মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর
মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর

মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর

  • অথবা, মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমলসভার মধ্যে বৈসাদৃশ্যগত সম্পর্ক আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ কর্মসসভার মধ্যে তুলনমূলক আলোচনা গণতান্ত্রিক ধ্যানধারণার পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়।

কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেন হলো বিশ্বের দুটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। প্রতিনিধিলতা ও কমপসভার মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য বর্তমান। তবে উভয়ের মধ্যে কিছু আপাতসাদৃশ্যও রয়েছে।

মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেনে কমললতার মধ্যে বৈসাদৃশ্যগত সম্পর্ক : মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন সতর মধ্যে কিছু সাদৃশ্য থাকলেও বৈসাদৃশ্যের সংখ্যাই বেশি। নিচে মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে বৈসাদৃশ্যগত সম্পর্ক আলোচনা করা হলো।

১. উৎপত্তির ক্ষেত্রে পার্থক্য : মার্কিন প্রতিনিধি সভা এবং ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে উৎপত্তিগত পার্থক্য বর্তমান। গ্রেট ব্রিটেনের কমলসভার উদ্ভব কোনো শাসনতান্ত্রিক আইনের মধ্যে নিহিত নেই।

মোট ব্রিটেনের প্রচলিত প্রথা, রীতিনীতি ঐতিহ্য এবং কতকাংশে বিধিবদ্ধ আইনের মাধ্যমে কমন্সসতার উদ্ভব হয়েছে। পক্ষান্তরে, প্রতিনিধিসভা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিনিধিসভার ক্ষমতা ও কার্যাবলি মার্কিন সংবিধানেই বিস্তারিতভাবে উল্লিখিত আছে।

২. কার্যকালগত পার্থক্য : প্রতিনিধি সভা এবং কমন্সসভার মধ্যে | কার্যকালগত পার্থক্যও আছে। ব্রিটেনের কমপাতার মনসাদের | কার্যকাল পাঁচ বছর। 

তবে রাজা বা রানি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ, অনুসারে পাঁচ বছরের নির্দিষ্ট কার্যকাল অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই কমপসভাকে ভেঙে নিতে পারেন।

 অপরদিকে প্রতিনিধি সভার কার্যকাল দু'বছর। কিন্তু এই দু'বছরের কার্যকাল অতিক্রান্ত হওয়ার | আগে প্রতিনিধি সভাকে ভেঙে দেওয়া যায় না।

৩. আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে : ক্ষমতার পার্থক্য ব্রিটেনে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ লর্ড সভার তুলনায় নিম্নকক্ষ কমন্সসতার ক্ষমতা অনেক বেশি। ব্রিটেনে যেকোনো সাধারণ বিল যেকোনো কক্ষে উত্থাপিত হতে পারে এবং উভয়কক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোনো বিল পাস হয় না। 

কিন্তু সাধারণ বিল পাসের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত বিচারে কমন্সসভার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা আলাদা। 

সেখানে সাধারণ বিল পাসের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভা সমক্ষমতাসম্পন্ন, বরং প্রতিনিধি সভার তুলনায় সিনেটই অধিক ক্ষমতা সম্পন্ন।

৪. আর্থিক ক্ষেত্রে ক্ষমতার পার্থক্য : ব্রিটেনে কমন্সসভার আর্থিক ক্ষেত্রে সবসময় ক্ষমতার অধিকারী। কমন্সসভাই ব্রিটেনে সরকারি আয়ব্যয়কে নিয়ন্ত্রণ করে। একমাত্র কমপসভায় অর্থ বিল এবং বাজেট উত্থাপন করা যায়। 

লর্ডসভা কমপসভায় অনুমোদিত কোনো অর্থ বিলকে সংশোধন বা প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। মার্কিন প্রতিনিধি সভা কিন্তু আর্থিক ক্ষেত্রে এমন ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী নয়। 

তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও অর্থ বিল ও বাজেট সংবিধান অনুসারে প্রথমে প্রতিনিধি সভায় পেশ করতে হয় কিন্তু প্রতিনিধি সভার অর্থ বিল ও বাজেট অনুমোদিত হওয়ার পরও সিনেট তা সংশোধন করতে পারে।

৫. স্পিকারের ভূমিকাগত পার্থক্য : ব্রিটেনে কমপসভার স্পিকারের ভূমিকা দল নিরপেক্ষ স্পিকারের পদে আসীন হওয়ার পর তিনি আর দলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেন না। 

সভার কাজ কর্ম পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনি সম্পূর্ণ দল নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করেন। কিন্তু মার্কিন প্রতিনিধি সভার স্পিকারের ক্ষেত্রে একদা খাটে না। 

তবে ভূমিকা দল নিরপেক্ষ নয়। দলের একজন প্রথমসারির নেতা হিসেবে তিনি প্রতিনিধি সভার স্পিকার নির্বাচিত হন এবং নির্বাচিত হওয়ার পরও তিনি দলের নেতৃত্বে বহাল থাকেন।

৬. কমিটি ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পার্থক্য : প্রতিনিধি সভা এবং কমলসতা উভয় ক্ষেত্রেই কার্য পরিচালনার ব্যাপারে বিভিন্ন কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। কিন্তু প্রতিনিধি সভার কমিটিগুলোর সংখ্যা ও গুরুত্ব অধিক। 

মার্কিন ব্যবস্থায় আইন প্রণয়নের দায়িত্ব কমিটিগুলোর উপরই ন্যস্ত আছে। কমিটিগুলোই বিল উত্থাপন করে। 

কমলগভার কমিটিগুলো কোনো বিল উত্থাপনের ব্যাপারে প্রত্যক্ষ কোনো ক্ষমতা ভোগ করে না। কেবিনেট সদস্যরাই অধিকাংশ বিল উত্থাপন করেন এবং তাদের নেতৃত্বেই আইন প্রণীত হয়।

৭. বিলের ব্যাপারে পার্থক্য : গ্রেট ব্রিটেনে কমলসভা যে সমস্ত রিল বিচার বিবেচনার জন্য কমিটির কাছে পেশ করে। কমিটি বিচার বিবেচনার পর তা কমপসভায় ফেরৎ পাঠায়। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ সব ক্ষেত্রে সকল বিল প্রতিনিধি সভায় প্রেরিত হয়। প্রেরিত বিলগুলোর মধ্যে কমিটিগুলো সাধারণত প্রায় এক পঞ্চমাংশ বিল সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করে এবং কমিটি ফাইলের মধ্যে অবশিষ্ট বিলগুলোর উপর যবনিকা পড়ে।

৮. রাজনৈতিক মর্যাদার পার্থক্য : ব্রিটেনের কমন্সসভা হলো একটি বৃহদায়তন বিশিষ্ট জনপ্রিয় কক্ষ। ব্রিটেনে কমন্সসভার সদস্যপদ রাজনৈতিক বিচারে গুরুত্বপূর্ণ এবং তরুণ ও উচ্চাভিলাধী রাজনীতিবিদদের কাছে আকাঙ্ক্ষিত। 

মার্কিন প্রতিনিধিসভা হলো একটি বহু সদস্য বিশিষ্ট জনপ্রিয় কক্ষ কিন্তু মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রতিনিধি সভার সদস্য পদের তুলনায় সিনেটের সদস্যপদ অধিকতর রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ | এবং রাজনীতিবিদদের কাছে বিশেষভাবে অভিপ্রেত।

৯. মন্ত্রিসভা গঠন ও নিয়ন্ত্রণগত পার্থক্য : ব্রিটেনে শাসন বিভাগের গঠন ও নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে কমপসভার হাতে ব্যাপক সক্ষমতা বর্তমান। কমন্সসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতৃস্থানীয় মার্কিনিদের নিয়ে মন্ত্রিসভা বা সরকার গঠিত হয়। 

কমন্সসভা যদি মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস করে -তাহলে মন্ত্রিসভা পদচ্যুত হয়। অপরপক্ষে, মার্কিন রাষ্ট্রপতির কেবিনেটের সদস্যরা কংগ্রেসের কোনো কক্ষের সদস্য নয়। 

প্রতিনিধি সভার কাছে তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। প্রতিনিধি সভা মার্কিন কেবিনেটের সদস্যদের নিযুক্ত করতে, নিয়ন্ত্রণ করতে বা অপসারণ করতে পারে না।

১০. অপসারণ সম্পর্কিত ক্ষমতা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি ও অন্যান্য পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অপসারণ সম্পর্কিত প্রস্তাব প্রথমে প্রতিনিধি সভায় পেশ করতে হয়। 

সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব প্রতিনিধি সভায় অনুমোদিত হওয়ার পর সিনেটের কাছে পাঠাতে হয়। সিনেট অভিযোগ সম্পর্কিত প্রস্তাব বিচার করে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ব্রিটেনে বিচারপতিদের বিরুদ্ধে কমন্সসভার অভিযোগ সম্পর্কিত প্রস্তাব উত্থাপন করা যায়। 

সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য লর্ডসভার কাছে পাঠানো হয়। তবে লর্ডসভা অনুমোদন না করলেও বিচারপতিদের পদচ্যুতি সংক্রান্ত সেই প্রস্তাব কমন্সসভার রাজা বা রানির কাছে পাঠিয়ে দিতে পারে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন প্রতিনিধি সভার তুলনায় ব্রিটেনের কমন্সসভার অধিক অনুকূল অবস্থায় অবস্থিত।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন প্রতিনিধি সভা ও ব্রিটেন কমন্সসভার মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ