সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার আলোচনা কর । আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।
সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার আলোচনা কর |
সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার আলোচনা কর
- অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার সম্পর্কে যা জান লেখ।
- অথবা, সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কারের বর্ণনা দাও ।
উত্তর : ভূমিকা : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সুদক্ষ সেনাপতি ও বীর যোদ্ধা ছিলেন। তিনি যথাযথভাবে অনুধাবন করেন যে, সুলতানের সার্বভৌমত্বের আদর্শকে বাস্তবায়িত, দিগ্বিজয়ের আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ, মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ এবং রাজ্যের বিশালতা রক্ষা, শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাকল্পে স্বীয় আদর্শ অনুযায়ী শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করতে হলে একটি বিশাল সেনাবাহিনীর প্রয়োজন।
আর এ উদ্দেশ্যে সুলতান সামরিক সংস্কার সাধন করেন ।আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার নিচে সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. সেনাবাহিনী গঠন : ভারতবর্ষে রাজ্যবিস্তার, মোঙ্গল আক্রমণ, শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সুলতান এক বিশাল সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীতা অনুভব করেন। আর এ উদ্দেশ্যে বিশাল স্থায়ী সেনাবাহিনী গঠন করেন।
আলাউদ্দিন খলজি নতুন পদ্ধতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী গঠনে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। তিনি সেনাবাহিনী গঠন করে তাদেরকে প্রত্যক্ষভাবে সুসজ্জিত করেন এবং তাদের সরকারি কোষাগার থেকে নগদ বেতন প্রদান করেন।
২. জায়গীর প্রথার বিলোপ : সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সেনাবাহিনীর অন্তরায় জায়গীর প্রথার বিলোপ সাধন করেন। জায়গীরের পরিবর্তে তিনি সৈন্যদের নগদ বেতন প্রদানের ব্যবস্থা করেন।
প্রথম শ্রেণির প্রতিজন সৈন্যকে ২৩৪ তংকা এবং দুটি ঘোড়া লালন পালনের জন্য অতিরিক্ত ৭৮ তৎকা, দ্বিতীয় শ্রেণির ১৫৬ অংকা, তৃতীয় শ্রেণির জন্য ৮৭ তৎকা নগদ বেতন নিতেন।
৩. জিনিসপত্রের দাম নির্ধারণ : সুলতান আলাউদ্দিন খলজি বিশাল সৈন্যবাহিনীকে যেন স্বল্প ব্যয়ে পোষণ করতে পারেন সেজন্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চালু করেন এবং জিনিস পত্রের দাম নির্ধারণ করে দেন।
তাছাড়া সেনাবাহিনীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করতে পারেন সেজন্য সুলতান দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম নির্ধারণ করে দেন।
৪. দাগ ও চেরা ব্যবস্থায় প্রবর্তন : সুলতান সেনাবাহিনীর দুর্নীতি দূর করার জন্য ঘোড়া শনাক্ত করার ব্যবস্থা করেন। আলাউদ্দিন তার সেনাদলে দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য হুলিয়া ও দাগ প্রথার প্রচলন করেন। এ ব্যবস্থা সর্বপ্রথম তিনি প্রচলন করেন। পরবর্তীতে এটা আদর্শ ও অনুকরণীয় হয়ে থাকে।
৫. রেজিস্টার পদ্ধতি : নিয়মিত সেনারা যুদ্ধের সময় হাজিরা না দিয়ে অশিক্ষিত লোকদের বদলি হিসেবে প্রেরণ করত এবং যুদ্ধের ঘোড়ার বদলে চাষের ঘোড়া পাঠাত।
এই দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য তিনি হুলিয়া ব্যবস্থা দ্বারা খাতায় প্রতি সৈন্যের দৈহিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে রাখতেন। এর ফলে সেনাবাহিনীর দুর্নীতি রোধ হয়।
৬. সেনাবাহিনীদের প্রশিক্ষণ : নিয়মিত বাহিনীর শৃঙ্খলা, প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তার প্রতি জোর প্রদান করে সুলতান তাদের উন্নত অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করেন।
এসব নীতির ফলে সেনাবাহিনীর মধ্যে এক উদ্দীপনার সঞ্চার হয় এবং তাদের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। সুলতান তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চল জয় করেন।
৭. সামরিক বাহিনীকে বিভক্ত : সুলতান আলাউদ্দিনের শাসনামলে পদাতিক, অশ্বারোহী ও হস্তীবাহিনী ছিল। ঐতিহাসিক আবুল কাশেম ফিরিস্তার মতে, আলাউদ্দিনের অশ্বারোহী বাহিনীর সংখ্যা ছিল ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার। সম্ভবত সুলতানের পদাতিক বাহিনীর সংখ্যা অশ্বারোহী বাহিনীর দ্বিগুণ ছিল। পরবর্তীতে শেরশাহ ও আকবর তাকে অনুসরণ করে।
৮. সীমান্তে দুর্গ নির্মাণ : সুলতান আলাউদ্দিন সেনাবাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সীমান্তে দুর্গ নির্মাণ করেন। সেনাবাহিনীকে এক দুর্গ হতে অন্য দুর্গে স্থানান্তরিত করেন।
এছাড়া মোঙ্গলদের আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সীমান্তে নতুন দুর্গ নির্মাণ করেন এবং পুরাতন দুর্গকে সংস্কার সাধন করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সুলতান বলবনের মতো সামরিক শক্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন।
নিজের অনুসৃত সার্বভৌমত্বের আদর্শ কার্যকর এবং দিগ্বিজয়ের অভিলাষ চরিতার্থ করতে সর্বোপরি মোঙ্গল আক্রমণ প্রতিরোধ করতে সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন । আর সে উদ্দেশ্য সাধন করার লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীর সংস্কার করেন ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের সুলতান আলাউদ্দিন খলজির সামরিক সংস্কার আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো।