মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর
- অথবা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা ও গুরুত্ব বর্ণনা কর।
- অথবা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা মূল্যায়ন কর।
- অথবা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকার বিস্তারিত বিবরণ দাও।
উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি হলেন বিশ্বের নেতা। আর মার্কিন শাসনব্যবস্থায় মার্কিন রাষ্ট্রপতি হলো শাসন ক্ষমতার মধ্যমণি। তার মতো ক্ষমতাশালী নির্বাহী বিভাগ আর বিশ্বে কোথাও নেই।
তিনি একাধারে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান হিসেবে ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। সরকার প্রধান হিসেবে সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক। বৈদেশিক নীতির পরিচালক, প্রশাসনিক ক্ষমতা ও কার্যের ধারক ও বাহক।
→ মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থার রাষ্ট্রপতির ভূমিকা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি একাধারে সরকার প্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসন বা রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। নিম্নে মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা করা হলো :
(ক) শাসন সংক্রান্ত ক্ষমতা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি মার্কিন শাসনব্যবস্থায় একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। তার শাসনসংক্রান্ত ক্ষমতাকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :
১. প্রধান প্রশাসক হিসেবে : মার্কিন রাষ্ট্রপতি প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। মার্কিন রাষ্ট্রপতি যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনতন্ত্র, কংগ্রেস প্রণীত আইন যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের রায়, অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পাদিত করে থাকেন।
২. নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষমতা : মার্কিন রাষ্ট্রপতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ। মার্কিন রাষ্ট্রপতি সিনেটের পরামর্শে রাষ্ট্রদূত, অন্যান্য মন্ত্রী, বাণিজ্যদূত, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি ও যুক্তরাষ্ট্রীয় সমস্ত কর্মচারীর নাম প্রস্তাব করতে এবং তাদের নিয়োগ দিতে পারেন। রাষ্ট্রপতি অনেক সময় তার ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
৩. যুদ্ধকালীন বিশেষ ক্ষমতা : যুদ্ধাকালীন অবস্থায় সৈন্যবাহিনী ও নৌবাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতির গুরুত্ব বেড়ে যায়। যুদ্ধকালীন অবস্থায় সৈন্য সংখ্যা, সৈন্য প্রেরণ, যুক্তপ্রণালি অস্ত্রশস্ত্র প্রয়োগ এবং যুদ্ধের ব্যবহারিক যাবতীয় কলাকৌশলের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি একক ক্ষমতার অধিকারী।
৪. বৈদেশিক ক্ষমতা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি হলেন পররাষ্ট্র বিষয়ক জাতির একমাত্র প্রতিভূ এবং বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর কাছে জাতির একমাত্র প্রতিনিধি। সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রদূত ও বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদের নিয়োগ করেন। অন্য দেশের রাষ্ট্রদূতদের গ্রহণ করেন এবং বৈদেশিক চুক্তি সম্পাসন করেন।
(খ) আইনবিষয়ক ক্ষমতা : ইংল্যান্ডের রানির মতো মার্কিন রাষ্ট্রপতি আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করতে, স্থগিত রাখতে বা আইনসভার নিম্নকক্ষকে ভেঙে দিতে পারেন। এছাড়া আরও যেসব ক্ষমতা রয়েছে তা নিম্নে বর্ণিত হলো ।
১. রাষ্ট্রপতির আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতা বলে কতিপয় আইন প্রণয়ন করে থাকেন। আইন প্রণয়নে মার্কিন রাষ্ট্রপতি কংগ্রেসে বাণী প্রেরণ করে থাকেন। বিশেষ অধিবেশনে আহ্বান করে থাকেন, আবার রাষ্ট্রপতির সম্মতি ছাড়া কোনো বিল আইনে পরিণত হয় না।
২. ভেটো প্রয়োগের ক্ষমতা : রাষ্ট্রপতি যেকোনো বিল অনুমোদনে অস্বীকার করতে পারেন। ১০ দিনের মধ্যে বিলটি ফেরত পাঠাতে পারেন। আবার সম্মতি আপন না করে বিলটি আটকে রাখতে পারেন। তার মধ্যে কংগ্রেস অধিবেশন শেষ হলে বিলটি বাতিল হয়ে যাবে। এটাকে Pocket veto বলে।
৩. অর্থসংক্রান্ত বিল : রাষ্ট্রপতিকে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব কংগ্রেসের কাছে পেশ করতে হয়। তিনি পরিপূরক ব্যয় বরাদ্দের দাবিও পেশ করতে পারেন। বাজেট ও হিসাবরক্ষণ আইন বলে তিনি সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের দাবি কংগ্রেসের কাছে জানাতে পারেন।
(গ) বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা : রাষ্ট্র প্রধান ও শাসন বিভাগের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিজের ইচ্ছায় বিচার বিষয়ক ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। তিনি সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের নিযুক্ত করেন।
তিনি তাদের পদচ্যুত করতে পারেন না। মার্কিন সংবিধানের ২ (২) ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা ভোগ করেন। রাষ্ট্রপতি অপরাধীর দণ্ডাদেশ স্থগিত রাখতে পারেন, হ্রাস করতে পারেন আবার ক্ষমা প্রদর্শন ও করতে পারেন।
১. দলীয় নেতা হিসেবে ভূমিকা : দলীয় নেতৃত্বের লাগামটি রাষ্ট্রপতির হাতেই ন্যস্ত থাকে। এই সুবাদে তিনি দল ও তার দলের মাধ্যমে কংগ্লোসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
যদি সিনেট ও প্রতিনিধি সভা কংগ্রেসের উভয় কক্ষে তার দলের প্রাধান্য থাকে তাহলে কংগ্রেসকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির অসুবিধা হয় না।
২. বিশ্বনেতা হিসেবে ভূমিকা : বিশ্ব রাজনীতির বৃহত্তর আন্তর্জাতিক পটভূমিতে অন্যতম বিশ্বনেতা হিসেবে মার্কিন রাষ্ট্রপতির ভূমিকা সুপ্রতিষ্ঠিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে তিনি মার্কিন নীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগ করে।
এক্ষেত্রে তার উদ্যোগ আয়োজন মার্কিন ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে আবদ্ধ থাকে না। মার্কিন নীতির প্রভাব প্রতিক্রিয়া বিশ্ব রাজনীতি তথা বিশ্বের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার গুরুত্ব ও ব্যাপকতা বিরোধ ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে। তার সব থেকে বড় পরিচয় হলো তিনি জাতির নেতা, জনসাধারণের মুখপাত্র।
ক্লিনটন রমিটার এর মতানুসারে ব্রিটেনের রানি যেমন- ব্রিটিশ জনগণের একক প্রতিরূপ, রাষ্ট্রপতি হলেন তেমনি মার্কিন জনতার একক প্রতিরূপ এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি হলেন মার্কিন মুলুকের নৈতিক মুখপাত্র। রমিটার আরও বলেন, “মার্কিন মানুষের ঘোষক বাক্য হলেন রাষ্ট্রপতি।”
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।