শুর বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে লিখ

শুর বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে লিখ
শুর বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে লিখ

শুর বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে লিখ

  • অথবা, শুর বংশ কেন পতন হয়েছিল? সংক্ষেপে আলোচনা কর ।

উত্তর : ভূমিকা : শেরশাহ ছিলেন আফগান শুর উপদলীয়ভুক্ত বংশের। যার ফলে শেরশাহ দিল্লির সিংহাসনে আরোহণের পর শক্তিশালী শুর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার দিকে মনযোগী হন। 

শেরশাহ অল্প কয়েক বছরে নিজের রাজ্যবিস্তার করে শুর বংশকে অন্য এক মাত্রায় নিয়ে যান। কিন্তু শেরশাহের মৃত্যুর পর এ শুর বংশ ভারতবর্ষে খুব বেশিদিন টিকতে পারেনি |

স্তর বংশের পতনের কারণ : শুর সাম্রাজ্যের পতনের পিছনে নানাবিধ কারণ রয়েছে। 

নিয়ে শুর বংশের পতনের কারণগুলো আলোচনা করা হলো :

১. দুর্বল উত্তরাধিকারী : শেরশাহের মৃত্যুর পর তার যেসকল উত্তরাধিকারী শাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তারা ছিল অযোগ্য ও অসংগঠনী প্রতিভার অধিকারী। শেরশাহ আফগান অভিজাতবর্গের সাথে পরামর্শের ভিত্তিতে শাসসকার্য পরিচালনা করতেন। 

কিন্তু শেরশাহের গুর উত্তরসূরীরা অভিজাতবর্গের সমর্থন লাভের পরিবর্তে বিবাদ ও গোষ্ঠী সংঘাতের সৃষ্টি করেন। ইসলাম শাহ খাবাস খানের ন্যায় বিশ্বস্ত রাজকর্মচারীদেরকে হত্যা করেন। পরবর্তীতে আদিল খান এ অসন্তোষকে আরো বৃদ্ধি করেন।

২. প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব ও শাসক : আদিল খানের সময়ে বিভিন্ন প্রদেশের প্রাদেশিক শাসনকর্তারা নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের পারস্পরিক দ্বন্দ্বে লিপ্ত হন। এসময় তারা মুঘল শক্তির পুনরুত্থান সম্বন্ধে ভুলে যান এবং পরবর্তীতে সেটিই ঘটে।

৩. চারিত্রিক অবনতি : শেরশাহের মৃত্যুর পর আফগান শুর শাসকদের চারিত্রিক অবনতি ঘটে। তারা রাজ্য শাসন নিয়ে মাধ্য না ঘামিয়ে আমোদ ফূর্তি করতে ব্যস্ত থাকতেন। 

এমনকি এও কথিত আছে যে, হিমু আফগানদের কাপুরুষ বলে অভিহিত করলে তারা সেই অপমান মিষ্টান্ন হিসেবে গলাধঃকরণ করে।

৪. প্রজাদের স্বার্থের প্রতি অবহেলা : শেরশাহের উত্তরাধিকারী | প্রজাদের বিশেষ করে কৃষকদের স্বার্থের প্রতি সম্পূর্ণ অবহেলা প্রদর্শন করে। 

তারা জনগণের কল্যাণের জন্য কিছুই করেননি। যার ফলে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায় এবং তারা শুর বংশের ভাগ্যের প্রতি উদাসীন থাকে।

৫. শেরশাহের শাসনতান্ত্রিক পদক্ষেপ উপেক্ষা : শেরশাহ যে সকল শাসনতান্ত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল তার উত্তরসূরীরা সেগুলো ভুলে যায় এবং অনেকক্ষেত্রে উপেক্ষা করে। 

বিশেষ করে রাজস্ব আদায়ে স্তর শাসকরা মনোযোগী ছিলেন না। যার কারণেই রাজস্ব আদায়কারীরা দুর্নীতির সুযোগ পায় এবং রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাৎ করে। যার ফলে সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।

৬. অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা : শেরশাহ উত্তরসূরীদের শাসনামলে অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা চরম আকার ধারণ করে। এ সময় আইন- শৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। 

এতে জনগণ শুর শাসন থেকে পরিত্রাণ চায়। রাজ্যের এ অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে হুমায়ূন দিল্লি আক্রমণ করে দখল করে নেয়।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শুর বংশের শাসকদের নিজেদের ভুলের কারণেই তর বংশের পতন ঘটে। তারা শত্রুর আক্রমণের কথা ভুলে যায় আর হুমায়ূন সে সুযোগকে গ্রহণ করে। হুমায়ূন তার বংশধরদের পরাজিত করে মুঘল শাসনের পুনরুদ্ধার করেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ