স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল উল্লেখ কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল উল্লেখ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল উল্লেখ কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল উল্লেখ কর |
স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল উল্লেখ কর
- অথবা, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ স্বার্থ হাসিলের জন্য কি কি কৌশল অবলম্বন করে?
- অথবা, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী কর্তৃক সরকারি সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার উপায়সমূহ আলোচনা কর ।
- অথবা, চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী কি কি পদ্ধতির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকে প্রভাবিত করে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূমিকা : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী হলো এমন এক সুসংগঠিত জনসমষ্টি যারা সমজাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষমতা গ্রহণ না করে সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব বিস্তার করে।
ক্ষমতা দখল চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে নয়; বরং নীতিনির্ধারণের প্রভাব বিস্তার করাই এর উদ্দেশ্য। অনেকে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীকে স্বার্থান্বেষী, লোভী, মনোভাব কেন্দ্রিক গোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠী ইত্যাদি নামে অভিহিত করে থাকেন।
→ স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল : নিচে স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলোর কৌশল পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. প্রতিনিধি প্রেরণ : বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী নিজেদের প্রতিনিধি প্রেরণ করে। স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করে। এছাড়া বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থায়ও এ স্বার্থগোষ্ঠীগুলো প্রতিনিধি প্রেরণের মাধ্যমে গোষ্ঠী স্বার্থ সংরক্ষণের তৎপরতা চালায় ।
২. জনমত গঠনের প্রতি আগ্রহ : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলো জনমত গঠনের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখায়। জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে গোষ্ঠীগুলো গোষ্ঠীস্বার্থের অনুকূলে বা জনমত সংগঠিত করতে উদ্যোগী হয়। এভাবে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো নিজেদের দাবি-দাওয়া । আমায়ের চেষ্টা করে থাকে।
৩. আইনসভার উপর প্রাধান্য বিস্তার : ক্ষমতাসীন দলের আইন বিভাগীয় কার্যকলাপের উপরও চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলো প্রভাব বিস্তার করে থাকে। গোষ্ঠী স্বার্থের সাথে সম্পর্কযুক্ত বিল উত্থাপন বা আলোচনার সময় স্বার্থগোষ্ঠীগুলো নিজেদের বক্তব্য আইনসভার সদস্যদের উপর চাপ সৃষ্টি করে।
৪. বিচার বিভাগের উপর প্রাধান্য বিস্তার : সাধারণত বিচার বিভাগের উপর প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলোর কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলো বিচারক নিয়োগের | ব্যাপারে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে।
তাছাড়া গোষ্ঠীগুলো | ব্যক্তিগত যোগাযোগের ভিত্তিতে গোষ্ঠীস্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়ে বিচারপতিদের সিদ্ধান্ত সাধ্যমতো প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।
৫. রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার : কোনো রাজনৈতিক দলই প্রকাশ্যে কোনো চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর সাথে যোগাযোগ করে না। তবে পরোক্ষভাবে বা রাজনৈতিক দলের কোনো শাখা সংগঠনের মাধ্যমে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলো নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য চেষ্টা করে।
নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলোকে আর্থিক সহযোগিতাসহ অন্যান্যভাবে সাহায্য করে। দল নির্বাচনে জয়ী হলে এবং সরকার গঠন করলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের সমর্থক গোষ্ঠীগুলো স্বাভাবিকভাবে সরকারি সিন্ধান্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।
৬. সরকার ও জনগণের মধ্যে সংযোগ সাধন : চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলো আপামর জনসাধারণের দুঃখ দুর্দশা জনসম্মুখে তুলে ধরে। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী সমাজের জনগণের দুঃখও তুলে ধরে। এ কারণে সরকারও তাদের দাবিগুলোকে গুরুত্ব দিতে বাধ্য হয়।
৭. বিক্ষোভ প্রদর্শন ও হিংসাত্মক আন্দোলন : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলো নিজেদের স্বার্থে আঘাত হানার সাথে সাথে বিভিন্ন স্থানে সভা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে।
এছাড়া হিংসাত্মক আন্দোলনে তারা জড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ ও হিংসাত্মক আন্দোলনের মাধ্যমে গোষ্ঠীগুলো নিজেদের স্বার্থ সাধনের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করে থাকে।
৮. জোরালো লবিং : সরকারি নীতিকে প্রভাবিত করার জন্য প্রত্যেক চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী সরকারের নীতি প্রণয়নকারী বা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের নিকট নিজেদের মতামত প্রদান ও বক্তব্য পেশের জন্য প্রবেশাধিকারের চেষ্টা করে। প্রবেশাধিকারের এ প্রক্রিয়া লবিং নামে সমধিক পরিচিত।
৯. উৎকোচ বা ঘুষ প্রদান : চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলো উৎকোচ বা ঘুষ প্রদানকে একটি কার্যকর কৌশলরূপে প্রয়োগ করে। সুবিধা আদায়ের অবৈধ এ পদ্ধতি বিভিন্ন নামে পরিচিত।
যেমন- গিভ এন্ড টেক, বার্গেইনিং এন্ড কম্প্রোমাইজ ইত্যাদি। অন্য কোনো কৌশল ব্যর্থ হলেও কেবল এই কৌশল অবলম্বন করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সংকীর্ণ গোষ্ঠীস্বার্থের প্রতিভূ চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ। এগুলোর শ্রেণিবিভাজন যাই হোক না কেন সকল অবস্থায় তারা গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষায় বদ্ধপরিকর।
এজন্য বৈধ-অবৈধ যেকোনো পন্থা অবলম্বনেই তারা কার্পণ্য করে না। তবে ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় অর্থনৈতিক বিচারে প্রতিপত্তিশালী চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলোই বিশেষত সরকারি নীতি ও সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার ব্যাপারে অধিক সাফল্য লাভ করে ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল উল্লেখ কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল উল্লেখ কর। যদি তোমাদের আজকের স্বার্থ হাসিলে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কৌশল উল্লেখ কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।