মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও

  • অথবা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ আলোচনা কর।
  • অথবা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে বর্ণনা কর।
  • অথবা, আমেরিকা সংবিধানের উৎপত্তি ও বিকাশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা কর।

উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বিশ্বের সবচেয়ে প্রচীনতম সংবিধান। তবে মার্কিন সংবিধান একদিনে গড়ে ওঠেনি। কালক্রমে বা সময়ের পরিক্রমায় আস্তে আস্তে মার্কিন সংবিধান গড়ে ওঠেছে। 

তবে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে মার্কিন সংবিধান কয়েকবার সংশোধন করা হয়েছে। দিনে দিনে মার্কিন সংবিধানের ক্রমবিকাশের মধ্য দিয়ে বিকাশিত হয়েছে। এ সংবিধান পরিবর্তন ও সম্প্রসারণের স্রোতধারায় আবর্তিত।

- মার্কিন শাসনতন্ত্রের উদ্ভব : জর্জ ওয়াশিংটনের নেতৃত্বে ১৭৮৭ সালে ফিলাডেলফিয়া একটি সম্মেলন আহ্বান করা হয়। ফিলাডেলফিয়া সম্মেলনে আমেরিকার একটি যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

এ সম্মেলনে ১৭৮৭ সালে বিভিন্ন রাষ্ট্রা প্রতিনিধি হিসেবে ৭৪ জনকে নির্বাচিত করে। কেবল Road Irland যোগদান করেনি। কিন্তু সম্মেলনে যোগদানের জন্য এসেছিল ৫৫ জন। চূড়ান্ত সংবিধানে ৩৯ জন প্রতিনিধি ছিল।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের মধ্যে সংবিধান রচনার ব্যাপারে উৎসাহ উদ্দীপনার অভাব ছিল এবং ব্যাপক মত পার্থক্য ছিল। ফিলাডেলফিয়া সম্মেলনে যে সংবিধান গ্রহণ করা হয় সেটাই হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল সংবিধান ।

সংবিধান বলবৎ করার জন্য অঙ্গরাজ্যগুলোর সমর্থন দরকার ছিল। শেষ পর্যন্ত ১৩টি অঙ্গরাজ্যই সম্মতি জ্ঞাপন করে। ১৩টি সদস্য রাষ্ট্রের দ্বারা অনুমোদিত হওয়ার পর ১৭৮৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সংবিধান কার্যকরী হয়। 

১৩টি অঙ্গরাজ্য বর্তমানে ৫০টি অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। শুরুতে মাত্র ৭টি অনুচ্ছেদ ও একটি প্রস্তাবনা নিয়ে এই সংবিধান রচিত ও গৃহীত হয়। পরে ক্রমবিকাশের ধারার এই সংবিধান বর্তমান রূপ লাভ করেছে।

→ মার্কিন সংবিধানের বিকাশ : ১৭৮৭ সালে ফিলাডেলফিয়া সম্মেলন রচিত সংবিধানে একটি প্রস্তাবনা ও সাতটি অনুচ্ছেদ সংযুক্ত হয়। এ পর্যন্ত ২৬ বার এ সংবিধান সংশোধন হয়েছে। 

অর্থাৎ মার্কিন সংবিধান ক্রমশ পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়। পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে মার্কিন সংবিধান বিবর্তিত ও বিকাশিত হচ্ছে। নিম্নে তা বর্ণনা করা হলো ।

১. বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্ত : মার্কিন সংবিধানের বিকাশ ও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে মার্কিন সুপ্রিমকোর্টের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের বিভিন্ন ধারার প্রয়োজন মতে ব্যাখ্যা এবং বিচার বিভাগীয় পুনঃবীক্ষণ এর ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে মার্কিন সংবিধানের সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। 

বিচার বিভাগীয় পুনঃবীক্ষণের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সুপ্রিমকোর্ট কংগ্রেসের কোনো আইন বা শাসন বিভাগীয় কোনো সিদ্ধান্তকে বাতিল করে নিতে পারে। 

আবার সুপ্রিমকোর্টের ব্যাখ্যার মাধ্যমেও সংবিধান বিবর্তিত হয়েছে। বিভিন্ন মামলার রায় দিয়ে সুপ্রিমকোর্ট দেশের মৌলিক আইন ব্যাখ্যা করে থাকে।

২. শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি ও প্রথা : যেকোনো দেশের সাংবিধান | নির্দিষ্ট একটি ঐতিহাসিক স্তরে প্রণীত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানী অনেক শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি ও প্রথা মার্কিন সংবিধানকে সাল রেখেছে এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তনকে সম্ভব করে তুলেছে। 

মার্কিন সংবিধানে রাষ্ট্রপতির কেবিনেটে কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রথম রাষ্ট্রপতি ওয়াশিংটন কর্তৃক প্রবর্তিত প্রধানুসারে রাষ্ট্রপতির কেবিনেট উন্নত হয়েছে। মার্কিন সংবিধানে কোনো দলের উল্লেখ নেই। 

কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জীবনের প্রতিফলনে দল ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। USA সংবিধানে কংগ্রেস আইন প্রণয়নে অধিকারী হলেও মার্কিন রাষ্ট্রপতি আইন প্রণয়নের উদ্যোগী হয়ে থাকে।

৩. কংগ্রেস প্রণীত আইন : মার্কিন কংগ্রেসই বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তর গঠন করে থাকে। প্রশাসনিক সংস্থাসমূহের গঠন কাঠামো ও ক্ষমতার উৎস হলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কংগ্রেস প্রণীত আইন। 

কংগ্রেস ১৮৪২ ও ১৮৬৬ সালে আইন তৈরি করে সিনেট প্রতিনিধি সভার সদস্যদের নির্বাচনের ব্যাপারে বিস্তারিত ভাবে বিধিবিধান প্রস্তুত করেছে। 

মূল সংবিধানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস কর্তৃক প্রণীত আইনের দ্বারা প্রতিরক্ষা সামরিক ও কূটনৈতিক বিষয় এবং বৈদেশিক সম্পর্ক নির্ধারিত হয়। কংগ্রেস সংবিধান সম্পর্কিত আইন প্রানে করেছে এবং তার ফলে মার্কিন সংবিধানের সম্প্রসারণ ঘটেছে।

৪. সংবিধান সংশোধন : জনজীবনের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি সাধনের স্বার্থে সংবিধানের সংশোধন অপরিহার্য। সংবিধানের সংশোধন বলতে পরিবর্তন ও সম্প্রসারণ উভয়কেই বোঝায়। 

সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধানের বর্তমান আইনের যেমন পরিবর্তন করা হয়, তেমনি নতুন নিয়মকানুন সংযুক্ত করা হয়। 

সময়ে পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শান্তিপূর্ণ পথে দেশের সাংবিধানিক কাঠামোর পরিবর্তনের জন্য পৃথিবীর সকল দেশের লিখিত সংবিধানের সঙ্গে সংবিধান সংশোধনের একটি পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়। 

এইভাবে সংবিধানকে গতিশীল এবং সম্প্রসারণশীল করা হয়। মার্কিন সংবিধানের আনুষ্ঠানিক সংশোধনের মাধ্যমে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় সংশোধন ও সম্প্রসারণ ঘটছে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ২৬ বার সংবিধান সংশোধন হয়েছে। ২২ তম সংশোধনীতে বলা হয়েছে এক ব্যক্তি দুই বারের বেশি রাষ্ট্রপতি হতে পারবে না।

৫. প্রশাসনিক কার্যকলাপ : মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রশাসনিক কার্যকলাপের ফলশ্রুতি হিসেবেও মার্কিন সংবিধানের ক্রমবিকাশও সম্প্রসারণ ঘটেছে। 

মার্কিন রাষ্ট্রপতি তাঁর শাসন বিভাগীয় ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে এমন অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, যার ফলে বিভিন্ন সাংবিধানিক সমস্যার সমাধান হয়েছে । রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতা প্রয়োগের ব্যাপারে স্বয়ং তার ক্ষমতা ব্যাখ্যা করে থাকেন। 

মার্কিন রাষ্ট্রপতি সংবিধানের বিধানসমূহ প্রয়োগের দায়িত্ব পালনের সঙ্গে কংগ্রেস কর্তৃক প্রণীত আইনের ব্যাখ্যাও প্রদান করেন। শাসন বিভাগীয় কার্যকলাপের দ্বারা রাষ্ট্রপতি কখনও কখনও সংবিধান ব্যাখ্যার নতুন মাত্রা যুক্ত করেছেন ।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, দুষ্পরিবর্তনীয় সত্ত্বেও মার্কিন সংবিধান বিগত প্রায় দু'শত হাজার ইতিহাসে জাতীয় | জীবনের প্রয়োজন পূরণ এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতি সাধনে সক্ষম হয়েছে। 

একটি প্রস্তাবনা ও ৭টি অনুচ্ছেদ সমন্বিত ১৭৮৭ সালের সংবিধানের সঙ্গে বর্তমানের মার্কিন সংবিধানের ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের উদ্ভব ও বিকাশ সম্পর্কে ধারণা নাও পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ