মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী

উত্তর : ভূমিকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় সুপ্রিমকোর্টের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের সর্বোচ্চ আদালত অপেক্ষা মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট অধিক ক্ষমতার অধিকারী আইনের ব্যাখ্যা ও বৈধতা বিচার এবং সংবিধানের অভিভাবক ও ব্যাখ্যাকর্তা হিসেবে ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সুপ্রিমকোর্টের ক্ষমতা কার্যাবলির পরিধিকে প্রসারিত করেছে। আদালতকে সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে অবহিত করা হয়েছে।

→ সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে মার্কিন সুপ্রিমকোর্টের ভূমিকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্টের ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত ব্যাখ্যা হিসেবে পরিগণিত হয়।

১. আইনের ব্যাখ্যা : আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইনের অর্থ ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা বিচারকের আছে। অন্যান্য দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মতো মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট কংগ্রেস কর্তৃক প্রণীত আইনের অর্থ ব্যাখ্যা করতে পারে। 

কোনো আইন ব্যাখ্যার মাধ্যমে সুপ্রিমকোর্ট তার সঠিক অর্থ, উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি ঘোষণা করে এবং সেই ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। কংগ্রেস প্রণীত যেকোনো আইনের শব্দ বা ভোটার ব্যাখ্যা সুপ্রিমকোর্ট করে এবং সুপ্রিমকোর্টের ব্যাখ্যা অনুসারেই কোনো মামলা মীমাংসার ক্ষেত্রে সেই আইন প্রয়োগ করা হয়।

২. বিচার বিভাগীয় সমীক্ষার ক্ষমতা : মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট শুধু আইনের ব্যাখ্যা করে না আইনের বৈধতারও বিচার করে। কিন্তু আইনের বৈধতা বিচারের ক্ষেত্রে জোট দেখে যে বিচার্য আইন বা শাসনবিভাগীয় কোনো কাজ সংবিধান সীমা লঙ্ঘন করছে কি না? 

সুপ্রিমকোর্ট আইন শাসন কার্যকলাপের বৈধতা বিচারের মাধ্যমে শাসনতন্ত্র বহির্ভূত বা অসাংবিধানিকতার দায়ে আইন বা শাসন বিভাগের কোনো কাজকে বাতিল করতে পারে। মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের চূড়ান্ত ব্যাখ্যাকারক সংবিধানের অভিভাবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

৩. নীতিনির্ধারক হিসেবে সুপ্রিমকোর্ট : মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট আইনের বৈধতা বিচারের মাধ্যমেই নীতিনির্ধারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে থাকে। আইন যেখানে আছে এবং পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে জড়িত। সেক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্ট হলো শাসন নীতির। 

একটি মুখ্য উৎস। দুটি পরস্পর বিরোধী নীতির মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে সুপ্রিমকোর্ট শাসন নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সুপ্রিমকোর্ট আবার শাসন নীতির পরিবর্তন আনতে পারে ।

৪. নিয়মকানুনের উদ্ভাবন : মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের আইনের উদ্ভাবক হিসেবে কাজ করে থাকে। সুপ্রিমকোর্টের কংগ্রেসের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ আইনের অর্থ এদের প্রাত্যহিক প্রয়োজনের নিরিখে নিরূপণ করেছে। প্রশাসনিক এজেন্সিগুলো সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অথবা ক্ষেত্র বিশেষে আইনের প্রয়োগ করার দিক-নির্দেশনা লাভ করে।

৫. সংবিধানের ব্যাখ্যাকারক : সুপ্রিমকোর্ট হলো মার্কিন শাসনতন্ত্রের অভিভাবক ও চরম ব্যাখ্যাকারক। সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের যে ব্যাখ্যা দেয় তা চূড়ান্ত এবং সেই ব্যাখ্যা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। আর সুপ্রিমকোর্ট যেভাবে সংবিধানের অর্থ স্থির করে, মার্কিন সংবিধানের ধারণা সেভাবেই নির্ধারিত হয়। অনেকের অভিমত সুপ্রিমকের্টেই হলো সংবিধান ।

৬. নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতা সংরক্ষণের ব্যাপারে সুপ্রিমকোর্টের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মার্কিন কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের আইন শাসন বিভাগীয় হস্তক্ষেপ থেকে অধিকারগুলো সংরক্ষণ সুপ্রিমকোর্টের দায়িত্ব। 

মার্কিন কংগ্রেসের কোনো আইন বা শাসন বিভাগের কোনো সিদ্ধান্ত নাগরিকদের বিধিবদ্ধ অধিকারের বিরোধী হলে সুপ্রিমকোর্ট সংশ্লিষ্ট আইন বা সিদ্ধান্তকে বাতিল করে নাগরিক অধিকার সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে।

৭. বিরোধ মীমাংসা : যুক্তরাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার কেন্দ্র ও অঙ্গরাজ্যসমূহের মধ্যে ক্ষমতার বণ্টনকে কেন্দ্র করে বিরোধ সৃষ্টি হলে জাতীয় বিচারসভা হিসেবে সুপ্রিমকোর্ট সহযোগিতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্যসমূহের মধ্যকার বিরোধ মীমাংসার মাধ্যমে নিজ নিজ এলাকায় কাজ করার ব্যাপারে সুপরামর্শ দেয়।

৮. ন্যায়বোধের উৎকৃষ্ট সাধন : মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। সুপ্রিমকোর্ট কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গদের মধ্যে যে বর্ণ বৈষম্য ছিল তা দূরীকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। সুপ্রিমকোর্ট অশালীন | পত্রিকা ও চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

৯. সংবিধানকে সময়োপযোগী করা : সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের ব্যাখ্যা দিয়ে জনগণের চাহিদা ও প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে। সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানকে সময়োপযোগী করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। তবে মানুষের অবিচারের দিক বেশি বিবেচনায় নিয়ে থাকে। সংবিধান হলো মানুষের উপযোগী একটি মৌলিক গ্রন্থ।

১০. সুপ্রিমকোর্টের নিজস্ব ক্ষমতা : সুপ্রিমকোর্ট স্বেচ্ছায় বিচার বিভাগের ক্ষমতা ও দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। সুপ্রিমকোর্ট সংবিধান ব্যাখ্যার মাধ্যমে নিজেই এ ক্ষমতা নিজের এখতিয়ারে নিয়েছে। মার্কিন সংবিধানের ৩নং এবং ৬ নং ধারায় বা অন্য কোথাও বিচার বিভাগের সমীক্ষার কথা বলা হয়নি ।

১১. বৈধতা বিচারের ক্ষমতা : সুপ্রিমকোর্টের বৈধতা বিচার করে এবং বিচার বিভাগীয় সমীক্ষা ক্ষমতার মাধ্যমে সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে মার্কিন সুপ্রিমকোটের ভূমিকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট আইন ব্যাখ্যা করে এবং শাসন বিভাগ ও আইন বিভাগের কার্যক্রমের বৈধতা বিচার করে।

উপসংহার : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্ট প্রকৃতপক্ষে যে | অভিভাবক তা উপর্যুক্ত আলোচনার মাধ্যমে পরিষ্কার। সুপ্রিমকোর্ট সাংবিধানের ব্যাখ্যার মাধ্যমে জনগণের ন্যায়বিচার পেতে সাহায্য করে থাকে। তাই বলা যায় যে, মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট সংবিধানের অভিভাবক।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী। যদি তোমাদের আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টকে সংবিধানের রক্ষক ও অভিভাবক বলার কারণ কী পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ