কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন

কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ
কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ

কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ

  • অথবা, কুকুৰউদ্দিন আইবেকের পরিচয় পাও তার ভারত বিজয় সম্পর্কে আলোচনা কর। 
  • অথবা, কুতুবউদ্দিন আইবেক কে ছিলেন? তার ভারত জয় সম্পর্কে যা জান লিখ।

উত্তর : ভূমিকা : পৃথিবীতে যুগ যুগ ধরে এমন কিছু ব্যক্তিরা আবির্ভাব ঘটেছে, যারা তাদের মেধা ও যোগ্যতাবলে পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠত্বের আসন দখল করে নিয়েছেন। 

দিল্লি সালতানাতের প্রথম সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবেক তাদেরই একজন। সামান্য ক্রীতদাস হিসেবে জীবন শুরু করলেও পরবর্তীতে তিনি তার অসামান্য প্রতিষ্ঠা ও ব্যক্তিত্ব বলে মুহাম্মদ ঘুরীর আস্থাভাজন হন। 

মুহাম্মদ খুরীর ভারত উপমহাদেশে মুসলিম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার গৌরব অর্জনের পিছনে কুতুবউদ্দিন আইবেক অসামান্য অবদান রাখেন।

কুতুবউদ্দিন আইবেকের পরিচয় : কুতুবউদ্দিন আইবেক ছিলেন জাতিতে তুর্কি ও তুর্কিস্থানের অধিবাসী। শৈশবে নিশাপুরের কাজি ফখরুদ্দিন আব্দুল আজিজ ঝুঁকি তাকে জনা করেন। 

এ পরিবারেই তিনি সাহিত্য, ধর্মশাস্ত্র ও সামরিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে তিনি মুহাম্মদ ঘুরীর নিকট বিক্রীত হন এবং পুরী তাকে আস্তাবলের প্রধানপদে নিযুক্ত করেন। 

আইবেক অর্থ চন্দ্রদেবতা। ঐতিহাসিক হেগ বলেন, তিনি চন্দ্রগ্রহণকালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে পিতামাতা তাকে আইবেক বলে অভিহিত করেন।

— কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় : কুভূবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় ইসলামের ইতিহাসে একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে অভিহিত হয়ে আছে। নিম্নে কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. ভারত অভিযানে অংশগ্রহণ : মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত অভিযানের সময় কুতুবউদ্দিন আইবেক মুহাম্মদ ঘুরীকে সর্বাপেক্ষা বিশ্বস্ত সেনাপতিরূপে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেন । 

পুরস্কার স্বরূপ ১১৯২ সালে দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধের পর মুহাম্মদ ঘুরী ভারতের বিজিত অঞ্চলসমূহের দায়িত্বভার কুতুবউদ্দিনের ওপর অর্পণ করে গজনিতে ফিরে যান।

২. ঘুরীর প্রতিনিধি হিসেবে কুতুবউদ্দিনের কৃতিত্ব : ঘুরীর প্রতিনিধি ও শাসনকর্তা হিসেবে কুতুবউদ্দিন আইবেক তার প্রভুর বিজিত অঞ্চলগুলোতে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে সেখানে স্থায়ীভাবে মুসলিম প্রভুত্ব কায়েম করেন। 

অল্পকালের মধ্যেই তিনি হানসি, মিরাট, দিল্লি, গোয়ালিয়র রনথয়োর, কোল, বারানসি, কালিঞ্জর ও কনৌজ অধিকার করে সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি সাধন করেন।|

৩. ঘুরীর প্রতিনিধি হিসেবে : পূর্ব ভারতে রাজ্য বিস্তা মুহাম্মদ ঘুরীর প্রতিনিধি হিসেবে কুতুবউদ্দিন আইবেক যখন উত্তর ভারতের অধিকৃত অঞ্চলগুলো সংঘবদ্ধ করে মুসলিম শাসন কায়েমে আত্মনিয়োগ করেন তখন তারই সুযোগ্য সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি পূর্ব ভারতে সমরাভিযান করে বিহার ও বাংলা জয় করেন।

৪. নিল্লির সুলতান রূপে কুতুবউদ্দিন আইবেক : মুহাম্মদ, ঘুরীর মৃত্যুর পর তার ভ্রাতুষ্পুত্র ও গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন মুহাম্মদ কুতুউদ্দিন আইবেককে ফরমান দ্বারা দাসমুক্ত করেন এবং দিল্লির সুলতান উপাধিতে ভূষিত করেন। 

১২০৬ সালে কুতুবউদ্দিন আইবেক লাহোরে উপস্থিত হয়ে সিংহাসনে আরোহণ করেন। প্রথম জীবনে তিনি ক্রীতদাস ছিলেন। তাই ভারতে তার প্রতিষ্ঠিত রাজবংশ দাস বংশ নামে পরিচিত।

৫. বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপ : কুতুবউদ্দিন আইবেক স্বীয় ক্ষমতাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য মুহাম্মদ ঘুরীর বিশিষ্ট অনুচরবর্গের সাথে বৈবাহিক সম্পৰ্ক স্থাপন করেন। 

তিনি স্বীয় কন্যা ও বোনকে | যথাক্রমে বনাউনের শাসনকর্তা ইলভূমিশ এবং মুলতান ও উচের শাসনকর্তা নাসিরউদ্দিন কুবাচার সাথে বিবাহ দেন এবং তিনি নিজে | কিরমানের শাসনকর্তা তাজউদ্দিনের কন্যাকে বিয়ে করেন।

৬. তাজউদ্দিনের সাথে সংঘর্ষ : কুতুবউদ্দিনের সিংহাসন লাভে ঈর্ষান্বিত হয়ে গজনির কিরমান প্রদেশের শাসনকর্তা তাজউদ্দিন বিদ্রোহ ঘোষণা করে পাঞ্জাব দখলের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। | ১২০৮ সালে কুতুবউদ্দিন আইবেক তাকে পরাজিত করে সাময়িকভাবে গজনি দখল করেন।

৭. বিদ্রোহ দমন : ইতিপূর্বে পরাজিত চান্দেলা রাজপুত্রগণ কালিগুরে, গহরওয়াল, ফারুখবাদ ও বদাউনের কিয়দংশে এবং প্রতিহারগণ গোয়ালিয়রে মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে কুতুবউদ্দিন আইবেক তাদেরকে দমন করেন।

৮. খোৎবা পাঠ ও মুদ্রাঙ্কন : কুতুবউদ্দিন আইবেক বিরোধী শক্তিদের মূলোৎপাটন করার পর তিনি নিজ নামে খোত্ৰা পাঠ এবং মুদ্রাক্ষনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু মাত্র ৪ বছর রাজত্বের পর ১২১০ সালে চৌগান খেলার সময় অকস্মাৎ তার মৃত্যু ঘটে

উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, বিজেতা ও শাসক হিসেবে কুতুবউদ্দিন আইবেক ছিলেন। একটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী নাম। দিল্লির প্রথম স্বাধীন সুলতান হিসেবে তার কৃতিত্ব অসাধারণ।

 তাই ড. ঈশ্বরী প্রসাদ যথার্থই বলেন, আইবেক ছিলেন একজন শক্তিশালী এবং সুযোগ্য শাসক যিনি সবসময়ই উঁচু চরিত্র বজায় রাখতেন।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ । যদি তোমাদের আজকের কুতুবউদ্দিন আইবেকের ভারত বিজয় সম্পর্কে যা জান বিস্তারিত লিখ পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ