মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর
মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর

মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর

  • অথবা, মার্কিন রাষ্ট্রপতির ভূমিকা আলোচনা কর। 
  • অথবা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ও কার্যবলির বিবরণ দাও।
  • অথবা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও নেতৃত্বের উপাদান আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি অন্যান্য সাধারণ সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী। তিনি মার্কিন শাসন বিভাগের প্রধান বা আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধান, আবার 'শাসন বিভাগের প্রকৃত কর্ণধার। তিনি ইংল্যান্ডের রাজার মতো রাজত্ব করেন ও প্রধানমন্ত্রীর মতো শাসন করেন।

অধ্যাপক C.F Strong এ প্রসঙ্গে বলেন, “পৃথিবীর অন্য কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মার্কিন রাষ্ট্রপতির ন্যায় ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্রপ্রধান দেখা যায় । "

- রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার উৎস : মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার উৎসগুলোকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা যায়। যথা- 

১. সংবিধান

২. কংগ্রেসের আই

৩. সংবিধান সম্পর্কে সুপ্রিমকোর্টের ব্যবস্থা:

৪. শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি ও

৫. বিভিন্ন রাষ্ট্রপতির ভূমিকা।

মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলি : মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাগুলোকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 

(ক) শাসন বিভাগীয় ক্ষমতা:

(খ) আইন বিভাগীয় ক্ষমতা ও

(গ) বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা ।

(ক) শাসন বিভাগীয় ক্ষমতা : মার্কিন সংবিধানের ২(১) নং ধারায় বলা আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসন সংক্রান্ত সকল ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত আছে। 

নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো :

১. আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ক্ষমতা : আইন প্রণয়নের মুখ্য দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির। প্রশাসনিক কাঠামোর বিন্যাস, শাসন বিভাগীয় নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রশাসনিক আদেশ জারি প্রভৃতি দায়িত্ব রাষ্ট্রপতিকে পালন করতে হয়। 

যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান, কংগ্রেস প্রণীত আইনসমূহ, আন্তর্জাতিক সন্ধি ও চুক্তি প্রয়োগ এবং কার্যকর করা রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব।

২. নিয়োগ সংক্রান্ত ক্ষমতা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুসারে সিনেটের অনুমোদন সাপেক্ষ যুক্তরাষ্ট্রীয় আদালতের বিচারক, কূটনৈতিক দূত, কেবিনেটের সদস্য, বাণিজ্যিক প্রতিনিধি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীদের নিযুক্ত করেন। নিম্নপদস্থ কর্মচারী নিয়োগে রাষ্ট্রপতির সিনেটের অনুমতি লাগে না।

৩. সামরিক ক্ষমতা : রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দেশের সৈন্যবাহিনীর সর্বাধিনায়ক। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির আছে। 

রাষ্ট্রপতি সিনেটের অনুমোদন সাপেক্ষে সৈন্যবাহিনী ও নৌবাহিনীর অফিসারদের নিয়োগ করতে পারেন। প্রয়োজনবোধে আবার অপসারণও করতে পারেন।

৪. যুদ্ধকালীন বিশেষ ক্ষমতা : যুদ্ধাকালীন অবস্থায় সৈন্যবাহিনী ও নৌবাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতির গুরুত্ব বেড়ে যায়। যুদ্ধকালীন অবস্থায় সৈন্য সংখ্যা, সৈন্য প্রেরণ, যুক্তপ্রণালি অস্ত্রশস্ত্র প্রয়োগ এবং যুদ্ধের ব্যবহারিক যাবতীয় কলাকৌশলের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি একক ক্ষমতার অধিকারী।

৫. বৈদেশিক ক্ষমতা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি হলেন পররাষ্ট্র বিষয়ক জাতির একমাত্র প্রতিভূ এবং বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর কাছে জাতির একমাত্র প্রতিনিধি। সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রদূত ও বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদের নিয়োগ করেন। অন্য দেশের রাষ্ট্রদূতদের গ্রহণ করেন এবং বৈদেশিক চুক্তি সম্পাসন করেন।

(খ) আইনবিষয়ক ক্ষমতা : ইংল্যান্ডের রানির মতো মার্কিন রাষ্ট্রপতি আইনসভার অধিবেশন আহ্বান করতে, স্থগিত রাখতে বা আইনসভার নিম্নকক্ষকে ভেঙে দিতে পারেন। এছাড়া আরও যেসব ক্ষমতা রয়েছে তা নিম্নে বর্ণিত হলো ।

১. রাষ্ট্রপতির আইন সংক্রান্ত ক্ষমতা : মার্কিন রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতা বলে কতিপয় আইন প্রণয়ন করে থাকেন। আইন প্রণয়নে মার্কিন রাষ্ট্রপতি কংগ্রেসে বাণী প্রেরণ করে থাকেন। বিশেষ অধিবেশনে আহ্বান করে থাকেন, আবার রাষ্ট্রপতির সম্মতি ছাড়া কোনো বিল আইনে পরিণত হয় না।

২. ভেটো প্রয়োগের ক্ষমতা : রাষ্ট্রপতি যেকোনো বিল অনুমোদনে অস্বীকার করতে পারেন। ১০ দিনের মধ্যে বিলটি ফেরত পাঠাতে পারেন। 

আবার সম্মতি আপন না করে বিলটি আটকে রাখতে পারেন। তার মধ্যে কংগ্রেস অধিবেশন শেষ হলে বিলটি বাতিল হয়ে যাবে। এটাকে Pocket veto বলে।

৩. অর্থসংক্রান্ত বিল : রাষ্ট্রপতিকে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব কংগ্রেসের কাছে পেশ করতে হয়। তিনি পরিপূরক ব্যয় বরাদ্দের দাবিও পেশ করতে পারেন। বাজেট ও হিসাবরক্ষণ আইন বলে তিনি সরকারি ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের দাবি কংগ্রেসের কাছে জানাতে পারেন।

(গ) বিচার বিভাগীয় ক্ষমতা : রাষ্ট্র প্রধান ও শাসন বিভাগের প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি নিজের ইচ্ছায় বিচার বিষয়ক ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। তিনি সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের নিযুক্ত করেন। তিনি তাদের পদচ্যুত করতে পারেন না। 

মার্কিন সংবিধানের ২ (২) ধারা অনুসারে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা ভোগ করেন। রাষ্ট্রপতি অপরাধীর দণ্ডাদেশ স্থগিত রাখতে পারেন, হ্রাস করতে পারেন আবার ক্ষমা প্রদর্শন ও করতে পারেন।

১. দলীয় নেতা হিসেবে ভূমিকা : দলীয় নেতৃত্বের লাগামটি রাষ্ট্রপতির হাতেই ন্যস্ত থাকে। এই সুবাদে তিনি দল ও তার দলের মাধ্যমে কংগ্লোসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। 

যদি সিনেট ও প্রতিনিধি সভা কংগ্রেসের উভয় কক্ষে তার দলের প্রাধান্য থাকে তাহলে কংগ্রেসকে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির অসুবিধা হয় না।

২. বিশ্বনেতা হিসেবে ভূমিকা : বিশ্ব রাজনীতির বৃহত্তর আন্তর্জাতিক পটভূমিতে অন্যতম বিশ্বনেতা হিসেবে মার্কিন রাষ্ট্রপতির ভূমিকা সুপ্রতিষ্ঠিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে তিনি মার্কিন নীতি প্রণয়ন ও প্রয়োগ করে। 

এক্ষেত্রে তার উদ্যোগ আয়োজন মার্কিন ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে আবদ্ধ থাকে না। মার্কিন নীতির প্রভাব প্রতিক্রিয়া বিশ্ব রাজনীতি তথা বিশ্বের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার গুরুত্ব ও ব্যাপকতা বিরোধ ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে। তার সব থেকে বড় পরিচয় হলো তিনি জাতির নেতা, জনসাধারণের মুখপাত্র। 

ক্লিনটন রমিটার এর মতানুসারে ব্রিটেনের রানি যেমন- ব্রিটিশ জনগণের একক প্রতিরূপ, রাষ্ট্রপতি হলেন তেমনি মার্কিন জনতার একক প্রতিরূপ এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি হলেন মার্কিন মুলুকের নৈতিক মুখপাত্র। রমিটার আরও বলেন, “মার্কিন মানুষের ঘোষক বাক্য হলেন রাষ্ট্রপতি।”

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও কার্যাবলী আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ