারাজ্য জয় করে সাম্রাজ্য বিস্তার করেন।

৩. সামরিক সংস্কার : আলাউদ্দিনের অন্যতম কৃতিত্ব হল সামরিক সংস্কারক। তার সামরিক সংস্কার হলো সেনাবাহিনী- গঠন সেনাদের প্রতারণা রোধের অশ্ব চিহ্নিতকরণ। 

সেনাবাহিনীদের জায়গীরের পরিবর্তে নগদ বেতন ভাতা প্রচলন শুরু করেন। সেনাবাহিনীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। সেনাদের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য গোয়েন্দা নিয়োগ করেন।

৪. রাজস্ব সংস্কার : আলাউদ্দিন সাম্রাজ্যে আর্থিক সচ্ছলতা আনয়ন ও জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য রাজস্ব সংস্কার করেন। তিনি সর্বপ্রথম ভূমি জরিপের ব্যবস্থা করেন। 

চৌধুরী মুকাদ্দাম খুৎ মোকাদ্দম কর্মচারী যারা বিনা বাধার জমি বা খাজনা ছাড়া জমি ভোগ করত তাদের সে সুবিধা বাতিল করেন। 

রাষ্ট্রপ্রদত্ত জায়গীর প্রথা বাজেয়াপ্ত করেন। মুসলমানদের উপর যাকাত ধার্য করেন, অমুসলমানদের ওপর জিজিয়া কর ধার্য করেন এবং ভূমি অর্ধাংশ খারাজ ধার্য করেন।

৫. মূল্য নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু : সুলতান আলাউদ্দিন খলজির অন্যতম কৃতিত্ব হল মূল্য নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবস্থা চালু। এ ব্যবস্থা চালু করার ফলে রাজ্যে উন্নতি হয়।

মোঙ্গল আক্রমণ রাজ্যবিস্তার ও রাজ্যকে সুসংহত করার জন্য তার সেনাবাহিনী প্রয়োজন ছিল। আর এ সেনাবাহিনী যাতে স্বল্প মূল্যে দ্রব্য জন্য করতে পারে সেজন্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু করেন। 

তাছাড়া মুদ্রাস্ফীতি রোধ করার জন্য তিনি এ পদ্ধতি চালু করেন। তিনি প্রত্যেক প্রকার প্রব্যের দাম নির্ধারণ করে দেন এবং তার কার্যকর তদারকি নিয়োগ, গুপ্তচর নিয়োগ, মজুত নিরোধ মুনাফাখোরদের দমন, সরবরাহ সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেন।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান আলাউদ্দিন খলজির শাসনকাল সত্যিই অনস্বীকার্য। তার শাসনকালে মুসলিম সাম্রাজ্যের যেমন বিস্তার ঘটে তেমনি অর্থনৈতিকভাবে রাজ্য সমৃদ্ধি লাভ করে।

সর্বদিক থেকে মুসলিম প্রভুত্ব বিস্তার, সুদৃঢ় নীতি ও পরিকল্পনার ভিত্তিতে সামরিক ও বেসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা মোঙ্গলদের ধ্বংস সাধন, ধর্মীয় গোড়া হতে মুক্তি তার রাজত্বকালকে স্মরণীয় করে রেখেছে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও । যদি তোমাদের আজকের সুলতান আলাউদ্দিন খলজির পরিচয় দাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ