শেরশাহের ধর্মীয় নীতি আলোচনা কর
শেরশাহের ধর্মীয় নীতি আলোচনা কর |
শেরশাহের ধর্মীয় নীতি আলোচনা কর
- অথবা, শেরশাহের ধর্মীয় নীতি কি ছিল?
উত্তর : ভূমিকা : যদিও শেরশাহ ছিলেন নিষ্ঠাবান মুসলমান তবুও তিনি অন্য ধর্মের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ করতেন। ভারতে মুসলিম শাসকদের মধ্যে শেরশাহ সর্বসাধারণের আস্থা অর্জন করেছিলেন ।
তিনি গোড়া মুসলিম হলেও ধর্মান্ধ ছিলেন না। তাইতো তিনি সকল জাতিকে ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রদান করেন। এবং ধর্ম নিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতা নীতি অবলম্বন করেন।
শেরশাহের ধর্মীয় নীতি : নিয়ে শেরশাহের ধর্মীয় নীতি আলোচনা করা হলো-
১. হিন্দুদের প্রতি আচরণ : শেরশাহের ধর্মীয় নীতি সম্বন্ধে মতবিরোধ রয়েছে। কানুনগোর মতে, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি শেরশাহ | ধর্মীয় সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করেন। অপরদিকে রামশর্মা বলেছেন যে, “হিন্দুদের বিরুদ্ধে শেরশাহ জিহাদ পরিচালনা করেন।”
২. বিধর্মীদের উচ্চপদে নিয়োগ : একথা সত্য যে, শেরশাহ বিধর্মীদের অনেক উচ্চপদে নিয়োগ করেন। তিনি অনেক হিন্দুদেরকে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ প্রদান করেন। তাছাড়াও তিনি রাজকার্যে হিন্দুদের নিয়োগ প্রদান করেন ।
৩. ধর্ম নিরপেক্ষতা : শেরশাহের শাসনকাল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, প্রায় সবক্ষেত্রে তিনি অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছিলেন। শেরশাহ ধর্মকে রাজনীতি থেকে পৃথক করে। রেখেছিলেন। তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা অবলম্বন করে সর্বস্তরের জনগণের আস্থা অর্জন করেন।
৪. অসাম্প্রদায়িকতা : রাষ্ট্রীয় নীতিতে শেরশাহ অসাম্প্রদায়িক ও সর্বভারতীয় ছিলেন। তিনি ধর্মীয় ক্ষেত্রেও সেই নীতি অবলম্বন করেন।
অনেকে শেরশাহকে গোড়া মুসলমান হিসেবে অভিহিত করলেও একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, তিনি অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও বিশেষ সুবিধা দিতেন ৷
৫. ধর্মবাদী : শেরশাহ গোড়া মুসলিম হলেও তিনি ধর্মান্ধ ছিলেন না। তিনি নিজ ধর্মের ও বিভিন্ন কুসংস্কার বিলুপ্ত করেন। তার শাসনামলে সকল ধর্মের লোকজন সমান সুবিধা ভোগ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, শেরশাহের দৃষ্টিভঙ্গিতে হিন্দুধর্মের প্রতি ছিল সম্মানজনক নিস্পৃহতা। ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি গ্রহণ করে শেরশাহ উভয় সম্প্রদায়ের শ্রদ্ধা অর্জন করেন। যার ফলে শেরশাহ তার শাসনকার্য পরিচালনায় সফলতা অর্জন করে।