পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর। আমাদের গুগল নিউজ ফলো করুন।

পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর
পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর

পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর

  • অথবা, পানিপথের প্রথম যুদ্ধ সম্পর্কে লিখ। 
  • অথবা, পানিপথের প্রথম যুদ্ধের বর্ণনা দাও ৷

উত্তর : ভূমিকা : ভারতবর্ষের ইতিহাসে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। পানিপথের যুদ্ধগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পানিপথের প্রথম যুদ্ধ। কেননা এ যুদ্ধ ভারতবর্ষের শাসনব্যবস্থার ইতিহাসকে পরিবর্তন করে দেয়। 

সম্রাট বাবর পানিপথের প্রথম যুদ্ধে জয়লাভ করে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের বীজ বপণ করেন। পরবর্তীতে এ মুঘল শাসনামলই ভারতবর্ষের ইতিহাসে স্থায়ী জায়গা করে নেয় ।

পানিপথের প্রথম যুদ্ধের বর্ণনা : ভারতবর্ষের বিরুদ্ধে পরীক্ষামূলক কয়েকটি অভিযানে সাফল্য লাভ করায় বাবর ক্রমান্বয়ে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন। 

তাই বাবর এ সময় দিল্লির দিকে নজর দেন এবং এ সময় দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লোদীর সাথে বাবরের পানিপথের প্রথম যুদ্ধ হয়। 

নিম্নে পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনাবলি আলোচনা করা হলো :

১. প্রাথমিক যুদ্ধ : বাবর দিল্লি আক্রমণ করার পরিকল্পনা মোতাবেক ১৫২৬ সালে সৈন্যবাহিনী নিয়ে পাঞ্জাব থেকে নিখি অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। 

এ সময় দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লোনী বাবরের আগমনের সংবাদ শুনে তাকে বাধা দেওয়ার জন্য দুটি আক্রমণকারী দলকে পাঞ্জাবের দিকে প্রেরণ করেন। পথিমধ্যে ইব্রাহিম লোদীর সৈন্যবাহিনী দুটির সাথে বাবরের যুদ্ধ হয় এবং সৈন্যদল দুটি পরাজয়বরণ করে।

২. সৈন্য শিবির স্থাপন : দিল্লির দিকে ধাবমান সৈন্যবাহিনীকে বাবর ১৫২৬ সালের ১২ এপ্রিল থামিয়ে দেন এবং যমুনা নদীর তীর ধরে ঐতিহাসিক পানিপথের প্রান্তরে সৈন্য শিবির স্থাপন করেন। 

এ সময় বাবরের সাথে মাত্র ১২ হাজার সৈন্যবাহিনী ছিল। তবে তারা প্রত্যেকেই ছিল অত্যন্ত রণকৌশলী।

৩. বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন : পানিপথের প্রান্তরে স্থাপিত সৈন্য শিবিরে বাবর নানা রকম যুদ্ধ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি সৈন্যবাহিনীকে ডান, বাম ও মধ্য প্রভৃতি বিভিন্নভাবে সাজান। এ সময় তিনি দায়িত্ব ভাগ করে। দেন। 

ডানদিকের বাহিনীর দায়িত্ব ছিল পানিপথ শহর রক্ষা করা। মধ্যখানে ছিল কামান ও গোলন্দাজ বাহিনী এবং বামদিকের বাহিনী পরিখা খনন করে সেখানে গাছপালা ফেলে নিজেদের সুবিধা মতো অবস্থান নেওয়া।

৪. প্রথম ব্যর্থ অভিযান : পানিপথের অপর প্রান্তরে ইব্রাহিম লোপী প্রায় এক লক্ষ সৈন্যবাহিনী নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেন। এ সময় উভয় সৈন্যবাহিনী ৮ দিন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকেন। 

অবশেষে বাবরের সৈন্যবাহিনী তার নির্দেশ মোতাবেক ২০ এপ্রিল রাতে হঠাৎ শত্রু শিবিরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু আক্রমণকারী দলটি বাবরের নির্দেশ তথা পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে অনুধাবন করতে না পারায় বাবরের এ প্রথম অভিযান ব্যর্থ হয়।

৫. লোদীর সৈন্যবাহিনী ঘেরাও : বাবরের প্রথম অভিযানের ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে লোদীর সৈন্যবাহিনী ২১ এপ্রিল সকালে বাবরের বাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। 

কিন্তু অল্পসময়ের মধ্যে লোদীর সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে বাবর সে সুযোগ গ্রহণ করেন এবং লোদীর বাহিনীকে ঘেরাও করার নির্দেশ দেন। এ সময় বাবরের সেনাবাহিনী চতুর্দিক থেকে লোদীর বাহিনীকে ঘেরাও করে ফেলেন।

৬. কামান ও গোলা নিক্ষেপ : বাবরের সেনাবাহিনী লোদীর বাহিনীকে ঘেরাও করে ফেললে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধ শুরু হয়। এমতাবস্থায় বাবর কামান ও গোলা নিক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেন।

বাবরের গোলন্দাজ বাহিনী লোদীর বাহিনীর উপর মহুমহু গোলা নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে লোদীর সৈন্যবাহিনী নিয়ন্ত্রণহীন ও ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এ সময় লোদীর প্রায় ১৫-১৬ হাজার সেনা প্রাণ হারায় ।

৭. দিল্লি ও আগ্রা জয় : কামান ও গোলার আঘাতে জর্জরিত লোদী বাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে তিনি লোদী বাহিনীর উপর আরো চড়াও হন। যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদী প্রাণ হারান। এতে বাবরের পথ আরো পরিষ্কার হয়ে যায়। 

বাবর দ্রুত দিল্লি ও আগ্রা অবরোধ করে তা দখল করে নেন। ১৫২৬ সালের ২৭ এপ্রিল দিল্লির জামে মসজিদে বাবরের নামে খুৎবা পাঠ করা হয় এবং তিনি নিজেকে ভারতবর্ষের সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন ৷

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পানিপথের প্রথম যুদ্ধ ভারতবর্ষের ইতিহাসে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ যুদ্ধে বিজয় লাভ করে বাবর প্রমাণ করেছেন কিভাবে স্বল্প সৈন্য নিয়েও শুধু বুদ্ধির জোড়ে টিকে থাকা যায়। 

তাছাড়া পানিপথের প্রথম যুদ্ধেই সর্বপ্রথম কামান ও গোলার ব্যবহার করা হয়। এ যুদ্ধে ভারতে নতুন ইতিহাসে রচনা করেছিল ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের পানিপথের প্রথম যুদ্ধের ঘটনা আলোচনা কর পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ