জনমত গঠনের শর্তাবলি আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো জনমত গঠনের শর্তাবলি আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের জনমত গঠনের শর্তাবলি আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
জনমত গঠনের শর্তাবলি আলোচনা কর |
জনমত গঠনের শর্তাবলি আলোচনা কর
- অথবা, জনমত গঠন কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে? আলোচনা কর।
- অথবা, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনমত গঠন কি কি বিষয়ের উপর নির্ভর করে? বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : ভূমিকা : বর্তমান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনমত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীন ও সুনিশ্চিত জনমত গণতন্ত্রকে সুসংহত ও শক্তিশালী করে। গণতান্ত্রিক সরকারের সাফল্য ও উৎকর্ষ জনমতের উপর নির্ভরশীল।
তাই সুষ্ঠু ও সবল জনমত গঠন করা আবশ্যক। জনমত এমন সব বিষয়ের উপর নির্ভর করে যা গণতন্ত্রের জন্য খুবই অপরিহার্য উপাদান ।
জনমত গঠনের শর্তাবলি : জনমত গণতন্ত্রের ক ভিত্তি, জনমতের উপর গণতন্ত্রের সাফল্য নির্ভরশীল। সুষ্ঠু জনমত স্প গঠনের কার্যাবলি নিম্নরূপ।
১. শিক্ষার প্রসার : সুধু জনমত গঠনের জন্য প্রয়োজন সুশিক্ষা ও ব্যাপক শিক্ষার প্রসার। শিক্ষার বিস্তার না ঘটলে জনগণ কুসংস্কার ও অজ্ঞতার মধ্যে নিমজ্জিত থাকে। ফলে = তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে না। 'অজ্ঞ ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন জনগণ সুষ্ঠু জনমত গঠনে কোনো ভূমিকা রাখতে পারে না।
२ মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা : মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা জনমত গঠনে অপরিহার্য। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মতামত জনমতকে শক্তিশালী করে।
স্বাধীন মতামত কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিক মতামত প্রদান করে। স্বাধীন মতামতের মাধ্যমে নাগরিকগণ রাষ্ট্রীয় সমস্যার সমাধান করতে পারে।
৩. নিয়ন্ত্রণমুক্ত ও স্বাধীন প্রচার মাধ্যম : নিয়ন্ত্রণমুক্ত ও স্বাধীন প্রচার মাধ্যম জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। সুষ্ঠু জনমত গঠন করার জন্য প্রচার মাধ্যমগুলোকে ক্ষমতাসীন দল বা কোনো প্রভাবশালী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখা উচিত।
রেডিও, টেলিভিশনকে স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন প্রদান করা উচিত। কলে জনগণ তাদের মতামত সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারবে।
৪. জনসাধারণের মধ্যে ঐক্যবোধ প্রতিষ্ঠা : জনমত গঠনে জনগণের মধ্যে ঐক্যবোধ থাকা দরকার। ঐক্যবোধ না থাকলে স্বাধীন ও সুষ্ঠু জনমত গঠন করা সম্ভব নয়। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে জনগণের মধ্যে পারস্পরিক ও সুসম্পর্ক থাকা অপরিহার্য।
জনগণের মধ্যে অনৈক্য জাতিকে দ্বিধা বিভক্ত করে। তাই রাষ্ট্রের তথ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে ঐক্যবোধ সুষ্ঠু ও সফল জনমতের জন্য অপরিহার্য।
৫. সাক্ষ্য : সুষ্ঠু জনমত গঠনের জন্য সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। 'শ্রেণিবিভক্ত সমাজে জনমত গঠনের মাধ্যমগুলো মুষ্টিমেয় ধনিক শ্রেণির নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে।
ফলে ধনিকশ্রেণি সবসময় নিজেদের স্বার্থে একচেটিয়া মতামত গঠন করে থাকে। শ্রেণিবিভক্ত সমাজে সামা না থাকায় সুষ্ঠু ও প্রকৃত জ্ঞানমত কোনো দিনই গড়ে উঠে না।
৬. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা : স্বাধীন বিচারবিভাগ জনমত গঠনে অপরিহার্য। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
সাক্ষ্য, স্বাধীনতা ও অধিকার সংরক্ষণে স্বাধীন বিচারবিভাগ প্রয়োজন। নির্ভীক ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা জনমত প্রকাশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।
৭. সমঝোতা ও সহনশীলতা : সমঝোতা ও সহনশীলতা জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। সকল নাগরিকের মধ্যে সমঝোতা ও সহনশীলতা থাকতে হবে।
অপরের মতকে সহ্য করা এবং তা প্রকাশ করতে দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে, তা না হলে সুই জনমত গড়ে উঠবে না।
৮. গণতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা : গণতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা জনমত গঠনের জন্য অপরিহার্য। গণতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা জনগণের অভাব- অভিযোগ পূরণ করে।
জনগণের চিন্তা-চেতনার প্রসার ঘটায় অর্থনৈতিক স্বাধীনতা জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেয়।
৯. রাজনৈতিক সচেতনতা : রাজনৈতিক সচেতনতা জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। সুষ্ঠু জনমত গঠনের জন্য জনগণকে রাজনৈতিক দিক দিয়ে সজাগ ও সচেতন হতে হবে।
রাজনীতি সচেতন মানুষ সুষ্ঠু জনমত গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে ।
১০. সামাজিক নিয়ন্ত্রণ : জনমত গঠনের মাধ্যমগুলোর উপর সামাজিক নিয়ন্ত্রণ দরকার। পরিবার, সংবাদপত্র, বেকার, চলচ্চিত্রসহ প্রচার মাধ্যমগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ আবশ্যক, এগুলো নিয়ন্ত্রিত না হলে ভুল ও অসত্য তথ্য পরিবেশিত হতে পারে।
১১. সুশীল সমাজ : জনমত গঠনের জন্য সুশীল সমাজ অপরিহার্য। সার্থক জনমত গঠনের জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, প্রগতিশীল লেখকদের বক্তব্য ও মতামত পত্রপত্রিকা, পুস্তক, পুস্তিকা ও সভা-সমিতির মাধ্যমে জনগণের কাছে স্পষ্ট হয় উঠে। দক্ষ ও অভিজ্ঞ নেতাদের দূরদর্শী চিন্তা- চেতনা জনগণকে প্রভাবিত করে।
১২. তথ্যাদি সরবরাহের ব্যবস্থা : সুষ্ঠু জনমত গঠনে তথ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুষ্ঠু জনমত গঠনের জন্য প্রকৃত তথ্যাদি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকতে হবে। তথ্যাদি হতে হবে নিরপেক্ষ, সঠিক ও নির্ভুল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উল্লিখিত শর্তাবলি জনমত গঠনের জন্য অপরিহার্য। সুষ্ঠু জনমত গঠনে এসব শর্ত প্রভাব বিস্তার করে।
এগুলো সুষ্ঠু ও সফল জনমত গঠনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। সরকারের উৎকর্ষতা সুষ্ঠু জনমতের উপর নির্ভরশীল। আর সুষ্ঠু জনমত উল্লিখিত বিষয়গুলোর প্রেক্ষিতে গঠন করা সম্ভব।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ জনমত গঠনের শর্তাবলি আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম জনমত গঠনের শর্তাবলি আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের জনমত গঠনের শর্তাবলি আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।