মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো
মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো

মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো

  • অথবা, মার্কিন কংগ্রেসের ভূমিকা আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আইনসভা হলো কংগ্রেস। আইন প্রণয়ন কংগ্রেসের প্রধান কাজ, কিন্তু একমাত্র কাজ নয়। মার্কিন সংবিধানের রচয়িতাগণ আইন প্রণয়নের গণ্ডির মধ্যেই কংগ্রেসের ' কার্যাবলিকে সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি। 

পারস্পরিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের নীতি অনুসারে আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতার বাইরেও কংগ্রেসের উপর কতকগুলো ক্ষমতা ন্যস্ত করা হয়েছে। 

বস্তুতপক্ষে মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলি বহু ও বিভিন্ন। মার্কিন শাসনতন্ত্রে উল্লিখিত ক্ষমতা ছাড়াও শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সুপ্রিমকোর্টের রায়ের মাধ্যমে ও কংগ্রেস বিভিন্ন ক্ষমতার অধিকারী হয়েছে।

→ মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলি : মার্কিন কংগ্রেস- কতিপয় কার্যাবলি ও ক্ষমতা ভোগ করে থাকে। এই ক্ষমতাসমূহকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (i) আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ও (ii) অন্যান্য ক্ষমতা।

নিম্নে কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলি আলোচনা করা হলো : 

১. আইন প্রণয়নের ক্ষমতা : কংগ্রেস হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আইনসভা। জাতীয় আইনসভা হিসেবে কংগ্রেসের মূল কাজ হলো আইন প্রণয়ন করা। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে মার্কিন কংগ্রেসের উভয়কক্ষের সম্মতি আবশ্যক। 

প্রতিনিধি সভা ও সিনেটের সম্মতি ছাড়া কোনো বিল আইনে পরিণত হতে পারে না। কোনো বিলের ব্যাপারে কংগ্রেসের দুটি কক্ষের মধ্যে যদি বিরোধ বাঁধে, তাহলে উভয়কক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কনফারেন্স কমিটিতে তার নিষ্পত্তি হয়।

২. হস্তান্তরিত ক্ষমতা ও যুগ্ম ক্ষমতা : সংবিধান অনুসারে কিছু ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে হস্তান্তরিত করা হয়েছে এবং এই ক্ষমতাগুলোকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই ক্ষমতাগুলো হস্তান্তরিত বা অর্পিত ক্ষমতা হিসেবে পরিচিত। 

এই সমস্ত ক্ষমতা এককভাবে কংগ্রোসের আইন প্রণয়নের ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু কতকগুলো বিষয় আছে যে সকল ক্ষেত্রে কংগ্রেসে আইন প্রণয়ন না করলে অঙ্গরাজ্যগুলোর আইনসভা আইন প্রণয়ন করতে পারে। 

অর্থাৎ এই সমস্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর ন্যস্ত করা হলেও অঙ্গরাজ্যের আইনসভাও এসব বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে পারে। এগুলো যুগ্ম ক্ষমতা হিসেবে পরিচিত।

৩. অনুমিত ক্ষমতা ও অন্তর্নিহিত ক্ষমতা : মার্কিন কংগ্রেস শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি ও বিচারের রায়ের মাধ্যমেও অনন্য ক্ষমতার অধিকারী হয়েছে। তার মধ্যে অনুমিত ক্ষমতা এবং অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। 

বিশেষ জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতাকে অনুমিত ক্ষমতা বলে। এই ক্ষমতা দেশের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনে প্রয়োগ করা হয়। কংগ্রেস অনুমিত ক্ষমতাবলে যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন প্রণয়ন করতে পারে।

৪. শাসন বিভাগীয় কার্যাবলি : মার্কিন কংগ্রেসের শাসন বিভাগীয় ক্ষমতাও আছে। পদস্থ সরকারি কর্মচারী নিয়োগ ও বৈদেশিক নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত সিনেটের সম্মতি সাপেক্ষ। এই ক্ষমতা কেবল সিনেটেরই আছে। এ বিষয়ে প্রতিনিধি সভার কোনো এখতিয়ার নেই।

৫. নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষমতা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদসমূহে যে নিয়োগ করেন তা সিনেট কর্তৃক অনুমোদিত হওয়া আবশ্যক। 

সামরিক বিভাগ এবং জাতীয় সরকারের অধীনস্থ কম গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে নিয়োগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো আলোচনা ছাড়াই সিনেট সকল নিয়োগ এক সঙ্গে অনুমোদন করে থাকে। কিন্তু অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সিনেটে বিশেষভাবে আলোচনা করে থাকে।

৬. পররাষ্ট্রনীতি ও যুদ্ধবিষয়ক ক্ষমতা : মার্কিন কংগ্রেস দেশের পররাষ্ট্রনীতিকে প্রভাবিত করে থাকে। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বাক্ষরিত সন্ধি চুক্তি সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য কর্তৃক অনুমোদিত হওয়া দরকার। 

তা না হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তা মানতে বাধ্য নয়। সিনেট এ পর্যন্ত ১১টি চুক্তি অনুমোদন করেনি। তা ছাড়া শাসনতন্ত্র অনুসারে কংগ্রেস যুদ্ধ ঘোষণা এবং প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারে। 

মার্কিন সংবিধানের ১(৮) ধারা অনুসারে সামরিক বাহিনী গঠন ও নিয়ন্ত্রণ যুদ্ধঘোষণা অভ্যুত্থান দমন, আক্রমণ প্রতিরোধ প্রভৃতি বিষয়ে ক্ষমতা কংগ্রেসকে দেওয়া হয়েছে।

৭. সংবিধান সংক্রান্ত কার্যাবলি : মার্কিন শাসন তন্ত্রের ৫ ধারায় সংবিধানের সংশোধন নিয়মাবলি উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সিনেটের ভূমিকাই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দু'ভাবে আনা হয় : 

(১) কংগ্রেসের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থনের ভিত্তিতে প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে ও 

(২) অঙ্গরাজ্যগুলোর দুই- তৃতীয়াংশের অনুরোধে কংগ্রেস কর্তৃক আহুত জাতীয় সম্মেলনে প্রস্তাবসমূহ কংগ্রেসই আনয়ন করে।

৮. নির্বাচনমূলক কার্যাবলি : রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় ভোট গণনাকালে কংগ্রেসের অধিবেশন আহ্বান করা হয়। 

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে কেউ প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করতে না পারলে সর্বাধিক ভোট তিন জন প্রার্থীর মধ্যে থেকে প্রতিনিধি সভা একজনকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত করে। 

আবার, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কোনো প্রার্থী এককভাবে উপযুক্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে অধিক ভোটপ্রাপ্ত প্রথম দুজন প্রার্থীর মধ্যে থেকে সিনেট একজনকে উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত করে।

৯. তদন্তমূলক কার্যাবলি : মার্কিন শাসনতন্ত্রে কংগ্রেসের তদন্তমূলক কার্যকলাপের ক্ষমতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোনো উল্লেখ নেই। কিন্তু মার্কিন সুপ্রিমকোর্টের মতানুসারে তদন্তের কালো কংগ্রেসের আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতার সহযোগী। 

একে কংগ্রেসের অনুমিত ক্ষমতা বলা হয়। প্রণীত আইনের প্রয়োগ বিষয়ে তদন্ত করার সঙ্গে এই ক্ষমতা জড়িত। কংগ্রেসের উচ্চাবদ্ধ তদন্তমূলক কাজের জন্য বিভিন্ন কমিটি গঠন করে।

১০. প্রতিনিধিত্বমূলক কার্যাবলি : কংগ্রেসের সদস্যদের নিজ নিজ নির্বাচন ক্ষেত্রে ও নির্বাচকমণ্ডলীর স্বার্থের দিকে নজর রাখতে হয়। পরবর্তী নির্বাচনে সাফল্যকে নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচনি এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় সদস্যরা সচেষ্ট থাকেন। 

সদস্যরা নিজ নির্বাচনি এলাকার বিভিন্ন স্বার্থকে ঐক্যবদ্ধ করেন, নির্বাচকমণ্ডলীর সুযোগ-সুবিধার সুপারিশ করেন।

১১. অর্থ ও বাণিজ্য সংক্রান্ত কার্যাবলি : মার্কিন কংগ্রেসই হলো কর ধার্য ও অর্থ মঞ্জুর করার বার্তা। রাষ্ট্রপতি কংগ্রেসে অর্থমঞ্চুরির প্রস্তাব পেশ করেন। এই প্রস্তাবের উপর সমালোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে কংগ্রেসে মার্কিন শাসনব্যবস্থায় উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার সুযোগ পায়। 

কংগ্রেস অর্থ বরাদ্দ হ্রাস করতে অসম্মতি জানাতে পারে। তা ছাড়া কংগ্রেস মুদ্রা প্রচলন, পেটেন্ট ও কপিরাইট, পোস্ট অফিস ও রাস্তা-ঘাট নর্মাণ প্রভৃতি বিষয়েও অন্যান্য ক্ষমতার অধিকারী।

১২. তথ্য সরবরাহমূলক কার্যাবলি : মার্কিন কংগ্রেস সরকারি নীতি, কার্যকলাপ ও রাজনীতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদির একটি উল্লেখযোগ্য উৎস হিসেবে গণ্য হয়। জাতীয় নীতির আলোচনার নীতিনির্ধারণ কংগ্রেসেই সম্পাদিত হয়। 

এ বিষয়ে যাবতীয় সংবাদ কংগ্রেস সরবরাহ করে এবং দেশবাসীকে ওয়াকিবহাল করে তোলে। এদিক থেকে কংগ্রেসের শিক্ষামূলক ভূমিকাকেও অস্বীকার করা যায় না।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন কংগ্রেস পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী আইনসভা। কেননা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান বিশ্বের Super power। তার এ Super power এর সমস্ত কার্যাবলি নীতিনির্ধারণ সর্বদা মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক হয়ে থাকে। 

মার্কিন কংগ্রেসের সিনেট ও প্রতিনিধি এ সকল নীতিমালা প্রণয়ন করে ও কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে মার্কিন কংগ্রেস অধিক শক্তিশালী হয়ে উঠে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন কংগ্রেসের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে আলোচনা করো পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ