গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর |
গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর
- অথবা, আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর ।
- অথবা, একটি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
- অথবা, আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনমতের গুরুত্ব প্রয়োজনীয়তা তুলে ধর।
উত্তর : ভূমিকা : বর্তমান গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনমত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীন ও সুনিশ্চিত জনমতে গণতন্ত্রকে সুন্দর ও শক্তিশালী করে। গণতান্ত্রিক সরকারের সাফল্য ও উৎকর্ষ জনমতের উপর নির্ভরশীল।
তাই সুষ্ঠু ও সবল জনমত গঠন করা আবশ্যক। জনগণই গণতন্ত্রের সাফল্যের মূলমন্ত্র, জনমত গঠনের মাধ্যমে জনমত নিশ্চিত করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে।
→ গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব : আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনমত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিম্নে গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা করা হলো :
১. স্বৈরশাসন রোধ : স্বৈরশাসন রোধে জনমতের গণতন্ত্রে গুরুত্ব অনস্বীকার্য। জনমতের অভাবে সরকার অন্যায় ও অবৈধ কাজ করতে দ্বিধাবোধ করে না।
নিজেদের ইচ্ছামতো দেশ পরিচালনা করে। এক্ষেত্রে জনমত শক্তিশালী ভূমিকা রাখে ৷ জনমত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় স্বৈরাচার রোধ করে।
২. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা : গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। জন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। গণতান্ত্রিক সরকার জনমত অনুসারে কাজ করতে পছন্দ করে। তাই সরকার জনমতকে প্রাধান্য দেয়। ফলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
৩. ব্যক্তিস্বাধীনতা সংরক্ষণ : ব্যক্তিস্বাধীনতা সংরক্ষণে জনমতের গুরুত্ব অনেক বেশি। জনমতের মাধ্যমে ব্যক্তি তার মতামত প্রকাশের সুযোগ পায়।
মতামত প্রকাশের ফলে ব্যক্তিত্ত্বের বিকাশ ঘটে। জনমত অনুসারে আইনসভায় অনেক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। জনমতের ভয়ে সরকার ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে না।
৪. সরকারের সাফল্য অর্জন: গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রতিটি সরকার সাফল্য অর্জনে সচেষ্ট থাকে। জনগণের অভিমত সরকারকে সাফল্য অর্জনে সহায়তা করে।
সরকার গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমতকে প্রাধান্য দেয়। তাই সরকারের সফলতা দানে জনমতের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
৫. বিরোধী মতামত প্রকাশ : গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় জনমত বিরোধীমত প্রকাশে সহায়তা করে। জনমতে পরস্পর বিরোধী মতামত প্রকাশের সুযোগ থাকে।
কোনো বিষয়ের সিদ্ধান্ত জনমতের সবটুকু পক্ষে যায় না বিপক্ষেও যেতে পারে। জনমতের ন্যায় অন্য কোনো উপায়ে পরস্পর বিরোধী মতামত এতো প্রকাশ পায় না।
৬. সরকারের গতিশীলতা : সরকারের গতিশীলতাদানে জনমতের প্রভাব রয়েছে। জনমত রক্ষণশীলতাকে উপেক্ষা করে। জনমত রক্ষণশীলতা দূর করে আধুনিক মতামতকে বেশি গুরুত্ব দেয়।
আধুনিক বিষয়গুলোকে সরকারের নিকট তুলে ধরে। 'গণতন্ত্রে প্রবল জনমতের চাপে সরকার তার শোষণ নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়।
৭. জনকল্যাণ জনমত : জনকল্যাণ সাধনে সহায়তা করে থাকে। জনমত সরকারকে সুষ্ঠু ও কল্যাণকর নীতি প্রণয়নে ভূমিকা রাখে।
বর্তমান রাষ্ট্রসমূহ কল্যাণমূলক রাষ্ট্র। জনমত গঠনে অবাধ স্বাধীনতা থাকা উচিত। অবাধ স্বাধীনতা থাকলে জনগণ কল্যাণমুখী কাজে সরকারকে উদ্বুদ্ধ করে থাকে।
৮. সরকার গঠন : জনমত সরকার গঠনে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নির্বাচন হলো জনমত গঠনের মাধ্যম। নির্বাচনের পূর্বে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থী মনোনীত করে।
জনগণ চিন্তা-ভাবনা করে প্রতিনিধি নির্বাচন করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়।
৯. দমননীতির অবসান : জনমতের মাধ্যমে সরকারের সমননীতি রহিত হয়। সরকার কখনও কখনও দমননীতি অনুসরণ করে। এক্ষেত্রে দলীয় প্রভাব বেশি পরিলক্ষিত হয়।
গণতন্ত্রে জনগণের মনোভাব ও মতামত প্রকাশের সুযোগ থাকে। তারা সরকারের পক্ষে ও বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করে। সরকার জনগণের ভয়ে দমননীতি পরিহার করে।
১০. আইন প্রণয়ন : জনমত আইন প্রণয়নে প্রভাবিত করে। জনগণের প্রতিনিধির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো আইন প্রণয়ন করা।
রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ কখনও কখনও আইনের ক্ষেত্রে জনমত সংগ্রহ করে। জনমতের মাধ্যমে সরকার জনগণের আশা- আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে পারে। এরই প্রেক্ষিতে সরকার আইন প্রণয়নেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।
১১. গণতন্ত্র সুসংহত : জনমত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে সুসংহত ও শক্তিশালী করে। প্রকৃতপক্ষে, গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের অনুগামী।
ঐ সরকার জনমতকে প্রাধান্য দেয় । কেননা জনমত সরকারের বিরুদ্ধে গেলে সরকারের পতন ঘটায়। তাই গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের অভিমতকে প্রাধান্য দেয়
১২. সরকারের স্থায়িত্ব : জনমতের সমর্থন ছাড়া সরকার দৃঢ় ও শক্তিশালী হতে পারে না। সরকার জানে যে, সরকারি সিদ্ধান্ত জনগণের বিরুদ্ধে গেলে সরকারের পতন ঘটতে পারে।
তখন সরকার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসাটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে সরকার জনগণের অভিমতকে প্রাধান্য দেয়। ফলে সরকারের কার্যকলাপে সফলতা আসে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জনমত গণতন্ত্রের একটি বিশেষ উপাদান। জনমতকে উপেক্ষা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সুসংহত করা যায় না।
জনমতের উপর গণতন্ত্রের সাফল্য নির্ভর করে। জনমত সরকারের সফলতা, ব্যর্থতা নিরূপণ করতে পারে । তাই জনমত গণতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের গণতন্ত্রে জনমতের গুরুত্ব আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।